alt

অর্থ-বাণিজ্য

বিনায়ন সেনের অভিমত : জিডিপি ও মজুরির হার বাড়ার মধ্যে ‘বিশাল ব্যবধান’

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শনিবার, ২১ মে ২০২২

অর্থনীতিবিদ ড. বিনায়ক সেন বলেছেন, গত তিন দশকে বাংলাদেশের জিডিপি ব্যাপক বাড়লেও শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি ও অধিকার এখনও নিশ্চিত হয়নি। তিনি বলেন, “আমাদের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) এখন ৪১০ বিলিয়ন ডলার; ১৯৯০ থেকে শুরু করে গত ৩০ বছরে ব্যাপকভাবে বেড়েছে। আর যদি মজুরি আয়ের কথা বলি তাহলে তা অনেক কম। দুইটির মধ্যে বিশাল ব্যবধান ‘।

মে দিবস উপলক্ষে শুক্রবার ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘উন্নয়নের সুফল থেকে শ্রমিকরা বঞ্চিত কেন?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। ।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন বলেন,“কৃষক বা অন্য শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি যে বাড়েনি তা নয়, তবে সেই বাড়ার হার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির তুলনায় অনেক দূরে। বঞ্চনার সেটিই হচ্ছে মৌলিক স্ট্যাটিস্টিকস। জিডিপি যে হারে বাড়ছে, যে হারে আমাদের শ্রমের উৎপাদনশীলতা বাড়ছে, সেই হারে প্রকৃত মজুরি বাড়ছে না।”

বিনায়ক সেন মনে করেন, ৩০-৪০ বছর আগে শ্রমিকদের মজুরি ও অধিকার নিশ্চিত হওয়ার কারণ থাকলেও এখন সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। “আগে দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অন্যরকম, ‘৮০ কিংবা ‘৯০ দশকে শিল্প কলকারখানা ভেঙ্গে পড়েছিল, হঠাৎ করে তখন প্রাইভেটাইজেশন হচ্ছিল। তখন শিল্পখাতে শ্রমিক কমে গিয়েছিল। এই অবস্থা এখন নেই।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যত অগ্রগতি হয়েছে তার সিংহভাগ উন্নতির দাবিদার হচ্ছে শ্রমিকরা।” পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিনায়ক সেন জানান, ১৯৯০-৯১ সালে দেশের মোট আয়ের মধ্যে শিল্পখাতের অবদান ছিল ১০ শতাংশের মত; এখন সেটা ১৯ শতাংশের ওপরে, প্রায় ২০ শতাংশ (২০১৯-২০)।

একই সময়ে ভারতের শিল্পখাতে দেখা যায়, বাংলাদেশের তুলনায় শিল্পখাতে তাদের অবদান বেশি ছিল। তাদের এখন ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের তুলনায় কম। পাকিস্তানেও ১৯৯০-৯১ সালে বাংলাদেশের তুলনায় বেশি ছিল, তাদেরও কমে এসেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিআইডিএসের মহাপরিচালক বলেন, “গত ৩০ বছরে ভারত ও পাকিস্তানে জাতীয় আয়ে শিল্পখাতে অবদান কমে গেছে। শুধু বাংলাদেশে জিডিপি ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নতি হয়েছে। এটি সরকারি পরিসংখ্যানের হিসাব নয়, তা বিশ্বব্যাংকের জরিপের হিসাব।”

“গত ৩০ বছরে যে পরিমাণ জিডিপির উন্নতি হয়েছে এই অবদানের প্রধান চালিকা শক্তি হচ্ছে উৎপাদন খাত। এই খাতে শেয়ার বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আগামীতে আরও বাড়বে।”

তিনি বলেন, “আগে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও অধিকার সম্ভব ছিল না, এখন তো সম্ভব হয়েছে। এই প্রশ্ন আপনারা রাখতে পারেন।”

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, “উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু শ্রমিকরা তা পাচ্ছে কি না? উন্নয়ন হচ্ছে কী হচ্ছে না, তা বলার আগে বুঝতে হবে কার উন্নয়ন হচ্ছে?

“দেশে ১৮ কোটি মানুষ আছে, এর মধ্যে ১৭ কোটি ৯০ লাখ মানুষের খুব একটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। মাত্র ১০ লাখ মানুষের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এটাকে আপনি আদৌ উন্নয়ন বলবেন কিনা?”

‘সাধারণ’ অর্থনীতিবিদরা মানুষের উন্নয়নকে উন্নয়ন বলি এবং অধিকাংশ মানুষের উন্নয়ন না হলে সেই উন্নয়ন প্রশ্নবিদ্ধ হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“এখানে প্রশ্ন হচ্ছে- সব মিলিয়ে উন্নয়ন হয়েছে কি, হয়নি? এখন বাংলাদেশে বড় লোকও খুশি না, গরীবও খুশি না, একমাত্র মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী খুশি,” যোগ করেন তিনি।

অধ্যাপক আকাশ বলেন, “এখন তো বড় লোকও বলতে পারে যে, পি কে হালদার এত তাড়াতাড়ি তিন হাজার কোটি টাকা উপার্জন করল! আমি তো এত কষ্ট করেও ১০০ কোটি টাকা উপার্জন করতে পারলাম না। তাহলে আমার প্রতি অবিচার হয়েছে। সেই বড় লোকও খুশি হবে না।”

টিইউসি সভাপতি শ্রমিক নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সহ সভাপতি মাহবুবুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বক্তব্য দেন।

ছবি

পণ্যের দাম ঠিক রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে : প্রতিমন্ত্রী

ছবি

একীভূত ব্যাংক : পাঁচটির বাইরে আপাতত আর না

ছবি

ঈদে মানুষের মাঝে স্বস্তি দেখেছি : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

ছবি

বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিশ্ব ব্যাংকের চেয়ে বেশি দেখছে এডিবি

ছবি

মার্চে দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯.৮১ শতাংশ

ছবি

ঈদের আগে পাঁচ দিনে দেশে এলো ৪৬ কোটি ডলার

ছবি

শিল্পাঞ্চলের বাইরের কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ আর নয়, পাবেনা ঋণও

এবার ঈদে পর্যটন খাত চাঙ্গা হওয়ার আশা

ছবি

জাতীয় লজিস্টিক নীতির খসড়ার অনুমোদন

সোনালীতে একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল

ছবি

সোনার দাম আবার বাড়লো, ভরি ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা

ছবি

সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় বেসিক ব্যাংক

ছবি

বিজিএমইএর দায়িত্ব নিলেন এস এম মান্নান কচি

ছবি

বাজার মূলধন কিছুটা বাড়লো, তবু লাখ কোটি টাকার ওপরে ক্ষতি

ছবি

নতুন বিদেশী ঋণ নিয়ে পুরনো ঋণ শোধ করছে সরকার : সিপিডি

ছবি

ব্যাংক একীভুতকরনে নীতিমালা জারি

রাষ্ট্রীয় চার ব্যাংক একীভূত হয়ে হবে দুই

ছবি

এবার একীভূত হচ্ছে ‘সোনালীর সাথে বিডিবিএল’ ও ‘কৃষির সাথে রাকাব’

ছবি

শেয়ার প্রতি ১ পয়সা লভ্যাংশ দেবে একমি পেস্টিসাইড

এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানী লিমিটেডের কর্মীদের জন্য মেটলাইফের বীমা সুরক্ষা

গাজীপুরে এক বছরে ট্রাফিক পুলিশের ৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয়

ছবি

প্রবৃদ্ধি কমে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হবে: বিশ্বব্যাংক

ছবি

সিএসআর ফান্ডের আওতায় কৃষকদের আর্থিক সহযোগিতা করল সাউথইস্ট ব্যাংক

ছবি

ডেমরায় বাস গ্যারেজে আগুন

ছবি

নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও সেইহারে বাড়েনি তামাকপণ্যের দাম

ছবি

প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়া সেই ভূমি অফিস কর্মী সাময়িক বরখাস্ত

ব্যাংক ঋণের সুদহার আরও বাড়লো

ছবি

বেক্সিমকোর ২ হাজার ৬২৫ কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন দিলো বিএসইসি

শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষিত রাখতে কাজ করব : শ্রম প্রতিমন্ত্রী

ছবি

ঈদে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট বাড়াল বিমান

ছবি

ডিজেল-কেরোসিনের দাম লিটারে ২.২৫ টাকা কমলো

ছবি

ফেনীতে টপটেন মার্ট উদ্বোধন করলেন তামিম

ছবি

উচ্চ খেলাপি ঋণ আর্থিক খাতের জন্য বিরাট হুমকি : বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

শেয়ারবাজারে পতন : ফ্লোর প্রাইস, আতঙ্ক না জুয়া

ছবি

আলুর দাম বাড়ছে, অন্যান্য পণ্যের বাড়তি দাম অপরিবর্তিত

রিজার্ভ কমে দাঁড়ালো এক হাজার ৯৪৫ কোটি ডলারে

tab

অর্থ-বাণিজ্য

বিনায়ন সেনের অভিমত : জিডিপি ও মজুরির হার বাড়ার মধ্যে ‘বিশাল ব্যবধান’

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শনিবার, ২১ মে ২০২২

অর্থনীতিবিদ ড. বিনায়ক সেন বলেছেন, গত তিন দশকে বাংলাদেশের জিডিপি ব্যাপক বাড়লেও শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি ও অধিকার এখনও নিশ্চিত হয়নি। তিনি বলেন, “আমাদের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) এখন ৪১০ বিলিয়ন ডলার; ১৯৯০ থেকে শুরু করে গত ৩০ বছরে ব্যাপকভাবে বেড়েছে। আর যদি মজুরি আয়ের কথা বলি তাহলে তা অনেক কম। দুইটির মধ্যে বিশাল ব্যবধান ‘।

মে দিবস উপলক্ষে শুক্রবার ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘উন্নয়নের সুফল থেকে শ্রমিকরা বঞ্চিত কেন?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। ।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন বলেন,“কৃষক বা অন্য শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি যে বাড়েনি তা নয়, তবে সেই বাড়ার হার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির তুলনায় অনেক দূরে। বঞ্চনার সেটিই হচ্ছে মৌলিক স্ট্যাটিস্টিকস। জিডিপি যে হারে বাড়ছে, যে হারে আমাদের শ্রমের উৎপাদনশীলতা বাড়ছে, সেই হারে প্রকৃত মজুরি বাড়ছে না।”

বিনায়ক সেন মনে করেন, ৩০-৪০ বছর আগে শ্রমিকদের মজুরি ও অধিকার নিশ্চিত হওয়ার কারণ থাকলেও এখন সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। “আগে দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অন্যরকম, ‘৮০ কিংবা ‘৯০ দশকে শিল্প কলকারখানা ভেঙ্গে পড়েছিল, হঠাৎ করে তখন প্রাইভেটাইজেশন হচ্ছিল। তখন শিল্পখাতে শ্রমিক কমে গিয়েছিল। এই অবস্থা এখন নেই।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যত অগ্রগতি হয়েছে তার সিংহভাগ উন্নতির দাবিদার হচ্ছে শ্রমিকরা।” পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিনায়ক সেন জানান, ১৯৯০-৯১ সালে দেশের মোট আয়ের মধ্যে শিল্পখাতের অবদান ছিল ১০ শতাংশের মত; এখন সেটা ১৯ শতাংশের ওপরে, প্রায় ২০ শতাংশ (২০১৯-২০)।

একই সময়ে ভারতের শিল্পখাতে দেখা যায়, বাংলাদেশের তুলনায় শিল্পখাতে তাদের অবদান বেশি ছিল। তাদের এখন ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের তুলনায় কম। পাকিস্তানেও ১৯৯০-৯১ সালে বাংলাদেশের তুলনায় বেশি ছিল, তাদেরও কমে এসেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিআইডিএসের মহাপরিচালক বলেন, “গত ৩০ বছরে ভারত ও পাকিস্তানে জাতীয় আয়ে শিল্পখাতে অবদান কমে গেছে। শুধু বাংলাদেশে জিডিপি ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নতি হয়েছে। এটি সরকারি পরিসংখ্যানের হিসাব নয়, তা বিশ্বব্যাংকের জরিপের হিসাব।”

“গত ৩০ বছরে যে পরিমাণ জিডিপির উন্নতি হয়েছে এই অবদানের প্রধান চালিকা শক্তি হচ্ছে উৎপাদন খাত। এই খাতে শেয়ার বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আগামীতে আরও বাড়বে।”

তিনি বলেন, “আগে শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও অধিকার সম্ভব ছিল না, এখন তো সম্ভব হয়েছে। এই প্রশ্ন আপনারা রাখতে পারেন।”

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, “উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু শ্রমিকরা তা পাচ্ছে কি না? উন্নয়ন হচ্ছে কী হচ্ছে না, তা বলার আগে বুঝতে হবে কার উন্নয়ন হচ্ছে?

“দেশে ১৮ কোটি মানুষ আছে, এর মধ্যে ১৭ কোটি ৯০ লাখ মানুষের খুব একটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। মাত্র ১০ লাখ মানুষের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এটাকে আপনি আদৌ উন্নয়ন বলবেন কিনা?”

‘সাধারণ’ অর্থনীতিবিদরা মানুষের উন্নয়নকে উন্নয়ন বলি এবং অধিকাংশ মানুষের উন্নয়ন না হলে সেই উন্নয়ন প্রশ্নবিদ্ধ হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

“এখানে প্রশ্ন হচ্ছে- সব মিলিয়ে উন্নয়ন হয়েছে কি, হয়নি? এখন বাংলাদেশে বড় লোকও খুশি না, গরীবও খুশি না, একমাত্র মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী খুশি,” যোগ করেন তিনি।

অধ্যাপক আকাশ বলেন, “এখন তো বড় লোকও বলতে পারে যে, পি কে হালদার এত তাড়াতাড়ি তিন হাজার কোটি টাকা উপার্জন করল! আমি তো এত কষ্ট করেও ১০০ কোটি টাকা উপার্জন করতে পারলাম না। তাহলে আমার প্রতি অবিচার হয়েছে। সেই বড় লোকও খুশি হবে না।”

টিইউসি সভাপতি শ্রমিক নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সহ সভাপতি মাহবুবুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বক্তব্য দেন।

back to top