জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খানকে অপসারণের দাবিতে শাস্তির ‘হুমকি’ উপেক্ষা করে রোববারও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা জানিয়েছেন, দেশের সব কর, ভ্যাট ও কাস্টমস দপ্তরে এই কর্মসূচি পালিত হবে।
শনিবার এই কর্মসূচির ফলে দেশের বিভিন্ন বন্দরে আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা গেছে।
শুক্রবারের মধ্যে চেয়ারম্যান অপসারণ না হওয়ায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শনিবার এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ ‘মার্চ টু এনবিআর’ পালন করে। কর্মসূচি শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদ জানায়, শনিবার থেকে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট দপ্তরে ‘লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন’ চলবে এবং রোববারও তা অব্যাহত থাকবে। আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এ কর্মসূচির আওতার বাইরে থাকবে। এছাড়া রোববার দেশব্যাপী ‘শান্তিপূর্ণ মার্চ টু এনবিআর’ পালন করা হবে বলেও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সভাপতি হাছান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদার ও সিনিয়র সহ-সভাপতি মির্জা আশিক রানা বলেন, ‘রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে’ এনবিআর সংস্কার বিষয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম কাস্টমসসহ বিভিন্ন দপ্তরে আন্দোলনের কারণে শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো-নামানো স্বাভাবিক থাকলেও কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বন্দর থেকে পণ্য সরবরাহে স্থবিরতা চলছে। চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মীরা কাজে অনুপস্থিত থাকায় শুল্কায়ন ও বিল অব এন্ট্রি দাখিল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের অপারেশনাল কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। পণ্য ডেলিভারিও এখনো হচ্ছে। তবে কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে তার প্রভাব পড়বে।”
একই অবস্থা দেখা গেছে বেনাপোল কাস্টমস হাউজেও। সকাল থেকেই আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত শুল্কায়নের কাজ বন্ধ রয়েছে। কাস্টমস অফিসে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে এবং অনলাইন সার্ভার বন্ধ রাখা হয়েছে। এর ফলে বিল অব এন্ট্রি দাখিল সম্ভব হয়নি। সার্ভার বন্ধ থাকায় বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে কোনো আমদানি-রপ্তানি হয়নি।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক মামুন কবীর তরফদার বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের আন্দোলনের কারণে শনিবার সকাল থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে খালি ভারতীয় ট্রাকগুলো ফেরত যেতে পারবে।
এনবিআরের জনসংযোগ দপ্তর থেকে শুক্রবার রাতে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কর্মরত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে, অফিস থেকে বেরিয়ে গেলে কিংবা দেরিতে অফিসে উপস্থিত হলে সরকারি বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আগের এক বিজ্ঞপ্তিতে বদলির আদেশ পুনর্বিবেচনা ও অধ্যাদেশ সংশোধনের আশ্বাস দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়। অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এনবিআরের চেয়ারম্যান, অর্থ সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিলেও আন্দোলনরত কর্মীদের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা যেকোনো সময় আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
গত মাসে এনবিআরকে দুটি বিভাগে ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে পৃথক বিভাগ গঠনে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে কলম বিরতি ও অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করেন এনবিআর কর্মীরা।
সরকার পরে জানায়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে এনবিআর কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এরপর কিছু কর্মী কাজে যোগ দিলেও, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চলতে থাকে। আন্দোলনকারীরা তাকে সংস্থার কার্যালয়ে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় কার্যালয়ে যোগ দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। এরপর আন্দোলনে থাকা কয়েক কর্মকর্তাকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’, সেমিনারের জন্য কক্ষ বরাদ্দ না দেওয়া ইত্যাদি ঘটনায় চেয়ারম্যানের সঙ্গে কর্মকর্তাদের দূরত্ব বাড়ে।
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খানকে অপসারণের দাবিতে শাস্তির ‘হুমকি’ উপেক্ষা করে রোববারও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা জানিয়েছেন, দেশের সব কর, ভ্যাট ও কাস্টমস দপ্তরে এই কর্মসূচি পালিত হবে।
শনিবার এই কর্মসূচির ফলে দেশের বিভিন্ন বন্দরে আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা গেছে।
শুক্রবারের মধ্যে চেয়ারম্যান অপসারণ না হওয়ায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শনিবার এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ ‘মার্চ টু এনবিআর’ পালন করে। কর্মসূচি শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদ জানায়, শনিবার থেকে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট দপ্তরে ‘লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন’ চলবে এবং রোববারও তা অব্যাহত থাকবে। আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এ কর্মসূচির আওতার বাইরে থাকবে। এছাড়া রোববার দেশব্যাপী ‘শান্তিপূর্ণ মার্চ টু এনবিআর’ পালন করা হবে বলেও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সভাপতি হাছান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদার ও সিনিয়র সহ-সভাপতি মির্জা আশিক রানা বলেন, ‘রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে’ এনবিআর সংস্কার বিষয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম কাস্টমসসহ বিভিন্ন দপ্তরে আন্দোলনের কারণে শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানো-নামানো স্বাভাবিক থাকলেও কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বন্দর থেকে পণ্য সরবরাহে স্থবিরতা চলছে। চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মীরা কাজে অনুপস্থিত থাকায় শুল্কায়ন ও বিল অব এন্ট্রি দাখিল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের অপারেশনাল কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। পণ্য ডেলিভারিও এখনো হচ্ছে। তবে কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে তার প্রভাব পড়বে।”
একই অবস্থা দেখা গেছে বেনাপোল কাস্টমস হাউজেও। সকাল থেকেই আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত শুল্কায়নের কাজ বন্ধ রয়েছে। কাস্টমস অফিসে প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে এবং অনলাইন সার্ভার বন্ধ রাখা হয়েছে। এর ফলে বিল অব এন্ট্রি দাখিল সম্ভব হয়নি। সার্ভার বন্ধ থাকায় বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে কোনো আমদানি-রপ্তানি হয়নি।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক মামুন কবীর তরফদার বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তাদের আন্দোলনের কারণে শনিবার সকাল থেকে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে খালি ভারতীয় ট্রাকগুলো ফেরত যেতে পারবে।
এনবিআরের জনসংযোগ দপ্তর থেকে শুক্রবার রাতে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কর্মরত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে, অফিস থেকে বেরিয়ে গেলে কিংবা দেরিতে অফিসে উপস্থিত হলে সরকারি বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আগের এক বিজ্ঞপ্তিতে বদলির আদেশ পুনর্বিবেচনা ও অধ্যাদেশ সংশোধনের আশ্বাস দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়। অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এনবিআরের চেয়ারম্যান, অর্থ সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিলেও আন্দোলনরত কর্মীদের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা যেকোনো সময় আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
গত মাসে এনবিআরকে দুটি বিভাগে ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে পৃথক বিভাগ গঠনে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে কলম বিরতি ও অন্যান্য কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করেন এনবিআর কর্মীরা।
সরকার পরে জানায়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে এনবিআর কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এরপর কিছু কর্মী কাজে যোগ দিলেও, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন চলতে থাকে। আন্দোলনকারীরা তাকে সংস্থার কার্যালয়ে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় কার্যালয়ে যোগ দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। এরপর আন্দোলনে থাকা কয়েক কর্মকর্তাকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’, সেমিনারের জন্য কক্ষ বরাদ্দ না দেওয়া ইত্যাদি ঘটনায় চেয়ারম্যানের সঙ্গে কর্মকর্তাদের দূরত্ব বাড়ে।