মৌলভীবাজার শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে পণ্য উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রথম পণ্য উৎপাদন শুরু করলেন একজন যুক্তরাজ্য প্রবাসী নারী উদ্যোক্তা। অন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজও দ্রুতগতিতে চলছে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চল সিলেট বিভাগে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মাইলফলক হবে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এর উদ্যোগে এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে মৌলভীবাজার শেরপুরে তিন জেলার মোহনায় ৩৫২ একর ভূমিতে গড়ে তুলা হয়েছে শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল। শিল্প-কারখানা স্থাপনের জন্য ৬টি কোম্পানিকে ভূমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেখানে দেশীয় ৪টি কোম্পানির বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ চলছে।
এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবকাঠামো কাজ শেষ করে প্রথম পণ্য উৎপাদন শুরু করেছেন একজন প্রবাসী নারী বিনিয়োগকারী। বাসা-বাড়ি, অফিসে ব্যবহৃত আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন বিদেশি দরজা, জানালাসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন হচ্ছে সেখানে। শব্দ, তাপ নিরোধক এবং পরিবেশ বান্ধব পণ্যটি সারাদেশে বাজারজাত করে কর্মসংস্থানেরও সুযোগ করে দিতে চায় এ শিল্পপ্রতিষ্ঠান।
প্রবাসী নারী উদ্যোক্তা পলি ইসলাম বলেন, আমি বর্তমানে ইংল্যান্ডে একজন ইমিগ্রেশন লইয়ার, এর পাশাপাশি ব্যবসাও করছি। ছোটবেলা থেকে ব্যবসায়ী হওয়ার চিন্তাটা মাথায় ঘুরপাক খায়। এর কারণ হলো ইংল্যান্ডে আমার বাবা একজন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী ছিলেন, মূলত তাকে দেখেই ব্যবসায়ী হওয়ার আগ্রহ। সেই আগ্রহ থেকে ব্যবসায় আসা এবং আমার স্বামীকেও যুক্ত করি। বর্তমানে আমাদের কিছু বন্ধুরা আগ্রহ প্রকাশ করলে তাদেরও আমাদের সঙ্গে নিই। আমরা বাংলাদেশে মৌলভীবাজারের শ্রীহট্ট ইকোনমিক জোনে ভূমি নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করে উৎপাদন শুরু করেছি। বর্তমানে ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি, পর্যায়ক্রমে শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, এখন ৩০০ মানুষকে কর্মসংস্থান করে দিয়েছি। ভবিষ্যতে কম করে হলেও ১ হাজার মানুষ এখানে কাজ করবে এবং স্থানীয়রা সে সুযোগ পাবেন। সুতরাং এখানে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের বড় একটা সুযোগ রয়েছে।
শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে ‘ডাবলগ্লজিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনুল ইসলাম বলেন, আমরা মূলত বিদেশি দরজা-জানালা এখানে তৈরি করছি। যেগুলো বিদেশ থেকে আনতে হতো সেগুলো উৎপাদন করে সাশ্রয়ী মূল্যে আমরা বিক্রি করবো সারাদেশে। বিদেশ থেকে কাঁচামাল এনে মেশিন এবং কারিগরের সাহায্যে আমরা তৈরি করি। দৃষ্টিনন্দন বিদেশি দরজা, জানালাসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন হচ্ছে এবং শব্দ ও তাপ নিরোধক এবং পরিবেশ বান্ধব পণ্যগুলো তৈরি করছি আমরা।
ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এর পরিচালক মাহতাব মিয়া জানান, আমরা প্রবাসী ব্যবসায়ীরা রেমিট্যান্স যোদ্ধা থেকে বিনিয়োগ যোদ্ধা হতে চাই। তবে বিনিয়োগে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালুর দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, এই দাবি ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এর সকল ব্যবসায়ী এবং প্রতিনিধিদের।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, সিলেট বিভাগের মধ্যস্থলে অবস্থিত শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প গড়ে তুলতে সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষের এবং অত্র অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যে মাইলফলক সৃষ্টি হবে। এই ইকোনমিক জোনটি মৌলভীবাজারে হলেও মৌলভীবাজারের পাশাপাশি এর সুবিধা পাবে হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলাও। এই কারণে তিন জেলার মোহনায় করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন।
শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে সকল শিল্প-প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে আসলে মৌলভীবাজারসহ এই অঞ্চলে শিল্পোন্নয়নসহ অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর ২০২২
