ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
ট্রাম্পের হুমকি অগ্রাহ্য করে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনকারী সংস্থাগুলো। ইন্ডিয়ান অয়েল ও ভারত পেট্রোলিয়াম আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে সরবরাহের জন্য আবার রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা শুরু করেছে। দুই সংস্থার কর্মকর্তাদের সূত্রে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।
সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি কমে গেলেও ভারতকে উদ্বিগ্ন না হতে পরামর্শ দিয়েছে রাশিয়া। তারা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্য বিক্রি কমলেও সমস্যা নেই, রাশিয়ার বাজার ভারতের জন্য খোলা আছে। খবর দ্য মিন্ট
জুলাই মাসে ভারতের রাষ্ট্রীয় তেল পরিশোধনাগারগুলো তেল কেনা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছিল। মূলত রাশিয়ার তেলের ছাড় কমে আসায় তেল কেনা কমিয়ে দিয়েছিল তারা। এরপর রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের পণ্যে শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করেছে। সব মিলিয়ে ভারতের পণ্যে এখন ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুল্ক আরোপের পরও ভারত বারবার জানিয়েছে, দেশের স্বার্থে যেখান থেকে তেল কিনতে সুবিধা হবে, সেখান থেকেই তারা কিনবে। এ পরিস্থিতিতে রাশিয়ার তেলে ব্যারেলপ্রতি ছাড় তিন ডলারে উন্নীত হওয়ায় আবার তেল কেনা শুরু করেছে ভারতের পরিশোধনাগারগুলো। রাশিয়া থেকে উরাল ক্রুড কেনে ভারত। এ ছাড়া ভ্যারানডে ও সাইবেরিয়ান লাইট ক্রুড অয়েলও কেনে ভারতীয় তেল পরিশোধনাগারগুলো।
বৃহস্পতিবার,(২১ আগস্ট ২০২৫) দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার ডেপুটি চিফ অব মিশন রোমান বাবুশকিন বলেন, ‘রাশিয়া-ভারত সম্পর্কের ওপর আমাদের বিশ্বাস আছে। বাইরের চাপ সত্ত্বেও ভারত-রাশিয়া জ্বালানি সহযোগিতা চলবে।’
সম্প্রতি ভারত যখন রাশিয়ার তেল কিছুটা কেনা কমিয়েছিল, তখন চীন তেল কেনা বাড়িয়েছিল। রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় দুই ক্রেতা হলো ভারত ও চীন। যদিও ট্রাম্প এখন ভারতের বেলায় গরম হলেও চীনের বেলায় নরম। এককভাবে শুধু ভারতকে শাস্তি দিয়েছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারতের কাছে ৫ শতাংশ ছাড়ে তেল বিক্রি করবে মস্কো। ভারতে রাশিয়ার ডেপুটি ট্রেড রিপ্রেজেন্টিটিভ ইয়েভগেনি গ্রিভা জানিয়েছেন, রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানিতে এ ছাড় দেওয়া হবে। তবে বিষয়টি আলোচনার ওপর নির্ভর করবে। খবর এনডিটিভি
গ্রিভা বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি যা–ই হোক না কেন, ভারতের তেল আমদানি প্রায় একই থাকবে। ছাড় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা মূলত ব্যবসায়িক গোপনীয়তার বিষয়। সাধারণত ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এসব নির্ধারিত হয়। গড়ে এই ছাড় ৫ শতাংশের মতো থাকবে। কখনো একটু ওঠানামা করবে, তবে সাধারণত ৫ শতাংশের কম-বেশির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
ভারতের পণ্য কিনবে রাশিয়া
ভারতীয় পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের দেশে ভারতের পণ্য রপ্তানিতে যদি সমস্যা হয়, তাহলে রাশিয়া বাজার উন্মুক্ত করবে। ভারত রাশিয়াতে তাদের পণ্য রপ্তানি করতে পারে বলে মত পুতিন সরকারের এক কূটনীতিকের। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সে সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার ডেপুটি চিফ অব মিশন রোমান বাবুশকিন বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় পণ্য ঢুকতে সমস্যা হয়, তাহলে রাশিয়ার বাজার তাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে.।
যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্কের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন রোমান বাবুশকিন। এ শুল্ক আরোপের বিরোধিতা করে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এমনকি পশ্চিমের দেশগুলোর বিরুদ্ধে নব্য উপনিবেশবাদের অভিযোগও তুলেছেন তিনি।
এক দিন আগেই হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, রাশিয়া যাতে ইউক্রেনের যুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে যেতে না পারে, সে জন্যই ভারতের পণ্যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এরপরই রাশিয়ার পক্ষ থেকে এ বার্তা।
সম্প্রতি আলাস্কায় বৈঠক করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন। সে বৈঠকে ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি। ওই বৈঠকের পরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে বিষয় উল্লেখ করে রাশিয়ার কূটনীতিক বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ফোন করে ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। এটাই প্রমাণ করে, ভারত রাশিয়ার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে বন্ধু হিসেবে ভাবলে এমন করত না বলেও দাবি করেন তিনি।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
ট্রাম্পের হুমকি অগ্রাহ্য করে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনকারী সংস্থাগুলো। ইন্ডিয়ান অয়েল ও ভারত পেট্রোলিয়াম আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে সরবরাহের জন্য আবার রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা শুরু করেছে। দুই সংস্থার কর্মকর্তাদের সূত্রে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।
সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি কমে গেলেও ভারতকে উদ্বিগ্ন না হতে পরামর্শ দিয়েছে রাশিয়া। তারা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্য বিক্রি কমলেও সমস্যা নেই, রাশিয়ার বাজার ভারতের জন্য খোলা আছে। খবর দ্য মিন্ট
জুলাই মাসে ভারতের রাষ্ট্রীয় তেল পরিশোধনাগারগুলো তেল কেনা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছিল। মূলত রাশিয়ার তেলের ছাড় কমে আসায় তেল কেনা কমিয়ে দিয়েছিল তারা। এরপর রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের পণ্যে শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করেছে। সব মিলিয়ে ভারতের পণ্যে এখন ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুল্ক আরোপের পরও ভারত বারবার জানিয়েছে, দেশের স্বার্থে যেখান থেকে তেল কিনতে সুবিধা হবে, সেখান থেকেই তারা কিনবে। এ পরিস্থিতিতে রাশিয়ার তেলে ব্যারেলপ্রতি ছাড় তিন ডলারে উন্নীত হওয়ায় আবার তেল কেনা শুরু করেছে ভারতের পরিশোধনাগারগুলো। রাশিয়া থেকে উরাল ক্রুড কেনে ভারত। এ ছাড়া ভ্যারানডে ও সাইবেরিয়ান লাইট ক্রুড অয়েলও কেনে ভারতীয় তেল পরিশোধনাগারগুলো।
বৃহস্পতিবার,(২১ আগস্ট ২০২৫) দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার ডেপুটি চিফ অব মিশন রোমান বাবুশকিন বলেন, ‘রাশিয়া-ভারত সম্পর্কের ওপর আমাদের বিশ্বাস আছে। বাইরের চাপ সত্ত্বেও ভারত-রাশিয়া জ্বালানি সহযোগিতা চলবে।’
সম্প্রতি ভারত যখন রাশিয়ার তেল কিছুটা কেনা কমিয়েছিল, তখন চীন তেল কেনা বাড়িয়েছিল। রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় দুই ক্রেতা হলো ভারত ও চীন। যদিও ট্রাম্প এখন ভারতের বেলায় গরম হলেও চীনের বেলায় নরম। এককভাবে শুধু ভারতকে শাস্তি দিয়েছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারতের কাছে ৫ শতাংশ ছাড়ে তেল বিক্রি করবে মস্কো। ভারতে রাশিয়ার ডেপুটি ট্রেড রিপ্রেজেন্টিটিভ ইয়েভগেনি গ্রিভা জানিয়েছেন, রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানিতে এ ছাড় দেওয়া হবে। তবে বিষয়টি আলোচনার ওপর নির্ভর করবে। খবর এনডিটিভি
গ্রিভা বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি যা–ই হোক না কেন, ভারতের তেল আমদানি প্রায় একই থাকবে। ছাড় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা মূলত ব্যবসায়িক গোপনীয়তার বিষয়। সাধারণত ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এসব নির্ধারিত হয়। গড়ে এই ছাড় ৫ শতাংশের মতো থাকবে। কখনো একটু ওঠানামা করবে, তবে সাধারণত ৫ শতাংশের কম-বেশির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
ভারতের পণ্য কিনবে রাশিয়া
ভারতীয় পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের দেশে ভারতের পণ্য রপ্তানিতে যদি সমস্যা হয়, তাহলে রাশিয়া বাজার উন্মুক্ত করবে। ভারত রাশিয়াতে তাদের পণ্য রপ্তানি করতে পারে বলে মত পুতিন সরকারের এক কূটনীতিকের। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সে সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার ডেপুটি চিফ অব মিশন রোমান বাবুশকিন বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় পণ্য ঢুকতে সমস্যা হয়, তাহলে রাশিয়ার বাজার তাদের জন্য অপেক্ষা করে আছে.।
যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্কের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন রোমান বাবুশকিন। এ শুল্ক আরোপের বিরোধিতা করে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এমনকি পশ্চিমের দেশগুলোর বিরুদ্ধে নব্য উপনিবেশবাদের অভিযোগও তুলেছেন তিনি।
এক দিন আগেই হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, রাশিয়া যাতে ইউক্রেনের যুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে যেতে না পারে, সে জন্যই ভারতের পণ্যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এরপরই রাশিয়ার পক্ষ থেকে এ বার্তা।
সম্প্রতি আলাস্কায় বৈঠক করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিন। সে বৈঠকে ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি। ওই বৈঠকের পরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে বিষয় উল্লেখ করে রাশিয়ার কূটনীতিক বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ফোন করে ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। এটাই প্রমাণ করে, ভারত রাশিয়ার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে বন্ধু হিসেবে ভাবলে এমন করত না বলেও দাবি করেন তিনি।