সোনালী ব্যাংকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সময়ে নিয়োগ পাওয়া অনেকেই কাক্সিক্ষত পদোন্নতি পাননি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে একাধিকবার ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। এমন বৈষম্যে কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছিল। তবে এবার পদোন্নতির ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকে কর্মকর্তারা বলছেন ‘যুগান্তকারী পদক্ষেপ’।
পরিচালনার পর্ষদের সাম্প্রতিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘অফিসার বা সমমান থেকে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বা সমমান পদ পর্যন্ত পদোন্নতির ক্ষেত্রে সম্ভাব্য শূন্য পদের চেয়ে পদোন্নতিযোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা তিন গুণের বেশি হলে জ্যেষ্ঠতা তালিকা থেকে প্রতিটি সম্ভাব্য শূন্য পদের বিপরীতে সর্বোচ্চ তিনজন প্রার্থী নির্বাচনী সাক্ষাৎকার বা বাছাইয়ের জন্য বিবেচ্য হবেন।’ এমন সিদ্ধান্তে ব্যাংকের কর্মকর্তারা সন্তুষ্ট।
এমন একজন কর্মকর্তা বর্তমানে বরিশালের একটি শাখায় সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত। তিনি ২০০০ সালে সিনিয়ার অফিসার হিসেবে যোগদান করেন সোনালী ব্যাংকে। তিনি বলেন, ‘আমার নয়-দশ বছর পরে ব্যাংকে যোগদান করেও অনেকই এজিএম হয়েছেন। আর আমার সঙ্গে যারা যোগদান করেছে, তারা এখন অনেকই ডিজিএম ও জিএম হয়েছে। অথচ আমরা অনেকই এখনও এজিএমও হতে পারিনি।’
কারণ হিসেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের নীতিমালা অনুরসণ না করে, নামমাত্র ভাইভা হতো। কিন্তু পদোন্নতি দেয়া হতো নিজেদের পছন্দ মতো লোকদের। এখানে যোগ্য ও মেধাবী লোকদের কোন মূল্যায়ন করা হতো না। কে বেশি কাছের লোক সে হিসেবে মূল্যায়ন করে পদোন্নতি দিয়েছে।’
একই কথা সোনালী ব্যাংকের রাজধানীর একটি শাখার সিনিয়ার প্রিন্সিপাল অফিসার নজরুল ইসলামের। তিনিও ২০০০ সালে কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। তার কথা, ২০২০, ২০২১, ২০২২ সালে যে তিনবার পদোন্নতি দেয়া হয়েছে তার অধিকাংশই অনৈতিকভাবে হয়েছে।
তার অভিযোগ, ‘শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা, কর্মক্ষেত্রে বিশেষ কাজ, ব্যাংকিং ডিপ্লোমাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ৮৬ মার্ক। আর ভাইভায় ছিল ১৪ মার্ক। অথচ মূল মার্ক পেয়েও পদোন্নতি পাননি অনেকই। কারণ ভাইভায় যোগ্য ও মেধাবীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। সেখানে বেশিরভাগই কাছের অযোগ্য লোকদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ একটি নীতিমালা করেছে সে আলোকে যদি পদোন্নতি দেয়া হয়, তাহলে যোগ্য ও মেধাবী লোকগুলোই পদোন্নতি পাবে। নতুন নীতিমালায় একটি শূন্য পদের বিপরীতে সর্বোচ্চ তিনজনকে সাক্ষাৎকারে ডাকা হবে। নতুন নীতিমালা কার্যকর হলে পদোন্নতিতে মেধাবী ও যোগ্য ব্যক্তিরাই পদোন্নতি পাবেন।’
একই কথা বললেন সোনালী ব্যাংকে আরেক কর্মকর্তা। তিনি গাজীপুর জেলার একটি শাখার ম্যানেজার। তিনি বলেন, ‘আমি ২০০০ সালে সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদান করি। আমার ব্যাচের অনেকেই জিএম আর আমি এখনও সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার। যা খুবই লজ্জার কথা। যোগ্য ও মেধাবী হয়েও পদোন্নতি পাইনি। অথচ অনেক জুনিয়র অনৈতিকভাবে পদোন্নতি পেয়েছে। তাই এবারে পরিচালনা পর্ষদ যে সিন্ধান্ত নিয়েছে তা খুবই চমৎকার উদ্যোগ। এতে ব্যাংকে যোগ্য ও মেধাবীরা পদোন্নতি পাবে।’
জানা যায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি ৮১০তম সভায় পদোন্নতির নতুন নীতিমালা অনুমোদন হয়। সেখানে বলা হয়েছে, অফিসার থেকে ডিজিএম পর্যন্ত পদোন্নতিযোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা তিন গুণের বেশি হলে প্রণীত জ্যেষ্ঠ তালিকা থেকে প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে সর্বোচ্চ তিনজন সাক্ষাৎকারের জন্য বিবেচিত হবেন। এতে ১০০টি শূন্য পদের বিপরীতে কেবল জ্যেষ্ঠ ৩০০ কর্মকর্তা ডাক পাবেন। পরবর্তীতে একই নিয়মে অন্যদেরও ডাকা হবে।
পদোন্নতির নতুন নীতিমালা কেন করা হয়েছে জানতে চাইলে, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আফজাল করিম বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে। নতুন নীতিমালায় পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই।’
মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩
সোনালী ব্যাংকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সময়ে নিয়োগ পাওয়া অনেকেই কাক্সিক্ষত পদোন্নতি পাননি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে একাধিকবার ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। এমন বৈষম্যে কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছিল। তবে এবার পদোন্নতির ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকে কর্মকর্তারা বলছেন ‘যুগান্তকারী পদক্ষেপ’।
পরিচালনার পর্ষদের সাম্প্রতিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘অফিসার বা সমমান থেকে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বা সমমান পদ পর্যন্ত পদোন্নতির ক্ষেত্রে সম্ভাব্য শূন্য পদের চেয়ে পদোন্নতিযোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা তিন গুণের বেশি হলে জ্যেষ্ঠতা তালিকা থেকে প্রতিটি সম্ভাব্য শূন্য পদের বিপরীতে সর্বোচ্চ তিনজন প্রার্থী নির্বাচনী সাক্ষাৎকার বা বাছাইয়ের জন্য বিবেচ্য হবেন।’ এমন সিদ্ধান্তে ব্যাংকের কর্মকর্তারা সন্তুষ্ট।
এমন একজন কর্মকর্তা বর্তমানে বরিশালের একটি শাখায় সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হিসেবে কর্মরত। তিনি ২০০০ সালে সিনিয়ার অফিসার হিসেবে যোগদান করেন সোনালী ব্যাংকে। তিনি বলেন, ‘আমার নয়-দশ বছর পরে ব্যাংকে যোগদান করেও অনেকই এজিএম হয়েছেন। আর আমার সঙ্গে যারা যোগদান করেছে, তারা এখন অনেকই ডিজিএম ও জিএম হয়েছে। অথচ আমরা অনেকই এখনও এজিএমও হতে পারিনি।’
কারণ হিসেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের নীতিমালা অনুরসণ না করে, নামমাত্র ভাইভা হতো। কিন্তু পদোন্নতি দেয়া হতো নিজেদের পছন্দ মতো লোকদের। এখানে যোগ্য ও মেধাবী লোকদের কোন মূল্যায়ন করা হতো না। কে বেশি কাছের লোক সে হিসেবে মূল্যায়ন করে পদোন্নতি দিয়েছে।’
একই কথা সোনালী ব্যাংকের রাজধানীর একটি শাখার সিনিয়ার প্রিন্সিপাল অফিসার নজরুল ইসলামের। তিনিও ২০০০ সালে কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। তার কথা, ২০২০, ২০২১, ২০২২ সালে যে তিনবার পদোন্নতি দেয়া হয়েছে তার অধিকাংশই অনৈতিকভাবে হয়েছে।
তার অভিযোগ, ‘শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা, কর্মক্ষেত্রে বিশেষ কাজ, ব্যাংকিং ডিপ্লোমাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ৮৬ মার্ক। আর ভাইভায় ছিল ১৪ মার্ক। অথচ মূল মার্ক পেয়েও পদোন্নতি পাননি অনেকই। কারণ ভাইভায় যোগ্য ও মেধাবীদের মূল্যায়ন করা হয়নি। সেখানে বেশিরভাগই কাছের অযোগ্য লোকদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ একটি নীতিমালা করেছে সে আলোকে যদি পদোন্নতি দেয়া হয়, তাহলে যোগ্য ও মেধাবী লোকগুলোই পদোন্নতি পাবে। নতুন নীতিমালায় একটি শূন্য পদের বিপরীতে সর্বোচ্চ তিনজনকে সাক্ষাৎকারে ডাকা হবে। নতুন নীতিমালা কার্যকর হলে পদোন্নতিতে মেধাবী ও যোগ্য ব্যক্তিরাই পদোন্নতি পাবেন।’
একই কথা বললেন সোনালী ব্যাংকে আরেক কর্মকর্তা। তিনি গাজীপুর জেলার একটি শাখার ম্যানেজার। তিনি বলেন, ‘আমি ২০০০ সালে সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদান করি। আমার ব্যাচের অনেকেই জিএম আর আমি এখনও সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার। যা খুবই লজ্জার কথা। যোগ্য ও মেধাবী হয়েও পদোন্নতি পাইনি। অথচ অনেক জুনিয়র অনৈতিকভাবে পদোন্নতি পেয়েছে। তাই এবারে পরিচালনা পর্ষদ যে সিন্ধান্ত নিয়েছে তা খুবই চমৎকার উদ্যোগ। এতে ব্যাংকে যোগ্য ও মেধাবীরা পদোন্নতি পাবে।’
জানা যায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি ৮১০তম সভায় পদোন্নতির নতুন নীতিমালা অনুমোদন হয়। সেখানে বলা হয়েছে, অফিসার থেকে ডিজিএম পর্যন্ত পদোন্নতিযোগ্য প্রার্থীর সংখ্যা তিন গুণের বেশি হলে প্রণীত জ্যেষ্ঠ তালিকা থেকে প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে সর্বোচ্চ তিনজন সাক্ষাৎকারের জন্য বিবেচিত হবেন। এতে ১০০টি শূন্য পদের বিপরীতে কেবল জ্যেষ্ঠ ৩০০ কর্মকর্তা ডাক পাবেন। পরবর্তীতে একই নিয়মে অন্যদেরও ডাকা হবে।
পদোন্নতির নতুন নীতিমালা কেন করা হয়েছে জানতে চাইলে, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আফজাল করিম বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে। নতুন নীতিমালায় পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই।’