মৌলভীবাজার শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে পণ্য উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রথম পণ্য উৎপাদন শুরু করলেন একজন যুক্তরাজ্য প্রবাসী নারী উদ্যোক্তা। অন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজও দ্রুতগতিতে চলছে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চল সিলেট বিভাগে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে মাইলফলক হবে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এর উদ্যোগে এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে মৌলভীবাজার শেরপুরে তিন জেলার মোহনায় ৩৫২ একর ভূমিতে গড়ে তুলা হয়েছে শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল। শিল্প-কারখানা স্থাপনের জন্য ৬টি কোম্পানিকে ভূমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেখানে দেশীয় ৪টি কোম্পানির বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ চলছে।
এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে অবকাঠামো কাজ শেষ করে প্রথম পণ্য উৎপাদন শুরু করেছেন একজন প্রবাসী নারী বিনিয়োগকারী। বাসা-বাড়ি, অফিসে ব্যবহৃত আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন বিদেশি দরজা, জানালাসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন হচ্ছে সেখানে। শব্দ, তাপ নিরোধক এবং পরিবেশ বান্ধব পণ্যটি সারাদেশে বাজারজাত করে কর্মসংস্থানেরও সুযোগ করে দিতে চায় এ শিল্পপ্রতিষ্ঠান।
প্রবাসী নারী উদ্যোক্তা পলি ইসলাম বলেন, আমি বর্তমানে ইংল্যান্ডে একজন ইমিগ্রেশন লইয়ার, এর পাশাপাশি ব্যবসাও করছি। ছোটবেলা থেকে ব্যবসায়ী হওয়ার চিন্তাটা মাথায় ঘুরপাক খায়। এর কারণ হলো ইংল্যান্ডে আমার বাবা একজন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী ছিলেন, মূলত তাকে দেখেই ব্যবসায়ী হওয়ার আগ্রহ। সেই আগ্রহ থেকে ব্যবসায় আসা এবং আমার স্বামীকেও যুক্ত করি। বর্তমানে আমাদের কিছু বন্ধুরা আগ্রহ প্রকাশ করলে তাদেরও আমাদের সঙ্গে নিই। আমরা বাংলাদেশে মৌলভীবাজারের শ্রীহট্ট ইকোনমিক জোনে ভূমি নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করে উৎপাদন শুরু করেছি। বর্তমানে ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি, পর্যায়ক্রমে শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, এখন ৩০০ মানুষকে কর্মসংস্থান করে দিয়েছি। ভবিষ্যতে কম করে হলেও ১ হাজার মানুষ এখানে কাজ করবে এবং স্থানীয়রা সে সুযোগ পাবেন। সুতরাং এখানে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের বড় একটা সুযোগ রয়েছে।
শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে ‘ডাবলগ্লজিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনুল ইসলাম বলেন, আমরা মূলত বিদেশি দরজা-জানালা এখানে তৈরি করছি। যেগুলো বিদেশ থেকে আনতে হতো সেগুলো উৎপাদন করে সাশ্রয়ী মূল্যে আমরা বিক্রি করবো সারাদেশে। বিদেশ থেকে কাঁচামাল এনে মেশিন এবং কারিগরের সাহায্যে আমরা তৈরি করি। দৃষ্টিনন্দন বিদেশি দরজা, জানালাসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন হচ্ছে এবং শব্দ ও তাপ নিরোধক এবং পরিবেশ বান্ধব পণ্যগুলো তৈরি করছি আমরা।
ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এর পরিচালক মাহতাব মিয়া জানান, আমরা প্রবাসী ব্যবসায়ীরা রেমিট্যান্স যোদ্ধা থেকে বিনিয়োগ যোদ্ধা হতে চাই। তবে বিনিয়োগে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালুর দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, এই দাবি ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এর সকল ব্যবসায়ী এবং প্রতিনিধিদের।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, সিলেট বিভাগের মধ্যস্থলে অবস্থিত শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প গড়ে তুলতে সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষের এবং অত্র অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যে মাইলফলক সৃষ্টি হবে। এই ইকোনমিক জোনটি মৌলভীবাজারে হলেও মৌলভীবাজারের পাশাপাশি এর সুবিধা পাবে হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলাও। এই কারণে তিন জেলার মোহনায় করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন।
শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে সকল শিল্প-প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে আসলে মৌলভীবাজারসহ এই অঞ্চলে শিল্পোন্নয়নসহ অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ।