alt

অর্থ-বাণিজ্য

ব্যাংক খাতের সংকট: দুর্নীতি ও খেলাপি ঋণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ১০ ব্যাংক

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের চরম সংকটের জন্য রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি, এবং অব্যবস্থাপনা দায়ী বলে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের ১০টি বেসরকারি ব্যাংক বর্তমানে দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে এবং এই তারল্য সংকট দীর্ঘমেয়াদে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থনীতির হালচাল পর্যবেক্ষণে গঠিত কমিটির প্রধান অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সম্প্রতি একটি শ্বেতপত্রে এসব তথ্য তুলে ধরেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের পর থেকে ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রভাবশালীদের সম্মিলিত অনিয়ম ব্যাংকিং খাতকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়, দেশের ব্যাংক খাতের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ঋণ ইতোমধ্যেই খারাপ ঋণে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা। তবে প্রকৃত খেলাপি ঋণ ছয় লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যা দেশের অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করছে।

উল্লেখযোগ্য খেলাপি ঋণ ও তারল্য সংকটের ফলে ব্যাংকগুলো আর্থিক প্রতিবেদনে উইন্ডো ড্রেসিং করে মুনাফা দেখালেও প্রকৃত অবস্থা ভিন্ন। প্রায় ৮টি ব্যাংক ইতোমধ্যে কার্যত দেউলিয়া হয়ে গেছে।

শ্বেতপত্রে দাবি করা হয়েছে, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ঋণ বিতরণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হারানো, এবং ক্রনিইজম অর্থনীতিকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল, অবলোপন, এবং উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের সুযোগ নিয়ে ঋণগ্রহীতারা দায় এড়িয়ে চলেছেন।

এছাড়া ব্যাংক পরিচালকদের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং গ্রুপের এক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের দায় থেকে অন্যদের অব্যাহতি দেওয়ার মতো নীতিমালার পরিবর্তন এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, খেলাপি ঋণের দায়ীদের নাম প্রকাশ ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া সংকট কাটানো সম্ভব নয়। শ্বেতপত্রে দায়ী ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ না করায় সমালোচনা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, নাম প্রকাশ না করলে পুরো ব্যাংকিং খাতে আস্থার সংকট দেখা দিতে পারে।

শ্বেতপত্রে উল্লেখিত সমস্যা মোকাবিলায় ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিসূদহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে, যা মূল্যস্ফীতি কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে সংস্কার কার্যক্রমের গতি বাড়াতে এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালী করতে জবাবদিহি নিশ্চিত করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা ‘ইতিবাচক’ তবে তা প্রকাশে অপারগ বাণিজ্য উপদেষ্টা

ছবি

রেমিটেন্সের ঊর্ধ্বমুখী ধারায় নতুন অর্থবছর শুরু

ছবি

বৈদেশিক লেনদেনে স্বস্তি, কমেছে ‘বাণিজ্য ঘাটতি’

ছবি

ডলারের দর কমায় নিলামে ১৭ কোটি ডলার কিনলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় কমেছে লেনদেন

ছবি

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে নতুন মহাপরিচালকের যোগদান

ছবি

রিয়েলমি ১২ স্মার্টফোনে ৩০০০ টাকা ছাড়

দেশের অর্থনীতি ভালো অবস্থায় আছে: বিশ্বব্যাংক

ছবি

সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীরসহ তিনজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ছবি

১১ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৪.২৪ শতাংশ, বেড়েছে রপ্তানি ও আমদানি

এক সপ্তাহে ডলারের দাম কমলো ২ টাকা ৯০ পয়সা

ছবি

জুনে ভারতে রপ্তানি কমেছে ৩২ শতাংশ

সূচকের পতন, কমেছে লেনদেনও

ছবি

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানত-ঋণ-হিসাব বেড়েছে, কমেছে এজেন্ট-আউটলেট

ছবি

“বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা নয়, সত্য বলুন”—মোবাইল কোম্পানিগুলোর উদ্দেশে তৈয়্যব

