alt

অর্থ-বাণিজ্য

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিপ্লব, প্রতিদিন লেনদেন সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ব্যাংকিং সেবায় বৈপ্লবিক এক পরিবর্তন এনেছে মোবাইল ব্যাংকিং। এখন প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। কেবল টাকা পাঠানোই নয়, দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেছে মোবাইল ব্যাংকিং। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবামূল্য পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ প্রবাসী-আয় বা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন অন্যতম পছন্দের মাধ্যম। এই সেবার কারণে বেড়েছে নতুন কর্মসংস্থান।

হাতের মোবাইল ফোনই এখন ব্যাংক। এই ফোনটিই হয়ে উঠেছে এখন সব ধরনের লেনদেনের অপরিহার্য মাধ্যম। এসব লেনদেনের হিসাব খুলতে কোথাও যেতে হয় না। গ্রাহক নিজেই অনায়াসে নিজের হিসাব খুলে লেনদেন করতে পারছেন। আর এই মোবাইলে টাকা লেনদেনে বেড়েই চলেছে। হচ্ছে রেকর্ডের পর রেকর্ড। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে মোবাইলে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। প্রতিদিনের গড় হিসাবে লেনদেনের এই অঙ্ক ৫ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা।

একক মাস বা এক দিনের হিসাবে এই লেনদেন সবচেয়ে বেশি। মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) চালুর পর এত বেশি লেনদেন আর কোনো মাসেই হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক গত বুধবার মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে। আগের মাস নভেম্বরে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল যা ছিল এতদিন সর্বোচ্চ। তার আগের মাস অক্টোবরে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৫৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। আগস্টে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১ লাখ ২২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।

মোবাইল ফোনের সাহায্যে অন্যকে টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, বিভিন্ন পরিষেবা ও কেনাকাটার বিল পরিশোধ, টিকেট কেনাসহ কত সেবা যে মিলছে, তা এক দমে বলা খুবই কঠিন। সব মিলিয়ে বিকাশ, রকেট, নগদ ও উপায়ের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে আর্থিক স্বাধীনতা ও স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে।

২০২৪ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইলে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয় ১ লাখ ৩০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। মার্চে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। এপ্রিল ও মে মাসে লেনদেন হয় যথাক্রমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি ও ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা। নভেম্বরে হয়েছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা। তার আগের মাস অক্টোবরে এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়। সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয় এক লাখ ৮ হাজার ৩৭৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগস্টে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।

২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ চার মাসেই (মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন) মোবাইলে লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে তা কমে লাখ কোটি টাকার নিচে, ৯৮ হাজার ৩০৬ কোটি টাকায় নেমে আসে। এরপর থেকে প্রতি মাসেই লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোবাইলে লেনদেন হয়েছিল ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এভাবেই বাংলাদেশে মোবাইলে আর্থিক সেবা বা এমএফএস ব্যবহার প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত গতিতে বাড়ছে।

মোবাইল লেনদেনে গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৮। নভেম্বরে সেই গ্রাহক সাড়ে ৩ গুণ বেড়ে ২৩ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার ১৫৩ তে দাঁড়িয়েছে। নভেম্বরে ছিল ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ১২ হাজার ৫১৫। অক্টোবর মাসে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ২৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪ হাজার ৭১৩। সেপ্টেম্বরে ছিল ২৩ কোটি ৩৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫২৩।

একজন গ্রাহক একাধিক এমএফএস সেবায় হিসাব খুলতে পারেন। খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে ঠিক কত নাগরিক এমএফএসের আওতায় এসেছেন, তা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রতিটি পরিবারেই সেবাটি পৌঁছে গেছে, এটা বলা যায়।

বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ। বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করে। পরে এটির নাম বদলে হয় রকেট। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমএফএস সেবা চালু করে বিকাশ। পরবর্তী সময়ে আরও অনেক ব্যাংক এ সেবায় এসেছে। তবে খুব সুবিধা করতে পারেনি। বর্তমানে বিকাশ, রকেটের পাশাপাশি মাই ক্যাশ, এম ক্যাশ, উপায়, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। এর বাইরে ডাক বিভাগের নগদও দিচ্ছে এই সেবা।

এখন মোবাইল ব্যাংকিং শুধু টাকা পাঠানোর মাধ্যম না। এর ব্যবহার হচ্ছে সব ধরনের লেনদেনে। বিশেষ করে পরিষেবা বিল পরিশোধ, স্কুলের বেতন, কেনাকাটা, সরকারি ভাতা, টিকিট ক্রয়, বিমার প্রিমিয়াম পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ ও অনুদান প্রদানের অন্যতম মাধ্যম।

ছবি

মার্চে প্রবাসী আয় নতুন রেকর্ড সৃষ্টি, ৩০০ কোটি ডলারের পথে

ছবি

পার্বত্য অঞ্চলে অর্ধশতাধিক টাওয়ার বন্ধ, চাঁদাবাজির অভিযোগ রবির

এলডিসি উত্তরণের কর্মকৌশল বাস্তবায়নে ছয় সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন

ছবি

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নতুন এমডি শাফিউজ্জামান

স্টার্টআপ কোম্পানিকে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ

ছবি

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন সীমা বাড়লো

মজুত বাড়াতে ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার টন চাল কিনবে সরকার

ঋণখেলাপির নতুন নীতিমালা বাস্তবায়ন পেছানোর দাবি ব্যবসায়ীদের

ছবি

আইপিও আবেদনে বিনিয়োগের শর্ত তুলে নেয়ার সুপারিশ

ছবি

রেমিট্যান্সে রেকর্ড, একক মাস হিসেবে ইতিহাসের সর্বোচ্চ মার্চে

ছবি

রমজানের প্রথমার্ধে বিকাশে ৯০০ কোটি টাকারও বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা

ছবি

বিনিয়োগ সম্মেলনে ঢাকায় আসবে জারা, স্যামসাং, মেটা, উবার, টেলিনর, টয়োটাসহ বড় বড় ব্র্যান্ড

ছবি

২৪ দিনে এল ২৭০ কোটি ডলার প্রবাসী আয়

৪০৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে মোংলা বন্দরের উন্নয়নে চীনের সঙ্গে চুক্তি

ডিভিডেন্ড বিতরণের শর্ত শিথিলতার দাবি

ছবি

ক্রেডিট কার্ডের তথ্য ১০ তারিখের মধ্যে দিতে নির্দেশ

মেগা নয়, কর্মসংস্থানের প্রকল্প নেয়া হবে: অর্থ উপদেষ্টা

মাতারবাড়ীসহ দুই প্রকল্পে ৫৮ কোটি ডলার দেবে জাপান

ছবি

আসছে আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ফেরত পাবে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা

ছবি

ব্যাংক দেউলিয়া হলে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা ফেরত পাবেন আমানতকারীরা

ছবি

ইএসকিউআর অ্যাওয়ার্ড পেলো বিসিপিসিএল

ছবি

বিনিয়োগে ভয় না পেতে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ অর্থ উপদেষ্টার

ছবি

সমন্বয় করে অতিরিক্ত ছুটি নিতে পারবেন পোশাককর্মীরা

ছবি

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন নিয়ে না ভেবে বাংলাদেশের প্রকৃত উন্নয়ন করতে হবে: লুৎফে সিদ্দিকী

ছবি

নতুন নোট রাখার জায়গা না থাকলে ব্যাংক থেকে তুলে নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ছবি

বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে চাপ বেড়েছে

ছবি

শেয়ারবাজারে উত্থান, লেনদেন ৩০০ কোটি টাকার ঘরে

ছবি

এক হাজার কোটি টাকা ব্যাংকঋণ নিলে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি বাধ্যতামূলক

ছবি

ঈদে ৯ দিন ব্যাংক বন্ধ, এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখার নির্দেশ

ছবি

৯০ দিনের মধ্যে দেশে স্টারলিংকের সেবা চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

টাকা ছাপিয়েও ব্যাংক রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

ছবি

ফেব্রুয়ারিতে এলসি খোলা ও নিষ্পত্তি বেড়েছে

ছবি

সূচকের উত্থানে লেনদেন ছাড়ালো ৫০৪ কোটি

ভারত থেকে এলো সাড়ে ১১ হাজার টন চাল

বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমেছে, কিন্তু অসমতা বেড়েছে: সেলিম জাহান

টানা ৯ দিন বন্ধ থাকবে শেয়ারবাজারের লেনদেন

tab

অর্থ-বাণিজ্য

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বিপ্লব, প্রতিদিন লেনদেন সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ব্যাংকিং সেবায় বৈপ্লবিক এক পরিবর্তন এনেছে মোবাইল ব্যাংকিং। এখন প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। কেবল টাকা পাঠানোই নয়, দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেছে মোবাইল ব্যাংকিং। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবামূল্য পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ প্রবাসী-আয় বা রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন অন্যতম পছন্দের মাধ্যম। এই সেবার কারণে বেড়েছে নতুন কর্মসংস্থান।

