alt

অর্থ-বাণিজ্য

রেমিটেন্সে ভর করে বাড়ছে রিজার্ভ

গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় থাকা প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাহে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। ফেব্রুয়ারির ১৫ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৩১ কোটি ২২ লাখ (১.৩১ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স এসেছে দেশে। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১৬ হাজার ৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার রেমিটেন্সের সাপ্তাহিক যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, নতুন বছরের দ্বিতীয় মাস এবং ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের অষ্টম মাস ফেব্রুয়ারির ১৫ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৩১ কোটি ২২ লাখ (১.৩১ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।

বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১২২ টাকা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১৬ হাজার ৯ কোটি টাকা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছে ৮ কোটি ৭৫ লাখ ডলার, টাকার অঙ্কে যা ১ হাজার ৬৭ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনে। মাসের বাকি ১৩ দিনে (১৬ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি) এই হারে এলে মাস শেষে রেমিটেন্সের অঙ্ক ২৪৫ কোটি (২.৪৫বিলিয়ন) গিয়ে ঠেকবে।

আর এই রেমিটেন্সের ওপর ভর করে অর্থনীতির উদ্বেগজনক সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ বেশ খানিকটা বেড়েছে। গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার।

রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়। ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ (২.১৮ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছে ৭ কোটি ৪ লাখ ডলার, টাকার অঙ্কে ছিল ৮৬০ কোটি টাকা।

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৬৪ কোটি (২.৬৪ বিলিয়ন) ডলার দেশে এসেছিল। টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৩২ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছিল ৮ কোটি ৫১ লাখ ডলার, টাকার অঙ্কে এক হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ (২.৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তৃতীয় সর্বোচ্চ এসেছিল গত জুন মাসে, ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ (২.৫৪ বিলিয়ন) ডলার।

চলতি অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ (১.৯১ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। দ্বিতীয় মাস আগস্টে পাঠান ২২২ কোটি ৪১ লাখ (২.২২ বিলিয়ন) ডলার। তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে এসেছিল ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ (২.৪০ বিলিয়ন) ডলার। চতুর্থ মাস অক্টোবরে আসে ২৩৯ কোটি ৫১ লাখ (২.৩৯ বিলিয়ন) ডলার। পঞ্চম মাস নভেম্বরে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ (২ বিলিয়ন) ডলার।

অর্থ বছরের সাত মাসের (জুলাই-জানুয়ারি) হিসাবে এক হাজার ৫৯৬ কোটি ৭১ লাখ (১৫.৯৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স এসেছে দেশে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৩ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের সাড়ে সাত মাসে (২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি) ১৭ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ১ হাজার ২৯৬ কোটি ৪২ লাখ (১২.৯৬ বিলিয়ন) ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল দেশে। পুরো অর্থবছরে (জুলাই-জুন) এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রেমিটেন্স এসেছিল ২২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে এসেছিল ২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থ বছরে আসে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা ছিল অর্থবছরের হিসাবে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসেছিল ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতা, মৃত্যু, ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ, মামলা, গ্রেপ্তার ও প্রবাসীদের উৎকণ্ঠার প্রেক্ষাপটে জুলাই মাসে রেমিটেন্স কমেছিল। চলতি অর্থ বছরের সাত মাসের (জুলাই-জানুয়ারি) মধ্যে কেবল জুলাই মাসেই ২ বিলিয়ন ডলারের কম রেমিটেন্স এসেছিল। পরের ছয় মাসেই (আগস্ট-জানুয়ারি) ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা ছয় মাস ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স কখনই আসেনি।

জুলাইয়ের আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার জন্য সরকারকে দায়ী করে দেশে রেমিটেন্স না পাঠাতে সোশাল মিডিয়ায় কেউ কেউ প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। ১৯ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকিং কার্যক্রম চলে মাত্র এক দিন। শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তা নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই রাত থেকে কারফিউ জারি করে বিদায়ী সরকার। এরপর ২৩ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যাংকের অনলাইন লেনদেনও বন্ধ ছিল। কয়েক দিন লেনদেন বন্ধের পর ২৪ জুলাই ব্যাংক চালু হয়। ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ১৯ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই বৈধ পথে তথা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে কোনও প্রবাসী আয় আসেনি।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের পর রেমিটেন্স প্রবাহে আরও ধীরগতি লক্ষ্য করা যায়। ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যাত্রা শুরু হয় অন্তর্বর্তী সরকারের, রেমিটেন্স প্রবাহেও গতি ফেরে।

দেশে দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি মুদ্রার সঙ্কট চলছে। কোভিড মহামারীর সময়ে আমদানি তলানিতে নামায় একপর্যায়ে দেশে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ব বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানি খরচ অনেক বেড়ে যায়। একইসাথে প্রবাসী আয় ও রপ্তানিতে যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি না হওয়ায় রিজার্ভ দ্রুত কমতে থাকে। সঙ্কট কাটাতে ও রিজার্ভ বাড়াতে প্রবাসী আয়সহ বিদেশ থেকে অর্থ আনতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত কয়েক মাসে এসব পদক্ষেপের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে এই সূচকে। রিজার্ভের প্রধান উৎস হচ্ছে রপ্তানি আয়। এই সূচকও ঊর্ধ্বমুখী। আর তাতে রিজার্ভও বাড়ছে।

গত ৯ জানুয়ারি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের ১ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। আকুর দেনা শোধের আগে ৮ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। গ্রস হিসাবে ছিল ২৬ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।

এক সপ্তাহ পর ১৫ জানুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার; গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। পরের সপ্তাহে (২২ জানুয়ারি) বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে ১৯ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। গ্রস হিসাবে যা ২৫ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। ২৯ জানুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার; গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার; গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার।

সবশেষ গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক যে ‘উইকলি সিলেক্টেড ইকোনমিক ইন্ডিকেটরস’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে ২০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার।

তবে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ ফের কমে আসবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। রমজান মাস সামনে রেখে আমদানি বেড়েছে। সে কারণে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আকুর বিল বেশি হবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। প্রতি সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ‘সিলেক্টেড ইকোনমিক ইন্ডিকেটরস’ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে রিজার্ভ, রেমিটেন্স রপ্তানি আয়সহ অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর হালনাগাদ তথ্য থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বিপিএম-৬ হিসাবের রিজার্ভকে তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ হিসেবে দাবি করে। সবশেষ গত ডিসেম্বর মাসের আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, ওই মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৬ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে ২০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুদ থাকতে হয়।

আকু হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যকার একটি আন্তঃআঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এশিয়ার ৯টি দেশের মধ্যে যেসব আমদানি-রপ্তানি হয়, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে তা প্রতি দুই মাস পরপর নিষ্পত্তি হয়। অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন হয়। আকুর সদস্য দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। তবে দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সম্প্রতি এ ব্যবস্থা থেকে বাদ পড়ে শ্রীলঙ্কা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থ বছরের প্রথম সাত মাসে অর্থাৎ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে মোট ২ হাজার ৮৯৬ কোটি ৯৫ লাখ (প্রায় ২৯ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি।

ছবি

অর্থনীতির এত সমস্যা একসঙ্গে অন্য কোথাও হয়নি: গভর্নর আহসান এইচ মনসুর

ছবি

শনিবার ঢাকায় জাকাত মেলা শুরু

ছবি

সূচক-লেনদেন দুটোই বেড়েছে শেয়ারবাজারে

৬ মাসে রপ্তানি করা যাবে ২৫ হাজার টন সুগন্ধি চাল

জ্বালানি চাহিদা মেটানো কঠিন তবে চেষ্টা করছে সরকার: বাণিজ্য উপদেষ্টা

এস আলমের ব্যাংক হিসাবে ২ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা জমার তথ্য

সুপারশপে প্রত্যাহার, বিস্কুটে বাড়তি ভ্যাট কমাতে পারে সরকার

চলতি বছর শীর্ষ তুলা আমদানিকারক দেশ হতে পারে বাংলাদেশ

ছবি

২ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পেয়েছে এনবিআর

ছবি

সিন্ডিকেট ঠেকাতে অনুসন্ধানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ছবি

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ

সাড়ে সাত মাসে রিটার্ন দিল মাত্র ১৩ হাজার কোম্পানি

পতনে শেয়ারবাজার, কমেছে লেনদেন

এডিবির অর্থায়ন বেড়ে হবে ৩৬ বিলিয়ন, পাবে বাংলাদেশও

‘শক্তিশালী অর্থনীতির জন্য বন্ড মার্কেটের ভূমিকা অনস্বীকার্য’

ছবি

৭ মাসে ভারতে রপ্তানি ১৫ শতাংশ বেড়ে বিলিয়ন ডলার ছাড়ালো

আমদানি-রপ্তানি সহজ করতে সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেমে ব্যাপক সাড়া

ছবি

হুয়াওয়ে সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৫ বাংলাদেশের ক্যাম্পাস রোডশো শুরু

