alt

অর্থ-বাণিজ্য

৬ মাসে রপ্তানি করা যাবে ২৫ হাজার টন সুগন্ধি চাল

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সুগন্ধি চাল রপ্তানির সুযোগ আবার উন্মুক্ত করেছে সরকার। তবে এবার বেঁধে দেওয়া হয়েছে চাল রপ্তানির পরিমাণ ও ন্যূনতম দাম। এখন বছরে দেশ থেকে রপ্তানি করা যাবে ২৫ হাজার টন চাল। প্রতিকেজির নূন্যতম দাম হবে ১ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার। আগামী ছয় মাসের মধ্যে রপ্তানির কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য রপ্তানিকারকদের সময়সীমাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২২ জানুয়ারি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সভায় সুগন্ধি চাল রপ্তানি খুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এরপর সুগন্ধি চালের রপ্তানিমূল্য ও পরিমাণ নির্ধারণে ১১ সদস্যের একটি নতুন কমিটি করা হয়। সেই নিয়েছে এ সিদ্ধান্ত। তারা রপ্তানি উন্মুক্ত করতে সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এ কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সংগ্রহ ও সরবরাহ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দীন আহমেদ। তিনি জানান, ‘আমরা মঙ্গলবার বৈঠক করে রপ্তানি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় এখন ঠিক করে দেবে কারা কারা রপ্তানি করবে, কে কী পরিমাণে রপ্তানি করবে।’

জানা গেছে, এ কমিটি দেশে কী পরিমাণ সুগন্ধি চাল উৎপাদন হচ্ছে, এরমধ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা কত সেটি নির্ধারণ করেছে। এরপর কী পরিমাণ চাল কত দামে বিদেশে রপ্তানি করা যায় তা উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেয়। বিগত বছর দেশে ১৫ লাখ ৮০ হাজার টন চাল উৎপাদন হয়েছে বলে ওই সভায় জানায় কৃষি বিভাগ।

রপ্তানি প্রসঙ্গে প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাপার সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক বলেন, ‘দীর্ঘ অপেক্ষার পর সরকার সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে। বাপা থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিল, বছরে ৫০ হাজার টন রপ্তানি ও প্রতি কেজির রপ্তানির দর ১ দশমিক ৩০ মার্কিন ডলার নির্ধারণের জন্য। কিন্তু অনুমোদন দিয়েছে ৬ মাসের জন্য ২৫ হাজার টন ও দর দিয়েছে ১ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার। এখন চাল রপ্তানিকারকদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি অনুবিভাগে আবেদন করে কোম্পানি অনুযায়ী অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদনের সঙ্গে উল্লিখিত কিছু শর্তাবলীও পরিপালন করতে হবে।’

বাংলাদেশ থেকে ২০০৯-১০ অর্থবছরে সুগন্ধি চাল রপ্তানি শুরু হয়। ২০২২ সালে এসে প্রথমবার চাল রপ্তানি বন্ধ করা হয়, এরপর মাঝে কিছু অনুমতি দিলেও ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে সুগন্ধি চাল রপ্তানি বন্ধ করেছিল সরকার। তবে রপ্তানি শুরুর পর থেকে দ্রুত বেড়ে সুগন্ধি চাল বাংলাদেশি রপ্তানি ঝুড়িতে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য হয়ে উঠেছিল। এরপর সুগন্ধি চালের কারণে অন্যান্য কৃষিপণ্য রপ্তানিও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এরপর থেকে রপ্তানি আয় বাড়াতে দেশের ব্যবসায়ীদের দাবি ছিল, এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার।

এদিকে বাংলাদেশ থেকে চাল রপ্তানি বন্ধ থাকার সময় এ বাজার দখল করেছে ভারত। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খাদ্য পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সভায় জানান, দেশের রপ্তানি বন্ধ থাকলেও বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সুগন্ধি চাল ভারতে পাচার হচ্ছে। কারণ উৎপাদন এলাকায় চালের দাম অনেক কমে গিয়েছিল। সেসব চাল ভারত থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানির নকল প্যাকেটে এতদিন রপ্তানি হয়েছে। অর্থাৎ ভারতীয় কিছু অসাধু রপ্তানিকারক এ দেশ থেকে চাল নিয়ে তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডিং ব্যবহার করে বিদেশে রপ্তানি করছে। দেশের রপ্তানিকারকরা জানান, বিশ্বব্যাপী প্রবাসী বাংলাদেশি ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের মধ্যে সুগন্ধি চালের উল্লেখযোগ্য চাহিদা রয়েছে।

বাংলাদেশের সুগন্ধি চাল বিদেশের অনেক দেশে ব্র্যান্ড প্রোডাক্ট। এটি কখনো চালু, কখন বন্ধ করে সরকার বাংলাদেশের বাজার নষ্ট করেছে। রপ্তানি বন্ধ থাকলে সব সময় দেশে উদ্বৃত্ত সুগন্ধি চাল থেকে যায়, চাষিরা দাম পায় না। গত কয়েক বছর সেটা হয়েছে। দেশে উপলক্ষ-অনুষ্ঠান ছাড়া এ চালের চাহিদা নেই। চাল না দিতে পারলে অনেক সময় অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়ে যায়। যে কারণে মাঝখানে গত কয়েক বছর কৃষিপণ্য রপ্তানি কমেছে।

দেশ থেকে প্রথম বছর ৬৬৩ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়। পরের বছরগুলোতে রপ্তানির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ হাজার ৮৭৯ টনে উন্নীত হয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮৬ লাখ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮৫ লাখ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫১ লাখ মার্কিন ডলারের সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়েছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে গড়ে সুগন্ধি চাল উৎপাদন হয় ১৮-২০ লাখ টন। আর আগে বছরে গড়ে রপ্তানি হয়েছে ১০ হাজার টন। অর্থাৎ উৎপাদনের তুলনায় চালের রপ্তানির হিস্যা অনেক কম। যে কারণে চাল রপ্তানিতে খাদ্য নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি নেই বলে বারবার দাবি করে আসছেন রপ্তানিকারকরা। এ পর্যন্ত বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশে সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়েছে।

দেশে রপ্তানিযোগ্য সুগন্ধি চালের একটি তালিকা রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। চালগুলো হচ্ছে কালিজিরা, কালিজিরা টিপিএল-৬২, চিনিগুঁড়া, চিনি আতপ, চিনি কানাই, বাদশাভোগ, কাটারিভোগ, মদনভোগ, রাঁধুনিপাগল, বাঁশফুল, জটাবাঁশফুল, বিন্নাফুল, তুলসীমালা, তুলসী আতপ, তুলসী মণি, মধুমালা, খোরমা, সাককুর খোরমা, নুনিয়া, পশুশাইল, দুলাভোগ ইত্যাদি।

সার সংরক্ষণে চার জেলায় গোডাউন নির্মাণের সিদ্ধান্ত

ছবি

জাপানি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের বৈঠক

চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনতে চুক্তির অনুমোদন

এনবিআরের আইভাসে নতুন ১৭২৩ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন

রমজানের আগে ৯ ভোগ্যপণ্যের আমদানি বেড়েছে

ছবি

পাচার হওয়া অর্থ ফেরানো যেন রাজনৈতিক কারণে থেমে না যায়: গভর্নর

ছবি

পাঁচ বছরে সবনিম্ন অবস্থায় দেশের বিনিয়োগ

ছবি

অর্থনীতির এত সমস্যা একসঙ্গে অন্য কোথাও হয়নি: গভর্নর আহসান এইচ মনসুর

ছবি

শনিবার ঢাকায় জাকাত মেলা শুরু

ছবি

সূচক-লেনদেন দুটোই বেড়েছে শেয়ারবাজারে

জ্বালানি চাহিদা মেটানো কঠিন তবে চেষ্টা করছে সরকার: বাণিজ্য উপদেষ্টা

এস আলমের ব্যাংক হিসাবে ২ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা জমার তথ্য

সুপারশপে প্রত্যাহার, বিস্কুটে বাড়তি ভ্যাট কমাতে পারে সরকার

চলতি বছর শীর্ষ তুলা আমদানিকারক দেশ হতে পারে বাংলাদেশ

ছবি

২ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পেয়েছে এনবিআর

ছবি

সিন্ডিকেট ঠেকাতে অনুসন্ধানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ছবি

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ

সাড়ে সাত মাসে রিটার্ন দিল মাত্র ১৩ হাজার কোম্পানি

পতনে শেয়ারবাজার, কমেছে লেনদেন

এডিবির অর্থায়ন বেড়ে হবে ৩৬ বিলিয়ন, পাবে বাংলাদেশও

‘শক্তিশালী অর্থনীতির জন্য বন্ড মার্কেটের ভূমিকা অনস্বীকার্য’

ছবি

৭ মাসে ভারতে রপ্তানি ১৫ শতাংশ বেড়ে বিলিয়ন ডলার ছাড়ালো

আমদানি-রপ্তানি সহজ করতে সিঙ্গেল উইন্ডো সিস্টেমে ব্যাপক সাড়া

ছবি

হুয়াওয়ে সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২৫ বাংলাদেশের ক্যাম্পাস রোডশো শুরু

ছবি

সর্বজনীন পেনশনে আগ্রহী নয় ৯৯ শতাংশ পোশাকশ্রমিক: জরিপ

গ্যাসের দাম বাড়লে একটার পর একটা কারখানা বন্ধ হবে: বিটিএমএ

উপজেলার ব্যবসায়ীদের করজালে আনার সুপারিশ

২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাজেট প্রস্তাবনা চেয়েছে এনবিআর

ছবি

আমানত-ঋণ বিতরণ বেড়েছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে

ছবি

বাড়ছে ব্যাংকের আমানত, কমছে মানুষের হাতে থাকা টাকার পরিমাণ

ছবি

বসুন্ধরা চেয়ারম্যান পরিবারের বিদেশি বিনিয়োগ অবরুদ্ধ, দুবাইয়ে ফ্ল্যাট জব্দ

বেক্সিমকোর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করবে সরকার

ঈদে আসছে ৫, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোট অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

সূচকের সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনও

ছবি

রিটার্ন জমা পড়লো প্রায় ৩৮ লাখ

ছবি

রেমিটেন্সে ভর করে বাড়ছে রিজার্ভ

tab

অর্থ-বাণিজ্য

৬ মাসে রপ্তানি করা যাবে ২৫ হাজার টন সুগন্ধি চাল

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সুগন্ধি চাল রপ্তানির সুযোগ আবার উন্মুক্ত করেছে সরকার। তবে এবার বেঁধে দেওয়া হয়েছে চাল রপ্তানির পরিমাণ ও ন্যূনতম দাম। এখন বছরে দেশ থেকে রপ্তানি করা যাবে ২৫ হাজার টন চাল। প্রতিকেজির নূন্যতম দাম হবে ১ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার। আগামী ছয় মাসের মধ্যে রপ্তানির কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য রপ্তানিকারকদের সময়সীমাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ২২ জানুয়ারি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সভায় সুগন্ধি চাল রপ্তানি খুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এরপর সুগন্ধি চালের রপ্তানিমূল্য ও পরিমাণ নির্ধারণে ১১ সদস্যের একটি নতুন কমিটি করা হয়। সেই নিয়েছে এ সিদ্ধান্ত। তারা রপ্তানি উন্মুক্ত করতে সুপারিশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এ কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সংগ্রহ ও সরবরাহ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দীন আহমেদ। তিনি জানান, ‘আমরা মঙ্গলবার বৈঠক করে রপ্তানি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় এখন ঠিক করে দেবে কারা কারা রপ্তানি করবে, কে কী পরিমাণে রপ্তানি করবে।’

জানা গেছে, এ কমিটি দেশে কী পরিমাণ সুগন্ধি চাল উৎপাদন হচ্ছে, এরমধ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা কত সেটি নির্ধারণ করেছে। এরপর কী পরিমাণ চাল কত দামে বিদেশে রপ্তানি করা যায় তা উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেয়। বিগত বছর দেশে ১৫ লাখ ৮০ হাজার টন চাল উৎপাদন হয়েছে বলে ওই সভায় জানায় কৃষি বিভাগ।

রপ্তানি প্রসঙ্গে প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাপার সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক বলেন, ‘দীর্ঘ অপেক্ষার পর সরকার সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে। বাপা থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিল, বছরে ৫০ হাজার টন রপ্তানি ও প্রতি কেজির রপ্তানির দর ১ দশমিক ৩০ মার্কিন ডলার নির্ধারণের জন্য। কিন্তু অনুমোদন দিয়েছে ৬ মাসের জন্য ২৫ হাজার টন ও দর দিয়েছে ১ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার। এখন চাল রপ্তানিকারকদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি অনুবিভাগে আবেদন করে কোম্পানি অনুযায়ী অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদনের সঙ্গে উল্লিখিত কিছু শর্তাবলীও পরিপালন করতে হবে।’

