alt

অর্থ-বাণিজ্য

তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ শতাংশ

রমজান আলী : রোববার, ২৮ মে ২০২৩

গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ কমেছিল। এ বছর মার্চে এসে তা আবার বেড়ে গেছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১,৩১,৬২০ কোটি টাকা। আগের বছরের ডিসেম্বর প্রান্তিকে যা ছিল ১,২০,৬৫৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০,৯৬৪ কোটি টাকা।

গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। ৩ মাস পর ২০২২ সালের ডিসেম্বরের হিসাবে সেটা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকে এসে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমেছে ১৩ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং গত বছরের মার্চে ছিল ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

জানা যায়, গত বছরের মার্চে ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। যা এ বছরের মার্চে বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় উঠে যাওয়ার কারণে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ব্যাপক পরিমাণে বাড়ছে। ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াকে ভালো চোখে দেখছেন না বিশিষ্টজনরা। খেলাপি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে খেলাপি আদায়ে অ্যাকশনে যেতে হবে বলে মত তাদের। করপোরেট গভর্ন্যান্স ও খেলাপি ঋণকে দেশের ব্যাংকিং খাতের বড় দুই সমস্যা বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। এ খেলাপি নামে সমস্যা দূর করতে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নৈতিকতার অনুশীলন প্রয়োগের কথাও বলছেন তারা।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ তিন হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ২০ বিশ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা এবং ২০২৩ মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণ হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। তিন মাস আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ হাজার কোটি টাকা। এর আগে ২০২২ সালের মার্চ মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা, যা সেই সময়ের মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ ছিল। সেই হিসাবে গত বছরের মার্চ প্রান্তিকের তুলনায় এ বছরের একই প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।

চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণের মধ্যে সরকারি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৫৭ হাজার ৯৫৮ টাকা। বেসরকারি ব্যাংক ১১ লাখ ৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৬ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা।

বিশেষায়িত ব্যাংক ৩৬ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা বিতরণ করেছে এর মধ্যে খেলাপি ৪ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংক ৬২ হাজার ২৭ কোটি টাকা বিতরণ করেছে তাদের খেলাপি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪২ কোটি টাকা।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্ত মতে, পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, সন্দেহজনক ঋণ ও আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণকেও খেলাপি হিসেবে দেখাতে হবে। আএমএফের হিসাবে খেলাপি দাঁড়াবে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা।

খেলাপি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, করপোরেট গভর্ন্যান্স ও খেলাপি ঋণকে দেশের ব্যাংকিং খাতের বড় দুই সমস্যা। পরিকল্পনার মাধ্যমে আমাদের ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নৈতিকতার অনুশীলন প্রয়োগ করতে হবে। খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের আরও ভূমিকা পালন করতে হবে।

খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর সংবাদকে বলেন, ‘তিনটি কারণে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। প্রথম হচ্ছে সার্বিকভাবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো না। ডলার সংকটে কাঁচামাল আমদানি করতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। এছাড়া করোনার সময় সরকার বড় একটি অঙ্কের প্রণোদনা দিয়েছিল ব্যবসায়ীদের সেখানেও কিছু খেলাপি হয়েছে। বড় আরও একটি বিষয় হচ্ছে সরকারের কিছু লোকের কাছেও বড় একটি ঋণ রয়েছে। আর সেই ঋণের বেশিভাগই রয়েছে খেলাপি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সামনে আরও খেলাপি ঋণ বাড়বে। যদি সুশানের অভাব আরও বাড়ে। তাই সরকারের সদিচ্ছা থাকতে হবে খেলাপি ঋণ আদায়ের ব্যাপারে। আইন সবার জন্য সমান করতে হবে। তাহলে হয়তো কিছুটা কমবে খেলাপি ঋণ। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে আইনের সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে। একটা সময় দিতে হবে, যে সময়ের মধ্যে খেলাপি কমাতে হবে। আর খেলাপি কমাতে না পারলে সেসব ব্যাংকগুলোর শাখা বন্ধের নির্দেশ দিতে হবে।’

