alt

অর্থ-বাণিজ্য

ধারাবাহিক পতনে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা মূলধন কমল ডিএসইতে

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : রোববার, ১৬ জুন ২০২৪

আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূলধনী আয়ের ওপর কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে গত সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবসে বড় দরপতন হয় দেশের শেয়ারবাজারে। ঈদের আগের সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমে গেছে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার ওপরে। একই সঙ্গে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক ও লেনদেন।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩২৩টির। এছাড়া ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১২ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা বা এক দশমিক ৯৯ শতাংশ।

এ অবস্থায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১১৯ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৩৬ দশমিক কূন্য ৯ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৯৪ শতাংশ। এছাড়া ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২৮ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫২ শতাংশ কমেছে।

মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের গতিও। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৭৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৫১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৭৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৮৮২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ২৫৮ কোটি ২ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৩৭৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বিকন ফার্মার শেয়ার। প্রতিদিন গড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার, যা মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি টাকার। প্রতিদিন গড়ে ১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।

গত সপ্তাহে ডিএসই লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৪১২টি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে ৫৪টির দর বেড়েছে, ৩২৩টির দর কমেছে, ১৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ১৮টির লেনদেন হয়নি। সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে বাংলঅদেশ ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৫.৫৬ শতাংশ কমেছে।

সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ১৪.৬৭ শতাংশ, সোনালী আঁশের ১৩.৯৮ শতাংশ, খান ব্রাদার্সের ১৩.৯৪ শতাংশ, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ১৩.৪৩ শতাংশ, এনসিসি ব্যাংকের ১৩.৬১ শতাংশ, রূপালী ব্যাংকের ১২.৩২ শতাংশ, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামীক মিউচুয়াল ফান্ডের ১১.৯০ শতাংশ, ন্যাশনাল পলিমারের ১১.৫০ শতাংশ এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রায়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের ১১.৪৩ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৪১২টি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে ৫৪টির দর বেড়েছে, ৩২৩টির দর কমেছে, ১৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ১৮টির লেনদেন হয়নি। সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সমতা লেদার কমপেক্স লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৮.১৮ শতাংশ।

সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটলাস বাংলাদেশের ১৬.৭৫ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের ১৬.১৮ শতাংশ, সাফকো স্পিনিংয়ের ১৪.৬৮ শতাংশ, ইউনিলিভার কনজ্যুমারের ১৩.৮৩ শতাংশ, ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্সের ১২.৪৬ শতাংশ, ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ১০.৬২ শতাংশ, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালসের ১০.৩৯ শতাংশ, ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের ৯.৯৫ শতাংশ এবং সেনা কল্যাণ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৮.৫৫ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।

গত সপ্তাহে ডিএসই পিই রেশিও (সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত) কমেছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় ডিএসইর পিই রেশিও ২.৫৭ শতাংশ বা ০.২৫ পয়েন্ট কমেছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর পিই রেশিও ৯.৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯.৭১ পয়েন্ট।

আলোচ্য সপ্তাহে খাতভিত্তিক পিই রেশিও হলো- ব্যাংক খাতে ৬.১ পয়েন্ট, সিমেন্ট খাতে ৯.২, সিরামিকস খাতে ৭৩.৬, প্রকৌশল খাতে ১৪.১, আর্থিক খাতে ৩২.৩, খাদ্য খাতে ১৩.৭, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৯.৩, সাধারণ বিমা খাতে ১৩.২, আইটি খাতে ১৬.৭, পাট খাতে ১৪.৪, বিবিধ খাতে ৩৩.৩, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ১১৩.১, কাগজ খাতে ১৭.৬, ওষুধ খাতে ১৩, সেবা-আবাসন খাতে ১৬.২, ট্যানারি খাতে ২৩.৭, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১৬.৩, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ৭.২ ও বস্ত্র খাতে ১৮.১ পয়েন্ট।

