সারা বিশ্বে নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। তবে সেই তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা বেশ ভালো আছে। বুধবার (১৮ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির দ্বিতীয় সভায় বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এমন মন্তব্য করেন। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য নিয়ে অস্থির পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যবসায়ী নেতাদের আরও বেশি সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব।
ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্য অস্থির অবস্থা চলছে। অনেক পণ্যের ঘাটতিও আছে। বাড়ছে দামও। তবে সেদিক থেকে বাংলাদেশ এখনো বেশ স্বস্তিতেই রয়েছে। দেশে যা হয়েছে সেটি কিছু ব্যবসায়ীর অপতৎপরতার কারণেই। যার দায় পুরো ব্যবসায়ী সমাজের ওপর পড়ছে। ভবিষ্যতে এসব পণ্য মজুদ করে কেউ যাতে সুযোগ নিতে না পারে, সে জন্য যার যার জায়গা থেকে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’
বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্য নিয়ে অস্থির পরিস্থিতি চলছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব দেশে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে আহ্বান রেখে বলেছেন, ‘আপনারা যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক হোন।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সম্পর্কিত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি ছাড়াও এফবিসিসিআইসহ খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত রয়েছেন। সভায় দেশে অত্যাবশ্যকীয় বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম, মজুত সরবরাহ ও উৎপাদন পরিস্থিতির সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের করণীয় দিকনির্দেশনা দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘দেশে এখন আলোচনা হচ্ছে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। আমাদের তো একটা সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার যে কতটা বাড়তি দামে পেঁয়াজ খাওয়া উচিত, আর কতটা বাড়তি দাম কৃষকদের দেয়া উচিত। কৃষক পর্যায়ে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ কেজিতে ২০ টাকা এমনকি স্থানভেদে এই খরচ আরও বেশি হয়। খুচরা পর্যায়ে তাই পেঁয়াজের দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজির মধ্যে থাকা উচিত।’ কত দামে আমরা পেঁয়াজ খেতে চাই তেমন একটা সিদ্ধান্তেও আসা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয় আমাদের একটা হিসাব দিয়েছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষক পর্যায়ে খরচ হয় ২০ থেকে ২১ টাকা, স্থানভেদে সেটি আরও বেশি। উৎপাদন খরচ যা-ই হোক, উৎপাদিত পেঁয়াজ পচে যাওয়ার একটা হিসাব রয়েছে। এটাও কিন্তু কৃষককে হিসাব করতে হয়। ফলন শেষেই কৃষকদের তো ৫-৬ টাকা করে লাভ করতে হবে।
এ ছাড়া আজকে যদি আমি ১০০ টন পেঁয়াজ আমদানি করি, তার থেকে কিন্তু এক মাসের মধ্যে তার তিন থেকে চার পার্সেন্ট পচে যাবে। তাই দামের ক্ষেত্রে এটাও হিসাবে যুক্ত করতে হবে।’
তিনি দাম বাড়ার ভালো দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘স্বস্তির বিষয় হলো, পেঁয়াজের একটু ভালো দাম পাওয়ার কারণে কিন্তু কৃষকরা পেঁয়াজের ভালো উৎপাদনও করছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ২ লাখ ১২ হাজার টন পেঁয়াজ বেশি উৎপাদন হয়েছে। আমাদের প্রতি বছর আমদানি করতে হয় গড়ে ৬-৭ লাখ টন।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা যদি গড়ে প্রতি বছর দুই-আড়াই লাখ টন উৎপাদন বাড়াতে পারি, দুই বছর আগেও বলেছিলাম একই কথা। আমরা সে পথেই হাঁটছি। আমরা খুব বেশি আশাবাদী ২০২৫ সাল নাগাদ বোধহয় আমাদের আর পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না।’
পেঁয়াজের বাজার এখনো ঠিক আছে, সরকারও সতর্ক রয়েছে। যদি দেখা যায় বাজার খুব বেশি বাড়ছে, তাহলে কৃষি মন্ত্রণালয় আমদানির অনুমতি (আইপি) অনুমোদন দেয়ামাত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। যেটা বন্ধ রয়েছে, তা চালু করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার, ১৮ মে ২০২২
