alt

অর্থ-বাণিজ্য

বিদ্যুতে ‘অসম’ চুক্তি বাতিল ‘অতটা সহজ নয়’: পরিবেশ উপদেষ্টা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

বিদ্যুৎ খাতে চুক্তি বাতিলের কথা বলাটা সহজ হলেও তা থেকে বের হয়ে আসাটা অনেক ব্যয়বহুল বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘চুক্তি বাতিল অতটা সহজ নয়। নাইকো চুক্তি বাতিল করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেতে হয়েছে। তবুও অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জটা নিয়েছে। এখন চুক্তিগুলো পর্যালোচনার মধ্যে আছে।’ একই সঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম বলেছেন, ‘একটি প্রকল্প বন্ধ করতে গেলে ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে।’

‘বাংলাদেশ জ্বালানি সমৃদ্ধি-২০৫০’ নিয়ে দ্বিতীয় জ্বালানি সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে তিনদিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন হয়েছে। সম্মেলনের আয়োজক কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সমন্বিত জোট বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি)।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘অনেকের বক্তব্যে আগের সরকারের কিছু চুক্তি বা প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো প্রথম থেকেই বিরোধিতার মুখে ছিল। যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়ে গেছে, সেগুলোর ঋণের বোঝাও টানতে হচ্ছে। বসিয়ে বসিয়ে টাকা দিতে হচ্ছে। আবার একই সময়ে জ্বালানি রূপান্তরেরও একটা চাপ আছে। যে ধরনের অসম চুক্তি হয়েছে, অস্বাভাবিক খরচে করা হয়েছে, তার দায় বহন করতে হচ্ছে। ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ (ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ) করতেই সরকারের অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে।’

সম্মেলনে বক্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ঢাকায় আবাসিক ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল আছে। এটা কাজ করে কিনা, তার তদারকি নেই। বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা জমিটা মূল মালিকদের ফিরিয়ে দেয়ার সুযোগ আইনে নেই। তবে অধিগ্রহণ করা অব্যবহৃত জমি নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন অথবা বনায়ন করে কাজে লাগানো যেতে পারে।’

সম্মেলনে জ্বালানি সাশ্রয়ের কথা কারও বক্তব্যে শোনা যায়নি বলে মন্তব্য করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানি খাতকে সমৃদ্ধ করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও স্বচ্ছতাসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিগত সরকারের রেখে যাওয়া অসম চুক্তি ও অস্বাভাবিক ঋণের বোঝা অন্তর্বর্তী সরকারকে টানতে হচ্ছে। তবে টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার কাজ করছে। এত সমস্যার মধ্যে থেকে একটা সেক্টরে সমৃদ্ধি অর্জন করা খুব বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। অনেক চুক্তি-প্রকল্পের কথা আমরা বলেছে যেগুলোর বিরোধিতা প্রথম থেকেই আমাদের ছিল।’

বিদ্যুৎ খাতে করা চুক্তি বাতিলের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম। তিনি বলেন, ‘একটি প্রকল্প বন্ধ করতে গেলে ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে, এটাই চুক্তি। অনেক চুক্তি দীর্ঘমেয়াদি। মেয়াদের আগে বাদ দিতে গেলেই আইনগত ঝামেলা আছে। আর্থিক জরিমানা তো আছেই।’

ম তামিম আরও বলেন, ‘বর্তমানে চলছে এখন সাত হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছয় হাজার মেগাওয়াটের মতো বড় কেন্দ্র বসিয়ে রেখে কেন্দ্রভাড়া দিতে হচ্ছে। এটা কি বাদ দেয়া যাবে? গরমের সময় তো এগুলো লাগবে। সত্যিকার পরিকল্পনা করে এ খাত এগোয়নি। তাই রূপান্তরের ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। দক্ষতা উন্নয়ন ও সাশ্রয়ে গুরুত্ব কম। এখানে মনোযোগ দিতে হবে।’

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘জ্বালানি খাতে আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৪০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। শুরুতে ১০টির জন্য দরপত্র ডাকা হচ্ছে। ধাপে ধাপে বাকিগুলোর দরপত্র আহ্বান করা হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমন্বিত মহাপরিকল্পনা নতুন করে তৈরি হবে। এ ছাড়া দেশে সৌরবিদ্যুৎ যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা উন্নয়নকর্মীরা উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে ধরেন। তারা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সুন্দরবনের ক্ষতি হচ্ছে। এ কেন্দ্রের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি আছে। তাহলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাঁচতে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে কিনা? বিকল্প থাকার পরও এ প্রকল্পের রাস্তা তৈরি করতে বেশ কিছু পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন একজন। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৪ হাজার ২০০ পরিবার উচ্ছেদ করা হয়েছে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে। বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল হয়েছে। পরিবারগুলোকে জমি ফিরিয়ে দেয়া যায় কিনা, তা জানতে চান একজন।

সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিডব্লিউজিইডির সদস্যসচিব হাসান মেহেদী। সঞ্চালনা করেন কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্কের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং উপদেষ্টা বেনজীর আহমেদ ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যাপক ফাহমিদা হক।

রাজধানীতে শুরু হওয়া এই সম্মেলন আগামী তিনদিন চলবে। সম্মেলনে সব মিলিয়ে মোট ১২টি সেশন হবে। এতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন, পরিবেশবাদী সংগঠন, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন।

ছবি

স্থানীয় শিল্পে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার

ছবি

তুলা আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম কর প্রত্যাহার চান টেক্সটাইল মালিকরা

বাজার মূলধনে যোগ হলো সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা

বিকাশ, রকেট, নগদসহ এমএফএসের মাধ্যমে শুল্ক-কর জমা দেয়া যাবে

ছবি

ব্রাদার পার্টনার ডে ২০২৫ অনুষ্ঠিত

ছবি

বিকাশ-রকেট-নগদে কাস্টমস শুল্ক পরিশোধ সুবিধা চালু, ঘরে বসেই পণ্য খালাসের পথ খুলল

ছবি

তুলা আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম কর প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা

ছবি

কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে মাশুল বাড়বে না

সেমিকন্ডাক্টর খাতে ১০ বছরের কর অব্যাহতি ও শুল্ক ছাড়ের সুপারিশ

ছবি

প্রথম প্রান্তিকে বিমাদাবি নিষ্পত্তিতে গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্সের ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’

৮৫ ব্রোকারেজ হাউসকে আগস্টের মধ্যে চালু করতে হবে ব্যাক অফিস সফটওয়্যার

ছবি

প্রসাধনী পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি

ছবি

স্বর্ণের দাম আবার বাড়লো

ছবি

৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ ১০ হাজার টন সার কিনবে সরকার

এফবিসিসিআই নির্বাচন: সময় বাড়লো ৪৫ দিন

ছবি

পাট খাতের উন্নয়নে ‘সাসটেইনেবল মার্কেট এক্সেস বুটক্যাম্প’ কর্মসূচি শুরু

এক বছরে ভারতে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন নেমেছে এক-তৃতীয়াংশে

৫ দিন বন্ধ থাকবে রূপালী ও এনসিসি ব্যাংকের সব কার্যক্রম

ছবি

ডলারের বিপরীতে টাকায় ঋণ নেয়ার সুযোগ

গত অর্থবছরে রফতানি আয় ৪৮ বিলিয়ন ডলার

নবম পে-কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস অর্থ উপদেষ্টার

ছবি

ব্যাগেজ রুলসে মোবাইল ও স্বর্ণ আনায় বড় ছাড়

ছবি

এনবিআরের আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তের কথা জানালো দুদক

ছবি

প্রবাসী আয়ে রেকর্ড, রপ্তানিতে বড় প্রবৃদ্ধি

ছবি

দেশের ৩২ বীমা কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

ছবি

বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ৭ শতাংশেরও কম

ছবি

ডিএসইর নতুন সিওও মোহাম্মদ আসাদুর রহমান

ছবি

অর্থবছরের প্রথম দিন ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার

ছবি

ইলিশের দাম নির্ধারণ করে দেবে সরকার

ছবি

এনবিআরে আন্দোলন: এবার চার কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠালো সরকার

ছবি

৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মায়ানমারকে হারিয়ে ইতিহাসের পথে বাংলাদেশের মেয়েরা

বিইআরসি ঘোষণা করল বেসরকারি এলপিজির নতুন দাম, ১২ কেজিতে ৩৯ টাকা কমতি

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানি আসছে, অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে নৌবাহিনী

ছবি

নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে এফবিসিসিআই নির্বাচন পিছিয়ে গেল

ছবি

রেকর্ড রেমিটেন্সে শেষ হলো অর্থবছর, প্রথমবারের মতো আয় ছাড়াল ৩০ বিলিয়ন ডলার

ছবি

‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে অংশ: চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার বরখাস্ত

tab

অর্থ-বাণিজ্য

বিদ্যুতে ‘অসম’ চুক্তি বাতিল ‘অতটা সহজ নয়’: পরিবেশ উপদেষ্টা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

বিদ্যুৎ খাতে চুক্তি বাতিলের কথা বলাটা সহজ হলেও তা থেকে বের হয়ে আসাটা অনেক ব্যয়বহুল বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘চুক্তি বাতিল অতটা সহজ নয়। নাইকো চুক্তি বাতিল করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেতে হয়েছে। তবুও অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জটা নিয়েছে। এখন চুক্তিগুলো পর্যালোচনার মধ্যে আছে।’ একই সঙ্গে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম বলেছেন, ‘একটি প্রকল্প বন্ধ করতে গেলে ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে।’

