ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দীর্ঘ ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর এ নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা এবং আশা-আকাক্সক্ষার মিশেল।
শুক্রবার,(২২ আগস্ট ২০২৫) বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ নামে ২৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে, যা অভ্যন্তরীণ সংকটের মধ্যেও তাদের ঐক্যের প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে। এদিকে, ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণায় বিলম্ব, ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেলে স্বামী-স্ত্রীর অংশগ্রহণ, বামপন্থি সংগঠনগুলোর বিভেদ, অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীদের উত্থান এবং ছাত্রীদের কম অংশগ্রহণ এ নির্বাচনকে একটি রোমাঞ্চকর রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুসারে, কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে ২৭৩ জন এবং ২১টি হল সংসদের ৩১৫টি পদে ৪৬৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, যা মোট ৭৪০টি মনোনয়ন। ভোটার সংখ্যা প্রায় ১১,৯১৯ জন (পুরুষ ৬,১০২, নারী ৫,৮১৭)।
বাগছাস (জাবি) শাখা শুক্রবার বিকেলে শহীদ মিনারের পাদদেশে সংবাদ সম্মেলনে ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ নামে প্যানেল ঘোষণা করে। জুলাই আন্দোলনে নিহত নাফিসা মারওয়ার মামা হজরত আলী এ ঘোষণা দেন। প্যানেলে ভিপি পদে আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল, জিএস পদে সদস্য সচিব আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম, এজিএস (পুরুষ) পদে জিয়াউদ্দিন আয়ান এবং এজিএস (নারী) পদে মালিহা নামলা মনোনীত হয়েছেন।
প্যানেলে ৮ জন নারী এবং একজন আদিবাসী (রিং ইয়ং মুরং)। ক্রীড়া সম্পাদক পদ মাহমুদুল হাসান কিরণের সম্মানে এবং নাট্য সম্পাদক পদ ফাঁকা রাখা হয়েছে। আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘আমাদের প্যানেলে অন্য রাজনৈতিক দলের সদস্য নেই। গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণকারী এবং বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে কাজ করা শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা নারীদের সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছি এবং আশা করি প্রশাসন সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবে।’
তবে ঘোষণার পূর্বে তাদের অভ্যন্তরীণ সংকট প্রকাশ পায়। গত বুধবার যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নাজমুল ইসলাম পদত্যাগ করেন, অভিযোগ করে যে প্রভাবশালী নেতারা ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন এবং প্যানেলে স্বজনপ্রীতি করেছেন। সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাউসার আলম আরমানও পদত্যাগের হুমকি দেন, বলেন যে যোগ্য ত্যাগী কর্মীদের প্যানেল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। সদস্য সচিব আবু তৌহিদ মো. সিয়াম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যোগ্যদেরই প্যানেলে রাখা হয়েছে। এখানে ব্যক্তিগত স্বার্থ বা স্বজনপ্রীতির কোনো জায়গা নেই। আমাদের উদ্দেশ্য শুধু শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করা।’
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (ছাত্রদল) জাবি শাখা এখনও তাদের প্যানেল ঘোষণা করতে পারেনি, যা ক্যাম্পাসে ব্যাপক আলোচনা ও অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে। সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, প্রার্থী চূড়ান্ত করতে গত বুধবার বিকেল পাঁচটা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় টানা ১৪ ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে, কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। এর পেছনে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, প্রার্থী নির্বাচনে মতভেদ এবং সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষই কারণ। বিশেষ করে, ৫ আগস্টের আগে সক্রিয় ত্যাগী নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরবর্তীতে যোগ দেয়া নেতাদের মধ্যে প্রাধান্য নিয়ে বিতর্ক চলছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে প্যানেল ঘোষণা করে। উক্ত প্যানেলে জাবির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দম্পতি; হাফেজ তারিকুল ইসলাম (কার্যকরী সদস্য) এবং নিগার সুলতানা (সহ-সমাজসেবা সম্পাদক, নারী) অংশ নিচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থি সংগঠন এবং সাংস্কৃতিক জোট এখনও তাদের প্যানেল ঘোষণা করেনি, একাধিক প্যানেল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাংস্কৃতিক জোট এবং ছাত্র ইউনিয়ন-সমর্থিত প্যানেল অন্তত ১০ জন নারী প্রার্থী দিয়েছে, যা অন্যান্য গ্রুপের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার এবং ছাত্র ইউনিয়নের একটি অংশ মাত্র ২ জন নারী প্রার্থী দিয়েছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীরা এবার নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছেন, যা ক্যাম্পাস রাজনীতিতে একটি নতুন ঢেউ সৃষ্টি করেছে। এ শিক্ষার্থীরা সংগঠিত রাজনীতির বাইরে থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন, বিশেষ করে নারীরা। অন্তত ২৬ জন নারী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইংরেজি বিভাগের শ্রাবণী জামান জ্যোতি বলেন, ‘আন্দোলনে নারীদের অবদান কখনও যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি। সাইবারবুলিং এবং হ্যারাসমেন্ট আমাদের নিরুৎসাহিত করেছে।’
