জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর এবং শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী আবাসনের দাবিতে ১২ শিক্ষার্থী অনশনে বসেছেন।
রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তিন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। বেলা ১০টার মধ্যে আরও ৯ জন তাদের সঙ্গে যোগ দেন।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি:
১. দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ সেনাবাহিনীর কাছে দ্রুত হস্তান্তরের চুক্তি স্বাক্ষর।
২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের নির্মাণ দ্রুত শুরু এবং সমাপ্তি।
৩. আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা।
অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাশিদুল ইসলাম, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহান প্রামাণিক, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ, দর্শন বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাওহিদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফেরদৌস শেখ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান তানজিল, দর্শন বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুজন চন্দ্র সুকুল, সমাজকর্ম বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের ইসলাম রিয়ন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু মুসা, ফিন্যান্স বিভাগের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন এবং আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিউল ইসলাম।
অনশনে থাকা শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, প্রশাসনের গাফিলতির কারণে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, “প্রশাসনের কাছে অনেক সময় দিয়েছি। দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে।”
ফেরদৌস শেখ বলেন, “এই সরকার জনগণের সরকার। আমরা আশা করি, প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।”
তানজিল নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আশ্বাসের প্রতি আস্থা রেখে আমরা আন্দোলন বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু প্রশাসন কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। তাই আমরা সংগ্রামের মাধ্যমে অধিকার আদায় করব।”
২০১৬ সালে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত হলেও কাজের অগ্রগতি ধীর। ২০২০ সালে জমি বুঝে পেলেও অবশিষ্ট ১১.৪০ একর জমি এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।
গত বছরের আগস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
৫ নভেম্বর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরপর ১১ নভেম্বর ইউজিসি প্রস্তাবিত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথের বিষয়টি অন্তর্ভুক্তির দাবি এবং আরও চার দাবিতে সচিবালয় ‘ঘেরাও’ করেন।
সেদিন শিক্ষা সচিবের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে সচিবালয়ের বাইরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের তিন দিনের সময় চাইলে তারা অবস্থান থেকে সরে আসেন।
শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে পরদিন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, “তারা (শিক্ষার্থীরা) চাচ্ছে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হোক। তাতে কোনো সমস্যা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো স্বায়ত্তশাসিত অনেকাংশে, তারা যদি সেটা চায়, তাহলে ইউজিসির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের এতে কোনো আপত্তি নেই। বরং আমরা সহায়তা করব কীভাবে তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া যায়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. রেজাউল করিম গতকাল রাতে জানান, “দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রকল্প সেনাবাহিনী নেতিবাচকভাবে দেখছে। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। ইউজিসির সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের বোঝাতে শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করা হবে।”
উপাচার্য বলেন, “কোনো রাজনৈতিক প্রভাব খাটাতে দেওয়া হবে না। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি এবং শিক্ষার্থীদের পরামর্শকেও গুরুত্ব দেব।”
দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও আবাসন দাবি: জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের গণঅনশনের ঘোষণা
রোববার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর এবং শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী আবাসনের দাবিতে ১২ শিক্ষার্থী অনশনে বসেছেন।
রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তিন শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। বেলা ১০টার মধ্যে আরও ৯ জন তাদের সঙ্গে যোগ দেন।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি:
১. দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ সেনাবাহিনীর কাছে দ্রুত হস্তান্তরের চুক্তি স্বাক্ষর।
২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের নির্মাণ দ্রুত শুরু এবং সমাপ্তি।
৩. আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা।
অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাশিদুল ইসলাম, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহান প্রামাণিক, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ, দর্শন বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাওহিদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফেরদৌস শেখ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান তানজিল, দর্শন বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুজন চন্দ্র সুকুল, সমাজকর্ম বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের ইসলাম রিয়ন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু মুসা, ফিন্যান্স বিভাগের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন এবং আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিউল ইসলাম।
অনশনে থাকা শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, প্রশাসনের গাফিলতির কারণে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সম্পন্ন হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, “প্রশাসনের কাছে অনেক সময় দিয়েছি। দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে।”
ফেরদৌস শেখ বলেন, “এই সরকার জনগণের সরকার। আমরা আশা করি, প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।”
তানজিল নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আশ্বাসের প্রতি আস্থা রেখে আমরা আন্দোলন বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু প্রশাসন কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। তাই আমরা সংগ্রামের মাধ্যমে অধিকার আদায় করব।”
২০১৬ সালে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত হলেও কাজের অগ্রগতি ধীর। ২০২০ সালে জমি বুঝে পেলেও অবশিষ্ট ১১.৪০ একর জমি এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।
গত বছরের আগস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
৫ নভেম্বর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরপর ১১ নভেম্বর ইউজিসি প্রস্তাবিত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথের বিষয়টি অন্তর্ভুক্তির দাবি এবং আরও চার দাবিতে সচিবালয় ‘ঘেরাও’ করেন।
সেদিন শিক্ষা সচিবের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে সচিবালয়ের বাইরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের তিন দিনের সময় চাইলে তারা অবস্থান থেকে সরে আসেন।
শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে পরদিন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, “তারা (শিক্ষার্থীরা) চাচ্ছে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হোক। তাতে কোনো সমস্যা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো স্বায়ত্তশাসিত অনেকাংশে, তারা যদি সেটা চায়, তাহলে ইউজিসির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের এতে কোনো আপত্তি নেই। বরং আমরা সহায়তা করব কীভাবে তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া যায়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. রেজাউল করিম গতকাল রাতে জানান, “দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রকল্প সেনাবাহিনী নেতিবাচকভাবে দেখছে। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। ইউজিসির সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের বোঝাতে শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করা হবে।”
উপাচার্য বলেন, “কোনো রাজনৈতিক প্রভাব খাটাতে দেওয়া হবে না। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি এবং শিক্ষার্থীদের পরামর্শকেও গুরুত্ব দেব।”
দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও আবাসন দাবি: জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের গণঅনশনের ঘোষণা