বহুল আলোচিত রাজস্ব খাতের সংস্কারের অধ্যাদেশে বড় ধরনের সংশোধন আনা হয়েছে। মোট ১১টি সংশোধনীর প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাস হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো—রাজস্ব নীতি বিভাগে অভিজ্ঞ ও যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে প্রধান করা হবে।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এসব সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
গত ১২ মে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ ২০২৫ জারির পর এর বিরোধিতা করে প্রায় দেড় মাস আন্দোলন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জুন মাসের শেষের দিকে দেশের শুল্ক–কর কার্যালয়ে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন স্থগিত হয়। তবে আন্দোলনের জেরে এনবিআরে এখনো বরখাস্ত, বদলি ও অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—এই দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এর পর থেকেই যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে এনবিআর কর্মকর্তা–কর্মচারীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন।
অধ্যাদেশটি সংশোধনের জন্য গত ২৯ জুন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই উপদেষ্টা পরিষদ সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আমরা অধ্যাদেশ সংশোধনের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছি—যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও ন্যায্যতা। যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হবে তিনি যোগ্য কি না, অভিজ্ঞ কি না এবং ন্যায্য কি না—এসব বিবেচনা করে সংশোধন আনা হয়েছে।’
১১টি সংশোধনী
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, সব মিলিয়ে ১১টি সংশোধনী প্রস্তাব পাস হয়েছে। সেগুলো হলো—
১. ধারা-৪(৩): রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব পদে সামষ্টিক অর্থনীতি, বাণিজ্য নীতি, পরিকল্পনা, রাজস্ব নীতি বা রাজস্ব ব্যবস্থাপনা কাজে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে নিয়োগ।
২. ধারা-৪(৪): নীতি–সংক্রান্ত অনুবিভাগের পদ রাজস্ব আহরণ–সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে পূরণ।
৩. ধারা-৪(৪ ক): নতুন উপধারা সংযোজন—অন্য অনুবিভাগের পদে জনপ্রশাসন, অর্থনীতি, বাণিজ্য নীতি, গবেষণা ও পরিসংখ্যান, হিসাব ও নিরীক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি ও আইন প্রণয়নসংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ কর্মকর্তা বা ব্যক্তিকে নিয়োগ।
৪. ধারা-৫(চ): কর আইন প্রয়োগের পরিবর্তে রাজস্ব নীতি, কর ব্যয় ও রাজস্ব আহরণের প্রভাব বিশ্লেষণ।
৫. ধারা-৭(৩): রাজস্ব আহরণে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব পদে নিয়োগ প্রদান।
৬. ধারা-৭(৪): ব্যবস্থাপনা বিভাগের শুল্ক, কর, ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত পদ অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের থেকে পূরণ।
৭. ধারা-৭(৫): প্রশাসনিক অনুবিভাগের পদ রাজস্ব আহরণ ও জনপ্রশাসন–সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের থেকে পূরণ।
৮. ধারা-৭(৬): মাঠপর্যায়ের পদ রাজস্ব আহরণে অভিজ্ঞ কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মচারীদের থেকে পূরণ।
৯. ধারা-৮(জ): শুধু পদ্ধতি প্রণয়নের পরিবর্তে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা–সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান, প্রজ্ঞাপন, রুলিং, নীতিমালা, স্থায়ী আদেশ প্রণয়ন, সংশোধন ও ব্যাখ্যা প্রদান।
১০. ধারা-৮(ট): ব্যবস্থাপনা বিভাগের অটোমেশন দ্রুত বাস্তবায়ন এবং আন্তশাখা ও সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের মধ্যে আন্তসংযোগ প্রতিষ্ঠা।
১১. ধারা-৯: এনবিআরের বিদ্যমান জনবল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে ন্যস্ত হবে এবং প্রয়োজনীয় জনবল বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে রাজস্ব নীতি বিভাগে পদায়ন করা হবে।
বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট ২০২৫
