কারখানায় ছাঁটাই-টার্মিনেশন বন্ধ, টিএনজেডসহ সব কারখানার শ্রমিকের বকেয়া পরিশোধ, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন বাস্তবায়ন, যৌন হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ তৈরি, সবেতনে ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রদানসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন ও গণ-অভ্যুত্থানের অর্জন রক্ষায় ঐক্য গড়ো’ শীর্ষক শ্রমিক সমাবেশে এসব দাবি জানানো হয়। সমাবেশ শেষে একটি র্যালি বের করা হয়।
গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ; গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসান আশরাফ; নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা দেব; গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সহসভাপ্রধান অঞ্জন দাস, নুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহীম চৌধুরী; বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক ও টিএনজেড পোশাকশ্রমিকদের নেতা সত্যজিত বিশ্বাস; ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ; ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক আলিফ দেওয়ান প্রমুখ।
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যদি দেশের পোশাকশ্রমিকসহ ৮ কোটি শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়িত না হয় তাহলে গণ–অভ্যুথানের অর্জন রক্ষা করা সম্ভব হবে না। দেশের শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়নের সঙ্গে সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সম্পর্ক জড়িয়ে আছে।’ তিনি শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন বাস্তবায়নের জন্য লড়াই অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
সমাবেশে ১০ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- ১.অবিলম্বে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন। ২. কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই ও টার্মিনেশন বন্ধ করাসহ অবিলম্বে টিএনজেড ও স্টাইল ক্রাফটসহ অন্যান্য কারখানার শ্রমিকের সব বকেয়া পাওনা পরিশোধ, শ্রমিকদের কাজের সুযোগ সংকুচিত হয় এমন তথ্য কারখানার মধ্যে বিনিময় না করা। ৩. ইতিমধ্যে ঘোষিত ১৮ দফার ভিত্তিতে শ্রমিকের মজুরি মূল্যায়ন ও শ্রমিক এলাকায় রেশনিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। ৪. প্রকৃত ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশনের জন্য শ্রম আইনের শর্ত শিথিল করা। ইউনিয়ন গঠনে শতকরা হারের বদলে সংখ্যা নির্ধারণ। শ্রমবান্ধব গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রতিষ্ঠা। ৫. কারখানায় যৌন নিপীড়ন-সহিংসতা ও ভয়মুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা। কর্মপরিবেশে শ্রমিককে তুই-তুমি সম্বোধন বন্ধ করা ও শ্রেণি-লিঙ্গ-বর্ণ-জাতি-ধর্ম-কর্মভেদে অবমাননাকর- অমর্যাদাকর ক্ষমতা-কেন্দ্রিক ভাষা ব্যবহার বন্ধ করা। ৬. মাতৃত্বকালীন ছুটি সবেতনে ৬ মাস করা, কারখানায় ও এলাকাভিত্তিক ডে কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা, শ্রম আইনে ‘মহিলা’ শব্দের পরিবর্তে নারী শব্দের ব্যবহার। ৭. শ্রম সম্পর্কিত সব তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি শ্রমসংশ্লিষ্ট সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। ৮. পাঠ্যপুস্তক, পাঠ্যক্রম, শিক্ষা কোর্স ও মিডিয়ায় শ্রমিকের জীবনগাথা মর্যাদাপূর্ণভাবে উপস্থাপন। ৯. গণ-অভ্যুত্থানে প্রাণ হারানো শ্রমজীবীসহ, শিক্ষার্থী, নারী ও শিশুকে শহীদের স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ প্রদান; গণ–অভ্যুত্থানে, রানা প্লাজায় ও তাজরীনে শ্রমিক হত্যার ঘটনায় যুক্ত দোষীদের বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা; ক্ষতিপূরণ-সংক্রান্ত আইন বদল করে মর্যাদাপূর্ণ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। ১০. শ্রমিকদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা; হামলা-নির্যাতনের প্রতিবাদে সংগঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে চাকরিচ্যুতি বন্ধ করা; শ্রম আদালতের সংখ্যা বাড়িয়ে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং সব ধরনের বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা জোরদার ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা।
শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
কারখানায় ছাঁটাই-টার্মিনেশন বন্ধ, টিএনজেডসহ সব কারখানার শ্রমিকের বকেয়া পরিশোধ, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন বাস্তবায়ন, যৌন হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ তৈরি, সবেতনে ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রদানসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন ও গণ-অভ্যুত্থানের অর্জন রক্ষায় ঐক্য গড়ো’ শীর্ষক শ্রমিক সমাবেশে এসব দাবি জানানো হয়। সমাবেশ শেষে একটি র্যালি বের করা হয়।
গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ; গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি; জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসান আশরাফ; নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা দেব; গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সহসভাপ্রধান অঞ্জন দাস, নুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহীম চৌধুরী; বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক ও টিএনজেড পোশাকশ্রমিকদের নেতা সত্যজিত বিশ্বাস; ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ; ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক আলিফ দেওয়ান প্রমুখ।
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যদি দেশের পোশাকশ্রমিকসহ ৮ কোটি শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়িত না হয় তাহলে গণ–অভ্যুথানের অর্জন রক্ষা করা সম্ভব হবে না। দেশের শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়নের সঙ্গে সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের সম্পর্ক জড়িয়ে আছে।’ তিনি শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন বাস্তবায়নের জন্য লড়াই অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
সমাবেশে ১০ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- ১.অবিলম্বে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন। ২. কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই ও টার্মিনেশন বন্ধ করাসহ অবিলম্বে টিএনজেড ও স্টাইল ক্রাফটসহ অন্যান্য কারখানার শ্রমিকের সব বকেয়া পাওনা পরিশোধ, শ্রমিকদের কাজের সুযোগ সংকুচিত হয় এমন তথ্য কারখানার মধ্যে বিনিময় না করা। ৩. ইতিমধ্যে ঘোষিত ১৮ দফার ভিত্তিতে শ্রমিকের মজুরি মূল্যায়ন ও শ্রমিক এলাকায় রেশনিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। ৪. প্রকৃত ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশনের জন্য শ্রম আইনের শর্ত শিথিল করা। ইউনিয়ন গঠনে শতকরা হারের বদলে সংখ্যা নির্ধারণ। শ্রমবান্ধব গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রতিষ্ঠা। ৫. কারখানায় যৌন নিপীড়ন-সহিংসতা ও ভয়মুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা। কর্মপরিবেশে শ্রমিককে তুই-তুমি সম্বোধন বন্ধ করা ও শ্রেণি-লিঙ্গ-বর্ণ-জাতি-ধর্ম-কর্মভেদে অবমাননাকর- অমর্যাদাকর ক্ষমতা-কেন্দ্রিক ভাষা ব্যবহার বন্ধ করা। ৬. মাতৃত্বকালীন ছুটি সবেতনে ৬ মাস করা, কারখানায় ও এলাকাভিত্তিক ডে কেয়ার সেন্টার প্রতিষ্ঠা, শ্রম আইনে ‘মহিলা’ শব্দের পরিবর্তে নারী শব্দের ব্যবহার। ৭. শ্রম সম্পর্কিত সব তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি শ্রমসংশ্লিষ্ট সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। ৮. পাঠ্যপুস্তক, পাঠ্যক্রম, শিক্ষা কোর্স ও মিডিয়ায় শ্রমিকের জীবনগাথা মর্যাদাপূর্ণভাবে উপস্থাপন। ৯. গণ-অভ্যুত্থানে প্রাণ হারানো শ্রমজীবীসহ, শিক্ষার্থী, নারী ও শিশুকে শহীদের স্বীকৃতি ও ক্ষতিপূরণ প্রদান; গণ–অভ্যুত্থানে, রানা প্লাজায় ও তাজরীনে শ্রমিক হত্যার ঘটনায় যুক্ত দোষীদের বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা; ক্ষতিপূরণ-সংক্রান্ত আইন বদল করে মর্যাদাপূর্ণ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। ১০. শ্রমিকদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা; হামলা-নির্যাতনের প্রতিবাদে সংগঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে চাকরিচ্যুতি বন্ধ করা; শ্রম আদালতের সংখ্যা বাড়িয়ে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং সব ধরনের বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা জোরদার ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা।