সরকার, মালিক ও শ্রমিকপক্ষের অসন্তোষের অবসান হলেও বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বন্ধ ছিল প্রায় ১৯টি পোশাক কারখানা। এর মধ্যে প্রায় ১৫টি কারখানা মালিকপক্ষ বন্ধ রেখেছিল। বাকিগুলোতে শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে। অর্থাৎ শ্রমিকদের ১৮ দফা নিয়ে মালিকদের সঙ্গে সব সমস্যার সমাধান হলেও প্রকৃতপক্ষে এই শিল্পের অবস্থা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। বুধবার সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুরসহ আশপাশের কারখানাগুলোতে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
কারখানা বন্ধ ও খোলার বিষয়ে দুই ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। এক ধরনের তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ শিল্পপুলিশ কর্তৃপক্ষ। আরেক ধরনের তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন, বিজিএমইএ।
বুধবার শিল্পপুলিশ জানিয়েছে, সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে বুধবার বন্ধ ছিল ১৯টি তৈরি পোশাক কারখানা। অন্য কারখানাগুলোতে উৎপাদন শুরু করেছে শ্রমিকরা। যৌথ বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
গত তিন সপ্তাহ ধরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক খাতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পর বিজিএমইএ শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়ায় বুধবার সকাল থেকে অধিকাংশ কারখানায় উৎপাদন কাজে যোগ দিয়েছে শ্রমিকরা।
আশুলিয়া শিল্পপুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, ‘আজকে (বুধবার) সর্বমোট ১৯টি ফ্যাক্টরি বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যে ৫টি সাধারণ ছুটি। আর কিছু ফ্যাক্টরি আছে বেতনভাতা পরিশোধ না করার কারণে বন্ধ আছে। আর কিছু ফ্যাক্টরি নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে বন্ধ রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় বিভিন্ন কারখানার সামনে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকা ছাড়াও যৌথ বাহিনীর টহল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া যেসব কারখানা বন্ধ রয়েছে সেসব কারখানার শ্রমিকরা কারখানার সামনে গিয়ে কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে কিছুটা হৈচৈ করছেন। আমরা চেষ্টা করছি, বিজিএমইএ ও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যেন কারখানাগুলো দ্রুত খুলে দেয়া হয়।’
আশুলিয়ার কিছু কারখানা চালু, কিছু বন্ধ
শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি বিজিএমইএ মেনে নেওয়ায় কিছু কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। আশুলিয়ার নরসিংহপুরে হা-মীম, শারমিন, নাসাসহ অনেক গুলো বন্ধ কারখানাতে উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে কয়েকটি পোশাক কারখানায় কর্মপরিবেশ পর্যবেক্ষণের জন্য এখনো বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নিট ওয়্যার নামে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও পরে দাবি নিয়ে কর্মবিরতি পালন করে।
বাংলাদেশ গামের্ন্টেস ও সোয়েটার্স শ্রমিক টেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘গতকাল বৈঠক করে শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে দাবি মেনে নেওয়া ও কারখানায় শ্রমিকদের কাজে ফেরার জন্য গেটে নোটিশ দেয়ার কথা ছিল। এছাড়া আজ মালিকপক্ষকে কারখানায় এসে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করার কথাও বলতে বলা হয়েছিল। যেসব কারখানায় মালিক পক্ষ আন্তরিক, সেসব কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি পোশাক কারখানা এখনো নোটিশ না দিয়ে বন্ধ ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় না বসার কারণেই আজও কারখানায় উৎপাদন শুরু করতে পারেনি।’
শ্রীপুরে ঝুট ব্যবসা নিয়ে কৃষক দল ও যুবদলের নেতাদের সংঘর্ষ
গাজীপুরের শ্রীপুরে গার্মেন্টসের ঝুঁট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে যুবদল ও কৃষকদলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বেলা সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা সংলগ্ন বেড়াইদেরচালা এলাকায় অবস্থিত এসকিউ সেলসিয়াস লিমিটেড কারখানার ঝুট (পরিত্যক্ত কাপড়) বের করার জন্য মালিক পক্ষ বৈধ ওয়ার্ক অর্ডার এর মাধ্যমে গাজীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এসএম পলাশ চঞ্চলের প্রতিষ্ঠান ‘চঞ্চল এন্টারপ্রাইজ’ কে ওয়ার্ক অর্ডার প্রদান করে।
বুধবার এসএম পলাশের নেতৃত্বে ঝুট বের করার দিন ধার্য ছিল। খবর পেয়ে জেলা কৃষকদলের সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদের পক্ষে ২০০-৩০০ লোকজন দেশীয় অস্ত্র দা, লাঠিসোঠা ও ধারালো অস্ত্র সহকারে ঝুটবোঝাই গাড়ি আটক করার জন্য কারখানার সামনে অবস্থান নেয়।
এ খবর জানতে পেরে যুবদল নেতা এসএম পলাশের নেতৃত্বে যুবদলের লোকজন কারখানার গেটে এসে জেলা কৃষক দলের নেতা আবুল কালাম আজাদের লোকদেরকে ধাওয়া দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় দুপক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘণ্টাব্যাপী দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলাকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভাঙচুর করা হয় চারটি প্রাইভেটকার একটি মাইক্রোবাস দুই পক্ষের সশস্ত্র অবস্থানের কারণে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
