alt

অর্থ-বাণিজ্য

৯ দিনে ৬৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫

ছবি : ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

নতুন অর্থ বছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রবিবার রেমিটেন্সের সাপ্তাহিক যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টের প্রথম ৯ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ৬৭ কোটি ৫১ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।

রেমিটেন্সে প্রতি ডলারে এখন ১২২ টাকার মতো দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। সে হিসাবে টাকার অঙ্কে আগস্টের ৯ দিনে ৮ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছে ৭ কোটি ৭০লাখ ডলার; টাকার অঙ্কে যা ৯১৫ কোটি টাকা। মাসের বাকি ২২ দিনে (১০ থেকে ৩১ আগস্ট) এই হারে এলে মাস শেষে রেমিটেন্সের অঙ্ক ২৩২ কোটি ৫৩ লাখ (২.৩২ বিলিয়ন) ডলারে পৌঁছবে।

দেশের অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে এ মুহূর্তে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়। বলা যায়, সঙ্কটে পড়া বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে যাচ্ছে রেমিটেন্স। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ৩ হাজার ৩২ কোটি ৭৫ লাখ (৩০.৩৩ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা ছিল আগের অর্থ বছরের (২০২৩-২৪) চেয়ে ২৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি। প্রতি মাসের গড় হিসাবে এসেছিল ২৫১ কোটি ৯৮ লাখ (২.৫২ বিলিয়ন) ডলার।

রোজা ও ঈদ সামনে রেখে গত মার্চ মাসে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ (৩.২৯ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স আসে দেশে, যা ছিল গত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে ৬৫ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৬ কোটি ৯৬ লাখ (২.৯৭ বিলিয়ন) ডলার আসে গত মে মাসে। তৃতীয় সর্বোচ্চ আসে গত অর্থ বছরের শেষ মাস জুনে, ২৮২ কোটি ১২ লাখ (২.৮২ বিলিয়ন) ডলার। চতুর্থ সর্বোচ্চ আসে এপ্রিল মাসে, ২৭৫ কোটি ১৯ লাখ (২.৭৫ বিলিয়ন) ডলার।

২০২৪-২৫ অর্থ বছর শুরু হয়েছিল গত বছরের জুলাই থেকে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে ওই মাস ছিল উত্তাল; দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল। কয়েক দিন ব্যাংক ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল।

সে কারণে জুলাই মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ কিছুটা কমেছিল; এসেছিল ১৯১ কোটি ৩৭ কোটি (১.৯১ বিলিয়ন) ডলার। তার আগের তিন মাস ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি এসেছিল। আবার জুলাইয়ের পর প্রতি মাসেও ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স দেশে এসেছে। ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ (২.১৮ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ২৬৪ কোটি (২.৬৪ বিলিয়ন) ডলার।

গত অর্থ বছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে এসেছিল ২২২ কোটি ৪১ লাখ (২.২২ বিলিয়ন) ডলার। তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে এসেছিল ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ (২.৪০ বিলিয়ন) ডলার। চতুর্থ মাস অক্টোবরে আসে ২৩৯ কোটি ৫১ লাখ (২.৩৯ বিলিয়ন) ডলার। পঞ্চম মাস নভেম্বরে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ (২ বিলিয়ন) ডলার। অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ১২ মাসের ১১ মাসেই (আগস্ট-জুন) ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছে। এক মাসে (মার্চ) এসেছে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২ হাজার ৩৯১ কোটি ২২ লাখ (২৩.৯১ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এসেছিল ২২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থ বছরে এসেছিল ২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থ বছরে আসে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এসেছিল ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।

এই রেমিটেন্সের ওপর ভর করে বেশ কিছুদিন ধরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকা অর্থনীতির আরেক গুরুত্বপূর্ণ সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভও সন্তোষজনক অবস্থায় অবস্থান করছে। এমনকি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি বিল পরিশোধের পরও বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করে। গ্রস বা মোট হিসাবে ছিল ২৯ বিলিয়ন ডলারের উপরে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ শেষ তথ্যে দেখা যায়, গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার; গ্রস হিসাবে ছিল ৩০ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক বিপিএম-৬ হিসাবের রিজার্ভকে তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ হিসেবে দাবি করে। সবশেষ গত মে মাসের আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, ওই মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে বর্তমানের ২৫ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ দিয়ে প্রায় সাড়ে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে।

গত ৮ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে আকুর মে-জুন মেয়াদের ২ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধ করে। এরপর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। গ্রস হিসাবে নামে ২৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারে। আকুর দেনা শোধের আগে বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। আর গ্রস হিসাবে ছিল ৩১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।

