alt

অর্থ-বাণিজ্য

বিএসইসির অভিযুক্ত ১৬ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে পুলিশ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : শনিবার, ০৮ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণকে অবরুদ্ধ করে রাখাসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত ১৬ কর্মকর্তাকে ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। এছাড়াও আগারগাঁও বিএসইসি ভবন এলাকাতেও পুলিশ প্রস্তুত থাকবে। শনিবার শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম আজম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মোহাম্মদ গোলাম আজম জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে পুলিশ। তাদের সন্ধান চলছে। এছাড়াও কেউ কমিশন ভবনে কাজে যোগদানের চেষ্টা করলে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য বিএসইসি ভবন এলাকাতেও আগে থেকেই প্রস্তুত থাকবে পুলিশ।

এদিকে, বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদি হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন।

এর আগে বুধবার সাইফুর রহমানকে পুনর্বহাল ও নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন করেন বিএসইসির কর্মকর্তারা। এসময় চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে প্রায় চার ঘণ্টা কার্যালয়ের ভেতরে আটকে রাখেন তারা। পরে সেনা বাহিনীর সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বিএসইসির চেয়ারম্যানসহ পুরো কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন বিএসইসির কর্মকর্তারা। ফলে দিনভর বন্ধ থাকে বিএসইসির কার্যক্রম।

বৃহস্পতিবার সকালে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও তিন কমিশনার অর্থ উপদেষ্টা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। পরে যৌথবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বিকেল ৩টার দিকে চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা কার্যালয়ে ফিরে যান। এই ঘটনার পর চেয়ারম্যানের নিরাপত্তারক্ষী বুধবারের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় আসামী করা হয়েছে বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭) নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন (৩০), সহকারী পরিচালক আব্দুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এবং কমিশনার মো. মহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখের উপস্থিতিতে কমিশনের নির্ধারিত সভাকক্ষে সভা চলাকালে অভিযুক্তরাসহ আরো কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী কমিশনের সভাকক্ষে জোরপূর্বক ও অনধিকার প্রবেশের মাধ্যমে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণকে অবরুদ্ধ করে। এরই মধ্যে পূর্ব পরিকল্পনা মতে এবং অবৈধ বাঁধা যারা সৃষ্টি করার জন্য আসামীগণ কমিশনের মূল ফটকে তালা দেয়, সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, কমিশনের লিফট বন্ধ করে দেয় এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে মারাত্মক অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গুরুতর জখমের প্রচেষ্টা করে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আসামীগণ অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে ও এসির রিমোট চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের লক্ষ্য করে ছুড়ে মারে এবং বিভিন্নভাবে পেশি শক্তির মাধ্যমে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। একই সাথে তারা কমিশনের চেয়াম্যানের একান্ত সচিব (সরকারের সিনিয়র সহকারী সচিব) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে লাঞ্চিত করে।

আসামীগণ কমিশনের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান আদেশ প্রত্যাহার এবং কমিশনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত কারণ দর্শানো আদেশ প্রত্যাহার এবং গঠিত তদন্ত কমিটি রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ না করার দাবিতে সন্ত্রাসী কায়দায় সরকারি অফিস কক্ষ ভাংচুর করে এবং সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান করে এবং প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতি সাধন করে।

এজাহারে বলা হয়, বিগত দিনের পুজিবাজারের অনিয়ম অনুসন্ধানে বিএসইসি পুঁজিবাজারে অভিজ্ঞ ৫ জনের সমন্বয়ে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর একটি অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির অনিয়ম সংক্রান্তে জড়িত চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে।

কমিশন সেই অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও রিপোর্টর সুপারিশের সূত্রে অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তারই অংশ হিসেবে কমিশনের কয়েক জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। কমিশনের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকায় কমিশন তাকে চাকুরি হতে অবসর প্রদান করা করেছে।

মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আসামীদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধান চলমান আছে এবং সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম, নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম, পরিচালক শেখ মাহবুব-উর-রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, অতিরিক্ত পরিচালক এস কে মো. লুৎফুল কবির ও যুগ্ম পরিচালক মো. রাশেদুল আলমের বিরুদ্ধে শেয়ার কেলেঙ্কারিসহ পুঁজিবাজারে লুটপাটের সহায়তা করে অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগের তাদের পাসপোর্ট বাতিল করে দেশ ত্যাগের নিষেজ্ঞা ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এরই ফলশ্রুতিতে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদেরকে অবরুদ্ধ করে বিভিন্ন অশোভন স্লোগান, অকথ্য ভাষা ব্যবহার এবং পেশি শক্তির মাধ্যমে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। এ ভীতিকর পরিস্থিতি প্রায় ৪ ঘণ্টা চলে। কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা ভয়ানক অবরুদ্ধ থাকার খবরে এবং বিএসইসি একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো প্রতিষ্ঠান হওয়ায় প্রথমে পুলিশ ও পরবর্তীতে সেনাবাহিনী বিএসইসিতে অবস্থান নিয়ে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের জিম্মি অবস্থা হতে মুক্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। বর্তমান কমিশন পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় বিএসইসি এর উপরোক্ত উশৃঙ্খল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ বর্ণিত অপরাধের মাধ্যমে পুঁজিবাজার ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

