অনুমোদনের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ১৮টি এখনও ২০২৪ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি। এতে ব্যাংকগুলোর পর্ষদ লভ্যাংশ ঘোষণার সুপারিশও করতে পারেনি, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হলেও এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষা চলছে। ব্যাংকের গভর্নর আরব আমিরাত সফর শেষে ফিরলে অনুমোদন মিলবে বলে জানানো হয়েছে।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বিষয়টিকে ‘অস্বস্তিকর’ ও ‘বিনিয়োগবান্ধব নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এমনিতেই বাজার চাপের মধ্যে রয়েছে, তার ওপর এই বিলম্ব বাজারের অনিশ্চয়তা আরও বাড়িয়ে তুলছে। বিনিয়োগকারীরা মে মাসে ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণার জন্য অপেক্ষায় থাকেন, কারণ ব্যাংক খাতকে তারা নির্ভরযোগ্য মনে করেন।
তিনি জানান, দ্রুত সমাধানের জন্য বিষয়টি ডিএসইর মাধ্যমে বিএসইসির নজরে আনা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বলেন, অতীতেও এমন পরিস্থিতি হয়েছিল। সেই নজির দেখিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানো হয়েছে এবং তাদের সময় চাওয়ায় মন্ত্রণালয় মে মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মিলেছে, এখন সিদ্ধান্ত আসবে গভর্নর ফিরলে।
গত ৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানী আইন অনুযায়ী সরকারের পরামর্শক্রমে ৩১ মে ২০২৫ পর্যন্ত তফসিলি ব্যাংকের বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গভর্নর ১২ মে পর্যন্ত অফিস করে আরব আমিরাতে গেছেন, যেখানে ১৩ ও ১৪ মে আন্তর্জাতিক সুকুক ফোরামে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। কিছু বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরাও সেখানে অবস্থান করছেন।
এই প্রেক্ষাপটে ১৮টি ব্যাংক এখনও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টি ‘স্পর্শকাতর’ হওয়ায় গভর্নরের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। তবে কবে অনুমোদন মিলবে, সে বিষয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, ৩০ এপ্রিল ছিল ২০২৪ হিসাব বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে লভ্যাংশ ঘোষণার শেষ দিন। সেই অনুযায়ী ব্যাংকগুলো আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুমোদনের জন্য প্রতিবেদন জমা দেয়। তবে শেষ দিন পর্যন্তও অনুমোদন বা অনাপত্তিপত্র (এনওসি) না পাওয়ায় কোনো ব্যাংকের পর্ষদ সভা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।
ফলে বিনিয়োগকারীরা যেমন লভ্যাংশ পাচ্ছেন না, তেমনি জানুয়ারি-মার্চ সময়কালের অনিরীক্ষিত প্রতিবেদনও প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
এই ১৮টি ব্যাংক হলো: রূপালী, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, স্ট্যান্ডার্ড, ওয়ান, প্রিমিয়ার, আইএফআইসি, আল আরাফাহ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, এক্সিম, সাউথ ইস্ট, সোশ্যাল ইসলামী, এনআরবিসি, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার, মার্কেন্টাইল, এনআরবি, এবি, ইউসিবি ও গ্লোবাল ইসলামী।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন কারণে এসব ব্যাংকের নিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা ও এর বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থতা। এছাড়া কিছু ব্যাংক প্রভিশন ধাপে ধাপে সংরক্ষণের প্রস্তাব দেয়।
তাদের যুক্তি, রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ সময় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত ছিল। ফলে অনেক গ্রাহক কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন। হঠাৎ করে খেলাপি ঋণ বেড়ে গেলেও আমানতের পরিমাণ অনুপাতে বাড়েনি। তাই সব প্রভিশন একসাথে রাখা ব্যাংকগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে।
এই প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরে মতবিরোধ দেখা দিলে বিষয়টি গভর্নরের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় বিনিয়োগকারীরা গত ছয় মাসের আর্থিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অন্যদিকে বাকি ১৭টি ব্যাংক ইতোমধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। বিশেষ নিরীক্ষা শেষ না হওয়ায় ইউনিয়ন ব্যাংক এখনও বার্ষিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান জানান, নিরীক্ষা শেষ হলে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে।
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
