এনবিআর ভাগ করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি আলাদা বিভাগ করার অধ্যাদেশ বাতিল এবং চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে সরকারের রাজস্ব আদায়ে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানতে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি করা হয়েছে। বুধবার(১৬-০৭-২০২৫) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে জারি করা এক আদেশে বলা হয়েছে, এ বিভাগের যুগ্মসচিব সৈয়দ রবিউল ইসলামকে নয়জনের এ কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে বিভাগের উপসচিবকে (প্রশাসন-১)। এছাড়া অর্থ বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব পর্যায়ের একজন করে প্রতিনিধি, এনবিআর, বিজিএমইএ এবং এফবিসিসিআইয়ের একজন করে প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে থাকবেন।
আদেশে বলা হয়েছে, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ এবং কর বিভাগের কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও শাটডাউন কর্মসূচি পালনের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে এই আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি করা হল।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, গত ২৮-২৯ জুন ২ দিন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অফিস বন্ধ থাকায় রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ; দীর্ঘ দুই মাস কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ এবং কর বিভাগের কর্মচারীদের কর্মসূচি পালনের কারণে সকল কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কাস্টম হাউস, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট এবং আওতাধীন অধিদপ্তর/ পরিদপ্তর/ অনান্য দপ্তরের [কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপিল) কমিশনারেটসহ] এবং কর অঞ্চলসমূহে রাজস্ব ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ; দীর্ঘ দুই মাসব্যাপী কর্মসূচির কারণে শুল্কায়ন কার্যক্রম এবং সকল স্থলবন্দর ও নৌ-বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের ক্ষয়ক্ষতিসহ দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবির আন্দোলনের মধ্যে বদলির আদেশ অমান্য করে প্রকাশ্যে তা ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় যাদের মধ্যে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারেক রিকাবদারও রয়েছেন। বুধবার আরও সাতজনকে বরখাস্ত করা হয়। সরকারি আদেশে ‘অমান্য’ করায় পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাদের বরখাস্ত করে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ।
এর মধ্যে প্রথমে আট প্রজ্ঞাপনে আয়কর অনুবিভাগের আট কর্মকর্তাকে এবং পরে আলাদা আদেশে শুল্ক অনুবিভাগের পাঁচজন ও কর অনুবিভাগের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলনের মধ্যে গত ২২ জুন আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে ‘তাৎক্ষণিক বদলি’ করা হয়। একদিন বাদে সংবাদ সম্মেলন করে ওই আদেশকে ‘প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক’ অ্যাখ্যা দিয়ে তা ছিঁড়ে ফেলে ‘প্রতিবাদ’ জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বদলির ওই আদেশ ‘অবজ্ঞা’ করে প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করায়’ এবং বদলি করা ব্যক্তিদের এ ধরনের কাজকে সমর্থন করায় ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হল। এর আগে আন্দোলন থামার পর এনবিআরের তিন সদস্য ও এক কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনারকে করা হয় সাময়িক বরখাস্ত; একের পর এক কর্মকর্তা বদলির মুখে পড়েন।
এনবিআর দুই ভাগ করে গত মে মাসে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। সেই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মধ্যে সরকার পিছু হটে। ২২ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাদেশে ‘প্রয়োজনীয় সংশোধনী’ আনা হবে। আর সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান কাঠামোতেই চলবে এনবিআরের সব কাজ।
এর মধ্যে সংস্থাটির কর্মীরা নানা অভিযোগ তুলে এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে নতুন করে আন্দোলনে নামেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। দাবি আদায়ে ২৮ জুন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেন এনবিআর কর্মীরা। তাদের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের কার্যক্রম। পরের দিনও কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে সংস্থাটির সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
সংকট নিরসনে সেদিন এনবিআর কর্মীদের অবিলম্বে কর্মস্থলে ফেরার এবং ‘আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি কার্যক্রম’ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়। পরে সংকট সমাধানে পাঁচ উপদেষ্টাকে নিয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করার কথা জানায় সরকার। পরে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ শাটডাউন কর্মসূচি তুলে নেয়।
এর মধ্যে আন্দোলনের সামনের সারির নেতাদের ‘দুর্নীতির তথ্যানুসন্ধানে’ নামে দুদক। তিন দফায় ১৬ জনের তথ্যানুসন্ধান শুরুর তথ্য দেয় সংস্থাটি। আন্দোলন থামার পর এখন একের পর এক কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে এনবিআর।
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
এনবিআর ভাগ করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি আলাদা বিভাগ করার অধ্যাদেশ বাতিল এবং চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে সরকারের রাজস্ব আদায়ে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানতে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি করা হয়েছে। বুধবার(১৬-০৭-২০২৫) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে জারি করা এক আদেশে বলা হয়েছে, এ বিভাগের যুগ্মসচিব সৈয়দ রবিউল ইসলামকে নয়জনের এ কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করবেন। কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে বিভাগের উপসচিবকে (প্রশাসন-১)। এছাড়া অর্থ বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উপসচিব পর্যায়ের একজন করে প্রতিনিধি, এনবিআর, বিজিএমইএ এবং এফবিসিসিআইয়ের একজন করে প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে থাকবেন।
আদেশে বলা হয়েছে, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ এবং কর বিভাগের কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও শাটডাউন কর্মসূচি পালনের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে এই আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি করা হল।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, গত ২৮-২৯ জুন ২ দিন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অফিস বন্ধ থাকায় রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ; দীর্ঘ দুই মাস কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ এবং কর বিভাগের কর্মচারীদের কর্মসূচি পালনের কারণে সকল কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কাস্টম হাউস, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট এবং আওতাধীন অধিদপ্তর/ পরিদপ্তর/ অনান্য দপ্তরের [কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপিল) কমিশনারেটসহ] এবং কর অঞ্চলসমূহে রাজস্ব ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ; দীর্ঘ দুই মাসব্যাপী কর্মসূচির কারণে শুল্কায়ন কার্যক্রম এবং সকল স্থলবন্দর ও নৌ-বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের ক্ষয়ক্ষতিসহ দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবির আন্দোলনের মধ্যে বদলির আদেশ অমান্য করে প্রকাশ্যে তা ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় যাদের মধ্যে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার হাছান তারেক রিকাবদারও রয়েছেন। বুধবার আরও সাতজনকে বরখাস্ত করা হয়। সরকারি আদেশে ‘অমান্য’ করায় পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাদের বরখাস্ত করে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ।
এর মধ্যে প্রথমে আট প্রজ্ঞাপনে আয়কর অনুবিভাগের আট কর্মকর্তাকে এবং পরে আলাদা আদেশে শুল্ক অনুবিভাগের পাঁচজন ও কর অনুবিভাগের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলনের মধ্যে গত ২২ জুন আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে ‘তাৎক্ষণিক বদলি’ করা হয়। একদিন বাদে সংবাদ সম্মেলন করে ওই আদেশকে ‘প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক’ অ্যাখ্যা দিয়ে তা ছিঁড়ে ফেলে ‘প্রতিবাদ’ জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বদলির ওই আদেশ ‘অবজ্ঞা’ করে প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করায়’ এবং বদলি করা ব্যক্তিদের এ ধরনের কাজকে সমর্থন করায় ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হল। এর আগে আন্দোলন থামার পর এনবিআরের তিন সদস্য ও এক কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনারকে করা হয় সাময়িক বরখাস্ত; একের পর এক কর্মকর্তা বদলির মুখে পড়েন।
এনবিআর দুই ভাগ করে গত মে মাসে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। সেই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মধ্যে সরকার পিছু হটে। ২২ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাদেশে ‘প্রয়োজনীয় সংশোধনী’ আনা হবে। আর সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান কাঠামোতেই চলবে এনবিআরের সব কাজ।
এর মধ্যে সংস্থাটির কর্মীরা নানা অভিযোগ তুলে এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে নতুন করে আন্দোলনে নামেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। দাবি আদায়ে ২৮ জুন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেন এনবিআর কর্মীরা। তাদের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে আমদানি-রপ্তানিসহ এনবিআরের কার্যক্রম। পরের দিনও কর্মসূচি অব্যাহত থাকলে সংস্থাটির সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
সংকট নিরসনে সেদিন এনবিআর কর্মীদের অবিলম্বে কর্মস্থলে ফেরার এবং ‘আইনবিরোধী ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি কার্যক্রম’ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়। পরে সংকট সমাধানে পাঁচ উপদেষ্টাকে নিয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করার কথা জানায় সরকার। পরে ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতায় আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ শাটডাউন কর্মসূচি তুলে নেয়।
এর মধ্যে আন্দোলনের সামনের সারির নেতাদের ‘দুর্নীতির তথ্যানুসন্ধানে’ নামে দুদক। তিন দফায় ১৬ জনের তথ্যানুসন্ধান শুরুর তথ্য দেয় সংস্থাটি। আন্দোলন থামার পর এখন একের পর এক কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে এনবিআর।