‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ নামে দুটি বিভাগ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করার প্রতিবাদে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।
সোমবার থেকে দেশের কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। এতে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামের আমদানি এই কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছে পরিষদ।
গত ১২ মে রাতে সরকার ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে এনবিআরকে ভাগ করে। পরদিন থেকেই এ অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে অবস্থান ও কলমবিরতির মতো কর্মসূচি পালন করে আসছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে এবারই প্রথম দেওয়া হলো পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ডাক।
সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হলেও, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীরা।
রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের কাছে তিনটি প্রশ্ন তোলে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’। তারা জানতে চায়:
১. রাজস্ব সংস্কার ও নীতি আলাদা করার লক্ষ্যে কোনো দাতা সংস্থা এনবিআর বিলুপ্তির পরামর্শ দিয়েছে কিনা?
২. অধ্যাদেশ জারির সময় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সঙ্গে এনবিআর বিলুপ্তি বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা?
৩. কোনো উন্নয়ন সহযোগী ঋণের শর্ত হিসেবে এনবিআর বিলুপ্তির কথা বলেছে কিনা?
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর আহরণ ও নীতিনির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাহী বিভাগের অধীনে না থেকে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সংস্থা হিসেবে কাজ করে। ফলে দাতা সংস্থাগুলো নীতি ও প্রশাসন আলাদা করতে চাইলেও, এনবিআর বিলুপ্ত করে একে নির্বাহী বিভাগের অধীনস্থ করার পরামর্শ দেবে না— এই যুক্তিতেই এসব প্রশ্নের জন্ম হয়েছে।
পরিষদ জানায়, তারা এনবিআরের আমূল সংস্কার চায় এবং সবসময় সংস্কারের পক্ষে থেকেছে। তাদের দাবি, এই সংস্কার হতে হবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সর্বোত্তম ব্যবস্থা ও পদ্ধতির আদলে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রাজস্ব নীতি ও বাস্তবায়নকে আলাদা করার উদ্যোগের সঙ্গে তারা একমত। তবে অধ্যাদেশে দুটি বিভাগ গঠনের মাধ্যমে যে অপরীক্ষিত মডেল বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, তা রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে কতটা কার্যকর হবে তা প্রশ্নবিদ্ধ।
স্বতন্ত্র রাজস্ব এজেন্সির পরিবর্তে দুটি বিভাগ গঠন করে কর-রাজস্ব আহরণে দক্ষতাহীন গোষ্ঠীকে ক্ষমতায়ন করার সুযোগ তৈরি হয়েছে কিনা, সে প্রশ্নও তুলেছে পরিষদ।
বিজ্ঞপ্তিতে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, এসব দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনা স্বাধীন ও বিশেষায়িত সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
পরিষদের বক্তব্য, “আমরাও চাই, আমাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো স্বাধীন, স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের উন্নয়নের জন্য রাজস্ব আহরণ করুক।”
বর্তমানে চার দফা দাবিতে আন্দোলন চলছে—
১. জারি করা অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২. জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
৩. রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
৪. জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত খসড়া ও পরামর্শক কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা গঠন নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে আন্দোলনের মধ্যেই শনিবার রাজস্ব ভবনে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতির কথাও জানিয়েছেন অনেকে।
তবে তারা এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কোনো বাকবিতণ্ডায় জড়ায়নি। তবে ভবনের ভেতরে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধা দেয়। পরে ভবনের বাইরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
রোববার, ২৫ মে ২০২৫
‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা’ নামে দুটি বিভাগ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করার প্রতিবাদে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’।
সোমবার থেকে দেশের কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। এতে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামের আমদানি এই কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছে পরিষদ।
গত ১২ মে রাতে সরকার ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে এনবিআরকে ভাগ করে। পরদিন থেকেই এ অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে অবস্থান ও কলমবিরতির মতো কর্মসূচি পালন করে আসছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে এবারই প্রথম দেওয়া হলো পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ডাক।
সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হলেও, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীরা।
রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের কাছে তিনটি প্রশ্ন তোলে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’। তারা জানতে চায়:
১. রাজস্ব সংস্কার ও নীতি আলাদা করার লক্ষ্যে কোনো দাতা সংস্থা এনবিআর বিলুপ্তির পরামর্শ দিয়েছে কিনা?
২. অধ্যাদেশ জারির সময় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার সঙ্গে এনবিআর বিলুপ্তি বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা?
৩. কোনো উন্নয়ন সহযোগী ঋণের শর্ত হিসেবে এনবিআর বিলুপ্তির কথা বলেছে কিনা?
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর আহরণ ও নীতিনির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাহী বিভাগের অধীনে না থেকে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সংস্থা হিসেবে কাজ করে। ফলে দাতা সংস্থাগুলো নীতি ও প্রশাসন আলাদা করতে চাইলেও, এনবিআর বিলুপ্ত করে একে নির্বাহী বিভাগের অধীনস্থ করার পরামর্শ দেবে না— এই যুক্তিতেই এসব প্রশ্নের জন্ম হয়েছে।
পরিষদ জানায়, তারা এনবিআরের আমূল সংস্কার চায় এবং সবসময় সংস্কারের পক্ষে থেকেছে। তাদের দাবি, এই সংস্কার হতে হবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সর্বোত্তম ব্যবস্থা ও পদ্ধতির আদলে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, রাজস্ব নীতি ও বাস্তবায়নকে আলাদা করার উদ্যোগের সঙ্গে তারা একমত। তবে অধ্যাদেশে দুটি বিভাগ গঠনের মাধ্যমে যে অপরীক্ষিত মডেল বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, তা রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে কতটা কার্যকর হবে তা প্রশ্নবিদ্ধ।
স্বতন্ত্র রাজস্ব এজেন্সির পরিবর্তে দুটি বিভাগ গঠন করে কর-রাজস্ব আহরণে দক্ষতাহীন গোষ্ঠীকে ক্ষমতায়ন করার সুযোগ তৈরি হয়েছে কিনা, সে প্রশ্নও তুলেছে পরিষদ।
বিজ্ঞপ্তিতে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদাহরণ দিয়ে বলা হয়, এসব দেশের রাজস্ব ব্যবস্থাপনা স্বাধীন ও বিশেষায়িত সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
পরিষদের বক্তব্য, “আমরাও চাই, আমাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো স্বাধীন, স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের উন্নয়নের জন্য রাজস্ব আহরণ করুক।”
বর্তমানে চার দফা দাবিতে আন্দোলন চলছে—
১. জারি করা অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২. জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
৩. রাজস্ব সংস্কারবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
৪. জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত খসড়া ও পরামর্শক কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা গঠন নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে আন্দোলনের মধ্যেই শনিবার রাজস্ব ভবনে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতির কথাও জানিয়েছেন অনেকে।
তবে তারা এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কোনো বাকবিতণ্ডায় জড়ায়নি। তবে ভবনের ভেতরে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধা দেয়। পরে ভবনের বাইরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।