অনুমোদনের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ১৮টি এখনও ২০২৪ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি। এতে ব্যাংকগুলোর পর্ষদ লভ্যাংশ ঘোষণার সুপারিশও করতে পারেনি, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হলেও এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষা চলছে। ব্যাংকের গভর্নর আরব আমিরাত সফর শেষে ফিরলে অনুমোদন মিলবে বলে জানানো হয়েছে।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বিষয়টিকে ‘অস্বস্তিকর’ ও ‘বিনিয়োগবান্ধব নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, এমনিতেই বাজার চাপের মধ্যে রয়েছে, তার ওপর এই বিলম্ব বাজারের অনিশ্চয়তা আরও বাড়িয়ে তুলছে। বিনিয়োগকারীরা মে মাসে ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণার জন্য অপেক্ষায় থাকেন, কারণ ব্যাংক খাতকে তারা নির্ভরযোগ্য মনে করেন।
তিনি জানান, দ্রুত সমাধানের জন্য বিষয়টি ডিএসইর মাধ্যমে বিএসইসির নজরে আনা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বলেন, অতীতেও এমন পরিস্থিতি হয়েছিল। সেই নজির দেখিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানো হয়েছে এবং তাদের সময় চাওয়ায় মন্ত্রণালয় মে মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন মিলেছে, এখন সিদ্ধান্ত আসবে গভর্নর ফিরলে।
গত ৮ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানী আইন অনুযায়ী সরকারের পরামর্শক্রমে ৩১ মে ২০২৫ পর্যন্ত তফসিলি ব্যাংকের বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গভর্নর ১২ মে পর্যন্ত অফিস করে আরব আমিরাতে গেছেন, যেখানে ১৩ ও ১৪ মে আন্তর্জাতিক সুকুক ফোরামে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। কিছু বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরাও সেখানে অবস্থান করছেন।
এই প্রেক্ষাপটে ১৮টি ব্যাংক এখনও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টি ‘স্পর্শকাতর’ হওয়ায় গভর্নরের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। তবে কবে অনুমোদন মিলবে, সে বিষয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, ৩০ এপ্রিল ছিল ২০২৪ হিসাব বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে লভ্যাংশ ঘোষণার শেষ দিন। সেই অনুযায়ী ব্যাংকগুলো আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুমোদনের জন্য প্রতিবেদন জমা দেয়। তবে শেষ দিন পর্যন্তও অনুমোদন বা অনাপত্তিপত্র (এনওসি) না পাওয়ায় কোনো ব্যাংকের পর্ষদ সভা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।
ফলে বিনিয়োগকারীরা যেমন লভ্যাংশ পাচ্ছেন না, তেমনি জানুয়ারি-মার্চ সময়কালের অনিরীক্ষিত প্রতিবেদনও প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
এই ১৮টি ব্যাংক হলো: রূপালী, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, স্ট্যান্ডার্ড, ওয়ান, প্রিমিয়ার, আইএফআইসি, আল আরাফাহ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, এক্সিম, সাউথ ইস্ট, সোশ্যাল ইসলামী, এনআরবিসি, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার, মার্কেন্টাইল, এনআরবি, এবি, ইউসিবি ও গ্লোবাল ইসলামী।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, বিভিন্ন কারণে এসব ব্যাংকের নিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুমোদিত হয়নি। এর মধ্যে রয়েছে খেলাপি ঋণের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা ও এর বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থতা। এছাড়া কিছু ব্যাংক প্রভিশন ধাপে ধাপে সংরক্ষণের প্রস্তাব দেয়।
তাদের যুক্তি, রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ সময় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত ছিল। ফলে অনেক গ্রাহক কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছেন। হঠাৎ করে খেলাপি ঋণ বেড়ে গেলেও আমানতের পরিমাণ অনুপাতে বাড়েনি। তাই সব প্রভিশন একসাথে রাখা ব্যাংকগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে।
এই প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরে মতবিরোধ দেখা দিলে বিষয়টি গভর্নরের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় বিনিয়োগকারীরা গত ছয় মাসের আর্থিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অন্যদিকে বাকি ১৭টি ব্যাংক ইতোমধ্যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। বিশেষ নিরীক্ষা শেষ না হওয়ায় ইউনিয়ন ব্যাংক এখনও বার্ষিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পারেনি। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান জানান, নিরীক্ষা শেষ হলে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে।