সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জুলাইয়ের ৮ তারিখে ৬৫ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক টিম বা পরিষদ গঠন করে ‘বৈষম্যবিরোধী’ ছাত্র আন্দোলন। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে এই পরিষদ গঠন করা হয়।
ছাত্র আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে ৩ আগষ্ট ১৫৮ সদস্যের বর্ধিত সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। যেখানে সমন্বয়ক হিসেবে ৪৯ জন এবং সহ-সমন্বয়ক হিসেবে ১০৯ জন শিক্ষার্থীকে পদায়ন করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কমিটি করা হয়। যেগুলো মূলত স্থানীয় শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গঠিত হয়।
মাসব্যাপী আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তখন দেশব্যাপী বিক্ষিপ্তভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি দেওয়া শুরু হলে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে সেটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হয়ে যাওয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘আর কার্যকারিতা নেই’ উল্লেখ করে স্থানীয় পর্যায়ে গঠিত সমন্বয়ক কমিটিগুলো থেকে বেশ কয়েকজন সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক সরে দাঁড়িয়েছেন। যদিও এসব কমিটির সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়করা।
গত ১৩ আগষ্ট মঙ্গলবার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে সকল ‘ষড়যন্ত্র’ মোকাবেলা করে ‘সুসংহতকরণের’ লক্ষ্যে ন্যুনতম এক মাস বা পরিস্থিতি অনুযায়ী আরো বেশি সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার কার্যকর রাখার ঘোষণা দেয়া হয়।
*পদত্যাগঃ স্বেচ্ছাচারিতা, সমন্বয়হীনতার অভিযোগ*
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ছয়জন সমন্বয়ক ও উনিশ জন সহ-সমন্বয়ক পদত্যাগ করেছেন।
সোমবার (১৯ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে এই ঘোষণা দেন পাবিপ্রবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মিরাজুল ইসলাম।
মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাবিপ্রবি সমন্বয়কদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান অভিযোগ তুলছেন। সমন্বয়ক হিসেবে আমরা এই পর্যন্ত আমরা এখন পর্যন্ত কারো কাছ থেকে কোন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করিনি। এরপরেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেহেতু আমাদের নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সেহেতু আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর সমন্বয়ক হিসেবে থাকতে চাচ্ছি না। এখন থেকে পাবিপ্রবিতে সমন্বয়ক পরিচয়ে আর কেউ থাকবে না, সবাই সাধারণ শিক্ষার্থী। সাধারণ শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ভালো খারাপ দেখভাল করবে।’
সমন্বয়কদের ‘সমন্বয়হীনতা ও জবাবহীনতার’ অভিযোগ তুলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক পদত্যাগ করেন। গত শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেল ৫টায় চবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ ঘোষণা করেন।
পদত্যাগকারীরা হলেন সমন্বয়ক সুমাইয়া শিকদার এবং চারজন সহসমন্বয়ক আল মাসনূন, ধ্রুব বড়ুয়া, ঈশা দে ও সাইদুজ্জামান রেদোয়ান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব স্বৈরাচারের পতন করলেও পরবর্তী সময়ে নানা ধরনের সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে সমন্বয়করা জবাবদিহিতা করছেন না এবং নানা ধরনের সাফাই দিচ্ছেন, যা অনেকাংশেই একপাক্ষিক।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সমন্বয়ক কমিটির ১৮ জন শিক্ষার্থী পদত্যাগ করেছেন বলে জানা যায়। এর মধ্যে ১৪ জন সমন্বয়ক অপর সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে ‘স্বেচ্ছাচারিতার’ অভিযোগ এনে এই প্ল্যাটফর্ম থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে তারা অন্য সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে ‘সমন্বয়হীনতা, নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে কাজ করা, প্রভাব বিস্তার, অপ্রয়োজনীয় লিঁয়াজো কমিটি গঠন করা, বিচার শালিস করা, শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলা, বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ এবং হল উদ্ধারের নামে আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের’ অভিযোগ আনেন।
*কী বলছে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটি*
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক হামজা মাহবুব সংবাদকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটির কেউ এ পর্যন্ত পদত্যাগ করেনি। স্থানীয় সমন্বয়ক কমিটিগুলো আমাদের অনুমোদিত নয়। তাই তাদের সাথে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততাও নেই। তারা পদত্যাগ করলো, নাকি করলো না এটা আমাদের বিষয় না।’
সোমবার, ১৯ আগস্ট ২০২৪
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জুলাইয়ের ৮ তারিখে ৬৫ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক টিম বা পরিষদ গঠন করে ‘বৈষম্যবিরোধী’ ছাত্র আন্দোলন। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে এই পরিষদ গঠন করা হয়।
ছাত্র আন্দোলন তুঙ্গে উঠলে ৩ আগষ্ট ১৫৮ সদস্যের বর্ধিত সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। যেখানে সমন্বয়ক হিসেবে ৪৯ জন এবং সহ-সমন্বয়ক হিসেবে ১০৯ জন শিক্ষার্থীকে পদায়ন করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কমিটি করা হয়। যেগুলো মূলত স্থানীয় শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গঠিত হয়।
মাসব্যাপী আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তখন দেশব্যাপী বিক্ষিপ্তভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি দেওয়া শুরু হলে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে সেটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হয়ে যাওয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘আর কার্যকারিতা নেই’ উল্লেখ করে স্থানীয় পর্যায়ে গঠিত সমন্বয়ক কমিটিগুলো থেকে বেশ কয়েকজন সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক সরে দাঁড়িয়েছেন। যদিও এসব কমিটির সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়করা।
গত ১৩ আগষ্ট মঙ্গলবার ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে সকল ‘ষড়যন্ত্র’ মোকাবেলা করে ‘সুসংহতকরণের’ লক্ষ্যে ন্যুনতম এক মাস বা পরিস্থিতি অনুযায়ী আরো বেশি সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার কার্যকর রাখার ঘোষণা দেয়া হয়।
*পদত্যাগঃ স্বেচ্ছাচারিতা, সমন্বয়হীনতার অভিযোগ*
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ছয়জন সমন্বয়ক ও উনিশ জন সহ-সমন্বয়ক পদত্যাগ করেছেন।
সোমবার (১৯ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে এই ঘোষণা দেন পাবিপ্রবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মিরাজুল ইসলাম।
মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পাবিপ্রবি সমন্বয়কদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান অভিযোগ তুলছেন। সমন্বয়ক হিসেবে আমরা এই পর্যন্ত আমরা এখন পর্যন্ত কারো কাছ থেকে কোন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করিনি। এরপরেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেহেতু আমাদের নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সেহেতু আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর সমন্বয়ক হিসেবে থাকতে চাচ্ছি না। এখন থেকে পাবিপ্রবিতে সমন্বয়ক পরিচয়ে আর কেউ থাকবে না, সবাই সাধারণ শিক্ষার্থী। সাধারণ শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ভালো খারাপ দেখভাল করবে।’
সমন্বয়কদের ‘সমন্বয়হীনতা ও জবাবহীনতার’ অভিযোগ তুলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক পদত্যাগ করেন। গত শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেল ৫টায় চবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ ঘোষণা করেন।
পদত্যাগকারীরা হলেন সমন্বয়ক সুমাইয়া শিকদার এবং চারজন সহসমন্বয়ক আল মাসনূন, ধ্রুব বড়ুয়া, ঈশা দে ও সাইদুজ্জামান রেদোয়ান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব স্বৈরাচারের পতন করলেও পরবর্তী সময়ে নানা ধরনের সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে সমন্বয়করা জবাবদিহিতা করছেন না এবং নানা ধরনের সাফাই দিচ্ছেন, যা অনেকাংশেই একপাক্ষিক।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সমন্বয়ক কমিটির ১৮ জন শিক্ষার্থী পদত্যাগ করেছেন বলে জানা যায়। এর মধ্যে ১৪ জন সমন্বয়ক অপর সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে ‘স্বেচ্ছাচারিতার’ অভিযোগ এনে এই প্ল্যাটফর্ম থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে তারা অন্য সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে ‘সমন্বয়হীনতা, নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে কাজ করা, প্রভাব বিস্তার, অপ্রয়োজনীয় লিঁয়াজো কমিটি গঠন করা, বিচার শালিস করা, শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলা, বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ এবং হল উদ্ধারের নামে আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের’ অভিযোগ আনেন।
*কী বলছে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটি*
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক হামজা মাহবুব সংবাদকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক কমিটির কেউ এ পর্যন্ত পদত্যাগ করেনি। স্থানীয় সমন্বয়ক কমিটিগুলো আমাদের অনুমোদিত নয়। তাই তাদের সাথে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততাও নেই। তারা পদত্যাগ করলো, নাকি করলো না এটা আমাদের বিষয় না।’