‘সিন্ডিকেটের কবজায়’ এয়ারলাইন্সের টিকেট, অভিযোগ অ্যাটাবের

ছবি

২০২৫-২৬ অর্থবছর শেষে সরকারের ঋণ হবে সাড়ে ২৩ লাখ কোটি টাকা

পাল্টা শুল্কের শঙ্কায় বাংলাদেশ থেকে পোশাকের ক্রয়াদেশ পিছিয়েছে ওয়ালমার্ট

ছবি

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে

১০ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধনে যোগ হলো শেয়ারবাজারে

ছবি

চার দিনের সফরে এসেছেন বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট

বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ডলার ছাড়ালো

ছবি

বাংলাদেশে উন্মোচিত হলো টেকনো স্পার্ক ৪০ এবং স্পার্ক ৪০ প্রো

ছবি

বাজারে লেনোভোর আইডিয়াপ্যাড স্লিম ৩ আই সিরিজের নতুন পাঁচটি ল্যাপটপ

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন ও বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে

তিন কারণে পণ্য রপ্তানিতে আগের মতোই প্রণোদনা পাবেন ব্যবসায়ীরা

ছবি

টানা ৭ মাস বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের নিচে

পাল্টা শুল্ক নিয়ে চার উপদেষ্টাকে উদ্বেগ জানালেন ব্যবসায়ীরা

ছবি

ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স দেয়ার উদ্যোগ

আমদানিপণ্য দ্রুত খালাসের আহ্বান এনবিআর চেয়ারম্যানের

ছবি

আবুল বারকাতকে রিমান্ডে চেয়ে দুদকের আবেদন, আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হলো

ছবি

দেশে মোটরসাইকেল বিক্রি বেড়েছে

ছবি

বাজার সম্প্রসারণে আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে জোর ব্যবসায়ীদের

নথি গায়েব করে ১৪৬ কোটি টাকার কর ফাঁকি

অধিকাংশ ব্যাংকের অডিট রিপোর্টে ‘ফিকশন’ পাওয়া গেছে: গভর্নর

tab

অর্থ-বাণিজ্য

ব্যাংক খাতের সংকট: দুর্নীতি ও খেলাপি ঋণে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ১০ ব্যাংক

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের চরম সংকটের জন্য রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি, এবং অব্যবস্থাপনা দায়ী বলে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের ১০টি বেসরকারি ব্যাংক বর্তমানে দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে এবং এই তারল্য সংকট দীর্ঘমেয়াদে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থনীতির হালচাল পর্যবেক্ষণে গঠিত কমিটির প্রধান অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সম্প্রতি একটি শ্বেতপত্রে এসব তথ্য তুলে ধরেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের পর থেকে ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রভাবশালীদের সম্মিলিত অনিয়ম ব্যাংকিং খাতকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়, দেশের ব্যাংক খাতের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ঋণ ইতোমধ্যেই খারাপ ঋণে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা। তবে প্রকৃত খেলাপি ঋণ ছয় লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যা দেশের অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি করছে।

উল্লেখযোগ্য খেলাপি ঋণ ও তারল্য সংকটের ফলে ব্যাংকগুলো আর্থিক প্রতিবেদনে উইন্ডো ড্রেসিং করে মুনাফা দেখালেও প্রকৃত অবস্থা ভিন্ন। প্রায় ৮টি ব্যাংক ইতোমধ্যে কার্যত দেউলিয়া হয়ে গেছে।

শ্বেতপত্রে দাবি করা হয়েছে, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ঋণ বিতরণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হারানো, এবং ক্রনিইজম অর্থনীতিকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল, অবলোপন, এবং উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের সুযোগ নিয়ে ঋণগ্রহীতারা দায় এড়িয়ে চলেছেন।

এছাড়া ব্যাংক পরিচালকদের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং গ্রুপের এক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের দায় থেকে অন্যদের অব্যাহতি দেওয়ার মতো নীতিমালার পরিবর্তন এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।

অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, খেলাপি ঋণের দায়ীদের নাম প্রকাশ ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া সংকট কাটানো সম্ভব নয়। শ্বেতপত্রে দায়ী ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ না করায় সমালোচনা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, নাম প্রকাশ না করলে পুরো ব্যাংকিং খাতে আস্থার সংকট দেখা দিতে পারে।

শ্বেতপত্রে উল্লেখিত সমস্যা মোকাবিলায় ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিসূদহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে, যা মূল্যস্ফীতি কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে সংস্কার কার্যক্রমের গতি বাড়াতে এবং আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালী করতে জবাবদিহি নিশ্চিত করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

back to top