হাতের মোবাইল ফোনই এখন ব্যাংক। এই ফোনটিই হয়ে উঠেছে এখন সব ধরনের লেনদেনের অপরিহার্য মাধ্যম। এসব লেনদেনের হিসাব খুলতে কোথাও যেতে হয় না। গ্রাহক নিজেই অনায়াসে নিজের হিসাব খুলে লেনদেন করতে পারছেন। আর এই মোবাইলে টাকা লেনদেনে বেড়েই চলেছে। হচ্ছে রেকর্ডের পর রেকর্ড। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে মোবাইলে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। প্রতিদিনের গড় হিসাবে লেনদেনের এই অঙ্ক ৫ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা।

একক মাস বা এক দিনের হিসাবে এই লেনদেন সবচেয়ে বেশি। মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) চালুর পর এত বেশি লেনদেন আর কোনো মাসেই হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক গত বুধবার মোবাইলে আর্থিক লেনদেনের হালনাগাদ এই তথ্য প্রকাশ করেছে। আগের মাস নভেম্বরে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল যা ছিল এতদিন সর্বোচ্চ। তার আগের মাস অক্টোবরে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮৫৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল। আগস্টে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১ লাখ ২২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।

মোবাইল ফোনের সাহায্যে অন্যকে টাকা পাঠানো, মোবাইল রিচার্জ, বিভিন্ন পরিষেবা ও কেনাকাটার বিল পরিশোধ, টিকেট কেনাসহ কত সেবা যে মিলছে, তা এক দমে বলা খুবই কঠিন। সব মিলিয়ে বিকাশ, রকেট, নগদ ও উপায়ের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে আর্থিক স্বাধীনতা ও স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে।

২০২৪ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে মোবাইলে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ২৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয় ১ লাখ ৩০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা। মার্চে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। এপ্রিল ও মে মাসে লেনদেন হয় যথাক্রমে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি ও ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ সালের শেষ মাস ডিসেম্বরে লেনদেনের অঙ্ক ছিল ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা। নভেম্বরে হয়েছিল ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা। তার আগের মাস অক্টোবরে এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়। সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয় এক লাখ ৮ হাজার ৩৭৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগস্টে লেনদেনের অঙ্ক ছিল এক লাখ ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।

২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ চার মাসেই (মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন) মোবাইলে লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে তা কমে লাখ কোটি টাকার নিচে, ৯৮ হাজার ৩০৬ কোটি টাকায় নেমে আসে। এরপর থেকে প্রতি মাসেই লাখ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোবাইলে লেনদেন হয়েছিল ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এভাবেই বাংলাদেশে মোবাইলে আর্থিক সেবা বা এমএফএস ব্যবহার প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত গতিতে বাড়ছে।

মোবাইল লেনদেনে গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোট গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৬৮। নভেম্বরে সেই গ্রাহক সাড়ে ৩ গুণ বেড়ে ২৩ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার ১৫৩ তে দাঁড়িয়েছে। নভেম্বরে ছিল ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ১২ হাজার ৫১৫। অক্টোবর মাসে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ২৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪ হাজার ৭১৩। সেপ্টেম্বরে ছিল ২৩ কোটি ৩৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫২৩।

একজন গ্রাহক একাধিক এমএফএস সেবায় হিসাব খুলতে পারেন। খাত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে ঠিক কত নাগরিক এমএফএসের আওতায় এসেছেন, তা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রতিটি পরিবারেই সেবাটি পৌঁছে গেছে, এটা বলা যায়।

বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের ৩১ মার্চ। বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করে। পরে এটির নাম বদলে হয় রকেট। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমএফএস সেবা চালু করে বিকাশ। পরবর্তী সময়ে আরও অনেক ব্যাংক এ সেবায় এসেছে। তবে খুব সুবিধা করতে পারেনি। বর্তমানে বিকাশ, রকেটের পাশাপাশি মাই ক্যাশ, এম ক্যাশ, উপায়, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে। এর বাইরে ডাক বিভাগের নগদও দিচ্ছে এই সেবা।

এখন মোবাইল ব্যাংকিং শুধু টাকা পাঠানোর মাধ্যম না। এর ব্যবহার হচ্ছে সব ধরনের লেনদেনে। বিশেষ করে পরিষেবা বিল পরিশোধ, স্কুলের বেতন, কেনাকাটা, সরকারি ভাতা, টিকিট ক্রয়, বিমার প্রিমিয়াম পরিশোধ, মোবাইল রিচার্জ ও অনুদান প্রদানের অন্যতম মাধ্যম।

back to top