যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। পণ্য রপ্তানির বড় এই বাজারের শুল্ক আলোচনায় ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করা হয়নি। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। তা ছাড়া ১ আগস্ট থেকে এই বাড়তি শুল্ক আরোপ হলে বাজারটিতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, বন্দর ও রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল রাখার লক্ষ্যে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা। ওয়াশিংটনে চলমান আলোচনায় আশাব্যঞ্জক ফলাফল না এলে পরবর্তী দর-কষাকষিতে আরও ১-২ জন অভিজ্ঞ উপদেষ্টাকে অংশ নিতে অনুরোধ করেন তারা। প্রয়োজনে লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শও দেন ব্যবসায়ী নেতারা।
রাজধানীর রেল ভবনের সম্মেলনকক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কার্যক্রমে দ্রুত গতি ফেরানোর পাশাপাশি গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট মোকাবিলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন ব্যবসায়ী নেতারা। সভায় উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন ও শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
অন্যদিকে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, আইসিসি বাংলাদেশের সহসভাপতি ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে আজাদ, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ, তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান (বাবু), মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সহসভাপতি ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান এবং লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।
গত সোমবার বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ মোট ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্কহার নির্ধারণের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে এই ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে বিষয়টি জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যঘাটতি নিরসনের বিষয়ে সমাধান না এলে ১ আগস্ট থেকে দেশটিতে পণ্য রপ্তানিতে বর্ধিত হারে শুল্ক দিতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসলে আজকে আামাদের কেন ডেকেছে, তা আগে থেকে জানতাম না। তবে এখানে আসার পরে বৈঠকে উপদেষ্টাদের কাছে আমরা আমাদের উদ্বেগগুলো জানিয়েছি। আমরা বলছি, আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) কোনো কিছুতে ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করেন না। শুল্ক আলোচনাতেও ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করছেন না। এগুলো তো ঠিক না।’
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী নেতারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনায় দেশের ব্যবসায়ীদের যুক্ত করা হয়নি। অথচ এই আলোচনায় ব্যবসায়ীরা গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হওয়ার কথা। কী হচ্ছে, না হচ্ছে সেটি ব্যবসায়ীদের জানা প্রয়োজন। তৈরি পোশাকের বিদেশি ক্রেতারা (বায়ার) অভিযোগ করে বলছেন, তোমাদের সরকার তো কিছুই করছে না। অন্য দেশ যেভাবে দর-কষাকষি করছে, তোমারা সেভাবে করতে পারছ না। বিদেশি ক্রেতারা মনে করেন, পাল্টা শুল্কের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশ যথাযথভাবে বোঝাতে বা রাজি করাতে পারছে না।
ব্যবসায়ী নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনায় জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকেও যুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় যারা অংশ নিচ্ছেন, তারা তুলনামূলক অনভিজ্ঞ। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারাও নতুন। তাই দর-কষাকষিতে অভিজ্ঞ জ্বালানি উপদেষ্টাকে যুক্ত করা যেতে পারে।
শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা চলমান থাকা অবস্থায় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। পণ্য রপ্তানির বড় এই বাজারের শুল্ক আলোচনায় ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করা হয়নি। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। তা ছাড়া ১ আগস্ট থেকে এই বাড়তি শুল্ক আরোপ হলে বাজারটিতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, বন্দর ও রাজস্ব আদায় কার্যক্রম অধিকতর গতিশীল রাখার লক্ষ্যে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা। ওয়াশিংটনে চলমান আলোচনায় আশাব্যঞ্জক ফলাফল না এলে পরবর্তী দর-কষাকষিতে আরও ১-২ জন অভিজ্ঞ উপদেষ্টাকে অংশ নিতে অনুরোধ করেন তারা। প্রয়োজনে লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শও দেন ব্যবসায়ী নেতারা।
রাজধানীর রেল ভবনের সম্মেলনকক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কার্যক্রমে দ্রুত গতি ফেরানোর পাশাপাশি গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট মোকাবিলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন ব্যবসায়ী নেতারা। সভায় উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন ও শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
অন্যদিকে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন চৌধুরী, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, আইসিসি বাংলাদেশের সহসভাপতি ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ কে আজাদ, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ, তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান (বাবু), মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সহসভাপতি ও ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান এবং লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।
গত সোমবার বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানসহ মোট ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্কহার নির্ধারণের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে এই ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে বিষয়টি জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যঘাটতি নিরসনের বিষয়ে সমাধান না এলে ১ আগস্ট থেকে দেশটিতে পণ্য রপ্তানিতে বর্ধিত হারে শুল্ক দিতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আসলে আজকে আামাদের কেন ডেকেছে, তা আগে থেকে জানতাম না। তবে এখানে আসার পরে বৈঠকে উপদেষ্টাদের কাছে আমরা আমাদের উদ্বেগগুলো জানিয়েছি। আমরা বলছি, আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) কোনো কিছুতে ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করেন না। শুল্ক আলোচনাতেও ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ত করছেন না। এগুলো তো ঠিক না।’
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী নেতারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনায় দেশের ব্যবসায়ীদের যুক্ত করা হয়নি। অথচ এই আলোচনায় ব্যবসায়ীরা গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হওয়ার কথা। কী হচ্ছে, না হচ্ছে সেটি ব্যবসায়ীদের জানা প্রয়োজন। তৈরি পোশাকের বিদেশি ক্রেতারা (বায়ার) অভিযোগ করে বলছেন, তোমাদের সরকার তো কিছুই করছে না। অন্য দেশ যেভাবে দর-কষাকষি করছে, তোমারা সেভাবে করতে পারছ না। বিদেশি ক্রেতারা মনে করেন, পাল্টা শুল্কের আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশ যথাযথভাবে বোঝাতে বা রাজি করাতে পারছে না।
ব্যবসায়ী নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনায় জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানকেও যুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় যারা অংশ নিচ্ছেন, তারা তুলনামূলক অনভিজ্ঞ। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারাও নতুন। তাই দর-কষাকষিতে অভিজ্ঞ জ্বালানি উপদেষ্টাকে যুক্ত করা যেতে পারে।