দেশের শেয়ারবাজার ‘ডাকাতদের আড্ডা’ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘এক ডাকাত চলে গেলে আরেকটা ডাকাত আসছে। এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। প্রধান উপদেষ্টাও এর সংস্কারে জোর দিয়েছেন।’
রোববার,(২৫ মে ২০২৫) রাজধানীর পল্টনে পুঁজিবাজার প্রতিবেদকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত এক সংলাপে এসব কথা বলেন শফিকুল আলম। ‘সিএমজেএফ টক উইথ শফিকুল আলম’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের সংস্কার যারা করেছেন, তারা সবাই গোষ্ঠীস্বার্থের দিকে তাকিয়েছিলেন। ফলে দেখা যাচ্ছে, এখানে যারা বড় বড় খেলোয়াড় আছেন, তারা সব সময় সুবিধা পেয়েছেন বা নিয়েছেন। এর বিপরীতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনে বেশির ভাগ সময় কারসাজির শিকার হয়েছেন ও প্রতারিত হয়েছেন।’
কিছু কিছু গোষ্ঠী অত্যন্ত সংঘটিতভাবে শেয়ারবাজারে কারসাজি করেছে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘কিন্তু কোনো সরকারই তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেয়নি। দেখা যাচ্ছে স্থানীয় যারা সংস্কার করতে চায়, তারা আরকটা ধান্দাবাজ গোষ্ঠী। সুতরাং এখন যে সংস্কার করা হবে, যারা এই সংস্কার করবেন, তারা হবেন ওইসব গোষ্ঠীস্বার্থের অনেক দূরের লোক। তারা নির্মহভাবে সংস্কার করবেন।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে শেয়ারবাজার সংস্কারে গুরুত্ব দিয়েছেন। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা সম্ভব হবে। এর জন্য তিন মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বিদেশি বিশেষজ্ঞরা এসে শেয়ারবাজারে কী কী করণীয় তা বলবেন এবং সে অনুযায়ী খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফলে আমরা আশা করছি, শেয়ারবাজার কোনো গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি হয়ে থাকবে না।’
শেয়ারবাজারকে অনেকে অবৈধভাবে অর্থ আয়ের জায়গা বানিয়েছেন উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, আমাদের আশপাশে যারাই শেয়ারবাজার একটু প্রভাবশালী ছিলেন, কিংবা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশপাশে ছিলেন, তারা সবাই কোটিপতি হয়ে গেছেন। সেই পরিস্থিতি যেন আবার তৈরি না হয়, সাধারণ শেয়ারধারীদের স্বার্থ যেন সুরক্ষিত হয়, সে জন্য প্রধান উপদেষ্টা বারবার তাগাদা দিয়েছেন।’
সংস্কারের জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞ কেন আনা হবে- সে বিষয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘শেয়ার মার্কেট তো রকেট সায়েন্স না যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিদেশি একজন এসে বুঝবেন না। পুরো বিশ্বেই শেয়ারবাজারের প্রমিত প্রক্রিয়া বা রীতিনীতি আছে। আমাদের ভয় হয়, স্থানীয় কাউকে সংস্কারের জন্য আনা হলো, কিন্তু তিনি কোনো গোষ্ঠীর কাছে বিক্রি হয়ে যান কি না। আমরা তো এটা তদারক করতে পারব না। সে জন্য আমরা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের ওপর জোর দিচ্ছি। এ ধরনের সংস্কার শ্রীলঙ্কা ও ভারতে হয়েছে। তারা পারলে আমরা কেন পারব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ অর্থনৈতিক অঞ্চলই খালি পড়ে আছে- মহিষের বাথান হয়ে গেছে। অর্থাৎ সেখানে মহিষ চরে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করে জমি অধিগ্রহণ করে রাখা হয়েছে, কিন্তু বিনিয়োগকারী সেখানে যাচ্ছেন না। এর অন্যতম প্রধান কারণ বন্দরের কাঙ্ক্ষিত সক্ষমতা নেই।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের অন্যতম ক্ষেত্র হচ্ছে রাজস্ব আয় বাড়ানো। সে লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুই ভাগ করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা রাজস্ব আয় বাড়াতে পারিনি বলে সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়াতে পারছি না। আপনি যদি শেখ হাসিনার আমলটা দেখেন, তাহলে দেখবেন, গত এক দশকের মধ্যে বিধবা ভাতা ৫০০ টাকাই রয়ে গেছে। ডলারের বিপরীতে টাকার দাম যখন ৭০ টাকা ছিল, তখন একজন ৫০০ টাকা ভাতা পেতেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার সময় ডলারের বিপরীতে টাকার মান ছিল ১২০ টাকা, তখনো ভাতা ছিল ৫০০ টাকা। সুতরাং রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিকল্প নেই।’
আগামী জুন মাসে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রায় ১৫০ জনের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে আসবে বলে জানান শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, ‘চীনের বিনিয়োগকারীরা লো কস্ট ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে পৃথিবীতে সেরা। তারা এত দক্ষ যে ইউরোপীয় বা উত্তর আমেরিকানরা চীনাদের সঙ্গে পেরে উঠছে না। ফলে চীনারা বাংলাদেশে এলে দেশে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি আরও বাড়বে।’
রোববার, ২৫ মে ২০২৫
