alt

অর্থ-বাণিজ্য

দাম বেড়েছে আলু ছাড়া সব নিত্যপণ্যের

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫

হঠাৎ করে অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের নিত্যপণ্যের বাজার। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলু ছাড়া প্রায় সবধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। একে তো চালের চড়া দাম, এরমধ্যে ৮০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো ধরনের সবজি। সঙ্গে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজ, ডিম, আদা ও এলাচের দামও। মাছ, মাংসও স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। এতে বিপাকে পড়েছেন তারা। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দিন চালাতে হিমশিম খাচ্ছে অনেক পরিবার। শুক্রবার,(৮ আগস্ট ২০২৫) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

মোটা চাল ৬৫-৭০ বাকি সব ধরনের

চাল ৭৫-৮৫ টাকার উপরে

পেঁয়াজ, ডিম, সবজি, মাছ, মাংসসহ বেড়েছে সবধরনের নিত্যপণ্যের দাম

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির কারণে দাম বেড়েছে, আরও বাড়তে পারে

শুক্রবার কারওয়ানবাজারে দেখা যায়, চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের চাল। মোটা চালের দামই এখন ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের একধরনের কিছু মিনিকেট ও নাজির রয়েছে, যেটা শুধু ৬৫-৭০ টাকায় পাওয়া যায়। এছাড়া বাকি সব চালের দাম সাধারণত ৭৫-৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। আর খুব ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চালের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই করছে।

একইভাবে বেড়েছে সবধরনের সবজির দাম। শুক্রবার প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়, ঝিঙা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শসা (দেশি) ১০০ টাকা, শসা (হাইব্রিড) ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বেগুন (গোল) ১২০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ১০০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া গাজর প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, কচু ৮০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে আলুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে। বর্তমানে মানভেদে প্রতি কেজি আলু ২০-৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির কারণে আক্ষেপ করে বাজার করতে আসা আব্দুল মতিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি ছিল। সেই দামে নতুন করে আগুন লেগেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবধরনের পণ্যে কেজি প্রতি ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। সংসার কীভাবে চালাবো তা বুঝতে পারছি না।’

দাম বৃদ্ধির জন্য বৃষ্টিকে দায়ী করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। কারওয়ানবাজারের সবজি ব্যবসায়ী আমিনুল হক বলেন, ‘হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধির কারণ হলো টানা কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি। অনেক এলাকা থেকে মাল আসতে পারছে না। আবার অনেক কৃষক জমি থেকে সবজি তুলতে পারছেন না। তাই দামও বেড়ে গেছে। হয়তো আরও বাড়তে পারে।’

বেশ কয়েকজন ক্রেতা জানান, নিত্যপণ্যের বাজারদর তাদের ওপর একটা বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। কারণ এই মুহূর্তে বাজারে চাল, সবজিসহ ডিম থেকে শুরু করে মসলাজাতীয় পণ্য, সবকিছুর দামই চড়া। দামের চাপে অনেকে বাজারের পণ্যের তালিকা ছোট করতে বাধ্য হচ্ছেন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আরও দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, ডিম, এলাচসহ বিভিন্ন পণ্যের। এরমধ্যে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১৫-২০ টাকা। ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়। আর ১২০ টাকা ডিমের ডজন এখন ১৪০ টাকা। বাজারে প্রতি ১০০ গ্রাম এলাচ আগে ৪০০ টাকা বিক্রি হলে এখন সেটি সাড়ে ৫০০-৬০০ টাকায় উঠেছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি আদার দাম ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২০-২৫০ টাকা।

পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতারা বলছেন, ‘পেঁয়াজের ভর মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। এরমধ্যে কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যায়ে বিঘ্ন ঘটেছে। বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।’

বাড়তি দামের কারণ হিসেবে ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিমের ওপর নতুন একটি একটি চাপ তৈরি হয়েছে। কারণ ঢাকার বাজারে বৃষ্টির প্রভাবে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। এতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের সবজি, যা অনেকটাই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণত ডিমের চাহিদা বেড়ে গেছে।

মাছ মাংসও অধিকাংশ ভোক্তার নাগালের বাইরে। শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। বড় সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২১০০ টাকা। মাঝারি সাইজের ইলিশের দাম ১২০০ টাকা থেকে শুরু। অন্যদিকে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকায়।

মুরগির বাজারেও দামের ঊর্ধ্বগতি। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১৪৫-১৫০ টাকার মধ্যে ছিল। পাকিস্তানি মুরগি ৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়। খাসির মাংস ১২০০ টাকা, আর গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মসলা ও তেলের বাজারে। সয়াবিন তেল (লুজ) বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৭২ টাকা দরে যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬২ টাকা। পাম অয়েল ও সুপার পাম অয়েলের দামও বেড়েছে যথাক্রমে ১০ ও ১১ টাকা করে। খোলা ময়দার দাম বেড়ে হয়েছে ৬৫ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০-৫৫ টাকা।

বাড়তি দামের প্রভাব পড়েছে মূল্যস্ফীতিতে। টানা চার মাস কমার পর মূল্যস্ফীতি আবার বেড়েছে। গত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ হয়েছে। জুনে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জুলাই মাসের মূল্যস্ফীতি চিত্র প্রকাশ করেছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বর্ষা ও বন্যার মৌসুমের কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।

গত জুন মাসে দেশের যে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল, তা বিগত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিবিএসের হিসাব অনুসারে, জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয় ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। দুই খাতেই আগের মাসের চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

ছবি

সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে ভিভো ওয়াই৪০০ ঝড়

ছবি

এনবিআরের আন্দোলনে ব্যবসায়ীদের ক্ষয়ক্ষতি জানতে চেয়েছে সরকার

ছবি

বিনিয়োগ করতে আগ্রহী জাপানি কোম্পানি, সচল হতে পারে বেক্সিমকো টেক্সটাইল

ছবি

৫০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক: ভারতে তৈরী পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থগিত করছে মার্কিন ব্র্যান্ড

ছবি

পুঁজিবাজারের টেকসই সংস্কারে কারিগরি সহযোগিতা করতে চায় এডিবি

ছবি

এবার সেমিকন্ডাক্টরে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প

ছবি

চার মাস পর মূল্যস্ফীতি আবার বাড়লো

ছবি

ছাতক সিমেন্ট কারখানার ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণ কাজের নীতিগত অনুমোদন

ছবি

সিকিউরিটিজ বন্ধক, অবমুক্তকরণ ও বাজেয়াপ্তকরণ নিয়ে ডিএসই’র কর্মশালা

ছবি

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতির ‘সমন্বিত’ নীতিমালা

ছবি

৭০ হাজার টন সার কেনার অনুমোদন

ছবি

ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ছবি

ট্রাম্পের শুল্ক থেকে শতভাগ ‘ছাড়’ পাচ্ছে টিএসএমসি

ছবি

তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে সোনালী ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ

ছবি

তারল্য সহায়তার দেড় হাজার কোটি টাকা ‘ফেরত দিয়েছে’ ইসলামী ব্যাংক

ছবি

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালো

ছবি

জাতীয় সঞ্চয় অধিপ্ততরের রিয়াজুল ইসলাম সাময়িক বরখাস্ত

ছবি

প্রাইম ব্যাংক ও ইএসডিও-এর মধ্যে পে-রোল ব্যাংকিং চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

দেশের অর্থনীতি ধ্বংসপ্রায় অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

জুলাইয়ে আবারও বাড়ল মূল্যস্ফীতি

ছবি

এনবিআর দুই ভাগঃ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি হতে পারে, জানালেন অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ফাউন্ডেশনের বোর্ড সভা

ছবি

প্রবাসীদের দ্রুত রেমিট্যান্স সেবা দিতে বাংলাদেশে চালু হলো না’লা

ছবি

ইলিশ চেয়ে ভারতের ব্যবসায়ীদের অনুরোধ বিবেচনাধীন

ছবি

শেয়ারবাজারে ছোট বিনিয়োগকারী কমছে, বড় বিনিয়োগকারী বাড়ছে

ছবি

ব্যবসায় আস্থা ও গতি ফেরানো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

অর্থ বছর শেষে লেনদেন ভারসাম্যে বিলিয়ন ডলারের উদ্বৃত্ত

ছবি

বাংলালিংক ও বিকাশের অংশীদারত্ব

ছবি

এবি ব্যাংক-এর ৪৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

ব্যাংকের পর্ষদ সভার যে কোনো দ্বিমত, পর্যবেক্ষণ লিপিবদ্ধ করতে হবে কার্যবিবরণীতে

ছবি

ব্যাংকে পদোন্নতির জন্য তদবির করলে ‘অসদাচরণ’ হিসেবে দেখবে সরকার

ছবি

প্রথম দিনেই ১০ হাজার করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছেন

ছবি

গুটিকয় লোক আর্থিক খাত ধ্বংস করেছে: অর্থ উপদেষ্টা

ছবি

জুলাইয়ে পণ্য রপ্তানি ২৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ

ছবি

বিকাশে পরিশোধ করা যাবে একাদশ শ্রেণী, কারিগরিতে ভর্তির আবেদন ও রেজিস্ট্রেশন ফি

ছবি

প্রথম দিনেই ১০ হাজারের বেশি ই-রিটার্ন দাখিল

tab

অর্থ-বাণিজ্য

দাম বেড়েছে আলু ছাড়া সব নিত্যপণ্যের

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫

হঠাৎ করে অস্থির হয়ে উঠেছে দেশের নিত্যপণ্যের বাজার। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলু ছাড়া প্রায় সবধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। একে তো চালের চড়া দাম, এরমধ্যে ৮০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো ধরনের সবজি। সঙ্গে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজ, ডিম, আদা ও এলাচের দামও। মাছ, মাংসও স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। এতে বিপাকে পড়েছেন তারা। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দিন চালাতে হিমশিম খাচ্ছে অনেক পরিবার। শুক্রবার,(৮ আগস্ট ২০২৫) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

মোটা চাল ৬৫-৭০ বাকি সব ধরনের

চাল ৭৫-৮৫ টাকার উপরে

পেঁয়াজ, ডিম, সবজি, মাছ, মাংসসহ বেড়েছে সবধরনের নিত্যপণ্যের দাম

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টির কারণে দাম বেড়েছে, আরও বাড়তে পারে

শুক্রবার কারওয়ানবাজারে দেখা যায়, চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের চাল। মোটা চালের দামই এখন ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের একধরনের কিছু মিনিকেট ও নাজির রয়েছে, যেটা শুধু ৬৫-৭০ টাকায় পাওয়া যায়। এছাড়া বাকি সব চালের দাম সাধারণত ৭৫-৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। আর খুব ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চালের দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই করছে।

একইভাবে বেড়েছে সবধরনের সবজির দাম। শুক্রবার প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়, ঝিঙা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শসা (দেশি) ১০০ টাকা, শসা (হাইব্রিড) ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বেগুন (গোল) ১২০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ১০০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এছাড়া গাজর প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, কচু ৮০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে আলুর দাম স্বাভাবিক রয়েছে। বর্তমানে মানভেদে প্রতি কেজি আলু ২০-৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির কারণে আক্ষেপ করে বাজার করতে আসা আব্দুল মতিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি ছিল। সেই দামে নতুন করে আগুন লেগেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবধরনের পণ্যে কেজি প্রতি ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। সংসার কীভাবে চালাবো তা বুঝতে পারছি না।’

দাম বৃদ্ধির জন্য বৃষ্টিকে দায়ী করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। কারওয়ানবাজারের সবজি ব্যবসায়ী আমিনুল হক বলেন, ‘হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধির কারণ হলো টানা কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি। অনেক এলাকা থেকে মাল আসতে পারছে না। আবার অনেক কৃষক জমি থেকে সবজি তুলতে পারছেন না। তাই দামও বেড়ে গেছে। হয়তো আরও বাড়তে পারে।’

বেশ কয়েকজন ক্রেতা জানান, নিত্যপণ্যের বাজারদর তাদের ওপর একটা বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। কারণ এই মুহূর্তে বাজারে চাল, সবজিসহ ডিম থেকে শুরু করে মসলাজাতীয় পণ্য, সবকিছুর দামই চড়া। দামের চাপে অনেকে বাজারের পণ্যের তালিকা ছোট করতে বাধ্য হচ্ছেন।

রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আরও দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, ডিম, এলাচসহ বিভিন্ন পণ্যের। এরমধ্যে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১৫-২০ টাকা। ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ভোক্তাকে কিনতে হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়। আর ১২০ টাকা ডিমের ডজন এখন ১৪০ টাকা। বাজারে প্রতি ১০০ গ্রাম এলাচ আগে ৪০০ টাকা বিক্রি হলে এখন সেটি সাড়ে ৫০০-৬০০ টাকায় উঠেছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি আদার দাম ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২০-২৫০ টাকা।

পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতারা বলছেন, ‘পেঁয়াজের ভর মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। এরমধ্যে কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ পর্যায়ে বিঘ্ন ঘটেছে। বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।’

বাড়তি দামের কারণ হিসেবে ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিমের ওপর নতুন একটি একটি চাপ তৈরি হয়েছে। কারণ ঢাকার বাজারে বৃষ্টির প্রভাবে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। এতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের সবজি, যা অনেকটাই সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণত ডিমের চাহিদা বেড়ে গেছে।

মাছ মাংসও অধিকাংশ ভোক্তার নাগালের বাইরে। শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। বড় সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ২১০০ টাকা। মাঝারি সাইজের ইলিশের দাম ১২০০ টাকা থেকে শুরু। অন্যদিকে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪৫০ টাকায়।

মুরগির বাজারেও দামের ঊর্ধ্বগতি। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১৪৫-১৫০ টাকার মধ্যে ছিল। পাকিস্তানি মুরগি ৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়। খাসির মাংস ১২০০ টাকা, আর গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে মসলা ও তেলের বাজারে। সয়াবিন তেল (লুজ) বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৭২ টাকা দরে যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬২ টাকা। পাম অয়েল ও সুপার পাম অয়েলের দামও বেড়েছে যথাক্রমে ১০ ও ১১ টাকা করে। খোলা ময়দার দাম বেড়ে হয়েছে ৬৫ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০-৫৫ টাকা।

বাড়তি দামের প্রভাব পড়েছে মূল্যস্ফীতিতে। টানা চার মাস কমার পর মূল্যস্ফীতি আবার বেড়েছে। গত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ হয়েছে। জুনে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জুলাই মাসের মূল্যস্ফীতি চিত্র প্রকাশ করেছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বর্ষা ও বন্যার মৌসুমের কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।

গত জুন মাসে দেশের যে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল, তা বিগত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিবিএসের হিসাব অনুসারে, জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয় ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। দুই খাতেই আগের মাসের চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

back to top