চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ২৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছে, যা গত ১০ অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। টাকার অঙ্কে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে এর পরিমাণ ৬০ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
সম্প্রতি এডিপি বাস্তবায়নের সর্বশেষ এ প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ সময়ে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৪৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ অর্থ ব্যয় করেছে সেতু বিভাগ।
এডিপি বাস্তবায়নের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের পর থেকে বাস্তবায়নের এত কম হার আর দেখা যায়নি। ওই অর্থবছরের ছয় মাসে বাস্তবায়নের হার ছিল ২৫ শতাংশ। এ সময়কালের মধ্যে কোভিড মহামারী শুরুর ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেও এর চেয়ে বেশি ২৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছিল।
চলতি অর্থবছরে স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থার জন্য বরাদ্দসহ সরকার মোট ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দিয়েছে। এরমধ্যে প্রথমার্ধ শেষে ব্যয় হয়েছে ৬০ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা।
বাস্তবায়নের ধীরগতি প্রসঙ্গে আইএমইডির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় কমিয়ে ডলার সাশ্রয়ে দেশি অর্থায়নের চলমান প্রকল্পে আমদানি অনুৎসাহিত করা হয়। কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন স্থগিত রাখা হয়। তবে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের ক্ষেত্রে আমদানিতে সমস্যা নেই। এ কারণে বাস্তবায়নের হার কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে।’
বাস্তবায়নের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন হয়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ। সরকারের নিজস্ব তহবিলের প্রকল্পের ক্ষেত্রে এ হার প্রায় ২৩ শতাংশ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের ক্ষেত্রে তা মাত্র ২১ শতাংশ।
আইএমইডির আরেকজন কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম থেকেই বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের উদ্যোগ থাকায় বিদেশি পণ্য আমদানি করতে হয় এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। আবার অনেক সময় প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ঠিক থাকলেও প্রকল্পের অর্থছাড় না হাওয়ার কারণেও বাস্তবায়ন কম দেখানো হয়। সেই রকম কয়েকটি প্রকল্পও আছে বলে তিনি জানান।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রাপ্ত ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৪৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে সেতু বিভাগ। বিদ্যুৎ বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ৩৯ শতাংশ এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ৩৩ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বাস্তবায়ন করেছে প্রায় ২৮ শতাংশ, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ করেছে ২৭ শতাংশ, স্থানীয় সরকার বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে ২৬ শতাংশ, রেলপথ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ২৫ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয় করেছে প্রায় ২৪ শতাংশ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বরাদ্দের মাত্র ২২ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে।
মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়টির আওতায় চলতি অর্থবছরে ১০১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এরপর মাত্র শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ বাস্তবায়ন করে পিছিয়ে আছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। চলতি অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে ৩৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও খরচ করতে পেরেছে মাত্র ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এছাড়াও মাত্র ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন। এরপর ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ বা ৪৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা এডিবি বাস্তবায়ন করেছে জননিরাপত্তা বিভাগ। যদিও চলতি অর্থবছরে জননিরাপত্তা বিভাগের জন্য বরাদ্দ এক হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা।
আলোচ্য সময়ে ১০ শতাংশের কম এডিপি বাস্তবায়ন করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তারা ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে। ভূমি মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বা ৫০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। যেখানে তাদের জন্য ৮২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। তারা খরচ করেছে ১০১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এক হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা। এছাড়াও স্বাস্থ্য খাতের দুই প্রতিষ্ঠানও এডিপি বাস্তবায়নে করেছে ১০ শতাংশের নিচে। ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে সুরক্ষা সেবা বিভাগ। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ।
শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩
চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ২৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছে, যা গত ১০ অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। টাকার অঙ্কে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে এর পরিমাণ ৬০ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
সম্প্রতি এডিপি বাস্তবায়নের সর্বশেষ এ প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ সময়ে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৪৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ অর্থ ব্যয় করেছে সেতু বিভাগ।
এডিপি বাস্তবায়নের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরের পর থেকে বাস্তবায়নের এত কম হার আর দেখা যায়নি। ওই অর্থবছরের ছয় মাসে বাস্তবায়নের হার ছিল ২৫ শতাংশ। এ সময়কালের মধ্যে কোভিড মহামারী শুরুর ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেও এর চেয়ে বেশি ২৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছিল।
চলতি অর্থবছরে স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থার জন্য বরাদ্দসহ সরকার মোট ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দিয়েছে। এরমধ্যে প্রথমার্ধ শেষে ব্যয় হয়েছে ৬০ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা।
বাস্তবায়নের ধীরগতি প্রসঙ্গে আইএমইডির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় কমিয়ে ডলার সাশ্রয়ে দেশি অর্থায়নের চলমান প্রকল্পে আমদানি অনুৎসাহিত করা হয়। কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন স্থগিত রাখা হয়। তবে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের ক্ষেত্রে আমদানিতে সমস্যা নেই। এ কারণে বাস্তবায়নের হার কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে।’
বাস্তবায়নের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন হয়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ। সরকারের নিজস্ব তহবিলের প্রকল্পের ক্ষেত্রে এ হার প্রায় ২৩ শতাংশ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের ক্ষেত্রে তা মাত্র ২১ শতাংশ।
আইএমইডির আরেকজন কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম থেকেই বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের উদ্যোগ থাকায় বিদেশি পণ্য আমদানি করতে হয় এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। আবার অনেক সময় প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি ঠিক থাকলেও প্রকল্পের অর্থছাড় না হাওয়ার কারণেও বাস্তবায়ন কম দেখানো হয়। সেই রকম কয়েকটি প্রকল্পও আছে বলে তিনি জানান।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রাপ্ত ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৪৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে সেতু বিভাগ। বিদ্যুৎ বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ৩৯ শতাংশ এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ৩৩ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বাস্তবায়ন করেছে প্রায় ২৮ শতাংশ, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ করেছে ২৭ শতাংশ, স্থানীয় সরকার বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে ২৬ শতাংশ, রেলপথ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ২৫ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয় করেছে প্রায় ২৪ শতাংশ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বরাদ্দের মাত্র ২২ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে।
মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়টির আওতায় চলতি অর্থবছরে ১০১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এরপর মাত্র শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ বাস্তবায়ন করে পিছিয়ে আছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। চলতি অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে ৩৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও খরচ করতে পেরেছে মাত্র ২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এছাড়াও মাত্র ২ দশমিক ৪৯ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন। এরপর ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ বা ৪৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা এডিবি বাস্তবায়ন করেছে জননিরাপত্তা বিভাগ। যদিও চলতি অর্থবছরে জননিরাপত্তা বিভাগের জন্য বরাদ্দ এক হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা।
আলোচ্য সময়ে ১০ শতাংশের কম এডিপি বাস্তবায়ন করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তারা ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে। ভূমি মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ বা ৫০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। যেখানে তাদের জন্য ৮২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। তারা খরচ করেছে ১০১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এক হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা। এছাড়াও স্বাস্থ্য খাতের দুই প্রতিষ্ঠানও এডিপি বাস্তবায়নে করেছে ১০ শতাংশের নিচে। ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে সুরক্ষা সেবা বিভাগ। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বাস্তবায়ন করেছে ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ।