আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আগামীকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে আবারও সড়ক অবরোধ করবে রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা আজ মঙ্গলবার এই ঘোষণা দিয়ে এদিনের কর্মসূচি শেষ করেছে। এদিন দুপুর থেকে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিকেল ৫টার পর রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় থেকে সরে যায় শিক্ষার্থীরা। ‘সেশনজট’ ও ঢাবিতে প্রশাসনিক ‘হয়রানি’র কারণেই আলাদা বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি শিক্ষার্থীদের।
দাবি আদায়ে আজ দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এতে পাঁচ ঘণ্টা ধরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে। অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে মিরপুর সড়কসহ আশপাশের সড়কগুলোয় তীব্র যানজট হয়।
আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র আবদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ‘বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন’ গঠন করতে হবে। সেই কমিশন না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একই সড়ক অবরোধ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সে বিষয়ে পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।
গত শনিবার শিক্ষার্থীরা তিন দিনের মধ্যে ‘বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন’ গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়সীমা গত সোমবার শেষ হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তড়িগড়ি করে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। এতে সেশনজট সহ শিক্ষার্থীদের হয়রানি আরও বেড়েছে। সেজন্য তারা সাত কলেজ নিয়ে আলাদা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় চান।
ওই সিদ্ধান্ত ‘অপরিকল্পিত’ ছিল দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এই কলেজগুলো অধিভুক্ত করা হয়েছিল, সেটা বিগত সাত বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য তারা আর ঢাবির অধিভুক্ত থাকতে চান না।
দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ও ঢাবি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা জানান। তারা জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় তারা রাস্তায় নেমেছেন।
মূলত সেশনজট নিরসন, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন এবং জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমাতেই ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। কলেজ হলোÑ ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, বাঙলা কলেজ (মিরপুর) ও তিতুমীর কলেজ।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়েও বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই সময় তাদের দাবির মধ্যে ছিল- ঢাবি প্রশাসনিক ভবনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করা, যেসব শিক্ষার্থী পরবর্তী বর্ষের ক্লাস, ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা পর্যন্ত অংশগ্রহণ করার পর জানতে পেরেছে নন-প্রমোটেড তাদের মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষের পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া, বিলম্বে ফলাফল প্রকাশের কারণ ও সমস্যা সমাধানে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দেওয়া এবং সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা।
এ ছাড়া সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অভিভাবক কে বা কারা, কোথায় তাদের সমস্যাগুলো উপস্থাপন করবে তা ঠিক করে দেওয়া, একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, সব বিষয়ে পাস করার পরেও একজন শিক্ষার্থী সিজিপিএ শর্তের জন্য নন প্রমোটেড হচ্ছে এবং সিজিপিএ শর্ত শিথিল করার কথাও তুলে ধরেছিল শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪
আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আগামীকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে আবারও সড়ক অবরোধ করবে রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা আজ মঙ্গলবার এই ঘোষণা দিয়ে এদিনের কর্মসূচি শেষ করেছে। এদিন দুপুর থেকে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিকেল ৫টার পর রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় থেকে সরে যায় শিক্ষার্থীরা। ‘সেশনজট’ ও ঢাবিতে প্রশাসনিক ‘হয়রানি’র কারণেই আলাদা বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি শিক্ষার্থীদের।
দাবি আদায়ে আজ দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এতে পাঁচ ঘণ্টা ধরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে। অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে মিরপুর সড়কসহ আশপাশের সড়কগুলোয় তীব্র যানজট হয়।
আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র আবদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ‘বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন’ গঠন করতে হবে। সেই কমিশন না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একই সড়ক অবরোধ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সে বিষয়ে পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।
গত শনিবার শিক্ষার্থীরা তিন দিনের মধ্যে ‘বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন’ গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়সীমা গত সোমবার শেষ হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ২০১৭ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তড়িগড়ি করে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। এতে সেশনজট সহ শিক্ষার্থীদের হয়রানি আরও বেড়েছে। সেজন্য তারা সাত কলেজ নিয়ে আলাদা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় চান।
ওই সিদ্ধান্ত ‘অপরিকল্পিত’ ছিল দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এই কলেজগুলো অধিভুক্ত করা হয়েছিল, সেটা বিগত সাত বছরেও অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য তারা আর ঢাবির অধিভুক্ত থাকতে চান না।
দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ও ঢাবি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা জানান। তারা জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারও কাছ থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় তারা রাস্তায় নেমেছেন।
মূলত সেশনজট নিরসন, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন এবং জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমাতেই ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়। কলেজ হলোÑ ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, বাঙলা কলেজ (মিরপুর) ও তিতুমীর কলেজ।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়েও বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই সময় তাদের দাবির মধ্যে ছিল- ঢাবি প্রশাসনিক ভবনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করা, যেসব শিক্ষার্থী পরবর্তী বর্ষের ক্লাস, ইনকোর্স ও টেস্ট পরীক্ষা পর্যন্ত অংশগ্রহণ করার পর জানতে পেরেছে নন-প্রমোটেড তাদের মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষের পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া, বিলম্বে ফলাফল প্রকাশের কারণ ও সমস্যা সমাধানে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দেওয়া এবং সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা।
এ ছাড়া সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অভিভাবক কে বা কারা, কোথায় তাদের সমস্যাগুলো উপস্থাপন করবে তা ঠিক করে দেওয়া, একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, সব বিষয়ে পাস করার পরেও একজন শিক্ষার্থী সিজিপিএ শর্তের জন্য নন প্রমোটেড হচ্ছে এবং সিজিপিএ শর্ত শিথিল করার কথাও তুলে ধরেছিল শিক্ষার্থীরা।