alt

অর্থ-বাণিজ্য

ভোজ্য পণ্যের বাজার চড়া, আগুন ব্রয়লার-রসুন-মরিচে

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩

বাজারে কাগজ-কলমে আরও এক দফা বাড়ছে চিনির দাম। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নতুন করে প্রতি কেজি চিনিতে দাম বাড়বে পাঁচ টাকা। এতে এক কেজি পরিশোধিত খোলা চিনি ১০৭ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১১২ টাকায় বিক্রি হবে। কিন্তু জানুয়ারিতেই বাড়তি দামে চিনি বিক্রি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি চিনি ১১৫ থেকে ১২০ টাকার কমে মিলছে না। নতুন করে দাম বাড়ায় চিনির বাজার লাগামছাড়া হতে পারে বলে আশঙ্কা খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীদের।

এছাড়া শেষের দিকে শীতের মৌসুম। শুরু হয়েছে নতুন ঋতুর আগমনী বার্তা। এর ফলে অনেক কিছুরই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে কাঁচাবাজারে শীত শেষের বার্তা পাওয়া গেছে। আগের তুলনায় রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারের শীতকালীন অনেক সবজিরই সরবরাহও কমেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী সপ্তাহ পর সবজির দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, দাম এখনো না বাড়লেও শীতের টাটকা সবজির সরবরাহ কিছুটা কমেছে। সবজির দোকানগুলোতেও কাঁচামালের পদের সংখ্যা ও পরিমাণ কমেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী সপ্তাহ পর সবজির দাম বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর প্রধান বাজারগুলো ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। মানিক নগর বাজারের সুজন খুচরা চিনি বিক্রেতা বলেন, আগেও নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি হয়নি। এখন নতুন করে দাম বেড়েছে। এ ঘোষণার পর থেকে সরবরাহ কম। বোঝা যাচ্ছে না পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।

তিনি বলেন, চিনি নিয়ে অস্থিরতা দীর্ঘদিন ধরে। সরকার কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে না বলে খুচরা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

শুধু চিনি নয়, মসলাসহ আদা-রসুন ও শুকনো মরিচের দামেও অস্থিরতা চলছে। সপ্তাহান্তেই বাড়ছে দাম। এখন প্রতি কেজি আদা ১৫০-২০০ টাকায় ঠেকেছে। রসুনের দামও বেড়ে হয়েছে ১৫০-১৮০ টাকা। বাজারে তুলনামূলক কিছুটা কম দামে দেশি জাতের আদা-রসুন থাকলেও সেগুলোর চাহিদা কম। আগে যে শুকনো মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হতো ১০০-১৫০ টাকায় তা এখন ৫০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। আমদানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন সংকটে পণ্যটির রেকর্ড পরিমাণ দাম বেড়েছে। বর্তমানে শুকনো মরিচ কেজিপ্রতি সর্বনি¤œ ৩৫০-৫০০ টাকায় ওঠানামা করছে। আসন্ন রমজানের আগে সরবরাহ না বাড়লে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারিতে আমদানি করা ভারতীয় মরিচ বিক্রি হচ্ছে (গুজরাটি) ৩২০-৩৭০ টাকায়। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা মরিচের কেজি ৩৫০-৩৭০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘ সময় পরে মরিচের দাম এতটা বেড়েছে।

বাজারে এ তিন মসলা পণ্যের দামের হেরফেরের বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্যেও। সংস্থাটি বলছে, গত বছর একই সময়ে দেশে আদার দাম মানভেদে ৫০-১১০ শতাংশ, রসুনের দাম ৪৫-১২৭ শতাংশ এবং শুকনো মরিচের দাম ৭৫-১৫২ শতাংশ কম ছিল।

এদিকে বাজারে দুই সপ্তাহ আগে সরু চালের দাম বেড়েছে। সঙ্গে কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। স্বস্তি নেই এখন শীতের সবজিতেও। প্রায় প্রতিটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে আগের থেকে ৫-১০ টাকা বেশিতে। আজও এসব পণ্যের দাম বাড়তি দেখা গেছে।

বাজারভেদে সরু মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের বিআর ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা। ভালো মানের নাজিরশাইল চালের কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা। আর মোটা চাল ৫৪-৫৫ টাকা কেজি।

ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে প্রতি কেজি ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ডিমের দামে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। কোনো কোনো এলাকায় প্রতি ডজন (১১ পিস) আর ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, শিম মানভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, মুলার কেজি ২৫ টাকা, ঢেঁঢ়স ৫০ টাকা, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুলা শাক ১০ টাকা আঁটি, পালং শাক ১০ টাকা কেজি, কলমি শাকের আঁটি ১০ টাকা, লাউ শাক ৪০-৫০ টাকা আঁটি, লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, পুঁইশাক ২০ টাকা, ডাটা শাক ২০ টাকা আঁটি, পাট শাকের আঁটি ১০ টাকা। তবে শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। এক্ষেত্রে কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে। যা সপ্তাহ আগেও করলা ৫০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা এবং গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাষের পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজিতে। দুই কেজি ওজনের নদীর পাঙ্গাশ ৬০০ টাকা। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা কেজিতে। মাঝারি মানের রুই ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৬০-৩০০ টাকায়। বড় রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকায়। পুঁটি মাছ ২৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৫০০ টাকা, টাকি মাছ ৬০০ টাকা, রূপচাঁদা ৭০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৬৫০-৭০০ টাকা, ছোট বোয়াল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, ছোট টেংরা ৪০০ টাকা কেজি, টাকি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, পাবদা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, শোল মাছ ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, ছোট রূপচাঁদা প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা, ছোট কাঁচকি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে এখন সাড়ে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ৫২০ টাকা, ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৭৫০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৮৫০ টাকা এবং ৯০০-৯৫০ গ্রামের ওজনের ইলিশ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, মাংসের বাজার অপরিবর্তিত রয়েছে। এর আগের সপ্তাহেও একই দরে বিক্রি হয়ে মাংস।

কাঁটাবন এলাকার ডিম বিক্রেতা মনসুর আহমেদ জানান, এক হালি ৪৫ টাকা আর ডজন ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তবে হাঁসের ডিম প্রতিটি ১৮ টাকা, হালি ৭৫ টাকা এবং ডজন ২২০ টাকা।

ছবি

স্থানীয় শিল্পে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার

ছবি

তুলা আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম কর প্রত্যাহার চান টেক্সটাইল মালিকরা

বাজার মূলধনে যোগ হলো সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা

বিকাশ, রকেট, নগদসহ এমএফএসের মাধ্যমে শুল্ক-কর জমা দেয়া যাবে

ছবি

ব্রাদার পার্টনার ডে ২০২৫ অনুষ্ঠিত

ছবি

বিকাশ-রকেট-নগদে কাস্টমস শুল্ক পরিশোধ সুবিধা চালু, ঘরে বসেই পণ্য খালাসের পথ খুলল

ছবি

তুলা আমদানিতে ২ শতাংশ অগ্রিম কর প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা

ছবি

কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে মাশুল বাড়বে না

সেমিকন্ডাক্টর খাতে ১০ বছরের কর অব্যাহতি ও শুল্ক ছাড়ের সুপারিশ

ছবি

প্রথম প্রান্তিকে বিমাদাবি নিষ্পত্তিতে গার্ডিয়ান লাইফ ইনস্যুরেন্সের ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’

৮৫ ব্রোকারেজ হাউসকে আগস্টের মধ্যে চালু করতে হবে ব্যাক অফিস সফটওয়্যার

ছবি

প্রসাধনী পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি

ছবি

স্বর্ণের দাম আবার বাড়লো

ছবি

৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ ১০ হাজার টন সার কিনবে সরকার

এফবিসিসিআই নির্বাচন: সময় বাড়লো ৪৫ দিন

ছবি

পাট খাতের উন্নয়নে ‘সাসটেইনেবল মার্কেট এক্সেস বুটক্যাম্প’ কর্মসূচি শুরু

এক বছরে ভারতে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন নেমেছে এক-তৃতীয়াংশে

৫ দিন বন্ধ থাকবে রূপালী ও এনসিসি ব্যাংকের সব কার্যক্রম

ছবি

ডলারের বিপরীতে টাকায় ঋণ নেয়ার সুযোগ

গত অর্থবছরে রফতানি আয় ৪৮ বিলিয়ন ডলার

নবম পে-কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস অর্থ উপদেষ্টার

ছবি

ব্যাগেজ রুলসে মোবাইল ও স্বর্ণ আনায় বড় ছাড়

ছবি

এনবিআরের আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তের কথা জানালো দুদক

ছবি

প্রবাসী আয়ে রেকর্ড, রপ্তানিতে বড় প্রবৃদ্ধি

ছবি

দেশের ৩২ বীমা কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

ছবি

বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ৭ শতাংশেরও কম

ছবি

ডিএসইর নতুন সিওও মোহাম্মদ আসাদুর রহমান

ছবি

অর্থবছরের প্রথম দিন ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার

ছবি

ইলিশের দাম নির্ধারণ করে দেবে সরকার

ছবি

এনবিআরে আন্দোলন: এবার চার কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠালো সরকার

ছবি

৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মায়ানমারকে হারিয়ে ইতিহাসের পথে বাংলাদেশের মেয়েরা

বিইআরসি ঘোষণা করল বেসরকারি এলপিজির নতুন দাম, ১২ কেজিতে ৩৯ টাকা কমতি

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানি আসছে, অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে নৌবাহিনী

ছবি

নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে এফবিসিসিআই নির্বাচন পিছিয়ে গেল

ছবি

রেকর্ড রেমিটেন্সে শেষ হলো অর্থবছর, প্রথমবারের মতো আয় ছাড়াল ৩০ বিলিয়ন ডলার

ছবি

‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে অংশ: চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার বরখাস্ত

tab

অর্থ-বাণিজ্য

ভোজ্য পণ্যের বাজার চড়া, আগুন ব্রয়লার-রসুন-মরিচে

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩

বাজারে কাগজ-কলমে আরও এক দফা বাড়ছে চিনির দাম। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নতুন করে প্রতি কেজি চিনিতে দাম বাড়বে পাঁচ টাকা। এতে এক কেজি পরিশোধিত খোলা চিনি ১০৭ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১১২ টাকায় বিক্রি হবে। কিন্তু জানুয়ারিতেই বাড়তি দামে চিনি বিক্রি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি চিনি ১১৫ থেকে ১২০ টাকার কমে মিলছে না। নতুন করে দাম বাড়ায় চিনির বাজার লাগামছাড়া হতে পারে বলে আশঙ্কা খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীদের।

এছাড়া শেষের দিকে শীতের মৌসুম। শুরু হয়েছে নতুন ঋতুর আগমনী বার্তা। এর ফলে অনেক কিছুরই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে কাঁচাবাজারে শীত শেষের বার্তা পাওয়া গেছে। আগের তুলনায় রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারের শীতকালীন অনেক সবজিরই সরবরাহও কমেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী সপ্তাহ পর সবজির দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, দাম এখনো না বাড়লেও শীতের টাটকা সবজির সরবরাহ কিছুটা কমেছে। সবজির দোকানগুলোতেও কাঁচামালের পদের সংখ্যা ও পরিমাণ কমেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামী সপ্তাহ পর সবজির দাম বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর প্রধান বাজারগুলো ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। মানিক নগর বাজারের সুজন খুচরা চিনি বিক্রেতা বলেন, আগেও নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি হয়নি। এখন নতুন করে দাম বেড়েছে। এ ঘোষণার পর থেকে সরবরাহ কম। বোঝা যাচ্ছে না পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।

তিনি বলেন, চিনি নিয়ে অস্থিরতা দীর্ঘদিন ধরে। সরকার কঠিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে না বলে খুচরা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