ছবি

প্রসাধনী পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি

ছবি

স্বর্ণের দাম আবার বাড়লো

ছবি

৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ ১০ হাজার টন সার কিনবে সরকার

এফবিসিসিআই নির্বাচন: সময় বাড়লো ৪৫ দিন

ছবি

পাট খাতের উন্নয়নে ‘সাসটেইনেবল মার্কেট এক্সেস বুটক্যাম্প’ কর্মসূচি শুরু

এক বছরে ভারতে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন নেমেছে এক-তৃতীয়াংশে

৫ দিন বন্ধ থাকবে রূপালী ও এনসিসি ব্যাংকের সব কার্যক্রম

ছবি

ডলারের বিপরীতে টাকায় ঋণ নেয়ার সুযোগ

গত অর্থবছরে রফতানি আয় ৪৮ বিলিয়ন ডলার

নবম পে-কমিশন গঠনের কার্যক্রম শুরুর আশ্বাস অর্থ উপদেষ্টার

ছবি

ব্যাগেজ রুলসে মোবাইল ও স্বর্ণ আনায় বড় ছাড়

ছবি

এনবিআরের আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তের কথা জানালো দুদক

ছবি

প্রবাসী আয়ে রেকর্ড, রপ্তানিতে বড় প্রবৃদ্ধি

ছবি

দেশের ৩২ বীমা কোম্পানি উচ্চ ঝুঁকিতে: আইডিআরএ চেয়ারম্যান

ছবি

বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ৭ শতাংশেরও কম

ছবি

ডিএসইর নতুন সিওও মোহাম্মদ আসাদুর রহমান

ছবি

অর্থবছরের প্রথম দিন ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার

ছবি

ইলিশের দাম নির্ধারণ করে দেবে সরকার

ছবি

এনবিআরে আন্দোলন: এবার চার কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠালো সরকার

ছবি

৭৩ ধাপ এগিয়ে থাকা মায়ানমারকে হারিয়ে ইতিহাসের পথে বাংলাদেশের মেয়েরা

বিইআরসি ঘোষণা করল বেসরকারি এলপিজির নতুন দাম, ১২ কেজিতে ৩৯ টাকা কমতি

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানি আসছে, অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে নৌবাহিনী

ছবি

নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে এফবিসিসিআই নির্বাচন পিছিয়ে গেল

ছবি

রেকর্ড রেমিটেন্সে শেষ হলো অর্থবছর, প্রথমবারের মতো আয় ছাড়াল ৩০ বিলিয়ন ডলার

ছবি

‘শাটডাউন’ কর্মসূচিতে অংশ: চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার বরখাস্ত

ছবি

প্রসাধনীতে শুল্ক বাড়ায় রাজস্ব নয়, বাড়বে অর্থপাচার-চোরাচালান: বিসিটিআইএ

ছবি

৪০ শতাংশ কৃষক যথাযথ মজুরি পান না: বিবিএসের জরিপ

বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ১১ ব্যাংকের সম্পদের মান যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত

চট্টগ্রামে সমন্বিত তৈরি পোশাক শিল্পাঞ্চল গড়ার প্রস্তাব বিজিএমইএর

অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করেছেন ১৭ লাখের বেশি করদাতা: এনবিআর

ছবি

বাক্কো ও আকিজ টেলিকমের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত

মানবতাবিরোধী অপরাধ: শেখ হাসিনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি সোমবার

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ছয় মাসের জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার অনুমোদন

ছবি

সব সঞ্চয়পত্রের মুনাফা কমলো

ছবি

‘শাটডাউন’ এর মধ্যে কাস্টমস চাকরিকে অত্যাবশ্যক ঘোষণা করল সরকার

ছবি

স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করলে তদন্তে ভয় নেই’— এনবিআর ইস্যুতে অর্থ উপদেষ্টার মন্তব্য

tab

অর্থ-বাণিজ্য

তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৯ শতাংশ

রমজান আলী

রোববার, ২৮ মে ২০২৩

গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ কমেছিল। এ বছর মার্চে এসে তা আবার বেড়ে গেছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১,৩১,৬২০ কোটি টাকা। আগের বছরের ডিসেম্বর প্রান্তিকে যা ছিল ১,২০,৬৫৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০,৯৬৪ কোটি টাকা।

গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। ৩ মাস পর ২০২২ সালের ডিসেম্বরের হিসাবে সেটা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকে এসে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমেছে ১৩ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ এবং গত বছরের মার্চে ছিল ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

জানা যায়, গত বছরের মার্চে ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। যা এ বছরের মার্চে বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় উঠে যাওয়ার কারণে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ব্যাপক পরিমাণে বাড়ছে। ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াকে ভালো চোখে দেখছেন না বিশিষ্টজনরা। খেলাপি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে খেলাপি আদায়ে অ্যাকশনে যেতে হবে বলে মত তাদের। করপোরেট গভর্ন্যান্স ও খেলাপি ঋণকে দেশের ব্যাংকিং খাতের বড় দুই সমস্যা বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। এ খেলাপি নামে সমস্যা দূর করতে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নৈতিকতার অনুশীলন প্রয়োগের কথাও বলছেন তারা।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ তিন হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ২০ বিশ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা এবং ২০২৩ মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণ হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। তিন মাস আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ হাজার কোটি টাকা। এর আগে ২০২২ সালের মার্চ মাস শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা, যা সেই সময়ের মোট বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ ছিল। সেই হিসাবে গত বছরের মার্চ প্রান্তিকের তুলনায় এ বছরের একই প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।

চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণের মধ্যে সরকারি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৫৭ হাজার ৯৫৮ টাকা। বেসরকারি ব্যাংক ১১ লাখ ৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৬ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা।

বিশেষায়িত ব্যাংক ৩৬ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা বিতরণ করেছে এর মধ্যে খেলাপি ৪ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংক ৬২ হাজার ২৭ কোটি টাকা বিতরণ করেছে তাদের খেলাপি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪২ কোটি টাকা।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্ত মতে, পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, সন্দেহজনক ঋণ ও আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণকেও খেলাপি হিসেবে দেখাতে হবে। আএমএফের হিসাবে খেলাপি দাঁড়াবে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা।

খেলাপি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, করপোরেট গভর্ন্যান্স ও খেলাপি ঋণকে দেশের ব্যাংকিং খাতের বড় দুই সমস্যা। পরিকল্পনার মাধ্যমে আমাদের ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নৈতিকতার অনুশীলন প্রয়োগ করতে হবে। খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের আরও ভূমিকা পালন করতে হবে।

খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর সংবাদকে বলেন, ‘তিনটি কারণে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। প্রথম হচ্ছে সার্বিকভাবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো না। ডলার সংকটে কাঁচামাল আমদানি করতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। এছাড়া করোনার সময় সরকার বড় একটি অঙ্কের প্রণোদনা দিয়েছিল ব্যবসায়ীদের সেখানেও কিছু খেলাপি হয়েছে। বড় আরও একটি বিষয় হচ্ছে সরকারের কিছু লোকের কাছেও বড় একটি ঋণ রয়েছে। আর সেই ঋণের বেশিভাগই রয়েছে খেলাপি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সামনে আরও খেলাপি ঋণ বাড়বে। যদি সুশানের অভাব আরও বাড়ে। তাই সরকারের সদিচ্ছা থাকতে হবে খেলাপি ঋণ আদায়ের ব্যাপারে। আইন সবার জন্য সমান করতে হবে। তাহলে হয়তো কিছুটা কমবে খেলাপি ঋণ। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে আইনের সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে। একটা সময় দিতে হবে, যে সময়ের মধ্যে খেলাপি কমাতে হবে। আর খেলাপি কমাতে না পারলে সেসব ব্যাংকগুলোর শাখা বন্ধের নির্দেশ দিতে হবে।’

back to top