‘বাংলাদেশ জ্বালানি সমৃদ্ধি-২০৫০’ নিয়ে দ্বিতীয় জ্বালানি সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে তিনদিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন হয়েছে। সম্মেলনের আয়োজক কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সমন্বিত জোট বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি)।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘অনেকের বক্তব্যে আগের সরকারের কিছু চুক্তি বা প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো প্রথম থেকেই বিরোধিতার মুখে ছিল। যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়ে গেছে, সেগুলোর ঋণের বোঝাও টানতে হচ্ছে। বসিয়ে বসিয়ে টাকা দিতে হচ্ছে। আবার একই সময়ে জ্বালানি রূপান্তরেরও একটা চাপ আছে। যে ধরনের অসম চুক্তি হয়েছে, অস্বাভাবিক খরচে করা হয়েছে, তার দায় বহন করতে হচ্ছে। ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ (ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ) করতেই সরকারের অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে।’

সম্মেলনে বক্তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ঢাকায় আবাসিক ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল আছে। এটা কাজ করে কিনা, তার তদারকি নেই। বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা জমিটা মূল মালিকদের ফিরিয়ে দেয়ার সুযোগ আইনে নেই। তবে অধিগ্রহণ করা অব্যবহৃত জমি নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন অথবা বনায়ন করে কাজে লাগানো যেতে পারে।’

সম্মেলনে জ্বালানি সাশ্রয়ের কথা কারও বক্তব্যে শোনা যায়নি বলে মন্তব্য করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানি খাতকে সমৃদ্ধ করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও স্বচ্ছতাসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিগত সরকারের রেখে যাওয়া অসম চুক্তি ও অস্বাভাবিক ঋণের বোঝা অন্তর্বর্তী সরকারকে টানতে হচ্ছে। তবে টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার কাজ করছে। এত সমস্যার মধ্যে থেকে একটা সেক্টরে সমৃদ্ধি অর্জন করা খুব বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। অনেক চুক্তি-প্রকল্পের কথা আমরা বলেছে যেগুলোর বিরোধিতা প্রথম থেকেই আমাদের ছিল।’

বিদ্যুৎ খাতে করা চুক্তি বাতিলের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ম তামিম। তিনি বলেন, ‘একটি প্রকল্প বন্ধ করতে গেলে ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিতে হবে, এটাই চুক্তি। অনেক চুক্তি দীর্ঘমেয়াদি। মেয়াদের আগে বাদ দিতে গেলেই আইনগত ঝামেলা আছে। আর্থিক জরিমানা তো আছেই।’

ম তামিম আরও বলেন, ‘বর্তমানে চলছে এখন সাত হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র। ছয় হাজার মেগাওয়াটের মতো বড় কেন্দ্র বসিয়ে রেখে কেন্দ্রভাড়া দিতে হচ্ছে। এটা কি বাদ দেয়া যাবে? গরমের সময় তো এগুলো লাগবে। সত্যিকার পরিকল্পনা করে এ খাত এগোয়নি। তাই রূপান্তরের ক্ষেত্রে সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। দক্ষতা উন্নয়ন ও সাশ্রয়ে গুরুত্ব কম। এখানে মনোযোগ দিতে হবে।’

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘জ্বালানি খাতে আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৪০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। শুরুতে ১০টির জন্য দরপত্র ডাকা হচ্ছে। ধাপে ধাপে বাকিগুলোর দরপত্র আহ্বান করা হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সমন্বিত মহাপরিকল্পনা নতুন করে তৈরি হবে। এ ছাড়া দেশে সৌরবিদ্যুৎ যন্ত্রপাতি তৈরির কারখানা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা উন্নয়নকর্মীরা উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে ধরেন। তারা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সুন্দরবনের ক্ষতি হচ্ছে। এ কেন্দ্রের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি আছে। তাহলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাঁচতে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে কিনা? বিকল্প থাকার পরও এ প্রকল্পের রাস্তা তৈরি করতে বেশ কিছু পরিবারকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন একজন। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৪ হাজার ২০০ পরিবার উচ্ছেদ করা হয়েছে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে। বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল হয়েছে। পরিবারগুলোকে জমি ফিরিয়ে দেয়া যায় কিনা, তা জানতে চান একজন।

সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিডব্লিউজিইডির সদস্যসচিব হাসান মেহেদী। সঞ্চালনা করেন কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্কের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং উপদেষ্টা বেনজীর আহমেদ ও ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যাপক ফাহমিদা হক।

রাজধানীতে শুরু হওয়া এই সম্মেলন আগামী তিনদিন চলবে। সম্মেলনে সব মিলিয়ে মোট ১২টি সেশন হবে। এতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন, পরিবেশবাদী সংগঠন, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেন।

back to top