দেশি বীমা কোম্পানিগুলোর কৃষি বীমা পরিচালনার মত যোগ্যতা নেই বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জাহাঙ্গীর আলম মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি নতুন কৃষি ও পল্লীঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি ঘোষণার সময় এমন মন্তব্য করেন।
গভর্নর বলেন, “কৃষি বীমা নিয়ে আমি খুব একটা উৎসাহী না, কারণ আমাদের আসল বীমাই চলছে না। কৃষি বীমা ঝুঁকিপূর্ণ এবং এটার ব্যবস্থাপনা করার মত যে যোগ্যতা কিংবা সক্ষমতা সেটা আমাদের বীমা কোম্পানিগুলোর কখনো হবে বলেও আমার মনে হয় না। আগামী ১০ বছরের মধ্যে এ সম্ভাবনা আমি দেখছি না। যদি তারা করতে পারে তাহলে স্বাগতম, তবে আমি এটা নিয়ে ভবিষ্যত দেখছি না।”
এ বক্তব্য দিয়ে তিনি কৃষি বীমাকে নিরুৎসাহিত করছেন কিনা সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “বহু বছর ধরে আমি শুনে আসছি বাংলাদেশে কৃষিতে বীমা আসবে, সেটা কোথায়? বাস্তব চিত্র হচ্ছে আমাদের দেশের বীমা কোম্পানিগুলোর যে দক্ষতা তাতে এ পর্যায়ে কৃষি বীমা করার জন্য যে দক্ষতা লাগবে, যে ধরনের অনিশ্চয়তা সেখানে বিরাজ করছে, আর যে ধরনের প্রিমিয়াম দেওয়ার মত সক্ষমতা দরকার রয়েছে, এখানে আর্থিকভাবে লাভ আসবে না।”
তিনি বলেন, “কাজেই এটার চিন্তা করা খুব একটা বাস্তবমুখী হবে না। আমি তো চাই এটা হোক। তবে বাস্তবতার কথা তো চিন্তা করতে হবে।”
জুলাইতে মূল্যস্ফীতি বাড়ার পেছনে চালের দাম বাড়াকে দায়ী করেন আহসান মনসুর। তিনি মনে করেন এ খাদ্যপণ্য ছাড়া বাকি সব কিছুর দাম স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। দেশের আমদানি নির্ভরতা কাটছে না এবং ভবিষ্যতেও তা কমার সম্ভবনা কম থাকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমদানিকে একটা ‘প্রাইস স্ট্যাবিলিটি টুল’ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
কৃষি ঋণ কৃষকের কাছে যাচ্ছে কি না তা বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা চাই শতভাগ কৃষি ঋণ কৃষকের কাছে পৌঁছাক। দালালের কাছে যেন না যায়- এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”
কৃষিখাতের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৩৯ হাজার কোটি টাকার কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮ হাজার কোটি টাকা, যা এ বছর ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৩৯ হাজার কোটি টাকার কৃষি ও পল্লীঋণের মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ও বিশেষায়িত ব্যাংকের বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ২৫ হাজার ১২০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো ও কৃষকদের সহায়তা নিশ্চিত করতে এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও কৃষিখাতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
এবারের নীতিমালায় প্রাণিসম্পদ খাতে বরাদ্দ ২০ শতাংশ করার পাশাপাশি সেচ ও কৃষিযন্ত্রপাতি খাতে ২ শতাংশ বরাদ্দ রাখা; আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের সিআইবি সার্ভিস চার্জ মওকুফ; কন্ট্রাক্ট ফার্মিং ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতা বাড়ানো; খিরা, কচুর লতি, বিটরুট, কালোজিরা, আদা, রসুন, হলুদ, খেজুরগুড় এর মত ফসল ও পণ্য ঋণ নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং অঞ্চলভিত্তিক উৎপাদন সম্ভাবনা অনুযায়ী ঋণ বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সব ডেপুটি গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান, চিফ ইকোনমিস্ট, নির্বাহী পরিচালকসহ তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫
দেশি বীমা কোম্পানিগুলোর কৃষি বীমা পরিচালনার মত যোগ্যতা নেই বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জাহাঙ্গীর আলম মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি নতুন কৃষি ও পল্লীঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি ঘোষণার সময় এমন মন্তব্য করেন।
গভর্নর বলেন, “কৃষি বীমা নিয়ে আমি খুব একটা উৎসাহী না, কারণ আমাদের আসল বীমাই চলছে না। কৃষি বীমা ঝুঁকিপূর্ণ এবং এটার ব্যবস্থাপনা করার মত যে যোগ্যতা কিংবা সক্ষমতা সেটা আমাদের বীমা কোম্পানিগুলোর কখনো হবে বলেও আমার মনে হয় না। আগামী ১০ বছরের মধ্যে এ সম্ভাবনা আমি দেখছি না। যদি তারা করতে পারে তাহলে স্বাগতম, তবে আমি এটা নিয়ে ভবিষ্যত দেখছি না।”
এ বক্তব্য দিয়ে তিনি কৃষি বীমাকে নিরুৎসাহিত করছেন কিনা সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, “বহু বছর ধরে আমি শুনে আসছি বাংলাদেশে কৃষিতে বীমা আসবে, সেটা কোথায়? বাস্তব চিত্র হচ্ছে আমাদের দেশের বীমা কোম্পানিগুলোর যে দক্ষতা তাতে এ পর্যায়ে কৃষি বীমা করার জন্য যে দক্ষতা লাগবে, যে ধরনের অনিশ্চয়তা সেখানে বিরাজ করছে, আর যে ধরনের প্রিমিয়াম দেওয়ার মত সক্ষমতা দরকার রয়েছে, এখানে আর্থিকভাবে লাভ আসবে না।”
তিনি বলেন, “কাজেই এটার চিন্তা করা খুব একটা বাস্তবমুখী হবে না। আমি তো চাই এটা হোক। তবে বাস্তবতার কথা তো চিন্তা করতে হবে।”
জুলাইতে মূল্যস্ফীতি বাড়ার পেছনে চালের দাম বাড়াকে দায়ী করেন আহসান মনসুর। তিনি মনে করেন এ খাদ্যপণ্য ছাড়া বাকি সব কিছুর দাম স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। দেশের আমদানি নির্ভরতা কাটছে না এবং ভবিষ্যতেও তা কমার সম্ভবনা কম থাকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমদানিকে একটা ‘প্রাইস স্ট্যাবিলিটি টুল’ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
কৃষি ঋণ কৃষকের কাছে যাচ্ছে কি না তা বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা চাই শতভাগ কৃষি ঋণ কৃষকের কাছে পৌঁছাক। দালালের কাছে যেন না যায়- এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”
কৃষিখাতের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৩৯ হাজার কোটি টাকার কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮ হাজার কোটি টাকা, যা এ বছর ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৩৯ হাজার কোটি টাকার কৃষি ও পল্লীঋণের মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ও বিশেষায়িত ব্যাংকের বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ২৫ হাজার ১২০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো ও কৃষকদের সহায়তা নিশ্চিত করতে এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও কৃষিখাতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
এবারের নীতিমালায় প্রাণিসম্পদ খাতে বরাদ্দ ২০ শতাংশ করার পাশাপাশি সেচ ও কৃষিযন্ত্রপাতি খাতে ২ শতাংশ বরাদ্দ রাখা; আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের সিআইবি সার্ভিস চার্জ মওকুফ; কন্ট্রাক্ট ফার্মিং ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আওতা বাড়ানো; খিরা, কচুর লতি, বিটরুট, কালোজিরা, আদা, রসুন, হলুদ, খেজুরগুড় এর মত ফসল ও পণ্য ঋণ নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং অঞ্চলভিত্তিক উৎপাদন সম্ভাবনা অনুযায়ী ঋণ বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সব ডেপুটি গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান, চিফ ইকোনমিস্ট, নির্বাহী পরিচালকসহ তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।