তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যপ্রতিষ্ঠান ৩ হাজার ৩৯১টি। এর মধ্যে সচল কারখানা পাওয়া গেছে ১ হাজার ৮৬৬টি। তার মানে বর্তমানে সংগঠনটির ৫৫ শতাংশ সদস্য কারখানা সচল রয়েছে। বাকি ৪৫ শতাংশ কারখানা উৎপাদনে নেই।
এদিকে সদস্যপ্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর নির্বাচন ও আপিল বোর্ড ঘোষণা করেছেন বিজিএমইএর বর্তমান প্রশাসক। অন্যদিকে সংগঠনটির নির্বাচনকেন্দ্রিক দুই জোট ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের নেতারা ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি ৩৫ সদস্যের প্যানেল চূড়ান্ত করার কাজ শুরু করেছেন।
বিজিএমইএর সদস্যসংখ্যা, সচল কারখানার সংখ্যা কিংবা পর্ষদ নির্বাচনের ভোটার তালিকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রশ্ন ছিল। এ কারণে গ্রহণযোগ্য ভোটার তালিকা করার দাবিও জানিয়ে আসছিল সংগঠনটির নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ফোরাম। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান প্রশাসক বিজিএমইএ সদস্যপ্রতিষ্ঠানের প্রকৃত অবস্থা জানতে নিরীক্ষা ও যাচাই কার্যক্রম শুরু করেন।
জানা যায়, বিজিএমইএর সদস্য ৩ হাজার ৩৬০টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিরীক্ষার কাজটি করে হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং। পরবর্তী সময়ে সদস্যপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে হয় ৩ হাজার ৩৯১। প্রাথমিক প্রতিবেদনে উঠে আসে, ঢাকায় ১ হাজার ৪৮২ এবং চট্টগ্রামে ৩২৪টি সচল কারখানা রয়েছে। এই কারখানাগুলো হালনাগাদ নথিপত্র দিয়ে সদস্যপদ নবায়ন করেছে। পরে আরও ৬০ কারখানা সদস্যপদ নবায়ন সম্পন্ন করে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে সচল কারখানার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৮৬৬।
গত বছর বিজিএমইএর ২০২৪-২৬ মেয়াদের পর্ষদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ২ হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ২ হাজার ৬৪ এবং চট্টগ্রামে ৪৩২ ভোটার। আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিভিন্ন অভিযোগে সভাপতি এস এম মান্নানের নেতৃত্বাধীন পর্ষদ বাতিল করে প্রশাসক বসায় অন্তর্বর্তী সরকার। সাধারণত সচল কারখানার উদ্যোক্তারাই ভোটার হন। সেই হিসাবে আগামী নির্বাচনে ভোটারসংখ্যা ৬৩২ বা তার বেশি কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
২০২৪ সালের বিজিএমইএর নির্বাচনের আগে ২ হাজার ৫৬৩ জনের প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন বোর্ড। তখন ফোরামের প্যানেল লিডার ফয়সাল সামাদ কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন ভুল বা হালনাগাদ আয়কর রিটার্ন জমা না দেওয়ার অভিযোগ এনে ৪২৯ জন ভোটারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে আবেদন করেন। সেই আপিল আংশিক মঞ্জুর করেন আপিল বোর্ড। পরে হাইকোর্টে রিট করেন ফয়সাল সামাদ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ভোটার তালিকায় থাকা ২ হাজার ৪৯৬ উদ্যোক্তার মধ্যে ১ হাজার ৬০৬ জন তাদের সদস্যপদ হালানাগাদ করেছেন। গতবারের ৮৯০ জন ভোটার এবার তাদের সদস্যপদ হালনাগাদ করেননি।
বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক দুই জোট সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম। গত ১৫ বছরে একবার ছাড়া সব মেয়াদেই সম্মিলিত পরিষদ সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়েছে। প্রভাবশালী এই জোট গত বছরের মার্চের নির্বাচনে সব কটি পদে বিজয়ী হয়। সভাপতি হন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। যদিও গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাকে আর দেখা যায়নি। তখন নির্বাচনে অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগে পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি তোলেন ফোরাম নেতারা। পরে ২০ অক্টোবর প্রশাসক হিসেবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে বসায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিসিআইসির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবালকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের নির্বাচন বোর্ড ঘোষণা করেন বিজিএমইএর প্রশাসক। বোর্ডের অন্য দুই সদস্য হলেন সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনা অংশীদার সৈয়দ আফজাল হাসান উদ্দীন ও ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ। আর নির্বাচন বোর্ডের সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন ইপিবির পরিচালক মাহমুদুল হাসান।
একই সঙ্গে এপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুরকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের আপিল বোর্ড করা হয়েছে। আপিল বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের এমডি রূপালী চৌধুরী এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব এ এন এম কুদরত-ই-খুদা।
ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ গত বছরই তাদের দলনেতা চূড়ান্ত করে। ফোরামের দলনেতা হয়েছেন রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদ হাসান খান। আর সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা হন চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল কালাম।
উভয় জোটের একাধিক নেতা জানান, বিজিএমইএর প্রশাসকের মেয়াদ শেষ হবে ১৬ জুন। এর ১৫ দিন আগে নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। ফলে মে মাসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের ভোট বিজিএমইএর কার্যালয়ের বাইরে অন্য কোথাও হবে। এমনকি নির্বাচনে সংগঠনের কর্মকর্তাদের যুক্ত না করার আলোচনা চলছে। প্রার্থী পরিচিতি সভার সংখ্যাও কমিয়ে আনতে উভয় জোটের নেতারা মোটামুটি একমত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যপ্রতিষ্ঠান ৩ হাজার ৩৯১টি। এর মধ্যে সচল কারখানা পাওয়া গেছে ১ হাজার ৮৬৬টি। তার মানে বর্তমানে সংগঠনটির ৫৫ শতাংশ সদস্য কারখানা সচল রয়েছে। বাকি ৪৫ শতাংশ কারখানা উৎপাদনে নেই।
