জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর মিরপুরে হকার মো. সাগর নিহতের মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে শনিবার লোকসংগীতশিল্পী ও সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মনিরুল ইসলাম।
অন্যদিকে মমতাজের পক্ষে আইনজীবী মাসুদুর রহমান লিংকন জামিন চেয়ে শুনানিতে বলেন, “মামলার ঘটনার সাথে তিনি কোনোভাবে জড়িত নন। তিনি এজাহারভুক্ত আসামি হলেও তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার জামিন প্রার্থনা করছি।”
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, “দেশের ইতিহাসে একযোগে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, এমপি, সাবেক মন্ত্রী-এমপি, খতিব, প্রধান বিচারপতি, পিপি—সবাই পালিয়ে গেছেন। এটা বিরল ঘটনা। মমতাজ বেগম গ্রেপ্তারের পর এলাকায় মিষ্টি বিতরণ হয়েছে। তার দ্বারা মানুষ কীভাবে নির্যাতিত হয়েছে, তা স্পষ্ট।”
তিনি আরও বলেন, “সাধারণ রাস্তায় গান গেয়ে সংসদে যাওয়া, পার্লামেন্টে জলসা বসানো, বিরোধীদের অসম্মান করা—এসব তার কাজ। তিনি সংসদকে কলুষিত করেছেন। এমনকি সংসদে দাঁড়িয়ে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার পিতার নাম জানতে চান। বলেন তো, আপনার বাপের নাম কী? স্বামী কয়জন? স্বামীর নাম কী?”
এই পর্যায়ে বিচারক রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে থামিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র মামলার বিষয়ে কথা বলতে বলেন।
এরপর ওমর ফারুক বলেন, “মানুষের চরিত্রহনন, বিরোধীদের হেয় করা তার অভ্যাস। আইন হয়তো রক্ষা করছে, কিন্তু জনগণ করছে না। পুলিশ ধরার আগেই মানুষ তাদের ধরে দিচ্ছে। এখন জামিন পেলে দেশের জন্য হুমকি, গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। মামলার তদন্তে বিঘ্ন ঘটবে। জামিন নামঞ্জুরের আবেদন করছি।”
শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে মমতাজ বেগমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
১২ মে রাত পৌনে ১২টার দিকে ধানমন্ডি এলাকা থেকে মমতাজকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্ত্বর এলাকায় অনুষ্ঠিত আন্দোলনে সাগর অংশ নেন। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আসামিরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেন। গুলি সাগরের বুকে লেগে পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়।
পরে রাত ৩টার দিকে তার মা বিউটি আক্তার খোঁজ করতে করতে মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার লাশের সন্ধান পান এবং লাশ গ্রহণ করে গ্রামের বাড়িতে দাফন করেন।
এ ঘটনায় ২৭ নভেম্বর বিউটি আক্তার বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা ২৫০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়। আসামির তালিকায় ৪০ নম্বরে মমতাজ বেগমের নাম রয়েছে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হন মমতাজ। পরে আরও দুইবার নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এক আওয়ামী লীগ নেতার কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্দোলনে প্রাণহানির ঘটনায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলায় তার নাম আসামির তালিকায় রয়েছে।
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর মিরপুরে হকার মো. সাগর নিহতের মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে শনিবার লোকসংগীতশিল্পী ও সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মনিরুল ইসলাম।
অন্যদিকে মমতাজের পক্ষে আইনজীবী মাসুদুর রহমান লিংকন জামিন চেয়ে শুনানিতে বলেন, “মামলার ঘটনার সাথে তিনি কোনোভাবে জড়িত নন। তিনি এজাহারভুক্ত আসামি হলেও তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার জামিন প্রার্থনা করছি।”
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, “দেশের ইতিহাসে একযোগে প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, এমপি, সাবেক মন্ত্রী-এমপি, খতিব, প্রধান বিচারপতি, পিপি—সবাই পালিয়ে গেছেন। এটা বিরল ঘটনা। মমতাজ বেগম গ্রেপ্তারের পর এলাকায় মিষ্টি বিতরণ হয়েছে। তার দ্বারা মানুষ কীভাবে নির্যাতিত হয়েছে, তা স্পষ্ট।”
তিনি আরও বলেন, “সাধারণ রাস্তায় গান গেয়ে সংসদে যাওয়া, পার্লামেন্টে জলসা বসানো, বিরোধীদের অসম্মান করা—এসব তার কাজ। তিনি সংসদকে কলুষিত করেছেন। এমনকি সংসদে দাঁড়িয়ে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার পিতার নাম জানতে চান। বলেন তো, আপনার বাপের নাম কী? স্বামী কয়জন? স্বামীর নাম কী?”
এই পর্যায়ে বিচারক রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে থামিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র মামলার বিষয়ে কথা বলতে বলেন।
এরপর ওমর ফারুক বলেন, “মানুষের চরিত্রহনন, বিরোধীদের হেয় করা তার অভ্যাস। আইন হয়তো রক্ষা করছে, কিন্তু জনগণ করছে না। পুলিশ ধরার আগেই মানুষ তাদের ধরে দিচ্ছে। এখন জামিন পেলে দেশের জন্য হুমকি, গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। মামলার তদন্তে বিঘ্ন ঘটবে। জামিন নামঞ্জুরের আবেদন করছি।”
শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে মমতাজ বেগমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
১২ মে রাত পৌনে ১২টার দিকে ধানমন্ডি এলাকা থেকে মমতাজকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্ত্বর এলাকায় অনুষ্ঠিত আন্দোলনে সাগর অংশ নেন। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আসামিরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেন। গুলি সাগরের বুকে লেগে পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়।
পরে রাত ৩টার দিকে তার মা বিউটি আক্তার খোঁজ করতে করতে মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার লাশের সন্ধান পান এবং লাশ গ্রহণ করে গ্রামের বাড়িতে দাফন করেন।
এ ঘটনায় ২৭ নভেম্বর বিউটি আক্তার বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা ২৫০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়। আসামির তালিকায় ৪০ নম্বরে মমতাজ বেগমের নাম রয়েছে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হন মমতাজ। পরে আরও দুইবার নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এক আওয়ামী লীগ নেতার কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্দোলনে প্রাণহানির ঘটনায় দায়ের হওয়া একাধিক মামলায় তার নাম আসামির তালিকায় রয়েছে।