alt

অর্থ-বাণিজ্য

ছাতক সিমেন্ট কারখানার ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণ কাজের নীতিগত অনুমোদন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫

ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (সিসিসিএল) ‘কনভারশন অব ওয়েট প্রসেস টু ড্রাই প্রসেস অব সিসিসিএল’ প্রকল্পের কাজ আবার শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণ কাজ আন্তর্জাতিক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সম্পাদনের জন্য নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিএল) ১৯৩৭ সাল থেকে চলমান একমাত্র সরকারি সিমেন্ট কারখানা। কারখানাটি অতি পুরাতন জরাজীর্ণ হওয়ায় আধুনিক, শক্তি সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব ও লাভজনক কারখানায় রূপান্তরের লক্ষ্যে জিওবি অর্থায়নে ৬৬৬ দশমিক ৮১ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জানুয়ারি ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালের ৮ মার্চ তারিখে ‘কনভারশন অব ওয়েট প্রসেস্ টু ডাই প্রসেস্ অব সিসিসিএল’ শীর্ষক প্রকল্পটি একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়।

প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনের প্রেক্ষিতে বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন এবং প্রাক্কলিত ব্যয় দাঁড়ায় ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আধুনিক, পরিবেশ বান্ধব উপায়ে ড্রাই প্রসেস এ দৈনিক ৫০০ মেট্রিক টন সিমেন্ট এবং ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ক্লিংকার উৎপাদনসহ কারখানাটি লাভজনকভাবে চালু রাখা সম্ভব হবে।

প্রকল্পের প্রধান প্যাকেজ-এ অন্তর্ভুক্ত আইটেমগুলো: ডিজাইন, ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট, নির্মাণ, স্থাপন, কমিশনিং এবং পারফরম্যান্স গ্যারান্টি টেস্ট রান (পিজিটিআর) সম্পাদন করে বাংলাদেশ ও ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণসহ কাঁচামাল হ্যান্ডলিং থেকে শুরু করে ড্রাই প্রসেস এ চুড়ান্ত পণ্য (সিমেন্ট ও ক্লিংকার) উৎপাদন।

প্রকল্পের প্যাকেজে বর্ণিত কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহবানের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে চীনা কোম্পানি মেসার্স নানাঝিং সি-হোপ সিমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কো. লি. চায়না-এর সাথে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। প্যাকেজের চুক্তি মূল্য ৭ কোটি ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার ৮০০ ডলার। প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির প্রায় ৯২ শতাংশ সার্বিক বাস্তবায়ন হয়েছে। বাংলাদেশ অংশের রোপওয়ের ১১ দশমিক ৭৪১ কি.মি. এর মধ্যে ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হলেও ভারতীয় অংশের ৪ দশমিক ৫৮৮ কি.মি. কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি।

চুক্তি অনুযায়ী ১৬ দশমিক ৩২৯ কি.মি রোপওয়ে এর মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১১ দশমিক ৭৪১ কি. মি. এর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন চলমান থাকলেও ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণ কাজ বিগত ৩ থেকে ৪ বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, প্রকল্পের কাজ শুরুর পরপরই বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটে, এ কারণে প্রকল্পটি বিলম্বিত হয়। করোনা-মহামারী পরবর্তীতে প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চুনাপাথর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কমোরাহ্ লাইমস্টোন মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (কেএলএমসি)-এর মাইনিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় চুনাপাথর সরবরাহসহ সাধারণ ঠিকাদার কর্তৃক রোপওয়ে স্থাপনের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়, বিসিআইসি, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কেএলএমসি-এর প্রতিনিধির সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত নিয়মিত মনিটরিং সভায় ভারতীয় অংশে রোপওয়ে নির্মাণ কাজ কেএলএমসি-এর মাধ্যমে সম্পাদন করার বিষয়ে আলোচনা হয়। এরই ধারবাহিকতায় ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লি. (সিসিসিএল)-এর সাথে সরাসরি চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে কেএলএমসি সাধারণ ঠিকাদারের স্কোপ অব ওয়ার্ক-ভুক্ত ভারতীয় অংশের রোপওয়ে স্থাপনের কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। একইভাবে নিয়োজিত সাধারণ ঠিকাদার মেসার্স নানাঝিং সি-হোপ সিমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড কেএলএমসি-এর মাধ্যমে ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন এবং বিল কর্তন, কার্য অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধনে সম্মত হয়।

সাধারণ ঠিকাদারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির স্কোপ অব ওয়ার্ক-ভুক্ত ভারতীয় অংশের রোপওয়ে স্থাপন কাজের মূল্য ১৭ কোটি ভারতীয় রুপি সমতুল্য ২০ লাখ ১৩ হাজার ৩৫৫ মার্কিন ডলার। সাধারণ ঠিকাদারের মোট চুক্তি মূল্য ৭ কোটি ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার থেকে ভারতীয় অংশের কাজের মূল্য বাবদ ২০ লাখ ১৩ হাজার ৩৫৫ মার্কিন ডলার কর্তন করে কেএলএমসি’র কাজের বিল পরিশোধ করা হবে। এতে বাংলাদেশ সরকার তথা প্রকল্পের কোন অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে না, বরং একটি দীর্ঘসূত্রিতা ও জটিলতা থেকে প্রকল্পটি মুক্ত হয়ে উৎপাদন পর্যায়ে অগ্রসর হতে পারবে।

বর্তমানে কেএলএমসি-এর মাইনিং কার্যক্রম চালু হয়েছে। এছাড়া ভারতীয় অংশে চীনা প্রতিনিধি কর্তৃক রোপওয়ে নির্মাণের অনুমোদন না পাওয়ায় সাধারণ ঠিকাদারকে সাইট বুঝিয়ে দেয়াসহ কাজের অনুকুল পরিবেশ তৈরি হয়নি। ফলে সাধারণ ঠিকাদার ভারতীয় অংশের রোপওয়ে স্থাপন কাজটি বাস্তবায়ন করতে পারছে না। বর্তমানে চীনা প্রতিষ্ঠানের (সাধারণ ঠিকাদার) মাধ্যমে এলসি খুলে ভারতীয় অংশে কাজ করা সম্ভব নয়। কেএলএমসি জানায় যে চীনা প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে কেএলএমসি বরাবর সরাসরি কার্যাদেশ দিয়ে এলসি খুললে কেএলএমসি ভারতীয় অংশের রোপওয়ে স্থাপনের কাজটি সম্পন্ন করতে পারবে।

ছবি

সিকিউরিটিজ বন্ধক, অবমুক্তকরণ ও বাজেয়াপ্তকরণ নিয়ে ডিএসই’র কর্মশালা

ছবি

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতির ‘সমন্বিত’ নীতিমালা

ছবি

৭০ হাজার টন সার কেনার অনুমোদন

ছবি

ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ছবি

ট্রাম্পের শুল্ক থেকে শতভাগ ‘ছাড়’ পাচ্ছে টিএসএমসি

ছবি

তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে সোনালী ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ

ছবি

তারল্য সহায়তার দেড় হাজার কোটি টাকা ‘ফেরত দিয়েছে’ ইসলামী ব্যাংক

ছবি

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালো

ছবি

জাতীয় সঞ্চয় অধিপ্ততরের রিয়াজুল ইসলাম সাময়িক বরখাস্ত

ছবি

প্রাইম ব্যাংক ও ইএসডিও-এর মধ্যে পে-রোল ব্যাংকিং চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

দেশের অর্থনীতি ধ্বংসপ্রায় অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

জুলাইয়ে আবারও বাড়ল মূল্যস্ফীতি

ছবি

এনবিআর দুই ভাগঃ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি হতে পারে, জানালেন অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ফাউন্ডেশনের বোর্ড সভা

ছবি

প্রবাসীদের দ্রুত রেমিট্যান্স সেবা দিতে বাংলাদেশে চালু হলো না’লা

ছবি

ইলিশ চেয়ে ভারতের ব্যবসায়ীদের অনুরোধ বিবেচনাধীন

ছবি

শেয়ারবাজারে ছোট বিনিয়োগকারী কমছে, বড় বিনিয়োগকারী বাড়ছে

ছবি

ব্যবসায় আস্থা ও গতি ফেরানো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

অর্থ বছর শেষে লেনদেন ভারসাম্যে বিলিয়ন ডলারের উদ্বৃত্ত

ছবি

বাংলালিংক ও বিকাশের অংশীদারত্ব

ছবি

এবি ব্যাংক-এর ৪৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

ব্যাংকের পর্ষদ সভার যে কোনো দ্বিমত, পর্যবেক্ষণ লিপিবদ্ধ করতে হবে কার্যবিবরণীতে

ছবি

ব্যাংকে পদোন্নতির জন্য তদবির করলে ‘অসদাচরণ’ হিসেবে দেখবে সরকার

ছবি

প্রথম দিনেই ১০ হাজার করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছেন

ছবি

গুটিকয় লোক আর্থিক খাত ধ্বংস করেছে: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

জুলাইয়ে পণ্য রপ্তানি ২৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ

ছবি

বিকাশে পরিশোধ করা যাবে একাদশ শ্রেণী, কারিগরিতে ভর্তির আবেদন ও রেজিস্ট্রেশন ফি

ছবি

প্রথম দিনেই ১০ হাজারের বেশি ই-রিটার্ন দাখিল

ছবি

আটাবের কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিল, প্রশাসক নিয়োগ দিলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

ছবি

৫ আগস্ট শোভাযাত্রা: ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা

ছবি

অনেক কনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদের সরকারের ভালো কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ে না: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

রিটার্ন ছাড়া ১০ লাখ টাকার বেশি আমানত ও সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না

তারুণ্যের উৎসবে যোগ দিতে সব ব্যাংককে নির্দেশ

ছবি

মঙ্গলবার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ

ছবি

রেমিটেন্সে ২৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে শুরু নতুন অর্থ বছর

ছবি

বাজারে স্যামসাংয়ের ভিশন এআই প্রযুক্তির নতুন সিরিজের টিভি

tab

অর্থ-বাণিজ্য

ছাতক সিমেন্ট কারখানার ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণ কাজের নীতিগত অনুমোদন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫

ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (সিসিসিএল) ‘কনভারশন অব ওয়েট প্রসেস টু ড্রাই প্রসেস অব সিসিসিএল’ প্রকল্পের কাজ আবার শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণ কাজ আন্তর্জাতিক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সম্পাদনের জন্য নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

গতকাল বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিসিআইসির নিয়ন্ত্রণাধীন ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিএল) ১৯৩৭ সাল থেকে চলমান একমাত্র সরকারি সিমেন্ট কারখানা। কারখানাটি অতি পুরাতন জরাজীর্ণ হওয়ায় আধুনিক, শক্তি সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব ও লাভজনক কারখানায় রূপান্তরের লক্ষ্যে জিওবি অর্থায়নে ৬৬৬ দশমিক ৮১ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জানুয়ারি ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালের ৮ মার্চ তারিখে ‘কনভারশন অব ওয়েট প্রসেস্ টু ডাই প্রসেস্ অব সিসিসিএল’ শীর্ষক প্রকল্পটি একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়।

প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনের প্রেক্ষিতে বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন এবং প্রাক্কলিত ব্যয় দাঁড়ায় ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আধুনিক, পরিবেশ বান্ধব উপায়ে ড্রাই প্রসেস এ দৈনিক ৫০০ মেট্রিক টন সিমেন্ট এবং ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ক্লিংকার উৎপাদনসহ কারখানাটি লাভজনকভাবে চালু রাখা সম্ভব হবে।

প্রকল্পের প্রধান প্যাকেজ-এ অন্তর্ভুক্ত আইটেমগুলো: ডিজাইন, ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট, নির্মাণ, স্থাপন, কমিশনিং এবং পারফরম্যান্স গ্যারান্টি টেস্ট রান (পিজিটিআর) সম্পাদন করে বাংলাদেশ ও ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণসহ কাঁচামাল হ্যান্ডলিং থেকে শুরু করে ড্রাই প্রসেস এ চুড়ান্ত পণ্য (সিমেন্ট ও ক্লিংকার) উৎপাদন।

