মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচ্চ শুল্কের মধ্যেও ভালো সংবাদ পেল ভারতের অর্থনীতি। আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল ভারতের সার্বভৌম ঋণমান বৃদ্ধি করেছে—বিবিবি মাইনাস থেকে বিবিবিতে উন্নীত করা হয়েছে ভারতের ঋণমান। সেই সঙ্গে এসঅ্যান্ডপি জানিয়েছে, ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভবিষ্যতে স্থিতিশীল থাকবে। ঋণমান আরও বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
১৮ বছর পর ভারতের অর্থনীতি নিয়ে রেটিংয়ে বদল আনল এই আন্তর্জাতিক সংস্থা। ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্কের কোপানলে পড়ে যখন ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, সেই সময় এ খবর স্বস্তির বাতাস নিয়ে এসেছে। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল বলছে, শুল্ক ভারতের অর্থনীতিতে তেমন প্রভাব ফেলতে পারবে না।
এখানেই শেষ নয়, ভারতের ঋণমান আরও উন্নত হতে পারে বলে মনে করে এসঅ্যান্ডপি। ভারতের আর্থিক ঘাটতি যদি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে বা কেন্দ্রীয় সরকারের মোট ঋণের নিট পরিবর্তন কাঠামোগতভাবে জিডিপির ৬ শতাংশের নিচে নেমে আসে, তাহলে ঋণমান উন্নত হতে পারে, গতকাল শুক্রবার এনডিটিভি প্রফিটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংসের পরিচালক ই ফ্যাম ফুয়া।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় বাজেট উপস্থাপনের সময় ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ২০২৫ অর্থবছরে ভারতের রাজস্বঘাটতি জিডিপির ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০২৬ অর্থবছরে ৪ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। সার্বভৌম ঋণমান একটি দেশের অর্থনীতির শক্তি যাচাইয়ের ব্যবস্থা। এই ঋণমানের মাধ্যমে কোনো সরকারের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা পরিমাপ করা হয়, ঠিক যেভাবে এর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা বোঝা যায়। এই মান যত কম, ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা তত দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত হয়। ফলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ওই দেশকে ঋণ দিতে আগ্রহী হয় না। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য যে ঋণের বিশেষ গুরুত্ব আছে।
ঋণমান বৃদ্ধির পাশাপাশি এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ভারত আর্থিক খাতের সংহতকরণে গুরুত্ব দিচ্ছে। অবকাঠামোয় উন্নতির পাশাপাশি আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পথে হাঁটছে দেশটি। দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভারতের ঋণ ব্যবস্থায়ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
আগামী কয়েক বছরে ভারতের অর্থনীতির উন্নতির ধারা বজায় থাকবে বলে আশাবাদী এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। এ বিষয়ে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, মহামারির প্রভাব কাটিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতের অর্থনীতি। ২০২২ থেকে ২০২৪ অর্থবছরে গড়ে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধি হয়েছে ভারতের—এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যা সর্বোচ্চ। আগামী দু–তিন বছরেও ভারতের অর্থনীতির বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশের আশপাশেই থাকবে বলে জানিয়েছে তারা।
২০২৪ সালের মে মাসের সংশোধনের ধারাবাহিকতায় এই ঋণমান উন্নীত করা হয়েছে, যেখানে ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি ‘পজিটিভ’ বা ইতিবাচক করা হয়। বলা হয়েছে, এই ঋণমান বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি ও সরকারি ব্যয়ের উন্নত মান। তারা মনে করছে, এটা সরকারের চলমান রাজস্ব শৃঙ্খলা রক্ষার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলনও, অর্থাৎ ভারতের সামগ্রিক ঋণ হ্রাসের প্রচেষ্টা।
ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি কিছু ঝুঁকির কথাও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
রাজস্ব শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দুর্বল হয়ে পড়া, অথবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কাঠামোগত মন্থরতা ঋণের টেকসই মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে উল্লেখ করেছে এসঅ্যান্ডপি।
ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আগেই আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। রাশিয়া থেকে ক্রমাগত জ্বালানি তেল কেনার শাস্তিস্বরূপ আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক জরিমানা হিসেবে আরোপ করেছেন ট্রাম্প। এর জেরে শুল্কের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ।
কিন্তু এই শুল্ক নিয়ে ভারতের দুশ্চিন্তার তেমন কারণ দেখছে না এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। সংস্থাটি বলেছে, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ভারতের অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কের প্রভাব নিয়ন্ত্রণযোগ্য, কেননা, ভারতের অর্থনীতির ৬০ শতাংশই ঘরোয়া উপভোক্তার ওপর নির্ভরশীল। আমেরিকা ভারতের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার হলেও ৫০ শতাংশ শুল্ক ভারতের প্রবৃদ্ধিতে ধাক্কা দিতে পারবে না বলে জানিয়েছে এই সংস্থা।’
শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচ্চ শুল্কের মধ্যেও ভালো সংবাদ পেল ভারতের অর্থনীতি। আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল ভারতের সার্বভৌম ঋণমান বৃদ্ধি করেছে—বিবিবি মাইনাস থেকে বিবিবিতে উন্নীত করা হয়েছে ভারতের ঋণমান। সেই সঙ্গে এসঅ্যান্ডপি জানিয়েছে, ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভবিষ্যতে স্থিতিশীল থাকবে। ঋণমান আরও বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
১৮ বছর পর ভারতের অর্থনীতি নিয়ে রেটিংয়ে বদল আনল এই আন্তর্জাতিক সংস্থা। ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্কের কোপানলে পড়ে যখন ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, সেই সময় এ খবর স্বস্তির বাতাস নিয়ে এসেছে। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল বলছে, শুল্ক ভারতের অর্থনীতিতে তেমন প্রভাব ফেলতে পারবে না।
এখানেই শেষ নয়, ভারতের ঋণমান আরও উন্নত হতে পারে বলে মনে করে এসঅ্যান্ডপি। ভারতের আর্থিক ঘাটতি যদি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে বা কেন্দ্রীয় সরকারের মোট ঋণের নিট পরিবর্তন কাঠামোগতভাবে জিডিপির ৬ শতাংশের নিচে নেমে আসে, তাহলে ঋণমান উন্নত হতে পারে, গতকাল শুক্রবার এনডিটিভি প্রফিটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংসের পরিচালক ই ফ্যাম ফুয়া।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় বাজেট উপস্থাপনের সময় ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ২০২৫ অর্থবছরে ভারতের রাজস্বঘাটতি জিডিপির ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০২৬ অর্থবছরে ৪ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। সার্বভৌম ঋণমান একটি দেশের অর্থনীতির শক্তি যাচাইয়ের ব্যবস্থা। এই ঋণমানের মাধ্যমে কোনো সরকারের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা পরিমাপ করা হয়, ঠিক যেভাবে এর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা বোঝা যায়। এই মান যত কম, ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা তত দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত হয়। ফলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ওই দেশকে ঋণ দিতে আগ্রহী হয় না। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য যে ঋণের বিশেষ গুরুত্ব আছে।
ঋণমান বৃদ্ধির পাশাপাশি এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ভারত আর্থিক খাতের সংহতকরণে গুরুত্ব দিচ্ছে। অবকাঠামোয় উন্নতির পাশাপাশি আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পথে হাঁটছে দেশটি। দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভারতের ঋণ ব্যবস্থায়ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
আগামী কয়েক বছরে ভারতের অর্থনীতির উন্নতির ধারা বজায় থাকবে বলে আশাবাদী এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। এ বিষয়ে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, মহামারির প্রভাব কাটিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতের অর্থনীতি। ২০২২ থেকে ২০২৪ অর্থবছরে গড়ে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ হারে বৃদ্ধি হয়েছে ভারতের—এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যা সর্বোচ্চ। আগামী দু–তিন বছরেও ভারতের অর্থনীতির বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশের আশপাশেই থাকবে বলে জানিয়েছে তারা।
২০২৪ সালের মে মাসের সংশোধনের ধারাবাহিকতায় এই ঋণমান উন্নীত করা হয়েছে, যেখানে ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি ‘পজিটিভ’ বা ইতিবাচক করা হয়। বলা হয়েছে, এই ঋণমান বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি ও সরকারি ব্যয়ের উন্নত মান। তারা মনে করছে, এটা সরকারের চলমান রাজস্ব শৃঙ্খলা রক্ষার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলনও, অর্থাৎ ভারতের সামগ্রিক ঋণ হ্রাসের প্রচেষ্টা।
ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি কিছু ঝুঁকির কথাও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
রাজস্ব শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দুর্বল হয়ে পড়া, অথবা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কাঠামোগত মন্থরতা ঋণের টেকসই মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে উল্লেখ করেছে এসঅ্যান্ডপি।
ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আগেই আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। রাশিয়া থেকে ক্রমাগত জ্বালানি তেল কেনার শাস্তিস্বরূপ আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক জরিমানা হিসেবে আরোপ করেছেন ট্রাম্প। এর জেরে শুল্কের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ।
কিন্তু এই শুল্ক নিয়ে ভারতের দুশ্চিন্তার তেমন কারণ দেখছে না এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। সংস্থাটি বলেছে, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ভারতের অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কের প্রভাব নিয়ন্ত্রণযোগ্য, কেননা, ভারতের অর্থনীতির ৬০ শতাংশই ঘরোয়া উপভোক্তার ওপর নির্ভরশীল। আমেরিকা ভারতের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার হলেও ৫০ শতাংশ শুল্ক ভারতের প্রবৃদ্ধিতে ধাক্কা দিতে পারবে না বলে জানিয়েছে এই সংস্থা।’