চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছর শেষে সরকারের দেশি-বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে ২৩ লাখ কোটি টাকায়। সেই হিসাবে আগামী বছর ঘোষিত সময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে নির্বাচিত সরকারের কাঁধে শুরুতেই বড় অঙ্কের ঋণের বোঝা চাপবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বলছে, চলতি অর্থবছর শেষে সরকারের দেশি-বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৩ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে দেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়াবে ১৩ লাখ ২৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণের স্থিতি ১০ লাখ
১৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বলছে, চলতি অর্থবছর শেষে সরকারের দেশি-বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৩ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে দেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়াবে ১৩ লাখ ২৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণের স্থিতি ১০ লাখ ১৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষে অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে প্রকাশিত তিন বছর মেয়াদি মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি-বিবৃতি পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। বিবৃতিতে অর্থ বিভাগ প্রাক্কলন করেছে, ২০২৬-২৭ অর্থবছর শেষে সরকারের ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২৬ লাখ ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। তার পরের বছর শেষে ঋণ ২৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
অর্থ বিভাগ যখন এই প্রাক্কলন করছে, তখন দেশের রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি ভালো নয়। রাজস্ব-জিডিপির হার ৮ শতাংশের ঘরে। আবার ২০২৬ সালের শেষে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবে বাংলাদেশ। তখন বহুপক্ষীয় ও দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ নিতে হবে উচ্চ সুদে। ঋণ পরিশোধের সময়ও কমবে অর্থাৎ স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ আর পাওয়া যাবে না।
অর্থ বিভাগের নীতি-বিবৃতির তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের ঋণের স্থিতি ছিল ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জন্য ঋণে স্থিতি প্রাক্কলন করা হয় ২২ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। তবে অন্তর্বর্তী সরকার তা সংশোধন করে ২১ লাখ ১১ হাজার ৯০০ কোটি টাকায় নামিয়ে এনেছে।
বাজেট বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘বিগত সরকারের রেখে যাওয়া সংকটাপন্ন অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে রাখা হবে।’
নীতি-বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ঋণ-জিডিপির অনুপাত এখন পর্যন্ত সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তবে ধীরে ধীরে তা বাড়ছে। এ পর্যন্ত বৈদেশিক ও সামগ্রিক ঋণ ‘নি¤œ ঝুঁকিপূর্ণ’ অবস্থানে রয়েছে। তবে বিবৃতিতে এ-ও বলা হয়েছে, বহিঃশক অর্থাৎ বৈদেশিক ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি হওয়া চাপের কারণে আরও ঝুঁকির মুখে পড়তে হতে পারে বাংলাদেশকে।
এদিকে সদ্য প্রকাশিত সরকারের মধ্যমেয়াদি (২০২৫-২৬ থেকে ২০২৬-২৭) ঋণ ব্যবস্থাপনা কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, পরিমাণ বেশি হওয়ায় নিম্ন থেকে প্রায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। বিদ্যমান বাস্তবতায় অর্থ বিভাগের বেশি দুশ্চিন্তা হচ্ছে, বৈদেশিক ঋণ ও রপ্তানি অনুপাত। অর্থ বিভাগ বলছে, এ অনুপাত এখন ১৪০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে না পারলে মধ্য মেয়াদে ঋণ ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকার গত অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছিল। তবে গত আগস্টে সরকার বদলের পর অন্তর্বর্তী সরকার সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৫৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকায় নামিয়ে এনেছে। আর ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য জিডিপির প্রাক্কলন করেছে ৬২ লাখ ৪৪ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের ঋণ-জিডিপির অনুপাত ছিল ৩৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। পরের বছর মূল বাজেটে তা বেড়ে ৩৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ হয়। যদিও সংশোধিত বাজেটে অন্তর্বর্তী সরকার তা কমিয়ে ৩৭ দশমিক ৪১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। নীতি-বিবৃতির প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর থেকে ঋণ-জিডিপির অনুপাত একটু একটু করে বাড়বে। যেমন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সাড়ে ৩৭ শতাংশ, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৩৭ দশমিক ৬৩ এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে তা বেড়ে হবে ৩৭ দশমিক ৭২ শতাংশ।
নীতি-বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদেশি ঋণের আসল পরিশোধ করা হয় ২০২ কোটি মার্কিন ডলার। গত অর্থবছর শেষে তা বেড়ে দাঁড়াবে ২৬১ কোটি ডলারে। আর ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ২৯০ কোটি, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৩১২ কোটি এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৩৩৪ কোটি ডলার ব্যয় করতে হবে বিদেশি ঋণের আসল পরিশোধে। বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল যোগ করলে এ অঙ্ক আরও বাড়বে।
