দেশ থেকে ২০০ কোটি টাকার বেশি পাচার করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার তথ্য দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘এরকম ১০১টা পেয়েছি। এগুলো এলেইতো হাজার হাজার কোটি টাকা হয়ে যায়।’ গতকাল মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে সরকারের এক বছর উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি।
দেড় ঘণ্টার সংবাদ সম্মেলনে পাচার হওয়ার অর্থ ফিরিয়ে আনতে তার আগের প্রতিশ্রুতির বিষয়টি তুলে ধরে এক সাংবাদিক অর্থ উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন করেন ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব হস্তান্তরের আগে সেটা করা সম্ভব হবে কিনা?
এর জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সবকিছু দৃশ্যমান হতে সময় লাগে। ১১টি ঘটনা আমরা নির্বাচন করেছি। পাচারকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ফেরত আনার জন্য এমওইউ সই হয়েছে। যারা পাচার করে তাদের বুদ্ধি আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। এখান থেকে সেখানে সেখান থেকে ওখানে। অনেক লেয়ারিং করে তারা। যারা করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত টাকা কোন কোন জায়গায় গিয়ে থেমেছে সেটা চিহ্নিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত আনার জন্য একটা আইনি প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলে দিলেই তো ব্যাংক অব ইংল্যান্ড টাকা পাঠিয়ে দেবে না। লন্ডনে একলোকের কয়েকটা বাড়ি জব্দ করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরে আরেকজনেরটা চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশ্বের সেরা আইনজীবী তারা নিয়োগ দিয়েছে। ওদেরকে কাউন্টার দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আইনজীবীদের মাধ্যমে কীভাবে ট্রেস করা যায় সেটার চেষ্টাও চলছে।’
এসব পদক্ষেপ আগামীর জন্য সতর্কবানী হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে কিন্তু কেউ করেনি। পরবর্তী সরকার যদি মনে করে এগুলো করতে যায় তাহলে ১১ জনের সঙ্গে আরও ১১ জন যোগ হবে। এরকম পদক্ষেপ আগে নেওয়া হয়নি।’
আইএমএফ থেকে এক দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার তথ্য দিয়ে সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আবার আরেকজন নিয়ে গেল ৪০ হাজার কোটি টাকা। এই টাকাটা না নিলেতো আইএমএফের এই টাকাটা আনা লাগতো না। এগুলোতো আমাদের টাকা। দেশে এস আলম, বসুন্ধরা, বেক্সিমকোসহ অনেকগুলো কোম্পানির সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। ২০০ কোটি টাকার বেশি যারা নিয়ে গেছে এরকম লোকদের আমরা চিহ্নিত করেছি। এরকম ১০১টা পেয়েছি। এগুলো এলেইতো হাজার হাজার কোটি টাকা হয়ে যায়।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে সহিংস উপায়ে সরকার পতনের পর অর্থনীতিতে যে ধরনের দুর্দশা নেমে এসেছিল বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি তার চেয়ে অনেক ভালো।’
নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে কয়েকটি দেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যেসব দেশে সহিংসভাবে সরকার পরিবর্তন হয়েছে, যেমন- ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, ইরান, নিকারাগুয়া, শ্রীলঙ্কা, রাশিয়াসহ সব দেশ। এসব দেশে সরকার পরিবর্তনের পর প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়েছে এবং মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে গিয়েছিল। পৃথিবীর সব দেশেই মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। প্রবৃদ্ধি কমে যায়। সেই তুলনায় আমাদের এখানে কম হয়েছে। বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে মূল্যস্ফীতি কমেছে এবং প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক আছে, নেতিবাচক হয়নি। এটা একটা বিস্ময়কর অর্জন। ইন্দোনেশিয়াতে ১৯৯৭-৯৮ সালের সঙ্কটের সময় দারিদ্রের হার ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে গিয়ে ৪০ শতাংশ হয়ে গিয়েছিল। রাশিয়ায় যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়লো তাদের ঘুরে দাঁড়াতে প্রায় ১০ বছর লেগেছে। তাদের জীবনমান নেতিবাচক হয়েছে। ৯০০ শতাংশের মত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল। এটা ঠিক করতে তাদের ১০ বছরের মত সময় লেগেছে। রাশিয়া এত বড় একটা উন্নত দেশ।’
