বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হয়েছে। ৮ আগস্ট শুক্রবার সকাল ১০টা ১ মিনিটের পর কার্যকর হয়েছে বহুল আলোচিত এই শুল্ক। এ সময়ের পর রপ্তানি পণ্যের যেসব কনটেইনার জাহাজে বোঝাই করা হয়েছে, সেসব পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক দিতে হচ্ছে। একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে এখন সব মিলিয়ে ৩৬ দশমিক ৫০ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে বলে হিসাব দিয়েছে এ খাতের রপ্তানিকারকদের প্রধান সংগঠন বিজিএমইএ।
তারপরও সুবিধাজনক অবস্থায় আছে বাংলাদেশ। কেননা, ট্রাম্প শুল্ক কার্যকরের আগেই যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের হারানো ব্যবসা পাচ্ছে বাংলাদেশ। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, গত কয়েক মাস ধরেই চীনের হারানো ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে আসছে। আগামী দিনগুলোতে আরও বেশি বেশি আসবে বলে আশা করছেন তারা।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) গত বৃহস্পতিবার হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতেও তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। অটেক্সার তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে জুন সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৩ হাজার ৮১৫ কোটি ৮১ লাখ (৩৮.১৬ বিলিয়ন) ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি।
এই ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ যা শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। জানুয়ারি-জুন সময়ে চীনের প্রবৃদ্ধি কমেছে ১৬ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ। ভিয়েতনামের বেড়েছে ১৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এই ছয় মাসের মধ্যে জুনে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। চীনের কমেছে ৪০ শতাংশ। ভিয়েতনামের বেড়েছে ২৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। মে মাসে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ কমেছিল। চীনের কমেছিল ৫২ শতাংশ। তবে ভিয়েতনামের বেড়েছিল ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ হচ্ছে ভিয়েতনাম ও চীন। বাংলাদেশের মতো ভিয়েতনামের পণ্যেও ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বসিয়েছেন ট্রাম্প।
দীর্ঘদিন ধরে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। ট্রাম্প শুল্ক সেই যুদ্ধকে আরও উসকে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন কোন দেশ কার ওপর কতো শুল্ক বসাবে—তার চূড়ান্ত ঘোষণা এখনও কোনও দেশের পক্ষ থেকেই দেওয়া হয়নি। এদিকে ভারতের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক বাসিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প; এ নিয়ে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারতের ওপর সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মোট পাল্টা শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ।
ভারতের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়ে বিশ্ববাণিজ্যে নতুন করে ঝড় তুলেছেন ট্রাম্প। দুদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ‘মারাত্মক’ অবনতি হয়েছে। গত ২ এপ্রিল বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর উচ্চহারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। বাংলাদেশের ওপর আরোপ করা হয়েছিল ৩৭ শতাংশ।
পরে ৯ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর ওই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। পরে ভারতের ওপর ট্রাম্প শুল্ক ১ শতাংশ কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। বাংলাদেশের ২ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়। এরপর শুল্কহার কমানো নিয়ে বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের দীর্ঘ আলোচনা হয়; চলে দর-কষাকষি। ভারত সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার ধারণা ছিল ২৫ শতাংশ থেকে শুল্কহার ২০ শতাংশের নিচে নামবে।
কিন্তু সেটা আর হয়নি; ভারতের ওপর শেষ পর্যন্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখেন ট্রাম্প। বাংলাদেশের শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়। গত ১ আগস্ট এই ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, এক সপ্তাহ পর ৮ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে নতুন শুল্কহার।
কিন্তু তার আগেই গত ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ভারতের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনার কারণে ‘জরিমানা’ হিসেবে অতিরিক্ত এই ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে আগের ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কসহ ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। ২১ দিন পর থেকে ভারতীয় পণ্যে এই শুল্ক কার্যকর হবে। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চেয়ারে ফেরার পরপরই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বড় অঙ্কের পাল্টা শুল্ক আরোপ করে বিশ্ববাণিজ্যে ‘ঝড়’ তোলেন। গত ৬ আগস্ট ভারতের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের মধ্য দিয়ে সেই ‘ঝড়’ নতুন মাত্রা পেয়েছে।
একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় বাজার। ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে এই বাজারে ৮৬৯ কোটি ২৪ লাখ (৮.৬৯ বিলিয়ন) পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা মোট রপ্তানি আয়ের ১৮ শতাংশ। এর মধ্যে ৯০ শতাংশই বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২২ সালে এই বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৯৭৩ কোটি (৯.৭৩ বিলিয়ন) ডলারে উঠেছিল। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধি তো দূরের কথা, উল্টো ২৫ শতাংশ কমেছিল। সেই নেতিবাচক ধারা চলে ২০২৪ সালেও। তবে বছরের শেষ দিকে এসে গতি বাড়ায় শেষ পর্যন্ত নামমাত্র প্রবৃদ্ধি দিয়ে শেষ হয়েছিল বছর। গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৭৩৪ কোটি (৭.৩৪ বিলিয়ন) ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।
২০২৫ সাল শুরু হয়েছিল বড় চমক দিয়ে। অটেক্সার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৮০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানির অঙ্ক ছিল ৭০ কোটি ১০ লাখ ডলার। মার্চে ছিল ৭২ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। এপ্রিলে রপ্তানি হয় ৭৬ কোটি ডলারের পোশাক।
রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হয়েছে। ৮ আগস্ট শুক্রবার সকাল ১০টা ১ মিনিটের পর কার্যকর হয়েছে বহুল আলোচিত এই শুল্ক। এ সময়ের পর রপ্তানি পণ্যের যেসব কনটেইনার জাহাজে বোঝাই করা হয়েছে, সেসব পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক দিতে হচ্ছে। একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে এখন সব মিলিয়ে ৩৬ দশমিক ৫০ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে বলে হিসাব দিয়েছে এ খাতের রপ্তানিকারকদের প্রধান সংগঠন বিজিএমইএ।
তারপরও সুবিধাজনক অবস্থায় আছে বাংলাদেশ। কেননা, ট্রাম্প শুল্ক কার্যকরের আগেই যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের হারানো ব্যবসা পাচ্ছে বাংলাদেশ। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, গত কয়েক মাস ধরেই চীনের হারানো ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে আসছে। আগামী দিনগুলোতে আরও বেশি বেশি আসবে বলে আশা করছেন তারা।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) গত বৃহস্পতিবার হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতেও তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। অটেক্সার তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে জুন সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৩ হাজার ৮১৫ কোটি ৮১ লাখ (৩৮.১৬ বিলিয়ন) ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ বেশি।
এই ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ যা শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। জানুয়ারি-জুন সময়ে চীনের প্রবৃদ্ধি কমেছে ১৬ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ। ভিয়েতনামের বেড়েছে ১৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এই ছয় মাসের মধ্যে জুনে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। চীনের কমেছে ৪০ শতাংশ। ভিয়েতনামের বেড়েছে ২৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। মে মাসে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ কমেছিল। চীনের কমেছিল ৫২ শতাংশ। তবে ভিয়েতনামের বেড়েছিল ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ হচ্ছে ভিয়েতনাম ও চীন। বাংলাদেশের মতো ভিয়েতনামের পণ্যেও ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বসিয়েছেন ট্রাম্প।
দীর্ঘদিন ধরে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। ট্রাম্প শুল্ক সেই যুদ্ধকে আরও উসকে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন কোন দেশ কার ওপর কতো শুল্ক বসাবে—তার চূড়ান্ত ঘোষণা এখনও কোনও দেশের পক্ষ থেকেই দেওয়া হয়নি। এদিকে ভারতের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক বাসিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প; এ নিয়ে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারতের ওপর সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মোট পাল্টা শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ।
ভারতের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়ে বিশ্ববাণিজ্যে নতুন করে ঝড় তুলেছেন ট্রাম্প। দুদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ‘মারাত্মক’ অবনতি হয়েছে। গত ২ এপ্রিল বাণিজ্য ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর উচ্চহারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন ভারতের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। বাংলাদেশের ওপর আরোপ করা হয়েছিল ৩৭ শতাংশ।
পরে ৯ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর ওই শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। পরে ভারতের ওপর ট্রাম্প শুল্ক ১ শতাংশ কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। বাংলাদেশের ২ শতাংশ কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়। এরপর শুল্কহার কমানো নিয়ে বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের দীর্ঘ আলোচনা হয়; চলে দর-কষাকষি। ভারত সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার ধারণা ছিল ২৫ শতাংশ থেকে শুল্কহার ২০ শতাংশের নিচে নামবে।
কিন্তু সেটা আর হয়নি; ভারতের ওপর শেষ পর্যন্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বহাল রাখেন ট্রাম্প। বাংলাদেশের শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়। গত ১ আগস্ট এই ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, এক সপ্তাহ পর ৮ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে নতুন শুল্কহার।
কিন্তু তার আগেই গত ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ভারতের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনার কারণে ‘জরিমানা’ হিসেবে অতিরিক্ত এই ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে আগের ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কসহ ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করল যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। ২১ দিন পর থেকে ভারতীয় পণ্যে এই শুল্ক কার্যকর হবে। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের চেয়ারে ফেরার পরপরই বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বড় অঙ্কের পাল্টা শুল্ক আরোপ করে বিশ্ববাণিজ্যে ‘ঝড়’ তোলেন। গত ৬ আগস্ট ভারতের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের মধ্য দিয়ে সেই ‘ঝড়’ নতুন মাত্রা পেয়েছে।
একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় বাজার। ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে এই বাজারে ৮৬৯ কোটি ২৪ লাখ (৮.৬৯ বিলিয়ন) পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা মোট রপ্তানি আয়ের ১৮ শতাংশ। এর মধ্যে ৯০ শতাংশই বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২০২২ সালে এই বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৯৭৩ কোটি (৯.৭৩ বিলিয়ন) ডলারে উঠেছিল। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধি তো দূরের কথা, উল্টো ২৫ শতাংশ কমেছিল। সেই নেতিবাচক ধারা চলে ২০২৪ সালেও। তবে বছরের শেষ দিকে এসে গতি বাড়ায় শেষ পর্যন্ত নামমাত্র প্রবৃদ্ধি দিয়ে শেষ হয়েছিল বছর। গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৭৩৪ কোটি (৭.৩৪ বিলিয়ন) ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।
২০২৫ সাল শুরু হয়েছিল বড় চমক দিয়ে। অটেক্সার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৮০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানির অঙ্ক ছিল ৭০ কোটি ১০ লাখ ডলার। মার্চে ছিল ৭২ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। এপ্রিলে রপ্তানি হয় ৭৬ কোটি ডলারের পোশাক।