শুধু চিনি নয়, মসলাসহ আদা-রসুন ও শুকনো মরিচের দামেও অস্থিরতা চলছে। সপ্তাহান্তেই বাড়ছে দাম। এখন প্রতি কেজি আদা ১৫০-২০০ টাকায় ঠেকেছে। রসুনের দামও বেড়ে হয়েছে ১৫০-১৮০ টাকা। বাজারে তুলনামূলক কিছুটা কম দামে দেশি জাতের আদা-রসুন থাকলেও সেগুলোর চাহিদা কম। আগে যে শুকনো মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হতো ১০০-১৫০ টাকায় তা এখন ৫০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে। আমদানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন সংকটে পণ্যটির রেকর্ড পরিমাণ দাম বেড়েছে। বর্তমানে শুকনো মরিচ কেজিপ্রতি সর্বনি¤œ ৩৫০-৫০০ টাকায় ওঠানামা করছে। আসন্ন রমজানের আগে সরবরাহ না বাড়লে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারিতে আমদানি করা ভারতীয় মরিচ বিক্রি হচ্ছে (গুজরাটি) ৩২০-৩৭০ টাকায়। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা মরিচের কেজি ৩৫০-৩৭০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘ সময় পরে মরিচের দাম এতটা বেড়েছে।

বাজারে এ তিন মসলা পণ্যের দামের হেরফেরের বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্যেও। সংস্থাটি বলছে, গত বছর একই সময়ে দেশে আদার দাম মানভেদে ৫০-১১০ শতাংশ, রসুনের দাম ৪৫-১২৭ শতাংশ এবং শুকনো মরিচের দাম ৭৫-১৫২ শতাংশ কম ছিল।

এদিকে বাজারে দুই সপ্তাহ আগে সরু চালের দাম বেড়েছে। সঙ্গে কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। স্বস্তি নেই এখন শীতের সবজিতেও। প্রায় প্রতিটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে আগের থেকে ৫-১০ টাকা বেশিতে। আজও এসব পণ্যের দাম বাড়তি দেখা গেছে।

বাজারভেদে সরু মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের বিআর ২৮ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা। ভালো মানের নাজিরশাইল চালের কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা। আর মোটা চাল ৫৪-৫৫ টাকা কেজি।

ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়ে প্রতি কেজি ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ডিমের দামে দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। কোনো কোনো এলাকায় প্রতি ডজন (১১ পিস) আর ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, শিম মানভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, মুলার কেজি ২৫ টাকা, ঢেঁঢ়স ৫০ টাকা, বরবটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুলা শাক ১০ টাকা আঁটি, পালং শাক ১০ টাকা কেজি, কলমি শাকের আঁটি ১০ টাকা, লাউ শাক ৪০-৫০ টাকা আঁটি, লাল শাক ১০ টাকা আঁটি, পুঁইশাক ২০ টাকা, ডাটা শাক ২০ টাকা আঁটি, পাট শাকের আঁটি ১০ টাকা। তবে শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজিতে। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। এক্ষেত্রে কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিতে। যা সপ্তাহ আগেও করলা ৫০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা এবং গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাষের পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজিতে। দুই কেজি ওজনের নদীর পাঙ্গাশ ৬০০ টাকা। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা কেজিতে। মাঝারি মানের রুই ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৬০-৩০০ টাকায়। বড় রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকায়। পুঁটি মাছ ২৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৫০০ টাকা, টাকি মাছ ৬০০ টাকা, রূপচাঁদা ৭০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৬৫০-৭০০ টাকা, ছোট বোয়াল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, ছোট টেংরা ৪০০ টাকা কেজি, টাকি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, পাবদা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, শোল মাছ ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, ছোট রূপচাঁদা প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা, ছোট কাঁচকি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে এখন সাড়ে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ৫২০ টাকা, ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৭৫০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৮৫০ টাকা এবং ৯০০-৯৫০ গ্রামের ওজনের ইলিশ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, মাংসের বাজার অপরিবর্তিত রয়েছে। এর আগের সপ্তাহেও একই দরে বিক্রি হয়ে মাংস।

কাঁটাবন এলাকার ডিম বিক্রেতা মনসুর আহমেদ জানান, এক হালি ৪৫ টাকা আর ডজন ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তবে হাঁসের ডিম প্রতিটি ১৮ টাকা, হালি ৭৫ টাকা এবং ডজন ২২০ টাকা।

back to top