বহুল আলোচিত রাজস্ব খাতের সংস্কারের অধ্যাদেশে বড় ধরনের সংশোধন আনা হয়েছে। মোট ১১টি সংশোধনীর প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাস হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো—রাজস্ব নীতি বিভাগে অভিজ্ঞ ও যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তাকে প্রধান করা হবে।
বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এসব সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
গত ১২ মে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ ২০২৫ জারির পর এর বিরোধিতা করে প্রায় দেড় মাস আন্দোলন করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জুন মাসের শেষের দিকে দেশের শুল্ক–কর কার্যালয়ে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় আন্দোলন স্থগিত হয়। তবে আন্দোলনের জেরে এনবিআরে এখনো বরখাস্ত, বদলি ও অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মে এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা—এই দুটি বিভাগ করার অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এর পর থেকেই যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে এনবিআর কর্মকর্তা–কর্মচারীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন।
অধ্যাদেশটি সংশোধনের জন্য গত ২৯ জুন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই উপদেষ্টা পরিষদ সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘আমরা অধ্যাদেশ সংশোধনের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছি—যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও ন্যায্যতা। যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হবে তিনি যোগ্য কি না, অভিজ্ঞ কি না এবং ন্যায্য কি না—এসব বিবেচনা করে সংশোধন আনা হয়েছে।’
১১টি সংশোধনী
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, সব মিলিয়ে ১১টি সংশোধনী প্রস্তাব পাস হয়েছে। সেগুলো হলো—
১. ধারা-৪(৩): রাজস্ব নীতি বিভাগের সচিব পদে সামষ্টিক অর্থনীতি, বাণিজ্য নীতি, পরিকল্পনা, রাজস্ব নীতি বা রাজস্ব ব্যবস্থাপনা কাজে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে নিয়োগ।
২. ধারা-৪(৪): নীতি–সংক্রান্ত অনুবিভাগের পদ রাজস্ব আহরণ–সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে পূরণ।
৩. ধারা-৪(৪ ক): নতুন উপধারা সংযোজন—অন্য অনুবিভাগের পদে জনপ্রশাসন, অর্থনীতি, বাণিজ্য নীতি, গবেষণা ও পরিসংখ্যান, হিসাব ও নিরীক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি ও আইন প্রণয়নসংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ কর্মকর্তা বা ব্যক্তিকে নিয়োগ।
৪. ধারা-৫(চ): কর আইন প্রয়োগের পরিবর্তে রাজস্ব নীতি, কর ব্যয় ও রাজস্ব আহরণের প্রভাব বিশ্লেষণ।
৫. ধারা-৭(৩): রাজস্ব আহরণে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব পদে নিয়োগ প্রদান।
৬. ধারা-৭(৪): ব্যবস্থাপনা বিভাগের শুল্ক, কর, ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত পদ অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের থেকে পূরণ।
৭. ধারা-৭(৫): প্রশাসনিক অনুবিভাগের পদ রাজস্ব আহরণ ও জনপ্রশাসন–সংক্রান্ত কাজে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের থেকে পূরণ।
৮. ধারা-৭(৬): মাঠপর্যায়ের পদ রাজস্ব আহরণে অভিজ্ঞ কর্মকর্তা এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মচারীদের থেকে পূরণ।
৯. ধারা-৮(জ): শুধু পদ্ধতি প্রণয়নের পরিবর্তে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা–সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান, প্রজ্ঞাপন, রুলিং, নীতিমালা, স্থায়ী আদেশ প্রণয়ন, সংশোধন ও ব্যাখ্যা প্রদান।
১০. ধারা-৮(ট): ব্যবস্থাপনা বিভাগের অটোমেশন দ্রুত বাস্তবায়ন এবং আন্তশাখা ও সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের মধ্যে আন্তসংযোগ প্রতিষ্ঠা।
১১. ধারা-৯: এনবিআরের বিদ্যমান জনবল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে ন্যস্ত হবে এবং প্রয়োজনীয় জনবল বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে রাজস্ব নীতি বিভাগে পদায়ন করা হবে।