আগের সপ্তাহে (০২-০৬ জুন) খাত ভিত্তিক পিই রেশিও ছিল- ব্যাংক খাতে ৬.২, সিমেন্ট খাতে ৯.৪, সিরামিকস খাতে ৭৮.৩, প্রকৌশল খাতে ১৪.৮, আর্থিক খাতে ৩৪.৫, খাদ্য খাতে ১৩.৮, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৯.৬, সাধারণ বিমা খাতে ১৩.৫, আইটি খাতে ১৭.৬, পাট খাতে ১৬.২, বিবিধ খাতে ৩৩.১, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ১১৮.৩, কাগজ খাতে ১৯.২, ওষুধ খাতে ১৩.২, সেবা-আবাসন খাতে ১৭.১, ট্যানারি খাতে ২৪.১, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১৭.১, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ৭.৪ এবং বস্ত্র খাতে ১৮.৯ পয়েন্ট।

ডিএসই সাপ্তাহিক রিটার্নে দর কমেছে ১৯ খাতে। এর ফলে এই ১৯ খাতের বিনিয়োগকারীরা লোকসানে রয়েছেন। একই সময়ে দর বেড়েছে কেবল বিবিধ খাতে। আলোচ্য সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে পাট খাতে। বিদায়ী সপ্তাহে এখাতে দর কমেছে ১০.৭০ শতাংশ। ৮.২০ শতাংশ দর কমে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কাগজ ও প্রকাশনা খাত। একই সময়ে ৬.০০ শতাংশ দর কমে তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে সিরামিক খাত।

লোকসান হওয়া অন্য ১৬ খাতের মধ্যে- লাইফ ইন্স্যুরেন্স খাতে ৫.৫০ শতাংশ সেবা ও আবাসন খাতে ৫.০০ শতাংশ, প্রকৌশল খাতে ৪.৯০ শতাংশ, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ৪.৮০ শতাংশ, তথ্য প্রযুক্তি খাতে ৪.৮০ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ৪.৮০ শতাংশ, আর্থিক খাতে ৪.৪০ শতাংশ, বস্ত্র খাতে ৪.১০ শতাংশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩.৭০ শতাংশ, সিমেন্ট খাতে ২.৮০ শতাংশ, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ২.৬০ শতাংশ, জেনারেল ইন্স্যুরেন্স খাতে ২.৪০ শতাংশ, চামড়া খাতে ১.৮০ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১.৬০ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ০.৬০ শতাংশ এবং ব্যাংক খাতে ০.০১ শতাংশ দর কমেছে।

ছবি

স্থানীয় শিল্পে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার

ছবি

তুলা আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম কর প্রত্যাহার চান টেক্সটাইল মালিকরা

বাজার মূলধনে যোগ হলো সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা

বিকাশ, রকেট, নগদসহ এমএফএসের মাধ্যমে শুল্ক-কর জমা দেয়া যাবে

ছবি

ব্রাদার পার্টনার ডে ২০২৫ অনুষ্ঠিত

ছবি

বিকাশ-রকেট-নগদে কাস্টমস শুল্ক পরিশোধ সুবিধা চালু, ঘরে বসেই পণ্য খালাসের পথ খুলল

ছবি

তুলা আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম কর প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা

ছবি

কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে মাশুল বাড়বে না

সেমিকন্ডাক্টর খাতে ১০ বছরের কর অব্যাহতি ও শুল্ক ছাড়ের সুপারিশ

ছবি

প্রথম প্রান্তিকে বিমাদাবি নিষ্পত্তিতে গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্সের ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’

৮৫ ব্রোকারেজ হাউসকে আগস্টের মধ্যে চালু করতে হবে ব্যাক অফিস সফটওয়্যার

ছবি

প্রসাধনী পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি

ছবি

স্বর্ণের দাম আবার বাড়লো

ছবি

৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ ১০ হাজার টন সার কিনবে সরকার

এফবিসিসিআই নির্বাচন: সময় বাড়লো ৪৫ দিন

ছবি

পাট খাতের উন্নয়নে ‘সাসটেইনেবল মার্কেট এক্সেস বুটক্যাম্প’ কর্মসূচি শুরু

এক বছরে ভারতে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন নেমেছে এক-তৃতীয়াংশে

৫ দিন বন্ধ থাকবে রূপালী ও এনসিসি ব্যাংকের সব কার্যক্রম

ছবি

ডলারের বিপরীতে টাকায় ঋণ নেয়ার সুযোগ

গত অর্থবছরে রফতানি আয় ৪৮ বিলিয়ন ডলার

নবম পে-কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস অর্থ উপদেষ্টার

ছবি

ব্যাগেজ রুলসে মোবাইল ও স্বর্ণ আনায় বড় ছাড়

ছবি

এনবিআরের আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তের কথা জানালো দুদক

ছবি

প্রবাসী আয়ে রেকর্ড, রপ্তানিতে বড় প্রবৃদ্ধি

ছবি

দেশের ৩২ বীমা কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

ছবি

বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ৭ শতাংশেরও কম

ছবি

ডিএসইর নতুন সিওও মোহাম্মদ আসাদুর রহমান

ছবি

অর্থবছরের প্রথম দিন ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার

ছবি

ইলিশের দাম নির্ধারণ করে দেবে সরকার

ছবি

এনবিআরে আন্দোলন: এবার চার কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠালো সরকার

ছবি

৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মায়ানমারকে হারিয়ে ইতিহাসের পথে বাংলাদেশের মেয়েরা

বিইআরসি ঘোষণা করল বেসরকারি এলপিজির নতুন দাম, ১২ কেজিতে ৩৯ টাকা কমতি

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানি আসছে, অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে নৌবাহিনী

ছবি

নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে এফবিসিসিআই নির্বাচন পিছিয়ে গেল

ছবি

রেকর্ড রেমিটেন্সে শেষ হলো অর্থবছর, প্রথমবারের মতো আয় ছাড়াল ৩০ বিলিয়ন ডলার

ছবি

‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে অংশ: চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার বরখাস্ত

tab

অর্থ-বাণিজ্য

ধারাবাহিক পতনে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা মূলধন কমল ডিএসইতে

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪

আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূলধনী আয়ের ওপর কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে গত সপ্তাহের প্রথম তিন কার্যদিবসে বড় দরপতন হয় দেশের শেয়ারবাজারে। ঈদের আগের সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমে গেছে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার ওপরে। একই সঙ্গে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক ও লেনদেন।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩২৩টির। এছাড়া ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১২ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা বা এক দশমিক ৯৯ শতাংশ।

এ অবস্থায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১১৯ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৮ শতাংশ। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ৩৬ দশমিক কূন্য ৯ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৯৪ শতাংশ। এছাড়া ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২৮ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫২ শতাংশ কমেছে।

মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের গতিও। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৭৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৫১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৭৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৮৮২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ২৫৮ কোটি ২ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৩৭৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বিকন ফার্মার শেয়ার। প্রতিদিন গড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার, যা মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি টাকার। প্রতিদিন গড়ে ১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।

গত সপ্তাহে ডিএসই লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৪১২টি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে ৫৪টির দর বেড়েছে, ৩২৩টির দর কমেছে, ১৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ১৮টির লেনদেন হয়নি। সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে বাংলঅদেশ ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৫.৫৬ শতাংশ কমেছে।

সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় স্থান পাওয়া অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ১৪.৬৭ শতাংশ, সোনালী আঁশের ১৩.৯৮ শতাংশ, খান ব্রাদার্সের ১৩.৯৪ শতাংশ, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ১৩.৪৩ শতাংশ, এনসিসি ব্যাংকের ১৩.৬১ শতাংশ, রূপালী ব্যাংকের ১২.৩২ শতাংশ, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামীক মিউচুয়াল ফান্ডের ১১.৯০ শতাংশ, ন্যাশনাল পলিমারের ১১.৫০ শতাংশ এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রায়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের ১১.৪৩ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৪১২টি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে ৫৪টির দর বেড়েছে, ৩২৩টির দর কমেছে, ১৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ১৮টির লেনদেন হয়নি। সপ্তাহটিতে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সমতা লেদার কমপেক্স লিমিটেডের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ১৮.১৮ শতাংশ।

সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটলাস বাংলাদেশের ১৬.৭৫ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের ১৬.১৮ শতাংশ, সাফকো স্পিনিংয়ের ১৪.৬৮ শতাংশ, ইউনিলিভার কনজ্যুমারের ১৩.৮৩ শতাংশ, ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্সের ১২.৪৬ শতাংশ, ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ১০.৬২ শতাংশ, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালসের ১০.৩৯ শতাংশ, ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের ৯.৯৫ শতাংশ এবং সেনা কল্যাণ ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৮.৫৫ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।

গত সপ্তাহে ডিএসই পিই রেশিও (সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত) কমেছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় ডিএসইর পিই রেশিও ২.৫৭ শতাংশ বা ০.২৫ পয়েন্ট কমেছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর পিই রেশিও ৯.৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯.৭১ পয়েন্ট।

আলোচ্য সপ্তাহে খাতভিত্তিক পিই রেশিও হলো- ব্যাংক খাতে ৬.১ পয়েন্ট, সিমেন্ট খাতে ৯.২, সিরামিকস খাতে ৭৩.৬, প্রকৌশল খাতে ১৪.১, আর্থিক খাতে ৩২.৩, খাদ্য খাতে ১৩.৭, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৯.৩, সাধারণ বিমা খাতে ১৩.২, আইটি খাতে ১৬.৭, পাট খাতে ১৪.৪, বিবিধ খাতে ৩৩.৩, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ১১৩.১, কাগজ খাতে ১৭.৬, ওষুধ খাতে ১৩, সেবা-আবাসন খাতে ১৬.২, ট্যানারি খাতে ২৩.৭, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১৬.৩, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ৭.২ ও বস্ত্র খাতে ১৮.১ পয়েন্ট।

আগের সপ্তাহে (০২-০৬ জুন) খাত ভিত্তিক পিই রেশিও ছিল- ব্যাংক খাতে ৬.২, সিমেন্ট খাতে ৯.৪, সিরামিকস খাতে ৭৮.৩, প্রকৌশল খাতে ১৪.৮, আর্থিক খাতে ৩৪.৫, খাদ্য খাতে ১৩.৮, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৯.৬, সাধারণ বিমা খাতে ১৩.৫, আইটি খাতে ১৭.৬, পাট খাতে ১৬.২, বিবিধ খাতে ৩৩.১, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ১১৮.৩, কাগজ খাতে ১৯.২, ওষুধ খাতে ১৩.২, সেবা-আবাসন খাতে ১৭.১, ট্যানারি খাতে ২৪.১, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১৭.১, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ৭.৪ এবং বস্ত্র খাতে ১৮.৯ পয়েন্ট।

ডিএসই সাপ্তাহিক রিটার্নে দর কমেছে ১৯ খাতে। এর ফলে এই ১৯ খাতের বিনিয়োগকারীরা লোকসানে রয়েছেন। একই সময়ে দর বেড়েছে কেবল বিবিধ খাতে। আলোচ্য সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে পাট খাতে। বিদায়ী সপ্তাহে এখাতে দর কমেছে ১০.৭০ শতাংশ। ৮.২০ শতাংশ দর কমে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কাগজ ও প্রকাশনা খাত। একই সময়ে ৬.০০ শতাংশ দর কমে তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে সিরামিক খাত।

লোকসান হওয়া অন্য ১৬ খাতের মধ্যে- লাইফ ইন্স্যুরেন্স খাতে ৫.৫০ শতাংশ সেবা ও আবাসন খাতে ৫.০০ শতাংশ, প্রকৌশল খাতে ৪.৯০ শতাংশ, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ৪.৮০ শতাংশ, তথ্য প্রযুক্তি খাতে ৪.৮০ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে ৪.৮০ শতাংশ, আর্থিক খাতে ৪.৪০ শতাংশ, বস্ত্র খাতে ৪.১০ শতাংশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩.৭০ শতাংশ, সিমেন্ট খাতে ২.৮০ শতাংশ, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ২.৬০ শতাংশ, জেনারেল ইন্স্যুরেন্স খাতে ২.৪০ শতাংশ, চামড়া খাতে ১.৮০ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১.৬০ শতাংশ, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ০.৬০ শতাংশ এবং ব্যাংক খাতে ০.০১ শতাংশ দর কমেছে।

back to top