বাংলাদেশ থেকে ২০০৯-১০ অর্থবছরে সুগন্ধি চাল রপ্তানি শুরু হয়। ২০২২ সালে এসে প্রথমবার চাল রপ্তানি বন্ধ করা হয়, এরপর মাঝে কিছু অনুমতি দিলেও ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে সুগন্ধি চাল রপ্তানি বন্ধ করেছিল সরকার। তবে রপ্তানি শুরুর পর থেকে দ্রুত বেড়ে সুগন্ধি চাল বাংলাদেশি রপ্তানি ঝুড়িতে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য হয়ে উঠেছিল। এরপর সুগন্ধি চালের কারণে অন্যান্য কৃষিপণ্য রপ্তানিও বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এরপর থেকে রপ্তানি আয় বাড়াতে দেশের ব্যবসায়ীদের দাবি ছিল, এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার।

এদিকে বাংলাদেশ থেকে চাল রপ্তানি বন্ধ থাকার সময় এ বাজার দখল করেছে ভারত। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খাদ্য পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সভায় জানান, দেশের রপ্তানি বন্ধ থাকলেও বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সুগন্ধি চাল ভারতে পাচার হচ্ছে। কারণ উৎপাদন এলাকায় চালের দাম অনেক কমে গিয়েছিল। সেসব চাল ভারত থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানির নকল প্যাকেটে এতদিন রপ্তানি হয়েছে। অর্থাৎ ভারতীয় কিছু অসাধু রপ্তানিকারক এ দেশ থেকে চাল নিয়ে তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডিং ব্যবহার করে বিদেশে রপ্তানি করছে। দেশের রপ্তানিকারকরা জানান, বিশ্বব্যাপী প্রবাসী বাংলাদেশি ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদের মধ্যে সুগন্ধি চালের উল্লেখযোগ্য চাহিদা রয়েছে।

বাংলাদেশের সুগন্ধি চাল বিদেশের অনেক দেশে ব্র্যান্ড প্রোডাক্ট। এটি কখনো চালু, কখন বন্ধ করে সরকার বাংলাদেশের বাজার নষ্ট করেছে। রপ্তানি বন্ধ থাকলে সব সময় দেশে উদ্বৃত্ত সুগন্ধি চাল থেকে যায়, চাষিরা দাম পায় না। গত কয়েক বছর সেটা হয়েছে। দেশে উপলক্ষ-অনুষ্ঠান ছাড়া এ চালের চাহিদা নেই। চাল না দিতে পারলে অনেক সময় অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়ে যায়। যে কারণে মাঝখানে গত কয়েক বছর কৃষিপণ্য রপ্তানি কমেছে।

দেশ থেকে প্রথম বছর ৬৬৩ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়। পরের বছরগুলোতে রপ্তানির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ হাজার ৮৭৯ টনে উন্নীত হয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮৬ লাখ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮৫ লাখ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫১ লাখ মার্কিন ডলারের সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়েছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে গড়ে সুগন্ধি চাল উৎপাদন হয় ১৮-২০ লাখ টন। আর আগে বছরে গড়ে রপ্তানি হয়েছে ১০ হাজার টন। অর্থাৎ উৎপাদনের তুলনায় চালের রপ্তানির হিস্যা অনেক কম। যে কারণে চাল রপ্তানিতে খাদ্য নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি নেই বলে বারবার দাবি করে আসছেন রপ্তানিকারকরা। এ পর্যন্ত বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশে সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়েছে।

দেশে রপ্তানিযোগ্য সুগন্ধি চালের একটি তালিকা রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। চালগুলো হচ্ছে কালিজিরা, কালিজিরা টিপিএল-৬২, চিনিগুঁড়া, চিনি আতপ, চিনি কানাই, বাদশাভোগ, কাটারিভোগ, মদনভোগ, রাঁধুনিপাগল, বাঁশফুল, জটাবাঁশফুল, বিন্নাফুল, তুলসীমালা, তুলসী আতপ, তুলসী মণি, মধুমালা, খোরমা, সাককুর খোরমা, নুনিয়া, পশুশাইল, দুলাভোগ ইত্যাদি।

back to top