বুধবার (২৪ জুলাই) ছিল কারফিউ’র পঞ্চম দিন। তবে বাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল কারফিউ শিথিলের সময়। এদিন খুলেছে সরকারি অফিসগুলোও। এরসঙ্গে ব্যাংকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও। ফলে কারফিউ’র শিথিলের সময়ে সড়কে নামে মানুষের ঢল। এতে তীব্র যানজটে পড়েন নগরবাসী।
কোটা আন্দোলনের জেরে গত সপ্তাহের শেষ দিক থেকে সারাদেশের যানচলাচল প্রায় স্থাবির হয়ে যায়। ঢানা কয়েকদিনের দেশজোড়ে ব্যাপক সহিংসতার প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। সারাদেশে মোতায়েন হয় সেনাবাহিনী।
কারফিউ শুরু হলে ক্রমেই পরিস্থিতি উন্নতি হতে থাকে। বিগত কয়েকদিন ধরেই সড়কে দু-একটি বাসসহ অন্যান্য যানবাহনও চলতে শুরু করে। তবে বুধবার সড়কে গণপরিবহণ ছাড়া যানবাহনের সংখ্যা ছিল অনেকটা স্বাভাবিক দিনের মতো।
ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় মোবাইল ফিন্যান্স কোম্পানি এবং এটিএম বুথে কাক্সিক্ষত সেবা মেলেনি। এতে নগদ টাকায় টান পড়েছে গ্রাহকের। এ কারণে বুধবার ব্যাংক খোলার খবরে শাখায় শাখায় উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বুধবার সকাল থেকেই ঢাকা থেকে সব রুটেই দূরপাল্লার বাস ছেড়েছে। বাইরে থেকেও আসছে সব রুটের দূরপাল্লার বাস।
তবে দূরপাল্লার যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় বাসও ছেড়েছে কম। তবে আগামী কয়েকদিনে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
যদিও বুধবার যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি। তবে রেলের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আজ থেকে সীমিত পরিসরে চলতে শুরু করবে ট্রেন।
ঢাকায় তীব্র যানজট
সরকারের নির্বাহী আদেশে ছুটি বাড়ানোর পর বুধবার খুলে দেয়া হয় সরকারি ও বেসরকারি অফিস। অন্যদিকে এদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিলের সুযোগ ছিল। ফলে রাস্তায় বেড়ে যায় ব্যক্তিগত যানবাহন।
এদিন সকালে রাজধানীর সড়কগুলোতে গণপরিবহন কম ছিল। তবে অন্যান্য যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় সকাল থেকেই যানজট দেখা যায়। বিশেষ করে দুপুরের পর যানজট পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে।
দুপুরে দিকে রাজধানীর মিরপুর, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, গাবতলী, আগারগাঁও, উড়োজাহাজ ক্রসিং, তেজগাঁও, মতিঝিল, বনানী, মহাখালী, সায়দাবাদসহ বিভিন্ন রাস্তায় প্রচ- যানজট দেখা গেছে।
গণপরিবহন তুলনামূলক কম থাকলেও সড়কে ছিল রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজির আধিক্য। ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারও ছিল চোখে পড়ার মতো। মূলত হঠাৎ করে অফিস খুলে দেয়ায় সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।
ঢাকায় খুলেছে দোকানপাট
আন্দোলন-সহিংসতা পরবর্তিতে কারফিউ চলাকালেই রাজধানীর অলিতেগতিতে দোকানপাট খুলছিল। তবে বুধবার সরকারি-বেসরকারি অফিস খুললে অলিগলির বাইরের দোকানপাটও খুলেছে।
বুধবার রাজধানীতে ভোর থেকেই শাহবাগ ফুলের দোকান খুলে। তবে বেচাকেনা কম বলে জানান দোকানিরা।
‘ভাই সকাল থেকেই দোকান খুলেছি। কিন্তু বেচাকেনা তেমন হয় নাই। শুধু বনিবাট্টা করতে পেরেছি’ বলেন শাহবাগে সুমাইয়া পুষ্পালয়ের কর্ণধার আবু বকর।
এলিফ্যান্ট রোড ও সাইন্সল্যাব এলাকার দোকানগুলোও খুলেছে। তবে সেখানেও ক্রেতা কম দেখা যায়।
এলিফ্যান্ট রোডে আর্ট এর নামে একটি পোশাক দোকানে আসেন দুইজন ক্রেতা। তবে টি-শার্ট জিন্স প্যান্ট দরদাম করেই চলে যান তারা। দোকনের কর্মচারী প্রান্ত বলেন, ‘ভাই, ক্রেতারা আসে দামদর করে চলে যায়।’
চকবাজারের দোকানপাটও খুলেছে। চকবাজার সিটি করপোরেসন মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার সব দোকানই খুলা। তবে ক্রেতা কম থাকায় দোকানগুলোর কর্মচারীদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
চলছে দূরপাল্লার বাস
বুধবার ভোর থেকেই রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলো থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়েছে। তবে যাত্রী সংখ্যা ছিল খুবই কম।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কক্সবাজারসহ ট্যুরিস্ট এলাকাগুলোর বাসের যাত্রী কম। তবে অন্যান্য গৌন্তব্যে যাত্রী সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
দুপুরে সাইয়েদাবাদ হানিফ এন্টারপ্রাইজের ৭ নাম্বার কাউন্টারের মো. শাকিল বলেন, ‘যশোর বাদে আমাদের সব রুটেই বাস যাচ্ছে। যশোর আমাদের টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে বাস ছাড়ছে না। তবে অন্যান্য পরিবহনের বাস সেখানে যাচ্ছে। ’
জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমনিতে ১০-১৫ মিনিটে একটি করে বাস ছেড়ে যেত। এখন ২৫-৩০ মিনিট পর পর যাচ্ছে।
‘যাত্রী কম। ২০-২২ জন যাত্রী নিয়ে বাস ছেড়ে যাচ্ছে। তবে যাত্রীদের সংখ্যা আস্তে আস্তে বাড়ছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, কাভার্ড ভ্যান, পণ্যবাহী ট্রাক, দূরপাল্লার বাসসহ সবধরনের যানবাহন চলছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, কারফিউ শিথিল থাকার সময় শহরে ও দূরপাল্লায় বাস চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪
বুধবার (২৪ জুলাই) ছিল কারফিউ’র পঞ্চম দিন। তবে বাড়িয়ে দেয়া হয়েছিল কারফিউ শিথিলের সময়। এদিন খুলেছে সরকারি অফিসগুলোও। এরসঙ্গে ব্যাংকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও। ফলে কারফিউ’র শিথিলের সময়ে সড়কে নামে মানুষের ঢল। এতে তীব্র যানজটে পড়েন নগরবাসী।
কোটা আন্দোলনের জেরে গত সপ্তাহের শেষ দিক থেকে সারাদেশের যানচলাচল প্রায় স্থাবির হয়ে যায়। ঢানা কয়েকদিনের দেশজোড়ে ব্যাপক সহিংসতার প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। সারাদেশে মোতায়েন হয় সেনাবাহিনী।
কারফিউ শুরু হলে ক্রমেই পরিস্থিতি উন্নতি হতে থাকে। বিগত কয়েকদিন ধরেই সড়কে দু-একটি বাসসহ অন্যান্য যানবাহনও চলতে শুরু করে। তবে বুধবার সড়কে গণপরিবহণ ছাড়া যানবাহনের সংখ্যা ছিল অনেকটা স্বাভাবিক দিনের মতো।
ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় মোবাইল ফিন্যান্স কোম্পানি এবং এটিএম বুথে কাক্সিক্ষত সেবা মেলেনি। এতে নগদ টাকায় টান পড়েছে গ্রাহকের। এ কারণে বুধবার ব্যাংক খোলার খবরে শাখায় শাখায় উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বুধবার সকাল থেকেই ঢাকা থেকে সব রুটেই দূরপাল্লার বাস ছেড়েছে। বাইরে থেকেও আসছে সব রুটের দূরপাল্লার বাস।
তবে দূরপাল্লার যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় বাসও ছেড়েছে কম। তবে আগামী কয়েকদিনে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
যদিও বুধবার যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি। তবে রেলের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আজ থেকে সীমিত পরিসরে চলতে শুরু করবে ট্রেন।
ঢাকায় তীব্র যানজট
সরকারের নির্বাহী আদেশে ছুটি বাড়ানোর পর বুধবার খুলে দেয়া হয় সরকারি ও বেসরকারি অফিস। অন্যদিকে এদিন সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিলের সুযোগ ছিল। ফলে রাস্তায় বেড়ে যায় ব্যক্তিগত যানবাহন।
এদিন সকালে রাজধানীর সড়কগুলোতে গণপরিবহন কম ছিল। তবে অন্যান্য যানবাহনের চাপ বেশি থাকায় সকাল থেকেই যানজট দেখা যায়। বিশেষ করে দুপুরের পর যানজট পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে।
দুপুরে দিকে রাজধানীর মিরপুর, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, গাবতলী, আগারগাঁও, উড়োজাহাজ ক্রসিং, তেজগাঁও, মতিঝিল, বনানী, মহাখালী, সায়দাবাদসহ বিভিন্ন রাস্তায় প্রচ- যানজট দেখা গেছে।
গণপরিবহন তুলনামূলক কম থাকলেও সড়কে ছিল রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও সিএনজির আধিক্য। ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারও ছিল চোখে পড়ার মতো। মূলত হঠাৎ করে অফিস খুলে দেয়ায় সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।
ঢাকায় খুলেছে দোকানপাট
আন্দোলন-সহিংসতা পরবর্তিতে কারফিউ চলাকালেই রাজধানীর অলিতেগতিতে দোকানপাট খুলছিল। তবে বুধবার সরকারি-বেসরকারি অফিস খুললে অলিগলির বাইরের দোকানপাটও খুলেছে।
বুধবার রাজধানীতে ভোর থেকেই শাহবাগ ফুলের দোকান খুলে। তবে বেচাকেনা কম বলে জানান দোকানিরা।
‘ভাই সকাল থেকেই দোকান খুলেছি। কিন্তু বেচাকেনা তেমন হয় নাই। শুধু বনিবাট্টা করতে পেরেছি’ বলেন শাহবাগে সুমাইয়া পুষ্পালয়ের কর্ণধার আবু বকর।
এলিফ্যান্ট রোড ও সাইন্সল্যাব এলাকার দোকানগুলোও খুলেছে। তবে সেখানেও ক্রেতা কম দেখা যায়।
এলিফ্যান্ট রোডে আর্ট এর নামে একটি পোশাক দোকানে আসেন দুইজন ক্রেতা। তবে টি-শার্ট জিন্স প্যান্ট দরদাম করেই চলে যান তারা। দোকনের কর্মচারী প্রান্ত বলেন, ‘ভাই, ক্রেতারা আসে দামদর করে চলে যায়।’
চকবাজারের দোকানপাটও খুলেছে। চকবাজার সিটি করপোরেসন মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার সব দোকানই খুলা। তবে ক্রেতা কম থাকায় দোকানগুলোর কর্মচারীদের অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
চলছে দূরপাল্লার বাস
বুধবার ভোর থেকেই রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলো থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়েছে। তবে যাত্রী সংখ্যা ছিল খুবই কম।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কক্সবাজারসহ ট্যুরিস্ট এলাকাগুলোর বাসের যাত্রী কম। তবে অন্যান্য গৌন্তব্যে যাত্রী সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
দুপুরে সাইয়েদাবাদ হানিফ এন্টারপ্রাইজের ৭ নাম্বার কাউন্টারের মো. শাকিল বলেন, ‘যশোর বাদে আমাদের সব রুটেই বাস যাচ্ছে। যশোর আমাদের টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে বাস ছাড়ছে না। তবে অন্যান্য পরিবহনের বাস সেখানে যাচ্ছে। ’
জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমনিতে ১০-১৫ মিনিটে একটি করে বাস ছেড়ে যেত। এখন ২৫-৩০ মিনিট পর পর যাচ্ছে।
‘যাত্রী কম। ২০-২২ জন যাত্রী নিয়ে বাস ছেড়ে যাচ্ছে। তবে যাত্রীদের সংখ্যা আস্তে আস্তে বাড়ছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, কাভার্ড ভ্যান, পণ্যবাহী ট্রাক, দূরপাল্লার বাসসহ সবধরনের যানবাহন চলছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, কারফিউ শিথিল থাকার সময় শহরে ও দূরপাল্লায় বাস চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।