ছবি

আকুর বিল পরিশোধে রিজার্ভ ২০ বিলিয়নের নিচে

বেক্সিমকোর ২৪৫ শ্রমিককে ৮০ লাখ টাক াদেয়া হলো

ছবি

স্বর্ণের দাম আরও কমলো

ছবি

ফেব্রুয়ারিতে কমেছে অর্থনীতির গতি, পিএমআই সূচক ৬৪.৬

পোশাক ও বস্ত্রখাতের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় চান আরএমজি মালিকরা

পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বাজার তদারকিতে ভোক্তার ১৩ টিম

ছবি

শেয়ারবাজারে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে সূচক

ছবি

কর্মবিরতি প্রত্যাহার, কাজে ফিরেছেন বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

সবাইকে নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করবো : বিএসইসি চেয়ারম্যান

ছবি

বেস্ট ফিনটেক ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড পেল বিকাশ ও হুয়াওয়ে

ছয় মাসে ব্যাংক থেকে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার

শেয়ারবাজারে মূলধন কমলো ১৩ হাজার কোটি টাকা

পরিবেশবান্ধব ব্লক শতভাগ ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও হচ্ছে মাত্র ২০ ভাগ

বিজিএমইএর তফসিল ঘোষণা, নির্বাচন ২৮ মে

ছবি

৫ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম রপ্তানি ফেব্রুয়ারিতে

ছবি

শিবগঞ্জে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোবাইল কোর্ট

সেবা-কৃষি খাতে মজুরি কমেছে, অপরিবর্তিত শিল্পে

দেশি-বিদেশি সফল উদ্যোক্তাদের পুরস্কার দেবে বিডা

বেক্সিমকো শ্রমিক-কর্মচারীর পাওনা পরিশোধ শুরু আগামীকাল

বিএসইসির কমিশনকে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ, ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

আট মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দ্বিগুণ রেমিট্যান্স

ছবি

বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ:গ্রহণ কম,পরিশোধ বেশী

ছবি

অন্তত দুই বিলিয়ন ডলারের পাটপণ্য রপ্তানি করতে চায় সরকার

কর ব্যবস্থার সংস্কার হতে হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক: পলিসি এক্সচেঞ্জ

ক্রেডিট কার্ডে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা বাতিলের দাবি অ্যামচেমের

সিআইবিতে ভুল তথ্য দিলে ৫ লাখ টাকা জরিমানা

বিএসইসিতে চলমান পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান চায় স্টক ব্রোকাররা

ছবি

বিজিএমইএর সদস্য কারখানার সচল মাত্র ৫৫ শতাংশ

ছবি

বিএসইসি’র কঠোর অবস্থান, কমিশনের পদত্যাগ চায় আন্দোলনকারীরা

কমলো সিআরআর, বাড়লো ব্যাংকের ঋণ বিতরণের সুযোগ

এক ন্যাশনাল সিস্টেমেই হবে ভ্যাটের যাবতীয় কাজ : এনবিআর চেয়ারম্যান

ছবি

কাফকো থেকে ১৫৪ কোটি টাকায় ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন

ছবি

এনবিআরের সভায় এমসিসিআই নেতারা নাগরিকদের অর্থনৈতিক গতিশীলতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার

ছবি

সূচকের ওঠানামায় পুঁজিবাজারে লেনদেন

ছবি

ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার হলেন ফরিদপুরের কলেজ শিক্ষার্থী রাসেল ফকির

দুই দেশ থেকে আসবে দুই কার্গো এলএনজি, ব্যয় ১৪৯৬ কোটি টাকা

tab

অর্থ-বাণিজ্য

বিএসইসির অভিযুক্ত ১৬ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে পুলিশ

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

শনিবার, ০৮ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণকে অবরুদ্ধ করে রাখাসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত ১৬ কর্মকর্তাকে ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। এছাড়াও আগারগাঁও বিএসইসি ভবন এলাকাতেও পুলিশ প্রস্তুত থাকবে। শনিবার শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম আজম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মোহাম্মদ গোলাম আজম জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে পুলিশ। তাদের সন্ধান চলছে। এছাড়াও কেউ কমিশন ভবনে কাজে যোগদানের চেষ্টা করলে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য বিএসইসি ভবন এলাকাতেও আগে থেকেই প্রস্তুত থাকবে পুলিশ।

