বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বেক্সিমকো
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের কাঁচামালের সংকট এবং ব্যাংকিং জটিলতাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক অসন্তোষ এবং উৎপাদন স্থবিরতার বিষয়টি নতুন মাত্রা পেয়েছে। কাঁচামাল আমদানির জন্য ব্যাংক থেকে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) সুবিধা চালুর দাবিতে প্রতিষ্ঠানটি বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে।
এই সংবাদ সম্মেলন রাজধানীর আল রাজি কমপ্লেক্সে বেলা সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে। কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাঁচামালের অভাবে বেক্সিমকো লিমিটেডের একাধিক কারখানা লে-অফ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে।
বেক্সিমকো লিমিটেডের মানব সম্পদ উন্নয়ন ও প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, “কোম্পানির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত থাকার কারণে কোনো ব্যাংক এলসি খুলতে রাজি হচ্ছে না। আমরা চাই সরকার এ বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করুক এবং ব্যাংকিং সুবিধা সচল করুক। যদি এলসি খোলার সুযোগ মেলে, তাহলে কারখানা পুনরায় চালু করা সম্ভব হবে।”
তরিকুল ইসলাম আরও জানান, ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বেক্সিমকোর কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগেই কারখানা খুলতে এলসি চালুর বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
কাঁচামালের সংকটের পাশাপাশি বেতন না পেয়ে শ্রমিক অসন্তোষ বাড়তে থাকায় সরকার তিন মাসের বেতনের ব্যবস্থা করে দেয়। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের উপদেষ্টা পর্যায়ের কমিটি বেক্সিমকোর কারখানাগুলোকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করে কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়।
উৎপাদন সচল রাখার ক্ষেত্রে লাভজনক কারখানাগুলো চালানোর পক্ষে মত দেয় কমিটি। তবে অনেক পরিচালকের আত্মগোপন এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ থাকায় সংকট কাটছে না।
বেক্সিমকোর আওতায় থাকা ১৫টিরও বেশি ব্যবসায়িক খাত বর্তমানে সংকটের মুখে। তবে প্রতিষ্ঠানটির দুটি বড় শাখা—বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং শাইনপুকুর সিরামিকস—উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। বিশেষভাবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস দেশের পুঁজিবাজারের পাশাপাশি লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জেও তালিকাভুক্ত।
সরকারের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকোর ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের গ্রেপ্তারের পর থেকে গ্রুপটির কার্যক্রমে অস্থিরতা দেখা দেয়। ১৯৭২ সালে ভাই আহমেদ সোহেল এফ রহমানকে সঙ্গে নিয়ে সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো প্রতিষ্ঠা করেন।
সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সালমান এফ রহমান দুই মেয়াদে ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০১৯ সালে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পান।
তবে গত আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোতে অস্থিরতা বেড়ে যায়। বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি নতুন করে ২৫ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে।
বেক্সিমকোর পরিচালকদের দাবি, এলসি সুবিধা চালু হলে কারখানাগুলোর কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা সম্ভব হবে। এ লক্ষ্যে তারা সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
দেশের অর্থনীতি এবং শ্রমিকদের কর্মসংস্থান রক্ষা করতে বেক্সিমকোর কারখানাগুলো সচল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে কাঁচামালের সংকট ও ব্যাংকিং জটিলতার সমাধান ছাড়া এ সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে বেক্সিমকো এ বিষয়গুলো নিয়ে কী পরিকল্পনা প্রকাশ করে, তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে দেশের ব্যবসায়িক মহল।
বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বেক্সিমকো
বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের কাঁচামালের সংকট এবং ব্যাংকিং জটিলতাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক অসন্তোষ এবং উৎপাদন স্থবিরতার বিষয়টি নতুন মাত্রা পেয়েছে। কাঁচামাল আমদানির জন্য ব্যাংক থেকে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) সুবিধা চালুর দাবিতে প্রতিষ্ঠানটি বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে।
এই সংবাদ সম্মেলন রাজধানীর আল রাজি কমপ্লেক্সে বেলা সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে। কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাঁচামালের অভাবে বেক্সিমকো লিমিটেডের একাধিক কারখানা লে-অফ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে।
বেক্সিমকো লিমিটেডের মানব সম্পদ উন্নয়ন ও প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, “কোম্পানির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত থাকার কারণে কোনো ব্যাংক এলসি খুলতে রাজি হচ্ছে না। আমরা চাই সরকার এ বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করুক এবং ব্যাংকিং সুবিধা সচল করুক। যদি এলসি খোলার সুযোগ মেলে, তাহলে কারখানা পুনরায় চালু করা সম্ভব হবে।”
তরিকুল ইসলাম আরও জানান, ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বেক্সিমকোর কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগেই কারখানা খুলতে এলসি চালুর বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
কাঁচামালের সংকটের পাশাপাশি বেতন না পেয়ে শ্রমিক অসন্তোষ বাড়তে থাকায় সরকার তিন মাসের বেতনের ব্যবস্থা করে দেয়। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের উপদেষ্টা পর্যায়ের কমিটি বেক্সিমকোর কারখানাগুলোকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করে কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়।
উৎপাদন সচল রাখার ক্ষেত্রে লাভজনক কারখানাগুলো চালানোর পক্ষে মত দেয় কমিটি। তবে অনেক পরিচালকের আত্মগোপন এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ থাকায় সংকট কাটছে না।
বেক্সিমকোর আওতায় থাকা ১৫টিরও বেশি ব্যবসায়িক খাত বর্তমানে সংকটের মুখে। তবে প্রতিষ্ঠানটির দুটি বড় শাখা—বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং শাইনপুকুর সিরামিকস—উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। বিশেষভাবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস দেশের পুঁজিবাজারের পাশাপাশি লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জেও তালিকাভুক্ত।
সরকারের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকোর ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের গ্রেপ্তারের পর থেকে গ্রুপটির কার্যক্রমে অস্থিরতা দেখা দেয়। ১৯৭২ সালে ভাই আহমেদ সোহেল এফ রহমানকে সঙ্গে নিয়ে সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো প্রতিষ্ঠা করেন।
সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সালমান এফ রহমান দুই মেয়াদে ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০১৯ সালে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পান।
তবে গত আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোতে অস্থিরতা বেড়ে যায়। বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি নতুন করে ২৫ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে।
বেক্সিমকোর পরিচালকদের দাবি, এলসি সুবিধা চালু হলে কারখানাগুলোর কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা সম্ভব হবে। এ লক্ষ্যে তারা সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছে।
দেশের অর্থনীতি এবং শ্রমিকদের কর্মসংস্থান রক্ষা করতে বেক্সিমকোর কারখানাগুলো সচল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে কাঁচামালের সংকট ও ব্যাংকিং জটিলতার সমাধান ছাড়া এ সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে বেক্সিমকো এ বিষয়গুলো নিয়ে কী পরিকল্পনা প্রকাশ করে, তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে দেশের ব্যবসায়িক মহল।