দেশের শেয়ারবাজার ‘ডাকাতদের আড্ডা’ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘এক ডাকাত চলে গেলে আরেকটা ডাকাত আসছে। এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন। প্রধান উপদেষ্টাও এর সংস্কারে জোর দিয়েছেন।’
রোববার,(২৫ মে ২০২৫) রাজধানীর পল্টনে পুঁজিবাজার প্রতিবেদকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত এক সংলাপে এসব কথা বলেন শফিকুল আলম। ‘সিএমজেএফ টক উইথ শফিকুল আলম’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের সংস্কার যারা করেছেন, তারা সবাই গোষ্ঠীস্বার্থের দিকে তাকিয়েছিলেন। ফলে দেখা যাচ্ছে, এখানে যারা বড় বড় খেলোয়াড় আছেন, তারা সব সময় সুবিধা পেয়েছেন বা নিয়েছেন। এর বিপরীতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনে বেশির ভাগ সময় কারসাজির শিকার হয়েছেন ও প্রতারিত হয়েছেন।’
কিছু কিছু গোষ্ঠী অত্যন্ত সংঘটিতভাবে শেয়ারবাজারে কারসাজি করেছে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘কিন্তু কোনো সরকারই তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেয়নি। দেখা যাচ্ছে স্থানীয় যারা সংস্কার করতে চায়, তারা আরকটা ধান্দাবাজ গোষ্ঠী। সুতরাং এখন যে সংস্কার করা হবে, যারা এই সংস্কার করবেন, তারা হবেন ওইসব গোষ্ঠীস্বার্থের অনেক দূরের লোক। তারা নির্মহভাবে সংস্কার করবেন।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে শেয়ারবাজার সংস্কারে গুরুত্ব দিয়েছেন। এর মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা সম্ভব হবে। এর জন্য তিন মাসের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে বিদেশি বিশেষজ্ঞরা এসে শেয়ারবাজারে কী কী করণীয় তা বলবেন এবং সে অনুযায়ী খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফলে আমরা আশা করছি, শেয়ারবাজার কোনো গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি হয়ে থাকবে না।’
শেয়ারবাজারকে অনেকে অবৈধভাবে অর্থ আয়ের জায়গা বানিয়েছেন উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, আমাদের আশপাশে যারাই শেয়ারবাজার একটু প্রভাবশালী ছিলেন, কিংবা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশপাশে ছিলেন, তারা সবাই কোটিপতি হয়ে গেছেন। সেই পরিস্থিতি যেন আবার তৈরি না হয়, সাধারণ শেয়ারধারীদের স্বার্থ যেন সুরক্ষিত হয়, সে জন্য প্রধান উপদেষ্টা বারবার তাগাদা দিয়েছেন।’
সংস্কারের জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞ কেন আনা হবে- সে বিষয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘শেয়ার মার্কেট তো রকেট সায়েন্স না যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিদেশি একজন এসে বুঝবেন না। পুরো বিশ্বেই শেয়ারবাজারের প্রমিত প্রক্রিয়া বা রীতিনীতি আছে। আমাদের ভয় হয়, স্থানীয় কাউকে সংস্কারের জন্য আনা হলো, কিন্তু তিনি কোনো গোষ্ঠীর কাছে বিক্রি হয়ে যান কি না। আমরা তো এটা তদারক করতে পারব না। সে জন্য আমরা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের ওপর জোর দিচ্ছি। এ ধরনের সংস্কার শ্রীলঙ্কা ও ভারতে হয়েছে। তারা পারলে আমরা কেন পারব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ অর্থনৈতিক অঞ্চলই খালি পড়ে আছে- মহিষের বাথান হয়ে গেছে। অর্থাৎ সেখানে মহিষ চরে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করে জমি অধিগ্রহণ করে রাখা হয়েছে, কিন্তু বিনিয়োগকারী সেখানে যাচ্ছেন না। এর অন্যতম প্রধান কারণ বন্দরের কাঙ্ক্ষিত সক্ষমতা নেই।’
প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগের অন্যতম ক্ষেত্র হচ্ছে রাজস্ব আয় বাড়ানো। সে লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুই ভাগ করা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা রাজস্ব আয় বাড়াতে পারিনি বলে সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়াতে পারছি না। আপনি যদি শেখ হাসিনার আমলটা দেখেন, তাহলে দেখবেন, গত এক দশকের মধ্যে বিধবা ভাতা ৫০০ টাকাই রয়ে গেছে। ডলারের বিপরীতে টাকার দাম যখন ৭০ টাকা ছিল, তখন একজন ৫০০ টাকা ভাতা পেতেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়ার সময় ডলারের বিপরীতে টাকার মান ছিল ১২০ টাকা, তখনো ভাতা ছিল ৫০০ টাকা। সুতরাং রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিকল্প নেই।’
আগামী জুন মাসে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রায় ১৫০ জনের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরে আসবে বলে জানান শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, ‘চীনের বিনিয়োগকারীরা লো কস্ট ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে পৃথিবীতে সেরা। তারা এত দক্ষ যে ইউরোপীয় বা উত্তর আমেরিকানরা চীনাদের সঙ্গে পেরে উঠছে না। ফলে চীনারা বাংলাদেশে এলে দেশে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি আরও বাড়বে।’