এদিকে, বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদি হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করেন।

এর আগে বুধবার সাইফুর রহমানকে পুনর্বহাল ও নতুন চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন করেন বিএসইসির কর্মকর্তারা। এসময় চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে প্রায় চার ঘণ্টা কার্যালয়ের ভেতরে আটকে রাখেন তারা। পরে সেনা বাহিনীর সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বিএসইসির চেয়ারম্যানসহ পুরো কমিশনারের পদত্যাগের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন বিএসইসির কর্মকর্তারা। ফলে দিনভর বন্ধ থাকে বিএসইসির কার্যক্রম।

বৃহস্পতিবার সকালে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও তিন কমিশনার অর্থ উপদেষ্টা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। পরে যৌথবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বিকেল ৩টার দিকে চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা কার্যালয়ে ফিরে যান। এই ঘটনার পর চেয়ারম্যানের নিরাপত্তারক্ষী বুধবারের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় আসামী করা হয়েছে বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম (৫৭) নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন (৩০), সহকারী পরিচালক আব্দুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে এবং কমিশনার মো. মহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখের উপস্থিতিতে কমিশনের নির্ধারিত সভাকক্ষে সভা চলাকালে অভিযুক্তরাসহ আরো কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী কমিশনের সভাকক্ষে জোরপূর্বক ও অনধিকার প্রবেশের মাধ্যমে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারগণকে অবরুদ্ধ করে। এরই মধ্যে পূর্ব পরিকল্পনা মতে এবং অবৈধ বাঁধা যারা সৃষ্টি করার জন্য আসামীগণ কমিশনের মূল ফটকে তালা দেয়, সিসি ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই, কমিশনের লিফট বন্ধ করে দেয় এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে মারাত্মক অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে গুরুতর জখমের প্রচেষ্টা করে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আসামীগণ অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে ও এসির রিমোট চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের লক্ষ্য করে ছুড়ে মারে এবং বিভিন্নভাবে পেশি শক্তির মাধ্যমে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। একই সাথে তারা কমিশনের চেয়াম্যানের একান্ত সচিব (সরকারের সিনিয়র সহকারী সচিব) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনকে লাঞ্চিত করে।

আসামীগণ কমিশনের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান আদেশ প্রত্যাহার এবং কমিশনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত কারণ দর্শানো আদেশ প্রত্যাহার এবং গঠিত তদন্ত কমিটি রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ না করার দাবিতে সন্ত্রাসী কায়দায় সরকারি অফিস কক্ষ ভাংচুর করে এবং সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান করে এবং প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতি সাধন করে।

এজাহারে বলা হয়, বিগত দিনের পুজিবাজারের অনিয়ম অনুসন্ধানে বিএসইসি পুঁজিবাজারে অভিজ্ঞ ৫ জনের সমন্বয়ে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর একটি অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির অনিয়ম সংক্রান্তে জড়িত চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে।

কমিশন সেই অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও রিপোর্টর সুপারিশের সূত্রে অনিয়মের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তারই অংশ হিসেবে কমিশনের কয়েক জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে। কমিশনের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত থাকায় কমিশন তাকে চাকুরি হতে অবসর প্রদান করা করেছে।

মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আসামীদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে বিভিন্ন বিষয়ে অনুসন্ধান চলমান আছে এবং সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম, নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম, পরিচালক শেখ মাহবুব-উর-রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক, অতিরিক্ত পরিচালক এস কে মো. লুৎফুল কবির ও যুগ্ম পরিচালক মো. রাশেদুল আলমের বিরুদ্ধে শেয়ার কেলেঙ্কারিসহ পুঁজিবাজারে লুটপাটের সহায়তা করে অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগের তাদের পাসপোর্ট বাতিল করে দেশ ত্যাগের নিষেজ্ঞা ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এরই ফলশ্রুতিতে কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনারদেরকে অবরুদ্ধ করে বিভিন্ন অশোভন স্লোগান, অকথ্য ভাষা ব্যবহার এবং পেশি শক্তির মাধ্যমে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। এ ভীতিকর পরিস্থিতি প্রায় ৪ ঘণ্টা চলে। কমিশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা ভয়ানক অবরুদ্ধ থাকার খবরে এবং বিএসইসি একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো প্রতিষ্ঠান হওয়ায় প্রথমে পুলিশ ও পরবর্তীতে সেনাবাহিনী বিএসইসিতে অবস্থান নিয়ে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের জিম্মি অবস্থা হতে মুক্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। বর্তমান কমিশন পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় বিএসইসি এর উপরোক্ত উশৃঙ্খল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ বর্ণিত অপরাধের মাধ্যমে পুঁজিবাজার ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

back to top