ছবি

সর্বজনীন পেনশনে আগ্রহী নয় ৯৯ শতাংশ পোশাকশ্রমিক: জরিপ

গ্যাসের দাম বাড়লে একটার পর একটা কারখানা বন্ধ হবে: বিটিএমএ

উপজেলার ব্যবসায়ীদের করজালে আনার সুপারিশ

২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাজেট প্রস্তাবনা চেয়েছে এনবিআর

ছবি

আমানত-ঋণ বিতরণ বেড়েছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে

ছবি

বাড়ছে ব্যাংকের আমানত, কমছে মানুষের হাতে থাকা টাকার পরিমাণ

ছবি

বসুন্ধরা চেয়ারম্যান পরিবারের বিদেশি বিনিয়োগ অবরুদ্ধ, দুবাইয়ে ফ্ল্যাট জব্দ

বেক্সিমকোর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করবে সরকার

ঈদে আসছে ৫, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোট অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

সূচকের সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনও

ছবি

রিটার্ন জমা পড়লো প্রায় ৩৮ লাখ

ছবি

আইএমএফের ঋণ পেতে সরকার মরিয়া নয়: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

জুনে একসঙ্গে আসতে পারে আইএমএফ ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি: উপদেষ্টা

ছবি

দীর্ঘমেয়াদে সংকোচনমূলক অবস্থান এবং উচ্চ নীতি সুদ হার প্রবৃদ্ধি ব্যাহত করবে: ডিসিসিআই

শর্তজুড়ে ভোজ্যতেল বিক্রি করলে কঠোর শাস্তি: ভোক্তার ডিজি

ছবি

এমবিএল রেইনবো অ্যাপে যুক্ত হলো আরও নতুন পরিষেবা

ছবি

নগদ প্রশাসকের ওপর হামলায় নিন্দা জানিয়েছে এবিবি

ছবি

ফের পতনে শেয়ারবাজার

tab

অর্থ-বাণিজ্য

রেমিটেন্সে ভর করে বাড়ছে রিজার্ভ

গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় থাকা প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স প্রবাহে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। ফেব্রুয়ারির ১৫ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৩১ কোটি ২২ লাখ (১.৩১ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স এসেছে দেশে। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১৬ হাজার ৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার রেমিটেন্সের সাপ্তাহিক যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, নতুন বছরের দ্বিতীয় মাস এবং ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের অষ্টম মাস ফেব্রুয়ারির ১৫ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৩১ কোটি ২২ লাখ (১.৩১ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।

বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ১২২ টাকা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১৬ হাজার ৯ কোটি টাকা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছে ৮ কোটি ৭৫ লাখ ডলার, টাকার অঙ্কে যা ১ হাজার ৬৭ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনে। মাসের বাকি ১৩ দিনে (১৬ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি) এই হারে এলে মাস শেষে রেমিটেন্সের অঙ্ক ২৪৫ কোটি (২.৪৫বিলিয়ন) গিয়ে ঠেকবে।

আর এই রেমিটেন্সের ওপর ভর করে অর্থনীতির উদ্বেগজনক সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ বেশ খানিকটা বেড়েছে। গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার।

রিজার্ভের অন্যতম প্রধান উৎস রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়। ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ (২.১৮ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছে ৭ কোটি ৪ লাখ ডলার, টাকার অঙ্কে ছিল ৮৬০ কোটি টাকা।

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৬৪ কোটি (২.৬৪ বিলিয়ন) ডলার দেশে এসেছিল। টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৩২ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছিল ৮ কোটি ৫১ লাখ ডলার, টাকার অঙ্কে এক হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ (২.৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তৃতীয় সর্বোচ্চ এসেছিল গত জুন মাসে, ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ (২.৫৪ বিলিয়ন) ডলার।

চলতি অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ (১.৯১ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। দ্বিতীয় মাস আগস্টে পাঠান ২২২ কোটি ৪১ লাখ (২.২২ বিলিয়ন) ডলার। তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে এসেছিল ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ (২.৪০ বিলিয়ন) ডলার। চতুর্থ মাস অক্টোবরে আসে ২৩৯ কোটি ৫১ লাখ (২.৩৯ বিলিয়ন) ডলার। পঞ্চম মাস নভেম্বরে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ (২ বিলিয়ন) ডলার।

