স্থানীয় অর্থনীতিতে দীর্ঘদিনের উচ্চমূল্যস্ফীতি, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পারষ্পরিক শুল্কারোপ, জ্বালানী সংকট, রিজার্ভ স্বল্পতা ও আর্থিকখাতের অব্যবস্থাপনা এবং আইন-শৃঙ্খলার অস্থিতরতার কারণে শিল্পখাতে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যমান বাস্তবতা বিবেচনা, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট এবং ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের আমদানি-রপ্তানি নীতিমালার পুনঃমূল্যায়নের কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ।
শনিবার,(২৪ মে ২০২৫) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি নীতিমালা : এলডিসি পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয়তা এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত উক্ত সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টা’র আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (অর্থ মন্ত্রণালয়) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর সদস্য (কাস্টমস) কাজী মোস্তাফিজুর রহমান এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-এর ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বার সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ‘চামড়া, ঔষধ, পাটপণ্য এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রভৃতি পণ্যসমূহের রপ্তানির সম্ভাবনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি, অপরদিকে মোট রপ্তানি ৮৪ শতাংশ তৈরি পোষাক ও সুনিদিষ্ট কিছু বাজারের উপর নির্ভরশীল। শিল্পখাতের মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি নির্ভর আমাদের অর্থনীতিতে দীর্ঘদিনের উচ্চমূল্যস্ফীতি, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পারষ্পরিক শুল্কারোপ, রপ্তানির উপর ভারতের নিষেধাজ্ঞা, রিজার্ভ স্বল্পতা ও আইন-শৃঙ্খলার অস্থিতরতার কারণে শিল্পের উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যমান বাস্তবাতায়, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট এবং ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের আমদানি-রপ্তানি নীতিমালার পুনঃমূল্যায়নের কোন বিকল্প নেই।’
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যকার কাঠামোগত সংষ্কার জরুরী, তবে যে গতিতে বর্তমানে সংষ্কার কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। সত্যিকারে শিল্পখাত সহ অন্যান্য সেক্টরে আমাদের কোন দীর্ঘমেয়াদে রোডম্যাপ নেই, যা হাতাশার বিষয়।’ তিনি প্রাতিষ্ঠানিক সংষ্কারের পাশাপাশি সরকারের সংস্থার গুলোর মধ্যকার সমন্বয় বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।
তিনি আরোও বলেন, ‘সকল বন্দর সমূহ অর্থনীতির হৃদপিন্ড, তাই এগুলোর ব্যবস্থাপনা সচল রেখে নির্বিঘ্নে কার্যক্রম পরিচালনা করা একান্ত অপরিহার্য। বেসরকারিখাতই আমাদের দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশকে এলডিসি উত্তরণ করতেই হবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের উচ্চ মানের তৈরি পোষাক পণ্য, ঔষধ এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের উপর বেশি হারে মনোযোগী হতে হবে। এলডিসি পরবর্তী করণীয় নির্ধারনে সকলের অংশগ্রহণে অতিদ্রুত একটি জাতীয় ডায়লাগ আয়োজন করবে। আমাদের মানবম্পদ, শিল্প-কারখানা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা রয়েছে, এগুলোর মধ্যকার সমন্বয় বৃদ্ধিকল্পে পারষ্পরিক আস্থা-বিশ্বাস বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই।’
এনবিআরের সদস্য (কাস্টমস) কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘১৯৯৩ সাল হতে এনবিআর এসআইকোডা সহ রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় অন্যান্য অটোমেটেড ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এলডিসি পরবর্তী নেগোশিয়েশনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিখাতের প্রতিনিধি থাকা প্রয়োজন। আমাদের রপ্তানি শুধুমাত্র একটি পণ্যে তৈরি পোষাকরে উপর নির্ভরশীল হওয়ায় অনেকক্ষেত্রে বৈশ্বিক দরকাষাকষিতে আমরা পিছিয়ে পড়ি। সেন্ট্রাল বন্ডেড ওয়ারহাউস চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সবাইকে এ সুবিধা প্রদান করা যেতে পারে। এনবিআর ইলেকট্রনিক ডাটা এক্সচেঞ্জ ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। যেটি চালুর হলে ব্যবসায়ীরা আরো স্বল্প সময়ে আমদানিকৃত পণ্য ছাড় করতে পারবেন।’
ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নগদ প্রণোদনার চাইতে কার্যকর নীতি সহায়তাই মূল হিসেবে কাজ করবে। বাণিজ্য নীতিমালার সংষ্কার, কমপ্লায়েন্স ও স্ট্যান্ডার্ড এবং বেসরকারিখাতের প্রস্তুতি- ৩টি বিষয় নিয়ে সরকার কাজ করছে। তৈরি পোষাক খাতে ম্যান মেইড ফাইবার ব্যবহারের জন্য বেসরকারিখাতে এগিয়ে আসতে হবে। যথাযথ অবকাঠামো, জ্বালানি নিরাপত্তা, আর্থিক ও নীতি সহায়তা এবং লজিস্টিক সেবা নিশ্চিত করতে পারলে আগামী ২-৩ বছরে তৈরি পোষাক খাত হতে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব।’
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে শুল্ক ও শুল্কের হার বেশি।
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