ডলারের দাম ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে নিলামে ডলার কেনার কারণেও রিজার্ভ বাড়ছে বলে জনিয়েছেন ব্যাংকাররা। গত এক মাসে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ৬২ কোটি ২০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রবিবারও ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে। অর্থনীতির সামর্থ্য প্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ সূচক রিজার্ভ নিয়ে বাংলাদেশে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা চলছে আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময় থেকেই। অভ্যুত্থানের পর গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিলেও উদ্বেগ কাটছিল না। এছাড়া রপ্তানি আয় এবং বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবিসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার বাজেট সহায়তার ঋণে রিজার্ভ স্বস্তিকর জায়গায় এসেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

ছবি

পাঁচ শ্রেণীর করদাতাদের অনলাইনে রিটার্ন না দিলেও চলবে

ছবি

ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পাটপণ্য আমদানি বন্ধ

ছবি

চাল আমদানির জন্য ২৪২টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিতে চিঠি

ছবি

১০০ টাকার নতুন নোট বাজারে আসছে মঙ্গলবার

ছবি

সহজ হলো বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ নীতিমালা

ছবি

টানা পাঁচ দিন শেয়ারবাজারে পতন

ছবি

ডলার কেনায় রিজার্ভ বেড়েছে

ছবি

পাঁচ শ্রেণির করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন বাধ্যবাধকতা থেকে ছাড় দিয়েছে এনবিআর

ছবি

বিকাশ অ্যাপেই এখন পাওয়া যাচ্ছে রেমিট্যান্স স্টেটমেন্ট

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের ৩ টার্মিনালে বছরের শেষেই নতুন অপারেটর: বিডা চেয়ারম্যান

ছবি

সুইসকন্ট্রাক্ট ও বিজিএপিএমইএ’র মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই

ছবি

২০৩০ সালের মধ্যে চিকিৎসা সরঞ্জামের বৈশ্বিক বাজার ছাড়াবে ১ ট্রিলিয়ন ডলার

ছবি

এনবিআর বিলুপ্ত করে অধ্যাদেশ জারির বৈধতা নিয়ে রিট খারিজ

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি

ছবি

টাকা ছাপানো-বণ্টনে বছরে খরচ ২০ হাজার কোটি, ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ানোর আহ্বান গভর্নরের

ছবি

‘শূন্য’ রিটার্ন দিলে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড: এনবিআর

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে ব্রাজিল থেকে আসা কন্টেইনারে তেজস্ক্রিয়া

ছবি

গত তিন বছর সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণের চেয়ে সুদ ও আসল পরিশোধের পরিমাণ বেশি

ছবি

টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু রবিবার, ৮০ টাকায় মিলবে চিনি

ছবি

সপ্তাহজুড়ে দরপতনের পরও বাজার মূলধন বেড়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা

ছবি

পাল্টা শুল্ক ও এনবিআরে কর্মবিরতির কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ১২ শতাংশ

ছবি

ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাবে ভারতের শেয়ারবাজারে বড় ধস

ছবি

সুদবিহীন কিস্তিতে স্মার্টফোন কেনার সুযোগ আনল গ্রামীণফোন ও ইবিএল

ছবি

দাম বেড়েছে আলু ছাড়া সব নিত্যপণ্যের

ছবি

সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে ভিভো ওয়াই৪০০ ঝড়

ছবি

এনবিআরের আন্দোলনে ব্যবসায়ীদের ক্ষয়ক্ষতি জানতে চেয়েছে সরকার

ছবি

বিনিয়োগ করতে আগ্রহী জাপানি কোম্পানি, সচল হতে পারে বেক্সিমকো টেক্সটাইল

ছবি

৫০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক: ভারতে তৈরী পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থগিত করছে মার্কিন ব্র্যান্ড

ছবি

পুঁজিবাজারের টেকসই সংস্কারে কারিগরি সহযোগিতা করতে চায় এডিবি

ছবি

এবার সেমিকন্ডাক্টরে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প

ছবি

চার মাস পর মূল্যস্ফীতি আবার বাড়লো

ছবি

ছাতক সিমেন্ট কারখানার ভারতীয় অংশের রোপওয়ে নির্মাণ কাজের নীতিগত অনুমোদন

ছবি

সিকিউরিটিজ বন্ধক, অবমুক্তকরণ ও বাজেয়াপ্তকরণ নিয়ে ডিএসই’র কর্মশালা

ছবি

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতির ‘সমন্বিত’ নীতিমালা

ছবি

৭০ হাজার টন সার কেনার অনুমোদন

ছবি

ডেল্টা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

tab

অর্থ-বাণিজ্য

৯ দিনে ৬৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

ছবি : ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫

নতুন অর্থ বছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রবিবার রেমিটেন্সের সাপ্তাহিক যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টের প্রথম ৯ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ৬৭ কোটি ৫১ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন।

রেমিটেন্সে প্রতি ডলারে এখন ১২২ টাকার মতো দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। সে হিসাবে টাকার অঙ্কে আগস্টের ৯ দিনে ৮ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। প্রতিদিনের গড় হিসাবে এসেছে ৭ কোটি ৭০লাখ ডলার; টাকার অঙ্কে যা ৯১৫ কোটি টাকা। মাসের বাকি ২২ দিনে (১০ থেকে ৩১ আগস্ট) এই হারে এলে মাস শেষে রেমিটেন্সের অঙ্ক ২৩২ কোটি ৫৩ লাখ (২.৩২ বিলিয়ন) ডলারে পৌঁছবে।

