জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আসন্ন কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা এবং নিরাপত্তা জোরদারে সেনা মোতায়েনের আবেদনের প্রসঙ্গ এখন ক্যাম্পাসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তবে প্রশাসনের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
দুই দিনে ৩২৮ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য-সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম জানিয়েছেন, নির্বাচনের প্রথম দুই দিনে (১৮ ও ১৯ আগস্ট) কেন্দ্রীয় সংসদের বিভিন্ন পদে ৯৪ জন এবং হল সংসদের জন্য ২৪১ জনসহ মোট ৩২৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। প্রথম দিনে কেন্দ্রীয় সংসদে ৪৭টি এবং হল সংসদে ৮৬টি মনোনয়ন সংগ্রহ হয়। দ্বিতীয় দিনে এই সংখ্যা বেড়ে যথাক্রমে ৪৭ এবং ১৫৫-এ পৌঁছেছে।
শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় একদিন বাড়িয়ে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, “আমরা আশা করছি, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন সংগ্রহের সংখ্যা আরও বাড়বে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।”
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা ও সংগ্রহের সময় ছিল ১৮ ও ১৯ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তবে ‘আখেরী চাহার সোম্বার’ উপলক্ষে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সময় বাড়ানো হয়।
মোটরসাইকেল নিষেধাজ্ঞায় সমালোচনার ঝড়
নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০ আগস্ট থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল চলাচল, সভা-সমাবেশ ও অন্যান্য কর্মসূচি নিষিদ্ধ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এম এম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা জারি করা হয়। তবে এই সিদ্ধান্তকে শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত বলে সমালোচনা করছেন।
রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “নির্বাচনের তিন সপ্তাহ আগে থেকে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।শিক্ষার্থীদের বড় অংশ প্রতিদিন মোটরসাইকেলে যাতায়াত করে।নির্বাচনী প্রচারণায় গ্রুপ করে বাইক শোডাউন বা অপব্যবহার রোধে নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যেত। ঢালাওভাবে নিষেধাজ্ঞা অযৌক্তিক।”
নিরাপত্তা শাখার সংশ্লিষ্টরাও বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, “বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট নির্দেশনা নেই কারা মোটরসাইকেল চালাতে পারবেন। শিক্ষার্থী, কর্মচারী বা গণমাধ্যমকর্মীদের চলাচল নিয়ন্ত্রণে আমরা বিপাকে পড়ব।”
নিরাপত্তায় সেনা মোতায়েনের আবেদন
নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাকসু নির্বাচন কমিশন সেনাপ্রধানের কাছে তিন দিন (নির্বাচনের আগের দিন, নির্বাচনের দিন ও পরের দিন) সেনা মোতায়েনের আবেদন করেছে। প্রক্টর রাশিদুল আলম বলেন, “ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করতে আমরা আশপাশের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেনা মোতায়েনের আবেদনও পাঠানো হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের আগে-পরে ক্যাম্পাসে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করলেও প্রশাসনের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মোটরসাইকেল নিষেধাজ্ঞার মতো সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সকলের সহযোগিতা নিশ্চিত করা এখন প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী দিনগুলোতে নির্বাচনী প্রক্রিয়া কীভাবে এগোয়, সেদিকে নজর রাখছে ক্যাম্পাসের সবাই।
বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আসন্ন কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা এবং নিরাপত্তা জোরদারে সেনা মোতায়েনের আবেদনের প্রসঙ্গ এখন ক্যাম্পাসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তবে প্রশাসনের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
দুই দিনে ৩২৮ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য-সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম জানিয়েছেন, নির্বাচনের প্রথম দুই দিনে (১৮ ও ১৯ আগস্ট) কেন্দ্রীয় সংসদের বিভিন্ন পদে ৯৪ জন এবং হল সংসদের জন্য ২৪১ জনসহ মোট ৩২৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। প্রথম দিনে কেন্দ্রীয় সংসদে ৪৭টি এবং হল সংসদে ৮৬টি মনোনয়ন সংগ্রহ হয়। দ্বিতীয় দিনে এই সংখ্যা বেড়ে যথাক্রমে ৪৭ এবং ১৫৫-এ পৌঁছেছে।
শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় একদিন বাড়িয়ে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, “আমরা আশা করছি, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন সংগ্রহের সংখ্যা আরও বাড়বে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।”
তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা ও সংগ্রহের সময় ছিল ১৮ ও ১৯ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তবে ‘আখেরী চাহার সোম্বার’ উপলক্ষে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সময় বাড়ানো হয়।
মোটরসাইকেল নিষেধাজ্ঞায় সমালোচনার ঝড়
নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০ আগস্ট থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল চলাচল, সভা-সমাবেশ ও অন্যান্য কর্মসূচি নিষিদ্ধ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এম এম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা জারি করা হয়। তবে এই সিদ্ধান্তকে শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত বলে সমালোচনা করছেন।
রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “নির্বাচনের তিন সপ্তাহ আগে থেকে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।শিক্ষার্থীদের বড় অংশ প্রতিদিন মোটরসাইকেলে যাতায়াত করে।নির্বাচনী প্রচারণায় গ্রুপ করে বাইক শোডাউন বা অপব্যবহার রোধে নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যেত। ঢালাওভাবে নিষেধাজ্ঞা অযৌক্তিক।”
নিরাপত্তা শাখার সংশ্লিষ্টরাও বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, “বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট নির্দেশনা নেই কারা মোটরসাইকেল চালাতে পারবেন। শিক্ষার্থী, কর্মচারী বা গণমাধ্যমকর্মীদের চলাচল নিয়ন্ত্রণে আমরা বিপাকে পড়ব।”
নিরাপত্তায় সেনা মোতায়েনের আবেদন
নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাকসু নির্বাচন কমিশন সেনাপ্রধানের কাছে তিন দিন (নির্বাচনের আগের দিন, নির্বাচনের দিন ও পরের দিন) সেনা মোতায়েনের আবেদন করেছে। প্রক্টর রাশিদুল আলম বলেন, “ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদার করতে আমরা আশপাশের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেনা মোতায়েনের আবেদনও পাঠানো হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের আগে-পরে ক্যাম্পাসে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করলেও প্রশাসনের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মোটরসাইকেল নিষেধাজ্ঞার মতো সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সকলের সহযোগিতা নিশ্চিত করা এখন প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী দিনগুলোতে নির্বাচনী প্রক্রিয়া কীভাবে এগোয়, সেদিকে নজর রাখছে ক্যাম্পাসের সবাই।