১৫ নম্বর ছাত্রী হলের বহ্নি আহমেদ বলেন, ‘আমার হলে ১৫টি পদে মাত্র ১৭ জন প্রার্থী। মনোনয়ন প্রত্যাহার হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম হবে।’
ছাত্রী হলগুলোতে প্রার্থী কম থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের আশঙ্কা রয়েছে। নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ৬, হল নম্বর ১৩-এ ৬, সুফিয়া কামাল হলে ১০, বেগম খালেদা জিয়া হলে ১১, প্রীতিলতা হলে ১৩ জন প্রার্থী। ফজিলাতুন্নেছা হলে ১৫, জাহানারা ইমাম হলে ১৬ এবং অন্যান্য হলে ১৭ জন করে। এর কারণ- পরিবারের অসম্মতি, অনলাইন হ্যারাসমেন্ট এবং রাজনৈতিক সচেতনতার অভাব। জীববিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, ‘হল সংসদে এক-তৃতীয়াংশ সদস্য থাকলে চলমান রাখা সম্ভব, কিন্তু শূন্যপদে পুনঃনির্বাচনের বিধান নেই।’ কমিশন ছাত্রীদের প্রার্থী বাড়াতে মনোনয়নের সময় বাড়ানোর চিন্তা করছে।
নির্বাচন কমিশন কঠোর আচরণবিধি প্রয়োগ করছে। প্রার্থীরা- মাদক, অপরাধ বা যৌন অপরাধে যুক্ত থাকলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। প্রচারণায় সভা-সমাবেশে অনুমতি দরকার, ২৫ জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ, পোস্টার-ফেস্টুন লাগানো নিষেধ, খরচসীমা জাকসুতে ৭,০০০ টাকা এবং হলে ৪,০০০ টাকা। লঙ্ঘনে শাস্তি ‘ছাত্রছাত্রী শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ-২০১৮’ অনুসারে। সময়সূচি: খসড়া প্রার্থী তালিকা ২৫ আগস্ট, আপিল গ্রহণ ২৬ আগস্ট (সকাল ৯টা-দুপুর ১২টা), শুনানি ২৭ আগস্ট (সকাল ৯টা-বিকেল ২টা), প্রত্যাহার ২৮ আগস্ট (সকাল ৯টা-বিকেল ৪টা), চূড়ান্ত তালিকা ২৯ আগস্ট (বিকেল ৪টা)। প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তৎপর রয়েছি।’
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দীর্ঘ ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর এ নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা এবং আশা-আকাক্সক্ষার মিশেল।
শুক্রবার,(২২ আগস্ট ২০২৫) বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ নামে ২৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে, যা অভ্যন্তরীণ সংকটের মধ্যেও তাদের ঐক্যের প্রচেষ্টাকে তুলে ধরে। এদিকে, ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণায় বিলম্ব, ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেলে স্বামী-স্ত্রীর অংশগ্রহণ, বামপন্থি সংগঠনগুলোর বিভেদ, অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীদের উত্থান এবং ছাত্রীদের কম অংশগ্রহণ এ নির্বাচনকে একটি রোমাঞ্চকর রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুসারে, কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদে ২৭৩ জন এবং ২১টি হল সংসদের ৩১৫টি পদে ৪৬৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, যা মোট ৭৪০টি মনোনয়ন। ভোটার সংখ্যা প্রায় ১১,৯১৯ জন (পুরুষ ৬,১০২, নারী ৫,৮১৭)।
বাগছাস (জাবি) শাখা শুক্রবার বিকেলে শহীদ মিনারের পাদদেশে সংবাদ সম্মেলনে ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ নামে প্যানেল ঘোষণা করে। জুলাই আন্দোলনে নিহত নাফিসা মারওয়ার মামা হজরত আলী এ ঘোষণা দেন। প্যানেলে ভিপি পদে আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল, জিএস পদে সদস্য সচিব আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম, এজিএস (পুরুষ) পদে জিয়াউদ্দিন আয়ান এবং এজিএস (নারী) পদে মালিহা নামলা মনোনীত হয়েছেন।
প্যানেলে ৮ জন নারী এবং একজন আদিবাসী (রিং ইয়ং মুরং)। ক্রীড়া সম্পাদক পদ মাহমুদুল হাসান কিরণের সম্মানে এবং নাট্য সম্পাদক পদ ফাঁকা রাখা হয়েছে। আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘আমাদের প্যানেলে অন্য রাজনৈতিক দলের সদস্য নেই। গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণকারী এবং বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে কাজ করা শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা নারীদের সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছি এবং আশা করি প্রশাসন সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেবে।’
তবে ঘোষণার পূর্বে তাদের অভ্যন্তরীণ সংকট প্রকাশ পায়। গত বুধবার যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নাজমুল ইসলাম পদত্যাগ করেন, অভিযোগ করে যে প্রভাবশালী নেতারা ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন এবং প্যানেলে স্বজনপ্রীতি করেছেন। সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাউসার আলম আরমানও পদত্যাগের হুমকি দেন, বলেন যে যোগ্য ত্যাগী কর্মীদের প্যানেল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। সদস্য সচিব আবু তৌহিদ মো. সিয়াম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যোগ্যদেরই প্যানেলে রাখা হয়েছে। এখানে ব্যক্তিগত স্বার্থ বা স্বজনপ্রীতির কোনো জায়গা নেই। আমাদের উদ্দেশ্য শুধু শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা করা।’
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (ছাত্রদল) জাবি শাখা এখনও তাদের প্যানেল ঘোষণা করতে পারেনি, যা ক্যাম্পাসে ব্যাপক আলোচনা ও অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে। সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, প্রার্থী চূড়ান্ত করতে গত বুধবার বিকেল পাঁচটা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় টানা ১৪ ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে, কিন্তু কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। এর পেছনে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, প্রার্থী নির্বাচনে মতভেদ এবং সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষই কারণ। বিশেষ করে, ৫ আগস্টের আগে সক্রিয় ত্যাগী নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরবর্তীতে যোগ দেয়া নেতাদের মধ্যে প্রাধান্য নিয়ে বিতর্ক চলছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে প্যানেল ঘোষণা করে। উক্ত প্যানেলে জাবির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দম্পতি; হাফেজ তারিকুল ইসলাম (কার্যকরী সদস্য) এবং নিগার সুলতানা (সহ-সমাজসেবা সম্পাদক, নারী) অংশ নিচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থি সংগঠন এবং সাংস্কৃতিক জোট এখনও তাদের প্যানেল ঘোষণা করেনি, একাধিক প্যানেল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাংস্কৃতিক জোট এবং ছাত্র ইউনিয়ন-সমর্থিত প্যানেল অন্তত ১০ জন নারী প্রার্থী দিয়েছে, যা অন্যান্য গ্রুপের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার এবং ছাত্র ইউনিয়নের একটি অংশ মাত্র ২ জন নারী প্রার্থী দিয়েছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থাকা অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীরা এবার নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছেন, যা ক্যাম্পাস রাজনীতিতে একটি নতুন ঢেউ সৃষ্টি করেছে। এ শিক্ষার্থীরা সংগঠিত রাজনীতির বাইরে থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন, বিশেষ করে নারীরা। অন্তত ২৬ জন নারী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইংরেজি বিভাগের শ্রাবণী জামান জ্যোতি বলেন, ‘আন্দোলনে নারীদের অবদান কখনও যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি। সাইবারবুলিং এবং হ্যারাসমেন্ট আমাদের নিরুৎসাহিত করেছে।’
১৫ নম্বর ছাত্রী হলের বহ্নি আহমেদ বলেন, ‘আমার হলে ১৫টি পদে মাত্র ১৭ জন প্রার্থী। মনোনয়ন প্রত্যাহার হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কম হবে।’
ছাত্রী হলগুলোতে প্রার্থী কম থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনের আশঙ্কা রয়েছে। নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ৬, হল নম্বর ১৩-এ ৬, সুফিয়া কামাল হলে ১০, বেগম খালেদা জিয়া হলে ১১, প্রীতিলতা হলে ১৩ জন প্রার্থী। ফজিলাতুন্নেছা হলে ১৫, জাহানারা ইমাম হলে ১৬ এবং অন্যান্য হলে ১৭ জন করে। এর কারণ- পরিবারের অসম্মতি, অনলাইন হ্যারাসমেন্ট এবং রাজনৈতিক সচেতনতার অভাব। জীববিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, ‘হল সংসদে এক-তৃতীয়াংশ সদস্য থাকলে চলমান রাখা সম্ভব, কিন্তু শূন্যপদে পুনঃনির্বাচনের বিধান নেই।’ কমিশন ছাত্রীদের প্রার্থী বাড়াতে মনোনয়নের সময় বাড়ানোর চিন্তা করছে।
নির্বাচন কমিশন কঠোর আচরণবিধি প্রয়োগ করছে। প্রার্থীরা- মাদক, অপরাধ বা যৌন অপরাধে যুক্ত থাকলে প্রার্থিতা বাতিল হবে। প্রচারণায় সভা-সমাবেশে অনুমতি দরকার, ২৫ জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ, পোস্টার-ফেস্টুন লাগানো নিষেধ, খরচসীমা জাকসুতে ৭,০০০ টাকা এবং হলে ৪,০০০ টাকা। লঙ্ঘনে শাস্তি ‘ছাত্রছাত্রী শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ-২০১৮’ অনুসারে। সময়সূচি: খসড়া প্রার্থী তালিকা ২৫ আগস্ট, আপিল গ্রহণ ২৬ আগস্ট (সকাল ৯টা-দুপুর ১২টা), শুনানি ২৭ আগস্ট (সকাল ৯টা-বিকেল ২টা), প্রত্যাহার ২৮ আগস্ট (সকাল ৯টা-বিকেল ৪টা), চূড়ান্ত তালিকা ২৯ আগস্ট (বিকেল ৪টা)। প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তৎপর রয়েছি।’