এদিকে সদস্যপ্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর নির্বাচন ও আপিল বোর্ড ঘোষণা করেছেন বিজিএমইএর বর্তমান প্রশাসক। অন্যদিকে সংগঠনটির নির্বাচনকেন্দ্রিক দুই জোট ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের নেতারা ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি ৩৫ সদস্যের প্যানেল চূড়ান্ত করার কাজ শুরু করেছেন।
বিজিএমইএর সদস্যসংখ্যা, সচল কারখানার সংখ্যা কিংবা পর্ষদ নির্বাচনের ভোটার তালিকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রশ্ন ছিল। এ কারণে গ্রহণযোগ্য ভোটার তালিকা করার দাবিও জানিয়ে আসছিল সংগঠনটির নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ফোরাম। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান প্রশাসক বিজিএমইএ সদস্যপ্রতিষ্ঠানের প্রকৃত অবস্থা জানতে নিরীক্ষা ও যাচাই কার্যক্রম শুরু করেন।
জানা যায়, বিজিএমইএর সদস্য ৩ হাজার ৩৬০টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিরীক্ষার কাজটি করে হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোং। পরবর্তী সময়ে সদস্যপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে হয় ৩ হাজার ৩৯১। প্রাথমিক প্রতিবেদনে উঠে আসে, ঢাকায় ১ হাজার ৪৮২ এবং চট্টগ্রামে ৩২৪টি সচল কারখানা রয়েছে। এই কারখানাগুলো হালনাগাদ নথিপত্র দিয়ে সদস্যপদ নবায়ন করেছে। পরে আরও ৬০ কারখানা সদস্যপদ নবায়ন সম্পন্ন করে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে সচল কারখানার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৮৬৬।
গত বছর বিজিএমইএর ২০২৪-২৬ মেয়াদের পর্ষদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ২ হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ২ হাজার ৬৪ এবং চট্টগ্রামে ৪৩২ ভোটার। আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিভিন্ন অভিযোগে সভাপতি এস এম মান্নানের নেতৃত্বাধীন পর্ষদ বাতিল করে প্রশাসক বসায় অন্তর্বর্তী সরকার। সাধারণত সচল কারখানার উদ্যোক্তারাই ভোটার হন। সেই হিসাবে আগামী নির্বাচনে ভোটারসংখ্যা ৬৩২ বা তার বেশি কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
২০২৪ সালের বিজিএমইএর নির্বাচনের আগে ২ হাজার ৫৬৩ জনের প্রাথমিক ভোটার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন বোর্ড। তখন ফোরামের প্যানেল লিডার ফয়সাল সামাদ কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন ভুল বা হালনাগাদ আয়কর রিটার্ন জমা না দেওয়ার অভিযোগ এনে ৪২৯ জন ভোটারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে আবেদন করেন। সেই আপিল আংশিক মঞ্জুর করেন আপিল বোর্ড। পরে হাইকোর্টে রিট করেন ফয়সাল সামাদ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ভোটার তালিকায় থাকা ২ হাজার ৪৯৬ উদ্যোক্তার মধ্যে ১ হাজার ৬০৬ জন তাদের সদস্যপদ হালানাগাদ করেছেন। গতবারের ৮৯০ জন ভোটার এবার তাদের সদস্যপদ হালনাগাদ করেননি।
বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক দুই জোট সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম। গত ১৫ বছরে একবার ছাড়া সব মেয়াদেই সম্মিলিত পরিষদ সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়েছে। প্রভাবশালী এই জোট গত বছরের মার্চের নির্বাচনে সব কটি পদে বিজয়ী হয়। সভাপতি হন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। যদিও গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাকে আর দেখা যায়নি। তখন নির্বাচনে অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগে পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি তোলেন ফোরাম নেতারা। পরে ২০ অক্টোবর প্রশাসক হিসেবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে বসায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি বিসিআইসির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবালকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের নির্বাচন বোর্ড ঘোষণা করেন বিজিএমইএর প্রশাসক। বোর্ডের অন্য দুই সদস্য হলেন সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনা অংশীদার সৈয়দ আফজাল হাসান উদ্দীন ও ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ। আর নির্বাচন বোর্ডের সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন ইপিবির পরিচালক মাহমুদুল হাসান।
একই সঙ্গে এপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ নাসিম মঞ্জুরকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের আপিল বোর্ড করা হয়েছে। আপিল বোর্ডের অপর দুই সদস্য হলেন বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের এমডি রূপালী চৌধুরী এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব এ এন এম কুদরত-ই-খুদা।
ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদ গত বছরই তাদের দলনেতা চূড়ান্ত করে। ফোরামের দলনেতা হয়েছেন রাইজিং ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদ হাসান খান। আর সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা হন চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল কালাম।
উভয় জোটের একাধিক নেতা জানান, বিজিএমইএর প্রশাসকের মেয়াদ শেষ হবে ১৬ জুন। এর ১৫ দিন আগে নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে। ফলে মে মাসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের ভোট বিজিএমইএর কার্যালয়ের বাইরে অন্য কোথাও হবে। এমনকি নির্বাচনে সংগঠনের কর্মকর্তাদের যুক্ত না করার আলোচনা চলছে। প্রার্থী পরিচিতি সভার সংখ্যাও কমিয়ে আনতে উভয় জোটের নেতারা মোটামুটি একমত হয়েছেন।