গত জুলাইয়ের একটি পত্রিকার খবরের বরাত দিয়ে বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান বলেন, ‘জুলাই মাসে বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারে একটা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে গিয়েছে। ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের পর বাংলাদেশ। ওরা শেয়ারবাজার যেই অবস্থায় রেখে গিয়েছিল সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আপনারা বলতে পারেন যে শেয়ারবাজারে এখনও নিম্ন গতি। শেয়ারবাজারে ওঠানামা থাকে।’
কর্মসংস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আইএলও এর নিয়ম অনুযায়ী আমরা কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিবেচনা করে থাকি। কিন্তু ইন্টারনেটের যুগে প্রচুর লোক এখন ইন্টারনেটে আয় করে। সেটা আমাদের হিসাবে আসে না। তারা আত্মকর্মসংস্থানে আছে। ঘরে বসে আয় করছে।’
আইএমএফ থেকে এক দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার তথ্য দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আবার আরেকজন নিয়ে গেল ৪০ হাজার কোটি টাকা। এই টাকাটা না নিলেতো আইএমএফের এই টাকাটা আনা লাগতো না। এগুলোতো আমাদের টাকা। দেশে এস আলম, বসুন্ধরা, বেক্সিমকোসহ অনেকগুলো কোম্পানির সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। ২০০ কোটি টাকার বেশি যারা নিয়ে গেছে এরকম লোকদের আমরা চিহ্নিত করেছি। এরকম ১০১টা পেয়েছি। এগুলো এলেইতো হাজার হাজার কোটি টাকা হয়ে যায়।’
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫
দেশ থেকে ২০০ কোটি টাকার বেশি পাচার করা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার তথ্য দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘এরকম ১০১টা পেয়েছি। এগুলো এলেইতো হাজার হাজার কোটি টাকা হয়ে যায়।’ গতকাল মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে সরকারের এক বছর উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি।
দেড় ঘণ্টার সংবাদ সম্মেলনে পাচার হওয়ার অর্থ ফিরিয়ে আনতে তার আগের প্রতিশ্রুতির বিষয়টি তুলে ধরে এক সাংবাদিক অর্থ উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন করেন ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব হস্তান্তরের আগে সেটা করা সম্ভব হবে কিনা?
এর জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সবকিছু দৃশ্যমান হতে সময় লাগে। ১১টি ঘটনা আমরা নির্বাচন করেছি। পাচারকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ফেরত আনার জন্য এমওইউ সই হয়েছে। যারা পাচার করে তাদের বুদ্ধি আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। এখান থেকে সেখানে সেখান থেকে ওখানে। অনেক লেয়ারিং করে তারা। যারা করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত টাকা কোন কোন জায়গায় গিয়ে থেমেছে সেটা চিহ্নিত করা হয়েছে। তৃতীয়ত আনার জন্য একটা আইনি প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলে দিলেই তো ব্যাংক অব ইংল্যান্ড টাকা পাঠিয়ে দেবে না। লন্ডনে একলোকের কয়েকটা বাড়ি জব্দ করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরে আরেকজনেরটা চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশ্বের সেরা আইনজীবী তারা নিয়োগ দিয়েছে। ওদেরকে কাউন্টার দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আইনজীবীদের মাধ্যমে কীভাবে ট্রেস করা যায় সেটার চেষ্টাও চলছে।’
এসব পদক্ষেপ আগামীর জন্য সতর্কবানী হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে কিন্তু কেউ করেনি। পরবর্তী সরকার যদি মনে করে এগুলো করতে যায় তাহলে ১১ জনের সঙ্গে আরও ১১ জন যোগ হবে। এরকম পদক্ষেপ আগে নেওয়া হয়নি।’
আইএমএফ থেকে এক দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার তথ্য দিয়ে সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আবার আরেকজন নিয়ে গেল ৪০ হাজার কোটি টাকা। এই টাকাটা না নিলেতো আইএমএফের এই টাকাটা আনা লাগতো না। এগুলোতো আমাদের টাকা। দেশে এস আলম, বসুন্ধরা, বেক্সিমকোসহ অনেকগুলো কোম্পানির সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। ২০০ কোটি টাকার বেশি যারা নিয়ে গেছে এরকম লোকদের আমরা চিহ্নিত করেছি। এরকম ১০১টা পেয়েছি। এগুলো এলেইতো হাজার হাজার কোটি টাকা হয়ে যায়।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে সহিংস উপায়ে সরকার পতনের পর অর্থনীতিতে যে ধরনের দুর্দশা নেমে এসেছিল বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি তার চেয়ে অনেক ভালো।’
নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে কয়েকটি দেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যেসব দেশে সহিংসভাবে সরকার পরিবর্তন হয়েছে, যেমন- ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, ইরান, নিকারাগুয়া, শ্রীলঙ্কা, রাশিয়াসহ সব দেশ। এসব দেশে সরকার পরিবর্তনের পর প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়েছে এবং মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে গিয়েছিল। পৃথিবীর সব দেশেই মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। প্রবৃদ্ধি কমে যায়। সেই তুলনায় আমাদের এখানে কম হয়েছে। বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে মূল্যস্ফীতি কমেছে এবং প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক আছে, নেতিবাচক হয়নি। এটা একটা বিস্ময়কর অর্জন। ইন্দোনেশিয়াতে ১৯৯৭-৯৮ সালের সঙ্কটের সময় দারিদ্রের হার ৬ শতাংশ থেকে বেড়ে গিয়ে ৪০ শতাংশ হয়ে গিয়েছিল। রাশিয়ায় যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়লো তাদের ঘুরে দাঁড়াতে প্রায় ১০ বছর লেগেছে। তাদের জীবনমান নেতিবাচক হয়েছে। ৯০০ শতাংশের মত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল। এটা ঠিক করতে তাদের ১০ বছরের মত সময় লেগেছে। রাশিয়া এত বড় একটা উন্নত দেশ।’
গত জুলাইয়ের একটি পত্রিকার খবরের বরাত দিয়ে বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান বলেন, ‘জুলাই মাসে বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারে একটা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে গিয়েছে। ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের পর বাংলাদেশ। ওরা শেয়ারবাজার যেই অবস্থায় রেখে গিয়েছিল সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আপনারা বলতে পারেন যে শেয়ারবাজারে এখনও নিম্ন গতি। শেয়ারবাজারে ওঠানামা থাকে।’
কর্মসংস্থানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আইএলও এর নিয়ম অনুযায়ী আমরা কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিবেচনা করে থাকি। কিন্তু ইন্টারনেটের যুগে প্রচুর লোক এখন ইন্টারনেটে আয় করে। সেটা আমাদের হিসাবে আসে না। তারা আত্মকর্মসংস্থানে আছে। ঘরে বসে আয় করছে।’
আইএমএফ থেকে এক দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার তথ্য দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আবার আরেকজন নিয়ে গেল ৪০ হাজার কোটি টাকা। এই টাকাটা না নিলেতো আইএমএফের এই টাকাটা আনা লাগতো না। এগুলোতো আমাদের টাকা। দেশে এস আলম, বসুন্ধরা, বেক্সিমকোসহ অনেকগুলো কোম্পানির সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। ২০০ কোটি টাকার বেশি যারা নিয়ে গেছে এরকম লোকদের আমরা চিহ্নিত করেছি। এরকম ১০১টা পেয়েছি। এগুলো এলেইতো হাজার হাজার কোটি টাকা হয়ে যায়।’
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।