যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে সরকারি খাতে খাদ্যশস্য কেনা এবং উড়োজাহাজ ও সামরিক সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য সচিব বলেন, “বাণিজ্য বাড়ানোর জন্যে তারা যদি কিছু শুল্ক ছাড় দেয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবে বাণিজ্যিক ট্রেডের ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু সরকারি ট্রেড বাড়ানোর জন্য আমরা ফ্যাসিলিটি দেব।
“আপনারা জানেন, আমাদের বিমান বহরের প্রায় সব এয়ারক্রাফট বোয়িং। আমাদের বিমানের ইনফ্রাস্ট্রাকচার যা আছে সেটাও বোয়িং। কাজেই বোয়িং কেনার জন্য আমাদের কিছু আদেশ দেওয়ার কথা রয়েছে শিগগিরই। আমরা সেভাবে নেগোসিয়েশন করেছি বোয়িংয়ের সাথে।”
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে থাকা বেশিরভাগ উড়োজাহাজই মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ফ্রান্সের কোম্পানি এয়ারবাস থেকে ১০টি বড় উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সরকার বদলের পর সে উদ্যোগে তেমন কোনো গতি দেখা যায়নি। আগের সিদ্ধান্ত পাল্টে বাংলাদেশ ফের বোয়িং কিনতে যাচ্ছে, এমন কথা বাণিজ্য সচিবই প্রথম জানালেন।
তিনি বলেন, “এছাড়া তুলা আমদানিকে আমরা প্রমোট করব। আপনারা জানেন যে তুলার ওপর এমনিতেই শুন্য শুল্ক। কিন্তু সেখানে আমেরিকান তুলা আমদানি যাতে বেশি হয় সেজন্য আমরা কিছু ফ্যাসিলিটি এখানে তৈরি করে দেব।”
সচিব আরও বলেন, “সরকারি খাতে যে সমস্ত খাদ্যশস্য কেনা হয়, সেক্ষেত্রে আমরা আমেরিকাকে একটু প্রাধান্য দেব। এভাবে আমরা আসলে আমেরিকান ট্রেডটা বাড়াব। আমাদের মিলিটারি ইকুইপমেন্টের একটা বড় অংশ আসে আমেরিকা থেকে। সে সমস্ত ক্ষেত্রও আমাদের বিবেচনায় আছে।”
মিলিটারি ইকুইপমেন্ট বলতে অস্ত্র বোঝানো হচ্ছে কি না– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “না। মিলিটারি হার্ডওয়্যার বলতে যেটা বোঝায়, সেটা হল আমাদের ভেহিকেলগুলো, আর্মভেহিকেল, আদার্স…। আমাদের যা যা সংগ্রহ করা হয়, এর বেশিরভাগ আমেরিকা থেকে করা হয়।
“ওখানে তাদের দিক থেকে কোনো চাপ নেই। তারা বলেছে, যখন কেনা হবে, আমরা যেন তাদের গুরুত্ব দিই। এ ব্যাপারে তাদের কোনো বিশেষ চাহিদা নেই। আমরা যেন তাদের প্রাধান্য দিই। অন্যান্য মেশিনারিজের ক্ষেত্রেও সে কথা তারা বলেছে। তাতে সম্মত হতে আমাদের অসুবিধা নেই।”
বাংলাদেশের সব পণ্যে ৩৫ শতাংশ বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত জানিয়ে সোমবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সেই চিঠির ছবিও তিনি ট্রুথ সোশালে প্রকাশ করেছেন।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর গত ২ এপ্রিল শতাধিক দেশের ওপর চড়া হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশের ওপর তখন বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা আসে।
এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিবেচনা করতে ডনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হয় সেখানে।
এই তিন মাস সময় ট্রাম্প মূলত দিয়েছিলেন আলোচনার জন্য। বাংলাদেশের তরফ থেকেও সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ৬২৬টি পণ্যে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল বাজেটে।
কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। ৩৭ শতাংশের বদলে ট্রাম্প এবার ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন বাংলাদেশের ওপর।
এতদিন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ। এখন নতুন করে আরও ৩৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ায় এটি দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে।
তাতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক খাত, কারণ যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার।
বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র এই বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে পোশাক বাণিজ্যে বাংলাদেশের প্রতিযোগী ভিয়েতনাম ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ভারতও চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, শুল্কের বিষয়ে বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আসার চেষ্টা করছে। সেজন্য আলোচনাও চলছে।
সে প্রসঙ্গ ধরে বাণিজ্য সচিব বলেন, “তারা আগের ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের যে খসড়া পাঠিয়েছিল, তার ওপর আমাদের রেসপন্স আমরা পাঠিয়েছি। সেটার ওপর আমাদের কয়েক দফা মিটিং হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ভার্চুয়ালি আমি যুক্ত ছিলাম সবগুলো মিটিংয়ে। আমাদের উপদেষ্টা ওখানে আছেন। আমাদের সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার ছিলেন। এরপর আজকে আমরা যে ডকুমেন্ট পেলাম, এটার ওপর মূলত আলোচনা হবে আগামী ১০ এবং ১১ জুলাই। সেই সভায় যোগদান করতেই মূলত আমি আজকে যাচ্ছি।”
আরেক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য সচিব বলেন, “তারা তো একটি চিঠি দিয়ে আরোপ করল। আরোপ করার পরেই তারা তাদের প্রস্তাব পাঠাল। সেটার ওপর যেহেতু আলোচনা হবে। আলোচনার দরজা যেহেতু খোলা আছে, কাজেই কিছু একটা আউটকাম তো আমরা আশা করি সব সময়ের জন্যই।”
আলোচনায় সরকারের যুক্তিগুলো কী থাকবে– এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “মোটাদাগে আমাদের যুক্তিগুলো থাকবে প্রথমত শুল্ক কমানো এবং দ্বিতীয়ত আমাদের ট্রেড রিলেটেড যে ইস্যুগুলো আছে সেগুলোতে আমরা যেন অসুবিধাজনক পরিস্থিতিতে না পড়ি। বাংলাদেশের জন্য আমাদের প্রধান বিবেচ্য বিষয় বাণিজ্য স্বার্থ সংরক্ষণ করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের এক্সিস্টিং বাণিজ্য রক্ষা করা।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের কাছে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) কিছু জিনিস চেয়েছে, সেটা হল শুল্ক কমানো। পর্যায়ক্রমে শুল্ক, ভ্যাট, সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি, রেগুলেটরি ডিউটি এগুলো যেন আমরা কমাই। সে ধরনের প্রস্তাব তারা করেছে। আমরা সেটা এনবিআরের সাথে আলোচনা করার পরে, সরকারের অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”
মাহবুবুর রহমান বলেন, “ওই চিঠিতে যা যা উল্লেখ করেছে তারা, তাতে যা ছাড় চেয়েছে, সেগুলো আমরা অবশ্য আগেই প্রমিজ করেছি এবং সেগুলোর ওপর এমনিতেও ডিউটি খুব কম। যেমন গম, সয়াবিন, এয়ারক্রাফট, অন্যান্য মেশিনারি এগুলোর ওপর এমনিতেই ডিউটি রেট খুব কম। আলাপ-আলোচনা করে কিছু ছাড় তো দিতে সম্মত হতেই হবে।”
তুলার ওপর অগ্রিম আয়কর নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, “আমাদের তুলার ওপর ২ শতাংশ এআইটি ইম্পোজ করা নিয়ে আলোচনা চলছে। আমাদের তুলা খাতের, বিশেষ করে টেক্সটাইল খাতের যারা অংশীজন, তারা সরকারের সাথে আলোচনা করছেন। সে ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত কিছু একটা আসবে। কিন্তু দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এটার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই।”