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছর শেষে সরকারের দেশি-বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে ২৩ লাখ কোটি টাকায়। সেই হিসাবে আগামী বছর ঘোষিত সময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে নির্বাচিত সরকারের কাঁধে শুরুতেই বড় অঙ্কের ঋণের বোঝা চাপবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বলছে, চলতি অর্থবছর শেষে সরকারের দেশি-বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৩ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে দেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়াবে ১৩ লাখ ২৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণের স্থিতি ১০ লাখ
১৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বলছে, চলতি অর্থবছর শেষে সরকারের দেশি-বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৩ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে দেশি ঋণের স্থিতি দাঁড়াবে ১৩ লাখ ২৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণের স্থিতি ১০ লাখ ১৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষে অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে প্রকাশিত তিন বছর মেয়াদি মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি-বিবৃতি পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া গেছে। বিবৃতিতে অর্থ বিভাগ প্রাক্কলন করেছে, ২০২৬-২৭ অর্থবছর শেষে সরকারের ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২৬ লাখ ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। তার পরের বছর শেষে ঋণ ২৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
অর্থ বিভাগ যখন এই প্রাক্কলন করছে, তখন দেশের রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি ভালো নয়। রাজস্ব-জিডিপির হার ৮ শতাংশের ঘরে। আবার ২০২৬ সালের শেষে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবে বাংলাদেশ। তখন বহুপক্ষীয় ও দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ নিতে হবে উচ্চ সুদে। ঋণ পরিশোধের সময়ও কমবে অর্থাৎ স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ আর পাওয়া যাবে না।
অর্থ বিভাগের নীতি-বিবৃতির তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের ঋণের স্থিতি ছিল ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জন্য ঋণে স্থিতি প্রাক্কলন করা হয় ২২ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। তবে অন্তর্বর্তী সরকার তা সংশোধন করে ২১ লাখ ১১ হাজার ৯০০ কোটি টাকায় নামিয়ে এনেছে।
বাজেট বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘বিগত সরকারের রেখে যাওয়া সংকটাপন্ন অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে রাখা হবে।’
নীতি-বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ঋণ-জিডিপির অনুপাত এখন পর্যন্ত সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তবে ধীরে ধীরে তা বাড়ছে। এ পর্যন্ত বৈদেশিক ও সামগ্রিক ঋণ ‘নি¤œ ঝুঁকিপূর্ণ’ অবস্থানে রয়েছে। তবে বিবৃতিতে এ-ও বলা হয়েছে, বহিঃশক অর্থাৎ বৈদেশিক ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি হওয়া চাপের কারণে আরও ঝুঁকির মুখে পড়তে হতে পারে বাংলাদেশকে।
এদিকে সদ্য প্রকাশিত সরকারের মধ্যমেয়াদি (২০২৫-২৬ থেকে ২০২৬-২৭) ঋণ ব্যবস্থাপনা কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, পরিমাণ বেশি হওয়ায় নিম্ন থেকে প্রায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। বিদ্যমান বাস্তবতায় অর্থ বিভাগের বেশি দুশ্চিন্তা হচ্ছে, বৈদেশিক ঋণ ও রপ্তানি অনুপাত। অর্থ বিভাগ বলছে, এ অনুপাত এখন ১৪০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে না পারলে মধ্য মেয়াদে ঋণ ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
এদিকে আওয়ামী লীগ সরকার গত অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছিল। তবে গত আগস্টে সরকার বদলের পর অন্তর্বর্তী সরকার সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৫৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকায় নামিয়ে এনেছে। আর ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য জিডিপির প্রাক্কলন করেছে ৬২ লাখ ৪৪ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশের ঋণ-জিডিপির অনুপাত ছিল ৩৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। পরের বছর মূল বাজেটে তা বেড়ে ৩৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ হয়। যদিও সংশোধিত বাজেটে অন্তর্বর্তী সরকার তা কমিয়ে ৩৭ দশমিক ৪১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। নীতি-বিবৃতির প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর থেকে ঋণ-জিডিপির অনুপাত একটু একটু করে বাড়বে। যেমন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সাড়ে ৩৭ শতাংশ, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৩৭ দশমিক ৬৩ এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে তা বেড়ে হবে ৩৭ দশমিক ৭২ শতাংশ।
নীতি-বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিদেশি ঋণের আসল পরিশোধ করা হয় ২০২ কোটি মার্কিন ডলার। গত অর্থবছর শেষে তা বেড়ে দাঁড়াবে ২৬১ কোটি ডলারে। আর ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ২৯০ কোটি, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৩১২ কোটি এবং ২০২৭-২৮ অর্থবছরে ৩৩৪ কোটি ডলার ব্যয় করতে হবে বিদেশি ঋণের আসল পরিশোধে। বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল যোগ করলে এ অঙ্ক আরও বাড়বে।