দেশের অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে এ মুহূর্তে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়। বলা যায়, সঙ্কটে পড়া বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে যাচ্ছে রেমিটেন্স। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ৩ হাজার ৩২ কোটি ৭৫ লাখ (৩০.৩৩ বিলিয়ন) ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা ছিল আগের অর্থ বছরের (২০২৩-২৪) চেয়ে ২৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি। প্রতি মাসের গড় হিসাবে এসেছিল ২৫১ কোটি ৯৮ লাখ (২.৫২ বিলিয়ন) ডলার।

রোজা ও ঈদ সামনে রেখে গত মার্চ মাসে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ (৩.২৯ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স আসে দেশে, যা ছিল গত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে ৬৫ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৬ কোটি ৯৬ লাখ (২.৯৭ বিলিয়ন) ডলার আসে গত মে মাসে। তৃতীয় সর্বোচ্চ আসে গত অর্থ বছরের শেষ মাস জুনে, ২৮২ কোটি ১২ লাখ (২.৮২ বিলিয়ন) ডলার। চতুর্থ সর্বোচ্চ আসে এপ্রিল মাসে, ২৭৫ কোটি ১৯ লাখ (২.৭৫ বিলিয়ন) ডলার।

২০২৪-২৫ অর্থ বছর শুরু হয়েছিল গত বছরের জুলাই থেকে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে ওই মাস ছিল উত্তাল; দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল। কয়েক দিন ব্যাংক ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল।

সে কারণে জুলাই মাসে রেমিটেন্স প্রবাহ কিছুটা কমেছিল; এসেছিল ১৯১ কোটি ৩৭ কোটি (১.৯১ বিলিয়ন) ডলার। তার আগের তিন মাস ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি এসেছিল। আবার জুলাইয়ের পর প্রতি মাসেও ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স দেশে এসেছে। ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ (২.১৮ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ২৬৪ কোটি (২.৬৪ বিলিয়ন) ডলার।

গত অর্থ বছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে এসেছিল ২২২ কোটি ৪১ লাখ (২.২২ বিলিয়ন) ডলার। তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে এসেছিল ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ (২.৪০ বিলিয়ন) ডলার। চতুর্থ মাস অক্টোবরে আসে ২৩৯ কোটি ৫১ লাখ (২.৩৯ বিলিয়ন) ডলার। পঞ্চম মাস নভেম্বরে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯৫ লাখ (২ বিলিয়ন) ডলার। অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ১২ মাসের ১১ মাসেই (আগস্ট-জুন) ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছে। এক মাসে (মার্চ) এসেছে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ২ হাজার ৩৯১ কোটি ২২ লাখ (২৩.৯১ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে এসেছিল ২২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থ বছরে এসেছিল ২১ দশমিক শূন্য তিন বিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থ বছরে আসে ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এসেছিল ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।

এই রেমিটেন্সের ওপর ভর করে বেশ কিছুদিন ধরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকা অর্থনীতির আরেক গুরুত্বপূর্ণ সূচক বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভও সন্তোষজনক অবস্থায় অবস্থান করছে। এমনকি এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি বিল পরিশোধের পরও বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করে। গ্রস বা মোট হিসাবে ছিল ২৯ বিলিয়ন ডলারের উপরে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ শেষ তথ্যে দেখা যায়, গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার; গ্রস হিসাবে ছিল ৩০ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক বিপিএম-৬ হিসাবের রিজার্ভকে তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ হিসেবে দাবি করে। সবশেষ গত মে মাসের আমদানির তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, ওই মাসে পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। সে হিসাবে বর্তমানের ২৫ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার তাৎক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ দিয়ে প্রায় সাড়ে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে।

গত ৮ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে আকুর মে-জুন মেয়াদের ২ দশমিক শূন্য ২ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধ করে। এরপর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। গ্রস হিসাবে নামে ২৯ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারে। আকুর দেনা শোধের আগে বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। আর গ্রস হিসাবে ছিল ৩১ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।

ডলারের দাম ধরে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে নিলামে ডলার কেনার কারণেও রিজার্ভ বাড়ছে বলে জনিয়েছেন ব্যাংকাররা। গত এক মাসে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ৬২ কোটি ২০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রবিবারও ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে। অর্থনীতির সামর্থ্য প্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ সূচক রিজার্ভ নিয়ে বাংলাদেশে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা চলছে আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময় থেকেই। অভ্যুত্থানের পর গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিলেও উদ্বেগ কাটছিল না। এছাড়া রপ্তানি আয় এবং বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও এডিবিসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার বাজেট সহায়তার ঋণে রিজার্ভ স্বস্তিকর জায়গায় এসেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

back to top