সারা বিশ্বে নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। তবে সেই তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা বেশ ভালো আছে। বুধবার (১৮ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির দ্বিতীয় সভায় বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এমন মন্তব্য করেন। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য নিয়ে অস্থির পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যবসায়ী নেতাদের আরও বেশি সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব।
ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্য অস্থির অবস্থা চলছে। অনেক পণ্যের ঘাটতিও আছে। বাড়ছে দামও। তবে সেদিক থেকে বাংলাদেশ এখনো বেশ স্বস্তিতেই রয়েছে। দেশে যা হয়েছে সেটি কিছু ব্যবসায়ীর অপতৎপরতার কারণেই। যার দায় পুরো ব্যবসায়ী সমাজের ওপর পড়ছে। ভবিষ্যতে এসব পণ্য মজুদ করে কেউ যাতে সুযোগ নিতে না পারে, সে জন্য যার যার জায়গা থেকে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’
বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্য নিয়ে অস্থির পরিস্থিতি চলছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব দেশে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে আহ্বান রেখে বলেছেন, ‘আপনারা যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক হোন।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সম্পর্কিত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি ছাড়াও এফবিসিসিআইসহ খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত রয়েছেন। সভায় দেশে অত্যাবশ্যকীয় বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম, মজুত সরবরাহ ও উৎপাদন পরিস্থিতির সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের করণীয় দিকনির্দেশনা দেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘দেশে এখন আলোচনা হচ্ছে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। আমাদের তো একটা সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার যে কতটা বাড়তি দামে পেঁয়াজ খাওয়া উচিত, আর কতটা বাড়তি দাম কৃষকদের দেয়া উচিত। কৃষক পর্যায়ে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ কেজিতে ২০ টাকা এমনকি স্থানভেদে এই খরচ আরও বেশি হয়। খুচরা পর্যায়ে তাই পেঁয়াজের দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজির মধ্যে থাকা উচিত।’ কত দামে আমরা পেঁয়াজ খেতে চাই তেমন একটা সিদ্ধান্তেও আসা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয় আমাদের একটা হিসাব দিয়েছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষক পর্যায়ে খরচ হয় ২০ থেকে ২১ টাকা, স্থানভেদে সেটি আরও বেশি। উৎপাদন খরচ যা-ই হোক, উৎপাদিত পেঁয়াজ পচে যাওয়ার একটা হিসাব রয়েছে। এটাও কিন্তু কৃষককে হিসাব করতে হয়। ফলন শেষেই কৃষকদের তো ৫-৬ টাকা করে লাভ করতে হবে।
এ ছাড়া আজকে যদি আমি ১০০ টন পেঁয়াজ আমদানি করি, তার থেকে কিন্তু এক মাসের মধ্যে তার তিন থেকে চার পার্সেন্ট পচে যাবে। তাই দামের ক্ষেত্রে এটাও হিসাবে যুক্ত করতে হবে।’
তিনি দাম বাড়ার ভালো দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘স্বস্তির বিষয় হলো, পেঁয়াজের একটু ভালো দাম পাওয়ার কারণে কিন্তু কৃষকরা পেঁয়াজের ভালো উৎপাদনও করছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ২ লাখ ১২ হাজার টন পেঁয়াজ বেশি উৎপাদন হয়েছে। আমাদের প্রতি বছর আমদানি করতে হয় গড়ে ৬-৭ লাখ টন।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা যদি গড়ে প্রতি বছর দুই-আড়াই লাখ টন উৎপাদন বাড়াতে পারি, দুই বছর আগেও বলেছিলাম একই কথা। আমরা সে পথেই হাঁটছি। আমরা খুব বেশি আশাবাদী ২০২৫ সাল নাগাদ বোধহয় আমাদের আর পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না।’
পেঁয়াজের বাজার এখনো ঠিক আছে, সরকারও সতর্ক রয়েছে। যদি দেখা যায় বাজার খুব বেশি বাড়ছে, তাহলে কৃষি মন্ত্রণালয় আমদানির অনুমতি (আইপি) অনুমোদন দেয়ামাত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। যেটা বন্ধ রয়েছে, তা চালু করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।