আসছে ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পর রপ্তানি সক্ষমতা ধরে রাখতে করনীয় ঠিক করতে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে আরেকটি কমিটি করেছে সরকার।
গতকাল বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২৪ নভেম্বর ২০২৬ সাল থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পর রপ্তানি নির্ভর সাবসিডি বা নগদ সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হবে না। এ প্রেক্ষাপট বিবেচনায় উদীয়মান/প্রতিশ্রুতিশীল খাতগুলো থেকে থেকে চারটি খাত যথা- চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য; পাটজাত পণ্য; কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কী কী করা যেতে পারে তা পর্যালোচনার জন্য অর্থ বিভাগ থেকে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি এ বিষয়ে কিছু সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। সুপারিশগুলো পর্যালোচনা এবং সে অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি করা হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এম. সিরাজ উদ্দিন মিয়াকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, বাণিজ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব, বস্ত্র ও পাট সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, বিএসটিআই মহাপরিচালক, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিসিকের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআই সভাপতি এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক কমিটিতে সদস্য হিসাবে আছেন।
কমিটির কার্যপরিধি: প্রতিবেদনে উল্লিখিত সুপারিশগুলো থেকে সরকারের সক্ষমতা বিবেচনায় কোন কোন সুবিধা দেওয়া যায় তা নির্ধারণ। সুবিধাগুলো দেওয়ার জন্য সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন। সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ দপ্তর/ সংস্থার কার্যক্রমগুলো নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা, মূল্যায়ন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্যক্রম বাস্তবায়ন নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। কমিটি প্রয়োজনে প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত সুপারিশ ছাড়াও বাস্তবতা ও প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনায় অন্য যেকোনো উপযুক্ত সুবিধা প্রদানের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে। কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক সদস্যকে কো-অপট করতে পারবে।
পর্যালোচনা সভা
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বুধবার স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি পর্যালোচনা সভা হয়েছে। বেলা ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সভা হয় বলে সরকারপ্রধানের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, সভায় ১৬টি সিদ্ধান্তের অগ্রগতি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চারটি, শিল্প মন্ত্রণালয় তিনটি, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ দুটি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিনটি ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় চারটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান জানান, এনবিআর ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো-এর পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে। ইতোমধ্যে ১৯টি সংস্থা যুক্ত হয়েছে। আরও সংস্থাকে যুক্ত করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, ট্যারিফ পলিসি ২০২৩ এর বাস্তবায়ন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন তিনি।
তৈরি পোশাক শিল্পের মত অন্যান্য রপ্তানি খাতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও প্রণোদনা দেওয়া এবং ‘ম্যান মেইড ফাইবার’ সম্পর্কিত কাঁচামাল ও এ শিল্পের মেশিনারিজ আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
সাভারে ট্যানারি ভিলেজে স্থাপিত ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) পূর্ণমাত্রায় চালু করা, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় বাস্তবায়নাধীন এপিআই পার্ক পূর্ণমাত্রায় চালু করা এবং ২০২২ সালে প্রণীত শিল্প নীতি হালনাগাদ করতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে বিষয়েও সভায় আলোচনা করা হয়।প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দেশের চামড়া শিল্পের ব্যাপারে আমরা অপরাধ করেছি, এটার সঠিক মূল্যয়ন করিনি। এই শিল্প দিয়ে আমাদের অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেটা হয়নি।” চামড়া শিল্পের সংকট সমাধানে করণীয় সম্পর্কিত একটি পৃথক বৈঠক আয়োজনের জন্য নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পাশাপাশি, আগামী দুই মাসের মধ্যে এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য করণীয় সম্পর্কে পরবর্তী বৈঠক আয়োজনের নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের নিজেদের স্বার্থে, নিজেদের অর্থনীতির স্বার্থে এই কাজগুলো করে যেতে হবে। যেসব নীতিমালা-আইন কোনো কাজে আসছে না সেগুলো পরিবর্তন করে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথ বের করতে হবে। এগুলো মৌলিক বিষয়। নিজেদের উত্তরণের জন্যই এ কাজগুলো আমাদের করে যেতে হবে।”
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫
আসছে ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পর রপ্তানি সক্ষমতা ধরে রাখতে করনীয় ঠিক করতে গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে আরেকটি কমিটি করেছে সরকার।
গতকাল বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২৪ নভেম্বর ২০২৬ সাল থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পর রপ্তানি নির্ভর সাবসিডি বা নগদ সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হবে না। এ প্রেক্ষাপট বিবেচনায় উদীয়মান/প্রতিশ্রুতিশীল খাতগুলো থেকে থেকে চারটি খাত যথা- চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য; পাটজাত পণ্য; কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কী কী করা যেতে পারে তা পর্যালোচনার জন্য অর্থ বিভাগ থেকে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি এ বিষয়ে কিছু সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। সুপারিশগুলো পর্যালোচনা এবং সে অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি করা হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এম. সিরাজ উদ্দিন মিয়াকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, বাণিজ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব, বস্ত্র ও পাট সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, বিএসটিআই মহাপরিচালক, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিসিকের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআই সভাপতি এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক কমিটিতে সদস্য হিসাবে আছেন।
কমিটির কার্যপরিধি: প্রতিবেদনে উল্লিখিত সুপারিশগুলো থেকে সরকারের সক্ষমতা বিবেচনায় কোন কোন সুবিধা দেওয়া যায় তা নির্ধারণ। সুবিধাগুলো দেওয়ার জন্য সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন। সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ দপ্তর/ সংস্থার কার্যক্রমগুলো নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা, মূল্যায়ন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্যক্রম বাস্তবায়ন নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। কমিটি প্রয়োজনে প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত সুপারিশ ছাড়াও বাস্তবতা ও প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনায় অন্য যেকোনো উপযুক্ত সুবিধা প্রদানের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে। কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক সদস্যকে কো-অপট করতে পারবে।
পর্যালোচনা সভা
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বুধবার স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি পর্যালোচনা সভা হয়েছে। বেলা ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সভা হয় বলে সরকারপ্রধানের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, সভায় ১৬টি সিদ্ধান্তের অগ্রগতি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চারটি, শিল্প মন্ত্রণালয় তিনটি, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ দুটি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিনটি ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় চারটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান জানান, এনবিআর ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো-এর পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে। ইতোমধ্যে ১৯টি সংস্থা যুক্ত হয়েছে। আরও সংস্থাকে যুক্ত করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, ট্যারিফ পলিসি ২০২৩ এর বাস্তবায়ন কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন তিনি।
তৈরি পোশাক শিল্পের মত অন্যান্য রপ্তানি খাতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও প্রণোদনা দেওয়া এবং ‘ম্যান মেইড ফাইবার’ সম্পর্কিত কাঁচামাল ও এ শিল্পের মেশিনারিজ আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
সাভারে ট্যানারি ভিলেজে স্থাপিত ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) পূর্ণমাত্রায় চালু করা, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় বাস্তবায়নাধীন এপিআই পার্ক পূর্ণমাত্রায় চালু করা এবং ২০২২ সালে প্রণীত শিল্প নীতি হালনাগাদ করতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে বিষয়েও সভায় আলোচনা করা হয়।প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দেশের চামড়া শিল্পের ব্যাপারে আমরা অপরাধ করেছি, এটার সঠিক মূল্যয়ন করিনি। এই শিল্প দিয়ে আমাদের অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেটা হয়নি।” চামড়া শিল্পের সংকট সমাধানে করণীয় সম্পর্কিত একটি পৃথক বৈঠক আয়োজনের জন্য নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পাশাপাশি, আগামী দুই মাসের মধ্যে এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য করণীয় সম্পর্কে পরবর্তী বৈঠক আয়োজনের নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের নিজেদের স্বার্থে, নিজেদের অর্থনীতির স্বার্থে এই কাজগুলো করে যেতে হবে। যেসব নীতিমালা-আইন কোনো কাজে আসছে না সেগুলো পরিবর্তন করে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথ বের করতে হবে। এগুলো মৌলিক বিষয়। নিজেদের উত্তরণের জন্যই এ কাজগুলো আমাদের করে যেতে হবে।”
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।