অর্থ বছরের সাত মাসের (জুলাই-জানুয়ারি) হিসাবে এক হাজার ৫৯৬ কোটি ৭১ লাখ (১৫.৯৬ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স এসেছে দেশে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৩ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের সাড়ে সাত মাসে (২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি) ১৭ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে ১ হাজার ২৯৬ কোটি ৪২ লাখ (১২.৯৬ বিলিয়ন) ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল দেশে। পুরো অর্থবছরে (জুলাই-জুন) এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রেমিটেন্স এসেছিল ২২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে এসেছিল ২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থ বছরে আসে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা ছিল অর্থবছরের হিসাবে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসেছিল ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশজুড়ে সহিংসতা, মৃত্যু, ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ, মামলা, গ্রেপ্তার ও প্রবাসীদের উৎকণ্ঠার প্রেক্ষাপটে জুলাই মাসে রেমিটেন্স কমেছিল। চলতি অর্থ বছরের সাত মাসের (জুলাই-জানুয়ারি) মধ্যে কেবল জুলাই মাসেই ২ বিলিয়ন ডলারের কম রেমিটেন্স এসেছিল। পরের ছয় মাসেই (আগস্ট-জানুয়ারি) ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা ছয় মাস ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স কখনই আসেনি।

জুলাইয়ের আন্দোলনকে ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার জন্য সরকারকে দায়ী করে দেশে রেমিটেন্স না পাঠাতে সোশাল মিডিয়ায় কেউ কেউ প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। ১৯ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকিং কার্যক্রম চলে মাত্র এক দিন। শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তা নিয়ন্ত্রণে ১৯ জুলাই রাত থেকে কারফিউ জারি করে বিদায়ী সরকার। এরপর ২৩ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যাংকের অনলাইন লেনদেনও বন্ধ ছিল। কয়েক দিন লেনদেন বন্ধের পর ২৪ জুলাই ব্যাংক চালু হয়। ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ১৯ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই বৈধ পথে তথা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে কোনও প্রবাসী আয় আসেনি।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের পর রেমিটেন্স প্রবাহে আরও ধীরগতি লক্ষ্য করা যায়। ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে যাত্রা শুরু হয় অন্তর্বর্তী সরকারের, রেমিটেন্স প্রবাহেও গতি ফেরে।

দেশে দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি মুদ্রার সঙ্কট চলছে। কোভিড মহামারীর সময়ে আমদানি তলানিতে নামায় একপর্যায়ে দেশে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ব বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানি খরচ অনেক বেড়ে যায়। একইসাথে প্রবাসী আয় ও রপ্তানিতে যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি না হওয়ায় রিজার্ভ দ্রুত কমতে থাকে। সঙ্কট কাটাতে ও রিজার্ভ বাড়াতে প্রবাসী আয়সহ বিদেশ থেকে অর্থ আনতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত কয়েক মাসে এসব পদক্ষেপের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে এই সূচকে। রিজার্ভের প্রধান উৎস হচ্ছে রপ্তানি আয়। এই সূচকও ঊর্ধ্বমুখী। আর তাতে রিজার্ভও বাড়ছে।

গত ৯ জানুয়ারি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের ১ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। আকুর দেনা শোধের আগে ৮ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন) হিসাবে বাংলাদেশের রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। গ্রস হিসাবে ছিল ২৬ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার।

এক সপ্তাহ পর ১৫ জানুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার; গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। পরের সপ্তাহে (২২ জানুয়ারি) বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে ১৯ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। গ্রস হিসাবে যা ২৫ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। ২৯ জানুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার; গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার; গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার।

সবশেষ গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক যে ‘উইকলি সিলেক্টেড ইকোনমিক ইন্ডিকেটরস’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ বেড়ে ২০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। গ্রস হিসাবে ছিল ২৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার।

তবে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ ফের কমে আসবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। রমজান মাস সামনে রেখে আমদানি বেড়েছে। সে কারণে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আকুর বিল বেশি হবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। প্রতি সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ‘সিলেক্টেড ইকোনমিক ইন্ডিকেটরস’ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে রিজার্ভ, রেমিটেন্স রপ্তানি আয়সহ অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর হালনাগাদ তথ্য থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বিপিএম-৬ হিসাবের রিজার্ভকে তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ হিসেবে দাবি করে। সবশেষ গত ডিসেম্বর মাসের আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, ওই মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৬ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে ২০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুদ থাকতে হয়।

আকু হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যকার একটি আন্তঃআঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এশিয়ার ৯টি দেশের মধ্যে যেসব আমদানি-রপ্তানি হয়, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে তা প্রতি দুই মাস পরপর নিষ্পত্তি হয়। অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন হয়। আকুর সদস্য দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। তবে দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সম্প্রতি এ ব্যবস্থা থেকে বাদ পড়ে শ্রীলঙ্কা।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থ বছরের প্রথম সাত মাসে অর্থাৎ জুলাই-জানুয়ারি সময়ে মোট ২ হাজার ৮৯৬ কোটি ৯৫ লাখ (প্রায় ২৯ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি।

back to top