নতুন সপ্তাহে শেয়ারবাজার খুলতে খুলতেই সোমবার এশিয়ায় বড় ধরনের ধস হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর বৃহস্পতি ও শুক্রবারের ধারাবাহিকতায় সোমবার ও এই পতন। সেই সঙ্গে কমেছে জ্বালানি তেলের দাম।
বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, সোমবার সকালে জাপানের নিক্কি ২২৫ সূচকের পতন হয়েছে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচকের পতন হয়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। সেই সঙ্গে হংকংয়ের শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত যুক্তরাজ্যের ব্যাংক এইচএসবিসি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডেরও পতন হয়েছে। তাইওয়ান ও সিঙ্গাপুরেও শেয়ারের দাম কমেছে। তাইওয়ানে কমেছে প্রায় ১০ শতাংশ এবং সিঙ্গাপুরে কমেছে প্রায় ৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
সেই সঙ্গে বিশ্ববাজারে তেলের দামও কমেছে। ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারের ঘরে এবং ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৩ ডলারে নেমে এসেছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটের স্টক মার্কেট ফিউচার্স সূচকও অনেকটা পড়ে গেছে। অর্থাৎ সোমবার সেখানেও বাজারে লেনদেন চালু হওয়ার পর সূচকের বড় দরপতন হবে।
এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজারের মতো সোমবার ভারতের বাজারেও ধস নেমেছে। ধসের মাত্রা এত ভয়াবহ যে বাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার ২০ সেকেন্ডের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের ২০ লাখ কোটি রুপি বাজার মূলধন কমে গেছে। ভারতের শেয়ারবাজারের মূল সূচক সেনসেক্সের পতন হয়েছে ৪ হাজার পয়েন্ট। শেষ অধিবেশনের তুলনায় সূচকের পতন হয়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। সেই সঙ্গে বাজারের আরেক সূচক নিফটির পতন হয়েছে ১ হাজার পয়েন্টের বেশি।
বাজার-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের কারণেই শেয়ারবাজারে এই রক্তক্ষরণ। শুধু দালাল স্ট্রিট নয়, রক্তাক্ত হয়েছে এশিয়ার সব স্টক মার্কেটই। মার্কিন শেয়ার সূচক নাসডাক ও ডাও জোন্সেরও বড় পতন হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শুল্কনীতি ঘোষণার পরপরই।’
বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সেনসেক্সভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টাটা স্টিল (-১০%), টাটা মোটরস (-৭.৮৬%), ইনফোসিস (-৬.৯৮%), টেক মাহিন্দ্রা (-৬.৩৬%) ও এলঅ্যান্ডটি (-৬.৪৫%)। পরে অবশ্য কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাজার। বাংলাদেশ সময় বেলা একটা নাগাদ সেনসেক্সের পতনের পরিমাণ ৪ হাজার পয়েন্ট থেকে কমে ৩ হাজার ২৭৮ পয়েন্টে নেমে আসে।
সারা বিশ্ব আশঙ্কা নিয়ে অপেক্ষা করছিল, ২ এপ্রিল ট্রাম্প কী ঘোষণা দেন, তা জানতে। সেদিন ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক তো আরোপ করেছেনই তিনি, সেই সঙ্গে ভারতসহ ৬০টি দেশের পণ্যে নির্দিষ্ট হারে আরও বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই ঘোষণায় বিভিন্ন দেশ তো বটেই, আতঙ্ক ছড়িয়েছে আমেরিকার বাজারেও। এই আশঙ্কা থেকেই গত সপ্তাহের শেষ দুই দিনে সেনসেক্স ১ হাজার ২৫৩ পয়েন্ট হারিয়ে ৭৫ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে নেমে আসে।
৯ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক কার্যকর, যদিও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন খোদ মার্কিনরাই। এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে যখন সমালোচনায় মুখর গোটা বিশ্ব, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাতে বিচলিত নন, শেয়ার সূচকের পতনে পাত্তা না দিয়ে তাঁর উত্তর, ‘ওষুধে কাজ দিচ্ছে।’
শেয়ারবাজারের টালমাটাল পরিস্থিতির দায় নিতে চান না ট্রাম্প। রোববার (যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময়) এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘শেয়ারবাজারের কী হবে, আমি সেটা বলতে পারব না; কিন্তু আমাদের দেশ অনেক শক্তিশালী।’
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন না এবং করতেও চান না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তার কথায়, ‘আমি চাই না বিশ্বের কোনো শেয়ারবাজারে ধস নামুক, কোথাও কোনো ক্ষতি হোক। কিন্তু বিষয়টি হলো, কখনো কখনো কিছু জিনিস ঠিক করার জন্য ওষুধ দিতে হয়। আমি সেটাই করেছি।’
এ প্রসঙ্গে আরও একবার সাবেক জো বাইডেন সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘এত বছর ধরে অন্যান্য দেশ আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করে এসেছে। আমাদের মূর্খ নেতৃত্ব তাদের সেই আচরণ করতে দিয়েছে।’ তার সেই এক কথা: যুক্তরাষ্ট্রকে আবার ‘মহান’ বানাব।’
২ এপ্রিল বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে ১০ শতাংশ বেজলাইন বা ন্যূনতম শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। সেই সঙ্গে বিশ্বের যে ৬০ দেশ তাঁর ভাষায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সবচেয়ে খারাপ আচরণ করেছে, তাদের ওপর পৃথকভাবে শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি; সেই তালিকায় বাংলাদেশও আছে। তাদের হিসাবে যে দেশ যত শুল্ক আরোপ করছে, তাদের ওপর ঠিক তার অর্ধেক হারে শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫
নতুন সপ্তাহে শেয়ারবাজার খুলতে খুলতেই সোমবার এশিয়ায় বড় ধরনের ধস হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার পর বৃহস্পতি ও শুক্রবারের ধারাবাহিকতায় সোমবার ও এই পতন। সেই সঙ্গে কমেছে জ্বালানি তেলের দাম।
বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, সোমবার সকালে জাপানের নিক্কি ২২৫ সূচকের পতন হয়েছে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচকের পতন হয়েছে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। সেই সঙ্গে হংকংয়ের শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত যুক্তরাজ্যের ব্যাংক এইচএসবিসি ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডেরও পতন হয়েছে। তাইওয়ান ও সিঙ্গাপুরেও শেয়ারের দাম কমেছে। তাইওয়ানে কমেছে প্রায় ১০ শতাংশ এবং সিঙ্গাপুরে কমেছে প্রায় ৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
সেই সঙ্গে বিশ্ববাজারে তেলের দামও কমেছে। ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারের ঘরে এবং ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৩ ডলারে নেমে এসেছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটের স্টক মার্কেট ফিউচার্স সূচকও অনেকটা পড়ে গেছে। অর্থাৎ সোমবার সেখানেও বাজারে লেনদেন চালু হওয়ার পর সূচকের বড় দরপতন হবে।
এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজারের মতো সোমবার ভারতের বাজারেও ধস নেমেছে। ধসের মাত্রা এত ভয়াবহ যে বাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার ২০ সেকেন্ডের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের ২০ লাখ কোটি রুপি বাজার মূলধন কমে গেছে। ভারতের শেয়ারবাজারের মূল সূচক সেনসেক্সের পতন হয়েছে ৪ হাজার পয়েন্ট। শেষ অধিবেশনের তুলনায় সূচকের পতন হয়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। সেই সঙ্গে বাজারের আরেক সূচক নিফটির পতন হয়েছে ১ হাজার পয়েন্টের বেশি।
বাজার-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের কারণেই শেয়ারবাজারে এই রক্তক্ষরণ। শুধু দালাল স্ট্রিট নয়, রক্তাক্ত হয়েছে এশিয়ার সব স্টক মার্কেটই। মার্কিন শেয়ার সূচক নাসডাক ও ডাও জোন্সেরও বড় পতন হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শুল্কনীতি ঘোষণার পরপরই।’
বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সেনসেক্সভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টাটা স্টিল (-১০%), টাটা মোটরস (-৭.৮৬%), ইনফোসিস (-৬.৯৮%), টেক মাহিন্দ্রা (-৬.৩৬%) ও এলঅ্যান্ডটি (-৬.৪৫%)। পরে অবশ্য কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাজার। বাংলাদেশ সময় বেলা একটা নাগাদ সেনসেক্সের পতনের পরিমাণ ৪ হাজার পয়েন্ট থেকে কমে ৩ হাজার ২৭৮ পয়েন্টে নেমে আসে।
সারা বিশ্ব আশঙ্কা নিয়ে অপেক্ষা করছিল, ২ এপ্রিল ট্রাম্প কী ঘোষণা দেন, তা জানতে। সেদিন ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক তো আরোপ করেছেনই তিনি, সেই সঙ্গে ভারতসহ ৬০টি দেশের পণ্যে নির্দিষ্ট হারে আরও বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই ঘোষণায় বিভিন্ন দেশ তো বটেই, আতঙ্ক ছড়িয়েছে আমেরিকার বাজারেও। এই আশঙ্কা থেকেই গত সপ্তাহের শেষ দুই দিনে সেনসেক্স ১ হাজার ২৫৩ পয়েন্ট হারিয়ে ৭৫ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে নেমে আসে।
৯ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক কার্যকর, যদিও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন খোদ মার্কিনরাই। এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে যখন সমালোচনায় মুখর গোটা বিশ্ব, মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাতে বিচলিত নন, শেয়ার সূচকের পতনে পাত্তা না দিয়ে তাঁর উত্তর, ‘ওষুধে কাজ দিচ্ছে।’
শেয়ারবাজারের টালমাটাল পরিস্থিতির দায় নিতে চান না ট্রাম্প। রোববার (যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময়) এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘শেয়ারবাজারের কী হবে, আমি সেটা বলতে পারব না; কিন্তু আমাদের দেশ অনেক শক্তিশালী।’
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন না এবং করতেও চান না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তার কথায়, ‘আমি চাই না বিশ্বের কোনো শেয়ারবাজারে ধস নামুক, কোথাও কোনো ক্ষতি হোক। কিন্তু বিষয়টি হলো, কখনো কখনো কিছু জিনিস ঠিক করার জন্য ওষুধ দিতে হয়। আমি সেটাই করেছি।’
এ প্রসঙ্গে আরও একবার সাবেক জো বাইডেন সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘এত বছর ধরে অন্যান্য দেশ আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ আচরণ করে এসেছে। আমাদের মূর্খ নেতৃত্ব তাদের সেই আচরণ করতে দিয়েছে।’ তার সেই এক কথা: যুক্তরাষ্ট্রকে আবার ‘মহান’ বানাব।’
২ এপ্রিল বিশ্বের প্রায় সব দেশের পণ্যে ১০ শতাংশ বেজলাইন বা ন্যূনতম শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। সেই সঙ্গে বিশ্বের যে ৬০ দেশ তাঁর ভাষায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সবচেয়ে খারাপ আচরণ করেছে, তাদের ওপর পৃথকভাবে শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি; সেই তালিকায় বাংলাদেশও আছে। তাদের হিসাবে যে দেশ যত শুল্ক আরোপ করছে, তাদের ওপর ঠিক তার অর্ধেক হারে শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।