২০২৪ সালে এসে অনেক আন্দোলনকারীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে না—এমন অভিযোগ তুলেছেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা। গুলিতে এক চোখ হারানো সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদ বলেছেন, ‘আহতদের সন্তান, সম্পদ ও গয়না বিক্রি করে চিকিৎসা করতে হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। সবাইকে আহতদের খোঁজ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আয়োজিত ‘সন্তানের পাশে অভিভাবক’ প্ল্যাটফর্মের এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন এমদাদ। তাঁর মতো আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। তাঁরা আহতদের চিকিৎসাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানান।
‘ওদের ভাবনায় বাংলাদেশ’ শিরোনামের এই অনুষ্ঠানটি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। প্ল্যাটফর্মটির উদ্দেশ্য হলো অভিভাবক হিসেবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো। আয়োজকরা জানান, জুলাই-আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে এই প্ল্যাটফর্ম গঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন সদস্য রাখাল রাহা। ‘সন্তানের পাশে অভিভাবক’ প্ল্যাটফর্মের উদ্দেশ্য ও নীতিমালা তুলে ধরেন আসফিয়া আজিম। তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন তরুণ, যুবক ও ছাত্রছাত্রীদের সংহতি থেকে জন্ম নিয়েছে। ভবিষ্যতেও তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা থাকবে।’
প্ল্যাটফর্মের সদস্য দলিলুর রহমান জানান, তারা জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে বেশ কয়েকবার সড়কে অবস্থান নিয়েছেন এবং আহতদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
গত ১৮ জুলাই গুলিতে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের স্মরণে তাঁর খালাতো বোন ফারহানা সুলতানা বলেন, মুগ্ধদের মতো যারা দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। তিনি অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদ বলেন, আন্দোলনে আহতরা চিকিৎসা না পেয়ে অসহায় জীবনযাপন করছে। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, প্রতিটি হাসপাতালে আহতদের জন্য বিশেষ ইউনিট গঠন করা হোক। এতে চিকিৎসা সহজ ও সমন্বিত হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বনশ্রী আদর্শ নিকেতন স্কুলের শিক্ষক মো. নেসারউদ্দিন বলেন, ‘অনেক আহত ব্যক্তির হাত-পা কেটে ফেলা হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছিল, পা রাখবেন নাকি কেটে ফেলবেন? এই ধরনের ভয়ংকর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হয়েছে আহতদের।’ তিনি আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানান।
রংপুরের রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যার সাক্ষী সুবর্ণা বর্মণ বলেন, ‘১৬ জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত আমি রাতে ঘুমাতে পারি না।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং শান্তিতে ঘুমাতে না পারার কথা জানান।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহরাব সিফাত বলেন, ‘আহত ব্যক্তিরা যাতে নিজেদের অবহেলিত না মনে করেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী মারুফ আহতদের চিকিৎসা নিয়ে সরকারের উদাসীনতার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘একদল মানুষ আহতদের চিকিৎসায় গুরুত্ব না দিয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সোহেল আহমদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আখতার হোসেন, ইডেন কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক শাহীনুর সুমি, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র উৎসব সিদ্দিকী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জাহিন ফেরদৌস, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাগিব সাদিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইসমাইল রাকিব।
শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
২০২৪ সালে এসে অনেক আন্দোলনকারীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে না—এমন অভিযোগ তুলেছেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা। গুলিতে এক চোখ হারানো সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদ বলেছেন, ‘আহতদের সন্তান, সম্পদ ও গয়না বিক্রি করে চিকিৎসা করতে হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। সবাইকে আহতদের খোঁজ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আয়োজিত ‘সন্তানের পাশে অভিভাবক’ প্ল্যাটফর্মের এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন এমদাদ। তাঁর মতো আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। তাঁরা আহতদের চিকিৎসাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানান।
‘ওদের ভাবনায় বাংলাদেশ’ শিরোনামের এই অনুষ্ঠানটি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। প্ল্যাটফর্মটির উদ্দেশ্য হলো অভিভাবক হিসেবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো। আয়োজকরা জানান, জুলাই-আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে এই প্ল্যাটফর্ম গঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন সদস্য রাখাল রাহা। ‘সন্তানের পাশে অভিভাবক’ প্ল্যাটফর্মের উদ্দেশ্য ও নীতিমালা তুলে ধরেন আসফিয়া আজিম। তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন তরুণ, যুবক ও ছাত্রছাত্রীদের সংহতি থেকে জন্ম নিয়েছে। ভবিষ্যতেও তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা থাকবে।’
প্ল্যাটফর্মের সদস্য দলিলুর রহমান জানান, তারা জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে বেশ কয়েকবার সড়কে অবস্থান নিয়েছেন এবং আহতদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
গত ১৮ জুলাই গুলিতে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের স্মরণে তাঁর খালাতো বোন ফারহানা সুলতানা বলেন, মুগ্ধদের মতো যারা দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। তিনি অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদ বলেন, আন্দোলনে আহতরা চিকিৎসা না পেয়ে অসহায় জীবনযাপন করছে। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, প্রতিটি হাসপাতালে আহতদের জন্য বিশেষ ইউনিট গঠন করা হোক। এতে চিকিৎসা সহজ ও সমন্বিত হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বনশ্রী আদর্শ নিকেতন স্কুলের শিক্ষক মো. নেসারউদ্দিন বলেন, ‘অনেক আহত ব্যক্তির হাত-পা কেটে ফেলা হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছিল, পা রাখবেন নাকি কেটে ফেলবেন? এই ধরনের ভয়ংকর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হয়েছে আহতদের।’ তিনি আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানান।
রংপুরের রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যার সাক্ষী সুবর্ণা বর্মণ বলেন, ‘১৬ জুলাই থেকে আজ পর্যন্ত আমি রাতে ঘুমাতে পারি না।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং শান্তিতে ঘুমাতে না পারার কথা জানান।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহরাব সিফাত বলেন, ‘আহত ব্যক্তিরা যাতে নিজেদের অবহেলিত না মনে করেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী মারুফ আহতদের চিকিৎসা নিয়ে সরকারের উদাসীনতার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘একদল মানুষ আহতদের চিকিৎসায় গুরুত্ব না দিয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সোহেল আহমদ, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আখতার হোসেন, ইডেন কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক শাহীনুর সুমি, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের ছাত্র উৎসব সিদ্দিকী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জাহিন ফেরদৌস, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাগিব সাদিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইসমাইল রাকিব।