পুঁজিবাজারে অনিয়ম বন্ধে কঠোর অবস্থানে থাকার অঙ্গীকার করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, “সরকার আমাদের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এখানে পাঠিয়েছে, আমরা সেই মিশন থেকে একচুলও সরব না। কোনো ধরনের অন্যায় দাবির কাছে মাথা নত করব না।”
বৃহস্পতিবার বিকেলে আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠানটিতে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। বুধবার ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে কমিশন কার্যালয় অবরুদ্ধ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে সেনা নিরাপত্তায় কমিশন সদস্যরা কার্যালয় ত্যাগ করেন।
বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি পালন করেন সংস্থার কর্মকর্তারা এবং বিকেলে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কমিশনের তিন সদস্যকে নিয়ে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকার আমাদের কাজগুলো আরও জোরদারভাবে চালিয়ে যেতে বলেছে। আমরা সেই দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি।”
সরকারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা সরকারের সঙ্গেই কথা বলেছি।”
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে থাকায় কমিশন কার্যক্রম কীভাবে চলবে? উত্তরে তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য না করে বলেন, “আমি এসব বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চাই না।”
আন্দোলনকারী কর্মকর্তারা বিভিন্ন অনিয়মের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা এ পর্যন্ত সাতটি তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। এর মধ্যে তিনটি এনফোর্সমেন্টে পাঠানো হয়েছে। এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম শেষ হলেই তদন্ত প্রতিবেদন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।”
অতীতে অনিয়মে জড়িতদের বর্তমান অচলাবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের তদন্ত ২০২৪ সাল পর্যন্ত অনিয়ম ও দুর্নীতি ঘিরে পরিচালিত হয়েছে। তদন্ত ব্যাহত করতে যাদের স্বার্থ জড়িত, তারা অবশ্যই প্রতিরোধের চেষ্টা করবে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএসইসি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা আগের পাঁচটি দাবি সংশোধন করে চারটি দাবি উপস্থাপন করেন:
১. বর্তমান কমিশনের অনতিবিলম্বে পদত্যাগ
২. সেনা সদস্যদের ডাকা এবং লাঠিচার্জের ঘটনায় কমিশনের নিঃশর্ত ক্ষমা
৩. প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপে পুঁজিবাজার বিষয়ে অভিজ্ঞ নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ
৪. রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন ও স্বতন্ত্র বিএসইসি গঠন
সংবাদ সম্মেলনে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আবুল হাসান বলেন, “দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে।”
তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ বলেন, “এটি একেবারেই মিথ্যা অভিযোগ।”
কমিশনের কমিশনার ফারজানা লালারুখ বলেন, “আমরা কর্মকর্তাদের কাজে ফেরার আহ্বান জানাচ্ছি। তারা না ফিরলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটি পরিস্থিতি বিবেচনা করেই দেখা হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা কমিশনার মহসীন চৌধুরীকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ বলে আখ্যা দেন। তার অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে তারা বলেন, “২০১৭ সালে যুগ্মসচিব পদে থাকাকালীন তিনি স্বৈরাচারী সরকারের মন্ত্রীর একান্ত সচিব ছিলেন এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোট কারচুপির কাজে সহযোগিতা করেন। এর পুরস্কার হিসেবে তিনি পদোন্নতি পান।”
এ সময় বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মিরাজ উস সুন্নাহসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএসইসির চলমান অস্থিরতা এবং কর্মবিরতি প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কমিশন একদিকে অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা বলছে, অন্যদিকে কর্মকর্তারা স্বতন্ত্র বিএসইসি গঠনের দাবি জানাচ্ছেন। এখন দেখার বিষয়, সরকার কীভাবে এই সংকটের সমাধান করবে।
বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫
পুঁজিবাজারে অনিয়ম বন্ধে কঠোর অবস্থানে থাকার অঙ্গীকার করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, “সরকার আমাদের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এখানে পাঠিয়েছে, আমরা সেই মিশন থেকে একচুলও সরব না। কোনো ধরনের অন্যায় দাবির কাছে মাথা নত করব না।”
বৃহস্পতিবার বিকেলে আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠানটিতে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। বুধবার ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে কমিশন কার্যালয় অবরুদ্ধ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে সেনা নিরাপত্তায় কমিশন সদস্যরা কার্যালয় ত্যাগ করেন।
বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি পালন করেন সংস্থার কর্মকর্তারা এবং বিকেলে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কমিশনের তিন সদস্যকে নিয়ে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকার আমাদের কাজগুলো আরও জোরদারভাবে চালিয়ে যেতে বলেছে। আমরা সেই দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি।”
সরকারের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা সরকারের সঙ্গেই কথা বলেছি।”
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে থাকায় কমিশন কার্যক্রম কীভাবে চলবে? উত্তরে তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য না করে বলেন, “আমি এসব বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চাই না।”
আন্দোলনকারী কর্মকর্তারা বিভিন্ন অনিয়মের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা এ পর্যন্ত সাতটি তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। এর মধ্যে তিনটি এনফোর্সমেন্টে পাঠানো হয়েছে। এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম শেষ হলেই তদন্ত প্রতিবেদন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।”
অতীতে অনিয়মে জড়িতদের বর্তমান অচলাবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের তদন্ত ২০২৪ সাল পর্যন্ত অনিয়ম ও দুর্নীতি ঘিরে পরিচালিত হয়েছে। তদন্ত ব্যাহত করতে যাদের স্বার্থ জড়িত, তারা অবশ্যই প্রতিরোধের চেষ্টা করবে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএসইসি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা আগের পাঁচটি দাবি সংশোধন করে চারটি দাবি উপস্থাপন করেন:
১. বর্তমান কমিশনের অনতিবিলম্বে পদত্যাগ
২. সেনা সদস্যদের ডাকা এবং লাঠিচার্জের ঘটনায় কমিশনের নিঃশর্ত ক্ষমা
৩. প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপে পুঁজিবাজার বিষয়ে অভিজ্ঞ নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ
৪. রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন ও স্বতন্ত্র বিএসইসি গঠন
সংবাদ সম্মেলনে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আবুল হাসান বলেন, “দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে।”
তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ বলেন, “এটি একেবারেই মিথ্যা অভিযোগ।”
কমিশনের কমিশনার ফারজানা লালারুখ বলেন, “আমরা কর্মকর্তাদের কাজে ফেরার আহ্বান জানাচ্ছি। তারা না ফিরলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটি পরিস্থিতি বিবেচনা করেই দেখা হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা কমিশনার মহসীন চৌধুরীকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ বলে আখ্যা দেন। তার অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে তারা বলেন, “২০১৭ সালে যুগ্মসচিব পদে থাকাকালীন তিনি স্বৈরাচারী সরকারের মন্ত্রীর একান্ত সচিব ছিলেন এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোট কারচুপির কাজে সহযোগিতা করেন। এর পুরস্কার হিসেবে তিনি পদোন্নতি পান।”
এ সময় বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব মোহাম্মদ মিরাজ উস সুন্নাহসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএসইসির চলমান অস্থিরতা এবং কর্মবিরতি প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কমিশন একদিকে অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা বলছে, অন্যদিকে কর্মকর্তারা স্বতন্ত্র বিএসইসি গঠনের দাবি জানাচ্ছেন। এখন দেখার বিষয়, সরকার কীভাবে এই সংকটের সমাধান করবে।