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ শুল্ক কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে সরকারি খাতে খাদ্যশস্য কেনা এবং উড়োজাহাজ ও সামরিক সরঞ্জাম আমদানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য সচিব বলেন, “বাণিজ্য বাড়ানোর জন্যে তারা যদি কিছু শুল্ক ছাড় দেয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবে বাণিজ্যিক ট্রেডের ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু সরকারি ট্রেড বাড়ানোর জন্য আমরা ফ্যাসিলিটি দেব।
“আপনারা জানেন, আমাদের বিমান বহরের প্রায় সব এয়ারক্রাফট বোয়িং। আমাদের বিমানের ইনফ্রাস্ট্রাকচার যা আছে সেটাও বোয়িং। কাজেই বোয়িং কেনার জন্য আমাদের কিছু আদেশ দেওয়ার কথা রয়েছে শিগগিরই। আমরা সেভাবে নেগোসিয়েশন করেছি বোয়িংয়ের সাথে।”
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে থাকা বেশিরভাগ উড়োজাহাজই মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ফ্রান্সের কোম্পানি এয়ারবাস থেকে ১০টি বড় উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সরকার বদলের পর সে উদ্যোগে তেমন কোনো গতি দেখা যায়নি। আগের সিদ্ধান্ত পাল্টে বাংলাদেশ ফের বোয়িং কিনতে যাচ্ছে, এমন কথা বাণিজ্য সচিবই প্রথম জানালেন।
তিনি বলেন, “এছাড়া তুলা আমদানিকে আমরা প্রমোট করব। আপনারা জানেন যে তুলার ওপর এমনিতেই শুন্য শুল্ক। কিন্তু সেখানে আমেরিকান তুলা আমদানি যাতে বেশি হয় সেজন্য আমরা কিছু ফ্যাসিলিটি এখানে তৈরি করে দেব।”
সচিব আরও বলেন, “সরকারি খাতে যে সমস্ত খাদ্যশস্য কেনা হয়, সেক্ষেত্রে আমরা আমেরিকাকে একটু প্রাধান্য দেব। এভাবে আমরা আসলে আমেরিকান ট্রেডটা বাড়াব। আমাদের মিলিটারি ইকুইপমেন্টের একটা বড় অংশ আসে আমেরিকা থেকে। সে সমস্ত ক্ষেত্রও আমাদের বিবেচনায় আছে।”
মিলিটারি ইকুইপমেন্ট বলতে অস্ত্র বোঝানো হচ্ছে কি না– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “না। মিলিটারি হার্ডওয়্যার বলতে যেটা বোঝায়, সেটা হল আমাদের ভেহিকেলগুলো, আর্মভেহিকেল, আদার্স…। আমাদের যা যা সংগ্রহ করা হয়, এর বেশিরভাগ আমেরিকা থেকে করা হয়।
“ওখানে তাদের দিক থেকে কোনো চাপ নেই। তারা বলেছে, যখন কেনা হবে, আমরা যেন তাদের গুরুত্ব দিই। এ ব্যাপারে তাদের কোনো বিশেষ চাহিদা নেই। আমরা যেন তাদের প্রাধান্য দিই। অন্যান্য মেশিনারিজের ক্ষেত্রেও সে কথা তারা বলেছে। তাতে সম্মত হতে আমাদের অসুবিধা নেই।”
বাংলাদেশের সব পণ্যে ৩৫ শতাংশ বাড়তি সম্পূরক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত জানিয়ে সোমবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সেই চিঠির ছবিও তিনি ট্রুথ সোশালে প্রকাশ করেছেন।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর গত ২ এপ্রিল শতাধিক দেশের ওপর চড়া হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশের ওপর তখন বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্কের ঘোষণা আসে।
এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিবেচনা করতে ডনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠান বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হয় সেখানে।
এই তিন মাস সময় ট্রাম্প মূলত দিয়েছিলেন আলোচনার জন্য। বাংলাদেশের তরফ থেকেও সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ৬২৬টি পণ্যে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল বাজেটে।
কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। ৩৭ শতাংশের বদলে ট্রাম্প এবার ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন বাংলাদেশের ওপর।
এতদিন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ। এখন নতুন করে আরও ৩৫ শতাংশ শুল্ক বাড়ায় এটি দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে।
তাতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক খাত, কারণ যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার।
বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র এই বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে পোশাক বাণিজ্যে বাংলাদেশের প্রতিযোগী ভিয়েতনাম ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ভারতও চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, শুল্কের বিষয়ে বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে আসার চেষ্টা করছে। সেজন্য আলোচনাও চলছে।
সে প্রসঙ্গ ধরে বাণিজ্য সচিব বলেন, “তারা আগের ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের যে খসড়া পাঠিয়েছিল, তার ওপর আমাদের রেসপন্স আমরা পাঠিয়েছি। সেটার ওপর আমাদের কয়েক দফা মিটিং হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ভার্চুয়ালি আমি যুক্ত ছিলাম সবগুলো মিটিংয়ে। আমাদের উপদেষ্টা ওখানে আছেন। আমাদের সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার ছিলেন। এরপর আজকে আমরা যে ডকুমেন্ট পেলাম, এটার ওপর মূলত আলোচনা হবে আগামী ১০ এবং ১১ জুলাই। সেই সভায় যোগদান করতেই মূলত আমি আজকে যাচ্ছি।”
আরেক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য সচিব বলেন, “তারা তো একটি চিঠি দিয়ে আরোপ করল। আরোপ করার পরেই তারা তাদের প্রস্তাব পাঠাল। সেটার ওপর যেহেতু আলোচনা হবে। আলোচনার দরজা যেহেতু খোলা আছে, কাজেই কিছু একটা আউটকাম তো আমরা আশা করি সব সময়ের জন্যই।”
আলোচনায় সরকারের যুক্তিগুলো কী থাকবে– এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “মোটাদাগে আমাদের যুক্তিগুলো থাকবে প্রথমত শুল্ক কমানো এবং দ্বিতীয়ত আমাদের ট্রেড রিলেটেড যে ইস্যুগুলো আছে সেগুলোতে আমরা যেন অসুবিধাজনক পরিস্থিতিতে না পড়ি। বাংলাদেশের জন্য আমাদের প্রধান বিবেচ্য বিষয় বাণিজ্য স্বার্থ সংরক্ষণ করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের এক্সিস্টিং বাণিজ্য রক্ষা করা।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের কাছে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) কিছু জিনিস চেয়েছে, সেটা হল শুল্ক কমানো। পর্যায়ক্রমে শুল্ক, ভ্যাট, সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি, রেগুলেটরি ডিউটি এগুলো যেন আমরা কমাই। সে ধরনের প্রস্তাব তারা করেছে। আমরা সেটা এনবিআরের সাথে আলোচনা করার পরে, সরকারের অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”
মাহবুবুর রহমান বলেন, “ওই চিঠিতে যা যা উল্লেখ করেছে তারা, তাতে যা ছাড় চেয়েছে, সেগুলো আমরা অবশ্য আগেই প্রমিজ করেছি এবং সেগুলোর ওপর এমনিতেও ডিউটি খুব কম। যেমন গম, সয়াবিন, এয়ারক্রাফট, অন্যান্য মেশিনারি এগুলোর ওপর এমনিতেই ডিউটি রেট খুব কম। আলাপ-আলোচনা করে কিছু ছাড় তো দিতে সম্মত হতেই হবে।”
তুলার ওপর অগ্রিম আয়কর নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, “আমাদের তুলার ওপর ২ শতাংশ এআইটি ইম্পোজ করা নিয়ে আলোচনা চলছে। আমাদের তুলা খাতের, বিশেষ করে টেক্সটাইল খাতের যারা অংশীজন, তারা সরকারের সাথে আলোচনা করছেন। সে ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত কিছু একটা আসবে। কিন্তু দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এটার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই।”