তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট সম্মিলিত পরিষদের নেতারা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দলের চাটুকারিতা না করার অঙ্গীকার করেছেন। সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে পোশাকশিল্পের সংশ্লিষ্ট নেতারা নির্লজ্জ চাটুকারিতা করেছেন। আমরা আত্মসম্মান নিয়ে ব্যবসা করতে চাই। চাটুকারিতা করে বিদেশে অর্থ পাচারকারী কোনো ব্যবসায়ীকে আমরা সমর্থন করব না। এটি প্রতিরোধ করার জন্য যা যা করা দরকার সেটি করব।’
বিজিএমইএর নির্বাচন উপলক্ষে রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে গতকাল বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো বলেন সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা মোহাম্মদ আবুল কালাম এবং প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ফারুক হাসান। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দেড় দশকের অধিকাংশ সময় বিজিএমইএর নেতৃত্বে ছিল সম্মিলিত পরিষদ। এই জোটের নেতৃত্ব দেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদী ও শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। বর্তমানে এস এম মান্নান ও সিদ্দিকুর রহমান আত্মগোপনে, আর বাকিরা কারাগারে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সংগঠনটির নেতৃত্ব নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়। তখন সম্মিলিত পরিষদের নেতারা পর্ষদ টিকিয়ে রাখতে এস এম মান্নানকে সরিয়ে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামকে সভাপতি নির্বাচিত করেন। পরে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামানকে সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। গত ২০ অক্টোবর বিভিন্ন অভিযোগে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা আবুল কালাম বলেন, ‘আমাদের প্যানেলে বিতর্কিত কোনো প্রার্থী নেই। বিতর্কিত ব্যবসায়ীরা আমাদের সঙ্গে নেই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে জ্বালানির সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি, কাস্টমস ও ব্যাংক খাতে জটিলতা রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও সরকারের কাছ থেকে নীতি সহায়তা আদায়ে আমরা অভিজ্ঞ ও নতুন প্রজন্মের সমন্বয়ে প্যানেল করেছি।’
নির্বাচনে জয়ী হলে পোশাকশিল্পের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করা নিয়ে সরকারের সঙ্গে দর-কষাকষি এবং বন্ধ কারখানা সচল করতে আগ্রহী ব্যবসায়ীদের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন আবুল কালাম। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউএফটি) ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। আমরা নির্বাচিত হলে সেখানে স্বচ্ছতা আনতে যা যা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার সেটি নেব।’
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা নিয়ে কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘একটা অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে মামলাগুলো হয়েছে। আমাদের জানামতে, যেসব ব্যবসায়ীর নামে মামলা হয়েছে তাঁদের ব্যবসা পরিচালনায় কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। অসুবিধা হবেও না। মামলাগুলো যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেষ হয়ে যাবে।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার বিষয়ে ফারুক হাসান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রেসক্রিপশনে এটা করা হলেও ব্যবসায়ী মহল থেকেও দাবিটি ছিল। নতুন দুই বিভাগের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু করা পর্যন্ত সময়টা চ্যালেঞ্জিং হবে। এনবিআর কর্মকর্তাদের কলমবিরতির কারণে কাস্টম হাউসে কাজ হচ্ছে না। এতে রপ্তানিতে ক্ষতি হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আবদুল্লাহ হিল রাকিব, মো. আশিকুর রহমান, মো. মশিউল আজম, আবরার হোসেন সায়েম, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, মোস্তাজিরুল শোভন ইসলাম, মহিউদ্দিন রুবেল প্রমুখ।
শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট সম্মিলিত পরিষদের নেতারা ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দলের চাটুকারিতা না করার অঙ্গীকার করেছেন। সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে পোশাকশিল্পের সংশ্লিষ্ট নেতারা নির্লজ্জ চাটুকারিতা করেছেন। আমরা আত্মসম্মান নিয়ে ব্যবসা করতে চাই। চাটুকারিতা করে বিদেশে অর্থ পাচারকারী কোনো ব্যবসায়ীকে আমরা সমর্থন করব না। এটি প্রতিরোধ করার জন্য যা যা করা দরকার সেটি করব।’
বিজিএমইএর নির্বাচন উপলক্ষে রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে গতকাল বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো বলেন সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা মোহাম্মদ আবুল কালাম এবং প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ফারুক হাসান। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দেড় দশকের অধিকাংশ সময় বিজিএমইএর নেতৃত্বে ছিল সম্মিলিত পরিষদ। এই জোটের নেতৃত্ব দেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদী ও শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। বর্তমানে এস এম মান্নান ও সিদ্দিকুর রহমান আত্মগোপনে, আর বাকিরা কারাগারে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সংগঠনটির নেতৃত্ব নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়। তখন সম্মিলিত পরিষদের নেতারা পর্ষদ টিকিয়ে রাখতে এস এম মান্নানকে সরিয়ে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামকে সভাপতি নির্বাচিত করেন। পরে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামানকে সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। গত ২০ অক্টোবর বিভিন্ন অভিযোগে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত পরিষদের দলনেতা আবুল কালাম বলেন, ‘আমাদের প্যানেলে বিতর্কিত কোনো প্রার্থী নেই। বিতর্কিত ব্যবসায়ীরা আমাদের সঙ্গে নেই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে জ্বালানির সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি, কাস্টমস ও ব্যাংক খাতে জটিলতা রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও সরকারের কাছ থেকে নীতি সহায়তা আদায়ে আমরা অভিজ্ঞ ও নতুন প্রজন্মের সমন্বয়ে প্যানেল করেছি।’
নির্বাচনে জয়ী হলে পোশাকশিল্পের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করা নিয়ে সরকারের সঙ্গে দর-কষাকষি এবং বন্ধ কারখানা সচল করতে আগ্রহী ব্যবসায়ীদের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন আবুল কালাম। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউএফটি) ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। আমরা নির্বাচিত হলে সেখানে স্বচ্ছতা আনতে যা যা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার সেটি নেব।’
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা নিয়ে কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘একটা অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে মামলাগুলো হয়েছে। আমাদের জানামতে, যেসব ব্যবসায়ীর নামে মামলা হয়েছে তাঁদের ব্যবসা পরিচালনায় কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। অসুবিধা হবেও না। মামলাগুলো যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেষ হয়ে যাবে।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে দুটি বিভাগ করার বিষয়ে ফারুক হাসান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রেসক্রিপশনে এটা করা হলেও ব্যবসায়ী মহল থেকেও দাবিটি ছিল। নতুন দুই বিভাগের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু করা পর্যন্ত সময়টা চ্যালেঞ্জিং হবে। এনবিআর কর্মকর্তাদের কলমবিরতির কারণে কাস্টম হাউসে কাজ হচ্ছে না। এতে রপ্তানিতে ক্ষতি হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আবদুল্লাহ হিল রাকিব, মো. আশিকুর রহমান, মো. মশিউল আজম, আবরার হোসেন সায়েম, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, মোস্তাজিরুল শোভন ইসলাম, মহিউদ্দিন রুবেল প্রমুখ।