বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, দুর্বল ব্যাংকের গ্রাহকেরা তাদের জমা টাকা ফেরত পাবেন। তবে সে জন্য সময় দিতে হবে। ধাপে ধাপে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ পরিস্থিতি নিয়ে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ফজলুল কাদের।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে উপস্থিত একজন গভর্নরের কাছে জানতে চান, দুর্বল ব্যাংকগুলোর কী হবে? সেখানে তারা যে টাকা রেখেছেন, তা ফেরত পাওয়া যাবে কি না? জবাবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে গত ১০ বছর আগে থেকে বলে আসছি এস আলমের ব্যাংকে আপনারা টাকা রাখবেন না। কিন্তু আপনারা টাকা রেখেছেন। তারা ২ শতাংশ সুদ বেশি দিয়েছে, আপনারা সেখানেই টাকা রেখেছেন, এখন ধরা খেয়েছেন।’
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘এখন আমরা আপনাদের উদ্ধার করব, কিন্তু এখনই সেটি পারা যাবে না। আমরা ধাপে ধাপে করব, সে জন্য সময় দিতে হবে। আমরা ব্যাংক রেজল্যুশন অ্যাক্টের দিকে যাচ্ছি, কিছু ব্যাংক একীভূত করতে হবে। অনেক কিছু করা যাবে, করা হবে। এ বছরই হয়তো অনেক কিছু করা হবে। এতটুকু বলতে পারি, আপনারা টাকা পান আর বন্ড পান, কিছু একটা পাবেন।’
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক বলেন, ‘বড় বড় বিনিয়োগকারীরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে এবং তাদের মধ্য থেকে বড় বড় খেলাপি হচ্ছে। তাদের জন্য আমরা হয়রান হচ্ছি। সে তুলনায় ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতারা অনেক ভালো আছে।’
টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের ক্ষেত্রে বর্তমানে বিতরণ করা ক্ষুদ্রঋণ কতটা ভূমিকা রাখছে, তা পর্যালোচনার পরামর্শ দেন পিকেএসএফের এমডি মো. ফজলুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দাবি করা হয় ৬ কোটি ৪০ লাখ ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতা আছেন। তবে একজনের একাধিক হিসাব সমন্বয় করলে এই সংখ্যা কমে যাবে।’ তার মতে, এটি তিন কোটির বেশি হবে না। সে ক্ষেত্রে আনসাসটেইনেবল ঋণ বাড়ছে কি না, তা দেখতে হবে।
ফজলুল কাদের আরও বলেন, সরকারের ২২টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এগুলোর প্রয়োজন আছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকারের ২২টা মন্ত্রণালয়ে যে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চলছে, তার যৌক্তিকতা আছে কি না, সেটা দেখা প্রয়োজন। তিনি মনে করেন, সরকারের এ ধরনের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রাহকের মধ্যে তিন লাখ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো। এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি।
এমআরএ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট বিতরণ করা ক্ষুদ্রঋণের মধ্যে এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা ঋণ ২ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক থেকে ৯৭ হাজার কোটি টাকার আমানত তুলেছে। এর মধ্যে এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ করেছে ৬৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২৪ এএমআরএ সনদপ্রাপ্ত ৭২৪টি প্রতিষ্ঠানের ২৬ হাজারের বেশি শাখা রয়েছে বলে জানানো হয়।
মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, দুর্বল ব্যাংকের গ্রাহকেরা তাদের জমা টাকা ফেরত পাবেন। তবে সে জন্য সময় দিতে হবে। ধাপে ধাপে টাকা ফেরত দেওয়া হবে। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ পরিস্থিতি নিয়ে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ফজলুল কাদের।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে উপস্থিত একজন গভর্নরের কাছে জানতে চান, দুর্বল ব্যাংকগুলোর কী হবে? সেখানে তারা যে টাকা রেখেছেন, তা ফেরত পাওয়া যাবে কি না? জবাবে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে গত ১০ বছর আগে থেকে বলে আসছি এস আলমের ব্যাংকে আপনারা টাকা রাখবেন না। কিন্তু আপনারা টাকা রেখেছেন। তারা ২ শতাংশ সুদ বেশি দিয়েছে, আপনারা সেখানেই টাকা রেখেছেন, এখন ধরা খেয়েছেন।’
আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, ‘এখন আমরা আপনাদের উদ্ধার করব, কিন্তু এখনই সেটি পারা যাবে না। আমরা ধাপে ধাপে করব, সে জন্য সময় দিতে হবে। আমরা ব্যাংক রেজল্যুশন অ্যাক্টের দিকে যাচ্ছি, কিছু ব্যাংক একীভূত করতে হবে। অনেক কিছু করা যাবে, করা হবে। এ বছরই হয়তো অনেক কিছু করা হবে। এতটুকু বলতে পারি, আপনারা টাকা পান আর বন্ড পান, কিছু একটা পাবেন।’
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক বলেন, ‘বড় বড় বিনিয়োগকারীরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে এবং তাদের মধ্য থেকে বড় বড় খেলাপি হচ্ছে। তাদের জন্য আমরা হয়রান হচ্ছি। সে তুলনায় ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতারা অনেক ভালো আছে।’
টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নের ক্ষেত্রে বর্তমানে বিতরণ করা ক্ষুদ্রঋণ কতটা ভূমিকা রাখছে, তা পর্যালোচনার পরামর্শ দেন পিকেএসএফের এমডি মো. ফজলুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দাবি করা হয় ৬ কোটি ৪০ লাখ ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতা আছেন। তবে একজনের একাধিক হিসাব সমন্বয় করলে এই সংখ্যা কমে যাবে।’ তার মতে, এটি তিন কোটির বেশি হবে না। সে ক্ষেত্রে আনসাসটেইনেবল ঋণ বাড়ছে কি না, তা দেখতে হবে।
ফজলুল কাদের আরও বলেন, সরকারের ২২টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এগুলোর প্রয়োজন আছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, সরকারের ২২টা মন্ত্রণালয়ে যে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চলছে, তার যৌক্তিকতা আছে কি না, সেটা দেখা প্রয়োজন। তিনি মনে করেন, সরকারের এ ধরনের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রাহকের মধ্যে তিন লাখ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো। এটি আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি।
এমআরএ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট বিতরণ করা ক্ষুদ্রঋণের মধ্যে এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা ঋণ ২ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক থেকে ৯৭ হাজার কোটি টাকার আমানত তুলেছে। এর মধ্যে এমআরএ সনদপ্রাপ্ত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ করেছে ৬৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২৪ এএমআরএ সনদপ্রাপ্ত ৭২৪টি প্রতিষ্ঠানের ২৬ হাজারের বেশি শাখা রয়েছে বলে জানানো হয়।