স্থানীয় অর্থনীতিতে দীর্ঘদিনের উচ্চমূল্যস্ফীতি, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পারষ্পরিক শুল্কারোপ, জ্বালানী সংকট, রিজার্ভ স্বল্পতা ও আর্থিকখাতের অব্যবস্থাপনা এবং আইন-শৃঙ্খলার অস্থিতরতার কারণে শিল্পখাতে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যমান বাস্তবতা বিবেচনা, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট এবং ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের আমদানি-রপ্তানি নীতিমালার পুনঃমূল্যায়নের কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ।
শনিবার,(২৪ মে ২০২৫) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি নীতিমালা : এলডিসি পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয়তা এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত উক্ত সেমিনারে প্রধান উপদেষ্টা’র আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (অর্থ মন্ত্রণালয়) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর সদস্য (কাস্টমস) কাজী মোস্তাফিজুর রহমান এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-এর ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বার সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ‘চামড়া, ঔষধ, পাটপণ্য এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রভৃতি পণ্যসমূহের রপ্তানির সম্ভাবনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি, অপরদিকে মোট রপ্তানি ৮৪ শতাংশ তৈরি পোষাক ও সুনিদিষ্ট কিছু বাজারের উপর নির্ভরশীল। শিল্পখাতের মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি নির্ভর আমাদের অর্থনীতিতে দীর্ঘদিনের উচ্চমূল্যস্ফীতি, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পারষ্পরিক শুল্কারোপ, রপ্তানির উপর ভারতের নিষেধাজ্ঞা, রিজার্ভ স্বল্পতা ও আইন-শৃঙ্খলার অস্থিতরতার কারণে শিল্পের উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যমান বাস্তবাতায়, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট এবং ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের আমদানি-রপ্তানি নীতিমালার পুনঃমূল্যায়নের কোন বিকল্প নেই।’
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ‘সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যকার কাঠামোগত সংষ্কার জরুরী, তবে যে গতিতে বর্তমানে সংষ্কার কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কম। সত্যিকারে শিল্পখাত সহ অন্যান্য সেক্টরে আমাদের কোন দীর্ঘমেয়াদে রোডম্যাপ নেই, যা হাতাশার বিষয়।’ তিনি প্রাতিষ্ঠানিক সংষ্কারের পাশাপাশি সরকারের সংস্থার গুলোর মধ্যকার সমন্বয় বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।
তিনি আরোও বলেন, ‘সকল বন্দর সমূহ অর্থনীতির হৃদপিন্ড, তাই এগুলোর ব্যবস্থাপনা সচল রেখে নির্বিঘ্নে কার্যক্রম পরিচালনা করা একান্ত অপরিহার্য। বেসরকারিখাতই আমাদের দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশকে এলডিসি উত্তরণ করতেই হবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের উচ্চ মানের তৈরি পোষাক পণ্য, ঔষধ এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের উপর বেশি হারে মনোযোগী হতে হবে। এলডিসি পরবর্তী করণীয় নির্ধারনে সকলের অংশগ্রহণে অতিদ্রুত একটি জাতীয় ডায়লাগ আয়োজন করবে। আমাদের মানবম্পদ, শিল্প-কারখানা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা রয়েছে, এগুলোর মধ্যকার সমন্বয় বৃদ্ধিকল্পে পারষ্পরিক আস্থা-বিশ্বাস বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই।’
এনবিআরের সদস্য (কাস্টমস) কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘১৯৯৩ সাল হতে এনবিআর এসআইকোডা সহ রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় অন্যান্য অটোমেটেড ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এলডিসি পরবর্তী নেগোশিয়েশনে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিখাতের প্রতিনিধি থাকা প্রয়োজন। আমাদের রপ্তানি শুধুমাত্র একটি পণ্যে তৈরি পোষাকরে উপর নির্ভরশীল হওয়ায় অনেকক্ষেত্রে বৈশ্বিক দরকাষাকষিতে আমরা পিছিয়ে পড়ি। সেন্ট্রাল বন্ডেড ওয়ারহাউস চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, আগামী জুলাইয়ের মধ্যে সবাইকে এ সুবিধা প্রদান করা যেতে পারে। এনবিআর ইলেকট্রনিক ডাটা এক্সচেঞ্জ ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। যেটি চালুর হলে ব্যবসায়ীরা আরো স্বল্প সময়ে আমদানিকৃত পণ্য ছাড় করতে পারবেন।’
ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নগদ প্রণোদনার চাইতে কার্যকর নীতি সহায়তাই মূল হিসেবে কাজ করবে। বাণিজ্য নীতিমালার সংষ্কার, কমপ্লায়েন্স ও স্ট্যান্ডার্ড এবং বেসরকারিখাতের প্রস্তুতি- ৩টি বিষয় নিয়ে সরকার কাজ করছে। তৈরি পোষাক খাতে ম্যান মেইড ফাইবার ব্যবহারের জন্য বেসরকারিখাতে এগিয়ে আসতে হবে। যথাযথ অবকাঠামো, জ্বালানি নিরাপত্তা, আর্থিক ও নীতি সহায়তা এবং লজিস্টিক সেবা নিশ্চিত করতে পারলে আগামী ২-৩ বছরে তৈরি পোষাক খাত হতে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব।’
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে শুল্ক ও শুল্কের হার বেশি।