চঞ্চল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এসএম পলাশ বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাকে ওয়ার্ক অর্ডার (কার্যাদেশ) দেয়। সে অনুযায়ী বুধবার সকালে ঝুট বের করার জন্য আমার দুটি পিকআপ কারখানায় প্রবেশ করে। পরে সকাল ১০টার দিকে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক এসএম আবুল কালাম আজাদের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে কারখানার সামনে অবস্থান নেয়।’
ঘটনার বিষয়ে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি সকাল থেকে ঢাকায় অবস্থান করছি। শুনতে পারলাম শ্রীপুরের মাওনায় কারখানা থেকে ঝুট বের করা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। আর সেখানে আমার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।’
বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
বুধবার গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে একটি কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৪ ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। দুভোর্গের সৃষ্টি হয় প্রায় দিনভর।
শিল্পপুলিশ ও শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর ছয়দানা এলাকার ফুল এভার বিডি লিমিটেড কারখানায় দেড় শতাধিক শ্রমিক কাজ করে। শ্রমিকদের আগষ্ট মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বেতন না পেয়ে শ্রমিকরা ১০ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ শুরু করে। কিন্তু বেতন না দিয়ে বিক্ষোভের মধ্যে কর্তৃপক্ষ ১২ সেপ্টেম্বর কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন। গত সোমবার গাজীপুরে প্রায় সব কারখানার বেতন-ভাতার সমস্যার সমাধান হলেও এ কারখানার শ্রমিকরা এখনো বেতন-ভাতা পাননি। বাধ্য হয়ে বেতনের দাবিতে বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে শ্রমিক কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২ এর টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, গাজীপুরে ১৪টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ছয়দানা এলাকায় ফুল এভার বিডি লিমিটেড একটি। কারখানাটির শ্রমিকরা এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। পরে মালিক পক্ষে সাথে আলোচনা করে আগামীকাল (আজ) বেতন দেয়ার সিদ্ধান্ত হলে শ্রমিকদের বুঝিয়ে দুপুর ১টার দিকে সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সরকার, মালিক ও শ্রমিকপক্ষের অসন্তোষের অবসান হলেও বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বন্ধ ছিল প্রায় ১৯টি পোশাক কারখানা। এর মধ্যে প্রায় ১৫টি কারখানা মালিকপক্ষ বন্ধ রেখেছিল। বাকিগুলোতে শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে। অর্থাৎ শ্রমিকদের ১৮ দফা নিয়ে মালিকদের সঙ্গে সব সমস্যার সমাধান হলেও প্রকৃতপক্ষে এই শিল্পের অবস্থা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। বুধবার সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুরসহ আশপাশের কারখানাগুলোতে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
কারখানা বন্ধ ও খোলার বিষয়ে দুই ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। এক ধরনের তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ শিল্পপুলিশ কর্তৃপক্ষ। আরেক ধরনের তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন, বিজিএমইএ।
বুধবার শিল্পপুলিশ জানিয়েছে, সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে বুধবার বন্ধ ছিল ১৯টি তৈরি পোশাক কারখানা। অন্য কারখানাগুলোতে উৎপাদন শুরু করেছে শ্রমিকরা। যৌথ বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।
গত তিন সপ্তাহ ধরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় তৈরি পোশাক খাতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পর বিজিএমইএ শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়ায় বুধবার সকাল থেকে অধিকাংশ কারখানায় উৎপাদন কাজে যোগ দিয়েছে শ্রমিকরা।
আশুলিয়া শিল্পপুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, ‘আজকে (বুধবার) সর্বমোট ১৯টি ফ্যাক্টরি বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যে ৫টি সাধারণ ছুটি। আর কিছু ফ্যাক্টরি আছে বেতনভাতা পরিশোধ না করার কারণে বন্ধ আছে। আর কিছু ফ্যাক্টরি নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে বন্ধ রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় বিভিন্ন কারখানার সামনে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকা ছাড়াও যৌথ বাহিনীর টহল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া যেসব কারখানা বন্ধ রয়েছে সেসব কারখানার শ্রমিকরা কারখানার সামনে গিয়ে কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে কিছুটা হৈচৈ করছেন। আমরা চেষ্টা করছি, বিজিএমইএ ও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যেন কারখানাগুলো দ্রুত খুলে দেয়া হয়।’
আশুলিয়ার কিছু কারখানা চালু, কিছু বন্ধ
শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি বিজিএমইএ মেনে নেওয়ায় কিছু কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। আশুলিয়ার নরসিংহপুরে হা-মীম, শারমিন, নাসাসহ অনেক গুলো বন্ধ কারখানাতে উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে কয়েকটি পোশাক কারখানায় কর্মপরিবেশ পর্যবেক্ষণের জন্য এখনো বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নিট ওয়্যার নামে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও পরে দাবি নিয়ে কর্মবিরতি পালন করে।
বাংলাদেশ গামের্ন্টেস ও সোয়েটার্স শ্রমিক টেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘গতকাল বৈঠক করে শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে দাবি মেনে নেওয়া ও কারখানায় শ্রমিকদের কাজে ফেরার জন্য গেটে নোটিশ দেয়ার কথা ছিল। এছাড়া আজ মালিকপক্ষকে কারখানায় এসে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করার কথাও বলতে বলা হয়েছিল। যেসব কারখানায় মালিক পক্ষ আন্তরিক, সেসব কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি পোশাক কারখানা এখনো নোটিশ না দিয়ে বন্ধ ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় না বসার কারণেই আজও কারখানায় উৎপাদন শুরু করতে পারেনি।’
শ্রীপুরে ঝুট ব্যবসা নিয়ে কৃষক দল ও যুবদলের নেতাদের সংঘর্ষ
গাজীপুরের শ্রীপুরে গার্মেন্টসের ঝুঁট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে যুবদল ও কৃষকদলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বেলা সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তা সংলগ্ন বেড়াইদেরচালা এলাকায় অবস্থিত এসকিউ সেলসিয়াস লিমিটেড কারখানার ঝুট (পরিত্যক্ত কাপড়) বের করার জন্য মালিক পক্ষ বৈধ ওয়ার্ক অর্ডার এর মাধ্যমে গাজীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এসএম পলাশ চঞ্চলের প্রতিষ্ঠান ‘চঞ্চল এন্টারপ্রাইজ’ কে ওয়ার্ক অর্ডার প্রদান করে।
বুধবার এসএম পলাশের নেতৃত্বে ঝুট বের করার দিন ধার্য ছিল। খবর পেয়ে জেলা কৃষকদলের সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদের পক্ষে ২০০-৩০০ লোকজন দেশীয় অস্ত্র দা, লাঠিসোঠা ও ধারালো অস্ত্র সহকারে ঝুটবোঝাই গাড়ি আটক করার জন্য কারখানার সামনে অবস্থান নেয়।
এ খবর জানতে পেরে যুবদল নেতা এসএম পলাশের নেতৃত্বে যুবদলের লোকজন কারখানার গেটে এসে জেলা কৃষক দলের নেতা আবুল কালাম আজাদের লোকদেরকে ধাওয়া দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় দুপক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘণ্টাব্যাপী দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলাকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভাঙচুর করা হয় চারটি প্রাইভেটকার একটি মাইক্রোবাস দুই পক্ষের সশস্ত্র অবস্থানের কারণে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
চঞ্চল এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এসএম পলাশ বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাকে ওয়ার্ক অর্ডার (কার্যাদেশ) দেয়। সে অনুযায়ী বুধবার সকালে ঝুট বের করার জন্য আমার দুটি পিকআপ কারখানায় প্রবেশ করে। পরে সকাল ১০টার দিকে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক এসএম আবুল কালাম আজাদের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে কারখানার সামনে অবস্থান নেয়।’
ঘটনার বিষয়ে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক এসএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি সকাল থেকে ঢাকায় অবস্থান করছি। শুনতে পারলাম শ্রীপুরের মাওনায় কারখানা থেকে ঝুট বের করা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। আর সেখানে আমার নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।’
বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
বুধবার গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে একটি কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ৪ ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। দুভোর্গের সৃষ্টি হয় প্রায় দিনভর।
শিল্পপুলিশ ও শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর ছয়দানা এলাকার ফুল এভার বিডি লিমিটেড কারখানায় দেড় শতাধিক শ্রমিক কাজ করে। শ্রমিকদের আগষ্ট মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বেতন না পেয়ে শ্রমিকরা ১০ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ শুরু করে। কিন্তু বেতন না দিয়ে বিক্ষোভের মধ্যে কর্তৃপক্ষ ১২ সেপ্টেম্বর কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেন। গত সোমবার গাজীপুরে প্রায় সব কারখানার বেতন-ভাতার সমস্যার সমাধান হলেও এ কারখানার শ্রমিকরা এখনো বেতন-ভাতা পাননি। বাধ্য হয়ে বেতনের দাবিতে বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে শ্রমিক কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা মহাসড়কে অবস্থান নেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২ এর টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, গাজীপুরে ১৪টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ছয়দানা এলাকায় ফুল এভার বিডি লিমিটেড একটি। কারখানাটির শ্রমিকরা এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। পরে মালিক পক্ষে সাথে আলোচনা করে আগামীকাল (আজ) বেতন দেয়ার সিদ্ধান্ত হলে শ্রমিকদের বুঝিয়ে দুপুর ১টার দিকে সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।