প্রকল্পের প্যাকেজে বর্ণিত কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহবানের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে চীনা কোম্পানি মেসার্স নানাঝিং সি-হোপ সিমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কো. লি. চায়না-এর সাথে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। প্যাকেজের চুক্তি মূল্য ৭ কোটি ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার ৮০০ ডলার। প্রকল্পে নিয়োজিত ঠিকাদারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির প্রায় ৯২ শতাংশ সার্বিক বাস্তবায়ন হয়েছে। বাংলাদেশ অংশের রোপওয়ের ১১ দশমিক ৭৪১ কি.মি. এর মধ্যে ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হলেও ভারতীয় অংশের ৪ দশমিক ৫৮৮ কি.মি. কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি।

চুক্তি অনুযায়ী ১৬ দশমিক ৩২৯ কি.মি রোপওয়ে এর মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১১ দশমিক ৭৪১ কি. মি. এর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন চলমান থাকলেও ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণ কাজ বিগত ৩ থেকে ৪ বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

জানা গেছে, প্রকল্পের কাজ শুরুর পরপরই বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটে, এ কারণে প্রকল্পটি বিলম্বিত হয়। করোনা-মহামারী পরবর্তীতে প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চুনাপাথর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কমোরাহ্ লাইমস্টোন মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (কেএলএমসি)-এর মাইনিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় চুনাপাথর সরবরাহসহ সাধারণ ঠিকাদার কর্তৃক রোপওয়ে স্থাপনের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।

প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়, বিসিআইসি, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, কেএলএমসি-এর প্রতিনিধির সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত নিয়মিত মনিটরিং সভায় ভারতীয় অংশে রোপওয়ে নির্মাণ কাজ কেএলএমসি-এর মাধ্যমে সম্পাদন করার বিষয়ে আলোচনা হয়। এরই ধারবাহিকতায় ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লি. (সিসিসিএল)-এর সাথে সরাসরি চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে কেএলএমসি সাধারণ ঠিকাদারের স্কোপ অব ওয়ার্ক-ভুক্ত ভারতীয় অংশের রোপওয়ে স্থাপনের কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। একইভাবে নিয়োজিত সাধারণ ঠিকাদার মেসার্স নানাঝিং সি-হোপ সিমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড কেএলএমসি-এর মাধ্যমে ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন এবং বিল কর্তন, কার্য অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধনে সম্মত হয়।

সাধারণ ঠিকাদারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির স্কোপ অব ওয়ার্ক-ভুক্ত ভারতীয় অংশের রোপওয়ে স্থাপন কাজের মূল্য ১৭ কোটি ভারতীয় রুপি সমতুল্য ২০ লাখ ১৩ হাজার ৩৫৫ মার্কিন ডলার। সাধারণ ঠিকাদারের মোট চুক্তি মূল্য ৭ কোটি ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার থেকে ভারতীয় অংশের কাজের মূল্য বাবদ ২০ লাখ ১৩ হাজার ৩৫৫ মার্কিন ডলার কর্তন করে কেএলএমসি’র কাজের বিল পরিশোধ করা হবে। এতে বাংলাদেশ সরকার তথা প্রকল্পের কোন অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে না, বরং একটি দীর্ঘসূত্রিতা ও জটিলতা থেকে প্রকল্পটি মুক্ত হয়ে উৎপাদন পর্যায়ে অগ্রসর হতে পারবে।

বর্তমানে কেএলএমসি-এর মাইনিং কার্যক্রম চালু হয়েছে। এছাড়া ভারতীয় অংশে চীনা প্রতিনিধি কর্তৃক রোপওয়ে নির্মাণের অনুমোদন না পাওয়ায় সাধারণ ঠিকাদারকে সাইট বুঝিয়ে দেয়াসহ কাজের অনুকুল পরিবেশ তৈরি হয়নি। ফলে সাধারণ ঠিকাদার ভারতীয় অংশের রোপওয়ে স্থাপন কাজটি বাস্তবায়ন করতে পারছে না। বর্তমানে চীনা প্রতিষ্ঠানের (সাধারণ ঠিকাদার) মাধ্যমে এলসি খুলে ভারতীয় অংশে কাজ করা সম্ভব নয়। কেএলএমসি জানায় যে চীনা প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে কেএলএমসি বরাবর সরাসরি কার্যাদেশ দিয়ে এলসি খুললে কেএলএমসি ভারতীয় অংশের রোপওয়ে স্থাপনের কাজটি সম্পন্ন করতে পারবে।

back to top