যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আরোপিত সম্পূরক শুল্ক কমানোর বিষয়ে দ্বিতীয় দফা আলোচনাকে ‘ইতিবাচক’ বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার একদিন পর সোমবার সচিবালয়ে ব্যবসায়ী নেতা ও অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, দ্বিতীয় দফার আলোচনা শেষে রোববার তিনি দেশে ফিরেছেন। সেখানে কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তৃতীয় দফা আলোচনার প্রস্তুতি হিসেবে অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
“আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় রয়ে গেছে। সেগুলো আলোচনা করে দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় দফার আলোচনায় যাবো। আল্লাহর রহমতে ভালো ফল আসবে,” বলেন তিনি।
তিনি জানান, আলোচনা উৎসাহব্যঞ্জক এবং আকর্ষণীয় ছিল। সর্বোচ্চ পর্যায়ে তিন দিন ধরে ৩৫–৪০ জনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে।
তৃতীয় দফার আলোচনার সময় জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সামনের সপ্তাহের মাঝামাঝি আমরা আবার যাবো। আগে তাদের জানাবো, তারপর তারা সময় দেবে এবং আমরা আলোচনায় বসবো।”
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সোমবারের বৈঠক নিয়ে তিনি বলেন, “সুন্দর আলোচনা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ভালো কিছু পরামর্শ পেয়েছি। এই পরামর্শগুলো কাজে লাগাবো, তবে প্রকাশ করার কিছু নেই।”
আলোচনার অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আলোচনা যথেষ্ট আকর্ষণীয় ছিল। আশা করি এখান থেকে প্রাসঙ্গিক ও যৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ করে আনতে পারবো। প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করি। আশা করি বৈষম্যহীনভাবে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফলভাবে ব্যবসা করতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা প্রকাশ না করার শর্ত থাকায় বিস্তারিত জানাতে পারবেন না।
৮ জুলাই বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর ২ এপ্রিল শতাধিক দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। তখন বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছিল।
এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময়ের মধ্যে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং বাজেটে ৬২৬টি পণ্যে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
তবে তাতেও কাজ না হওয়ায় এবার ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা আগে গড়ে ১৫ শতাংশ ছিল। এখন নতুন শুল্কসহ এটি দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত, যা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাজার।
বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ওপর এই বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে, ভারতও চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে।
বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে আলোচনাও চলছে।
গত সপ্তাহে বাণিজ্য সচিব জানিয়েছিলেন, “তারা আগের ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের যে খসড়া পাঠিয়েছিল, তার ওপর আমাদের রেসপন্স আমরা পাঠিয়েছি। সেটি নিয়ে কয়েক দফা মিটিং হয়েছে।”
এই ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট নিয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “যেহেতু একটি নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট আছে, তাই এ ধরনের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেব না।”
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, র্যাপিডের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক এবং এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান।
সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আরোপিত সম্পূরক শুল্ক কমানোর বিষয়ে দ্বিতীয় দফা আলোচনাকে ‘ইতিবাচক’ বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার একদিন পর সোমবার সচিবালয়ে ব্যবসায়ী নেতা ও অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
তিনি জানান, দ্বিতীয় দফার আলোচনা শেষে রোববার তিনি দেশে ফিরেছেন। সেখানে কিছু বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তৃতীয় দফা আলোচনার প্রস্তুতি হিসেবে অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
“আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় রয়ে গেছে। সেগুলো আলোচনা করে দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় দফার আলোচনায় যাবো। আল্লাহর রহমতে ভালো ফল আসবে,” বলেন তিনি।
তিনি জানান, আলোচনা উৎসাহব্যঞ্জক এবং আকর্ষণীয় ছিল। সর্বোচ্চ পর্যায়ে তিন দিন ধরে ৩৫–৪০ জনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে।
তৃতীয় দফার আলোচনার সময় জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সামনের সপ্তাহের মাঝামাঝি আমরা আবার যাবো। আগে তাদের জানাবো, তারপর তারা সময় দেবে এবং আমরা আলোচনায় বসবো।”
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সোমবারের বৈঠক নিয়ে তিনি বলেন, “সুন্দর আলোচনা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ভালো কিছু পরামর্শ পেয়েছি। এই পরামর্শগুলো কাজে লাগাবো, তবে প্রকাশ করার কিছু নেই।”
আলোচনার অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আলোচনা যথেষ্ট আকর্ষণীয় ছিল। আশা করি এখান থেকে প্রাসঙ্গিক ও যৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ করে আনতে পারবো। প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করি। আশা করি বৈষম্যহীনভাবে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফলভাবে ব্যবসা করতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা প্রকাশ না করার শর্ত থাকায় বিস্তারিত জানাতে পারবেন না।
৮ জুলাই বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর ২ এপ্রিল শতাধিক দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। তখন বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছিল।
এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময়ের মধ্যে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং বাজেটে ৬২৬টি পণ্যে শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
তবে তাতেও কাজ না হওয়ায় এবার ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা আগে গড়ে ১৫ শতাংশ ছিল। এখন নতুন শুল্কসহ এটি দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত, যা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাজার।
বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ওপর এই বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করে শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে, ভারতও চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছে।
বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে আলোচনাও চলছে।
গত সপ্তাহে বাণিজ্য সচিব জানিয়েছিলেন, “তারা আগের ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্টের যে খসড়া পাঠিয়েছিল, তার ওপর আমাদের রেসপন্স আমরা পাঠিয়েছি। সেটি নিয়ে কয়েক দফা মিটিং হয়েছে।”
এই ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট নিয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “যেহেতু একটি নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট আছে, তাই এ ধরনের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেব না।”
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, র্যাপিডের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক এবং এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান।